Site maintenance is running; thus you cannot login or sign up! We'll be back soon.

রাজীব নূর খান

১০ বছর আগে

জৈন্তা রাজ্য

গবেষক রাজা রামমোহন নাথের মতে, জয়ন্তিয়ার লোকেরা জাতিতে Tsing বংশের।Tsing রাজ্য থেকে এসেছিলেন বলে তাদেরকে Tsinteing বলা হতো।আর তা থেকে পবর্তীকালে Tsynteng থেকে জৈন্তা শব্দের উৎপত্তি। জৈন্তা রাজ্যে প্রাথমিক যুগে প্রমীলা নামে এক বীরাঙ্গনা নারী অধীশ্বরী ছিলেন। তিনি ইতিহাস খ্যাত মহাবীর অর্জুনের সাথে নাটকীয়ভাবে পরিণয়সূত্রে আব্দধ হয়েছিলেন। ( জৈমিনী মহাভারত গ্রন্থে অর্থাৎ পৌরাণিকি গ্রন্থে এর বিবিরণ জানা যায়।) একারণে এ রাজ্যের আরেক নাম নারী রাজ্য।'জৈন্তা' বা 'জয়ন্ত' একটি অতি প্রাচীন জনপদ।চার হাজার বছর বছর পূর্বে মহা ভারতের যুগে জৈন্তা একটি সমৃদ্ধ জনপদ ছিল।নারী শাসকগনের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন, রানী প্রমীলা, রানী উর্মি ও রানী সিং এ রাজ্যের প্রথম দিকের অধীশ্বরী ছিলেন।গাইট সাহেবের মতে, It might or might not have been found on fact that prior it's congest Jaintia were ruled by Brahmin Kings.

জৈন্তা রাজ্যকে মুলত তিনটি রাজবংশ রাজত্ করতে দেখা যায় এবং জৈন্তা রাজ্য মুলত তিনটি অঞ্চল সমবায়ে গঠিত ছিল।এ অঞ্চল গুলো হলো- জৈন্তা পাহাড়, সিলেটের সমতল ভূমি এবং ভারতের নওগাঁ জেলার কীয়দংশ।সিলেটের ত্রিপুরা রাজ্যের ইতিহাস থেকে জানা যায় যে, ৫৯০ সালে জুজারুপ রাজা নিজ রাজধানী ধর্মনগর ছেড়ে পার্বত্য চট্রগ্রামে নতুন রাজধানী স্থাপন করেন এবং জৈন্তা পতিকে বরমচাল ও তুঙ্গাচাল পর্যন্ত তার রাজ্যবিস্তারের সুযোগ করে দেন।১৫০০ সাল থেকে খাসিয়া রাজবংশ জৈন্তা রাজ্য শাসন করে।১৮৩৫ সালে লর্ড উইলিয়াম বেন্টিংক এর সময় জৈন্তারাজ্য বৃটিশ শাসনের অধিভুক্ত হয়। সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে জৈন্তাপুরের ঐতিহ্য আজ ধ্বংসের পথে।১৬৮০ সালে রাজা লক্ষীনারায়ণের সময় জৈন্তা রাজ্যের রাজধানী সমতল অঞ্চল নিজপাট এলাকায় স্থাপন করা হয়।১৭৯০ সালে তৎকালীন রাজা রামসিংহের শাসনকালে জৈন্তার বিভিন্ন স্থানে বহু মট-মন্দির প্রতিষ্ঠা করা হয়।

১৮৩৫ সালের ১৬ মার্চ, হ্যারি সাহেব নামক চুনাপাথর ব্যবসায়ী ইংরেজ জৈন্তার রাজধানী নিজপাট শহরে এসে রাজা রাজেন্দ্র সিংহকে কৌশলে গ্রেফতার করেন।জৈন্তার বহু মূল্যবান প্রাচীন নিদর্শন রাজবাড়ি, রাজপ্রসাদ,পুরাকীর্তি প তৎকালীন জৈন্তা রাজ্যের নানা স্থাপনা, মেঘাতিলক, কালা পাথর ইত্যাদি সংরক্ষণের অভাবে বিলীন হতে চলেছে।রাজবাড়ীর পুরাকীর্তি নষ্ট ও রাজবাড়ির জমি বেদখল হয়ে যাচ্ছে।তবে পুরাকীর্তি গুলো দেখার জন্য প্রতিদিনই দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে বহু পর্যটক এখানে আসেন।সিলেট রেলষ্টেশন থেকে বাসে করে জৈন্তা রাজবাড়িতে আসতে সময় লাগবে দুই ঘণ্টা।
জৈন্তা রাজার রাজত্ব আয় বা আদায় পর্যাপ্ত হত না।১৮৩৫ সাল পর্যন্ত জৈন্তা রাজ্যের বার্ষিক রাজস্ব আয় ২৫ হাজার থেকে ৩০ হাজার টাকার মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল। ড. জে. এইচ হাটন যিনি ১৯২৫ সালে জৈন্তা ও নর্তিয়াং পুঞ্জি সফর করে ছিলেন এবং সাবেক রাজধানীতে রাজবাড়ীর প্রাচীর, প্রধান ফটক এবং পুরাত্ন প্রাসাদটি অক্ষত দেখতে পান।নতিয়াং বাজারের মধ্যে নদীর উপর একটি দর্শনীয় সেতু যা ২৬.৫ ফুট মেগালিথিক স্প্যান দ্বারা যুক্ত ছিল।জনশ্রুতি আছে যে, কুতুব পীর (শাহ আবু তোরার) জৈন্তায় ইসলাম ধর্ম প্রচারের উদ্দেশ্যে যান।জৈন্তার পান খুব সুস্বাদু,পানি অত্যন্ত স্বচ্ছ ও বিশুদ্ধ এবং এককালে নারীরা রুপবতী, লজ্জাশীল ছিল।জৈন্তা রাজবাড়িটি ১৮৯৭ সালে ভূমিকম্পে ধ্বংস হয়।বর্তমানে রাজবাড়ীর প্রধান ফটক ব্যতিত আর কোন রাজ স্থাপনা অক্ষত নেই।প্রাচীনকালে জৈন্তার রাজাদের সাথে খাইরেম রাজ্যের রাজার ঝগড়া বিবাদ লেগেই থাকত।সে সময় এ রাজ্যে প্রায়ই যুদ্ধ বিগৃহ ঘটত।(সৈয়দ মূর্তজা আলী ১৯৫৪ সালে 'The History of Jaintia' গ্রন্থটি রচনা করেন।)

এইবার ছোট একটা গল্প বলি- জৈন্তার রাজবাড়িতে এক যাদুকর রাখাল মাদকশার বিলের ধারে গরু চরাত।প্রতিদিন সে ঐ বিলের আশের পাশের চারণ ভূমিতে গরু চরিয়ে সন্ধ্যায় রাজবাড়িতে ফেরার সময় কিছু বাইন মাছ নিয়ে ফিরে যেত।প্রতিন এ বাইন মাছ খাওয়ানোর কারণে রাজবাড়ীতে তার খুব কদর ছিল।সবাই তার মাছ থেকে তৃপ্তি বোধ করতেন।আর তার খুব প্রসংশা করা হতো।এভাবে প্রতিদিন একই জাতীয় মাছ আনতে সক্ষম হওয়ায় রাজবাড়ীর এক সামন্তের মন খটকা জাগলো।সামন্ত আরো ভাবল কোন ধরণের প্রস্তুতি ছাড়াই রোজ রোজ মাছ ধরা কেমন করে সম্ভব হতে পারে? ঐ সামন্ত তার সন্দেহ ও ভাবনা থেকেই একদিন সবার অজান্তে মাদকশার বিলের ধারে যায়।সেখানে সে রাখালটিকে স্বাভাবিকভাবে কাজ করতে দেখে। কিন্তু সন্ধ্যা হওয়ার কিছু পূর্বে বিলের ধারে দাঁড়িয়ে মন্ত্রপাঠ শুরু করে। আর তখনই ঝোপ-জঙ্গল থেকে অসংখ্য সাপ ছুটে আসে রাখালটির সামনে।এ সময় যাদুকর রাখাল ঐ সাপগুলোকে ধরে মাথা ও লেজ বিচ্ছিন্ন করে ছাল ছাড়িয়ে কেটে খলইয়ের মধ্যে রাখে।এরপর সে খলই সমেত কথিত মাছ নিয়ে আসে এবং রোজকার মতো যথারীতি পরিবেশন করে।পরদিন ঐ সামন্ত রাজবাড়ীতে খারালটির এমন অস্বাভাবিক অপকর্মের কথা ফাঁস করে দিলে দরবারের সবাই রীতিমত হতবাক হন।.....

(এখন আর গল্প বলতে ভালো লাগছে না।) তারপর আরো অনেক কিছু ঘটে....। পরিশেষে, সাপগুলো অজগরে পরিনত হয়।যাদুকর রাখালটি এবং সাপ গুলো আকাশে উঠতেই চোখের নিমিষে অদৃশ্য হয়ে যায়।

০ Likes ৩ Comments ০ Share ৩৮৬ Views

Comments (3)

  • - তৌফিক মাসুদ

    ভাল লাগল আপনার কবিতা। ধন্যবাদ। 

    - সনাতন পাঠক

    চমৎকার। শুভেচ্ছা দাদা, ভাল লাগা রইল।

    - আলমগীর সরকার লিটন

    চারু দা

    খুব সুন্দর ভাবনাময় কবিতা-----

    Load more comments...