আচ্ছা ধরুন, আপনার পোষা বেড়াল বা কুকুরটি যদি আপনার সাথে কথা বলতে পারতো, একবার ভাবুন তো বিষয়টা কেমন হয়তো? অনেকে হয়তো ভাববেন এ কেমন অলক্ষণে কথা! হ্যাঁ, এমন অদ্ভুত আর অসম্ভব ঘটনা চোখে দেখার পর অবাক হওয়া ছাড়া আর কী করারথাকবে আপনার! কিন্তু এমন কিছু অলক্ষণে এবং অদ্ভুত ঘতনাও হটেছে পৃথিবীতে। আজকের আয়োজনে তুলে ধরছি কথা বলা সব জীবজন্তু, যাদের এ অদ্ভুত প্রতিভা বিশ্ববাসীকে হতবাক করে দিয়েছে।
কথা বলে টিয়াঃ-
টিয়াপাখি অ্যালেক্স।বয়স তখন মাত্র এক বছর। আমেরিকার ইউনিভার্সিটি অব আরিজোনার প্রাণীমনস্তত্ত্ববিদ আইরিন নিজ গবেষণার কাজের জন্য আফ্রিকান এ টিয়া পাখিটিকেসংগ্রহ করেন। আইরিন তার গবেষণায় জীবজন্তুর ভাষা নিয়ে সে সময় গবেষণাকরছিলেন। আইরিন দীর্ঘদিন ধরে অ্যালেক্সকে নানা ধরনের শব্দ শেখান। ২০০৭ সালেঅ্যালেক্স মারা যাওয়ার আগ পর্যন্ত প্রায় ১০০টি ইংরেজি শব্দ জেনে ফেলেছিল।এছাড়া আলাদা করে প্রায় ৫০টি বস্তুকে চিহ্নিত করতে পারত। পৃথিবীর সবচেয়েবুদ্ধিমান এ পাখিটি পৃথিবী ছেড়ে চলে যাওয়ার আগমুহূর্তে তার পালক আইরিনকে“ইউ বি গুড”বলে চিরবিদায় নেয়। এমন বুদ্ধিমান টিয়াপাখি খুব কমই দেখা মেলে।
হাতি বলছে হ্যালোঃ-
যদি কখনও এমন দেখেন হাতির মতো এমন বিরাট এক জন্তু আপনাকে বলছে ‘হ্যালো’, ‘গুড’ ‘নো’ তাহলে? অবাক হচ্ছেন? দক্ষিণকোরিয়ার অ্যাভারল্যান্ড চিড়িয়াখানায় বাস কোশিক নামের কথা বলা এ হাতিটিরসন্ধান পাওয়া যায়। এশিয়ান এ হাতিটি কোরিয়ান ভাষায় ‘হ্যালো’, ‘গুড’ ‘নো’ ‘সিট ডাউন’ প্রভৃতি শব্দ তৈরি করতে পারে। কোশিক জীবনের বেশির ভাগ সময়চিড়িয়াখানায় মানুষের সঙ্গে থাকার কারণেই অদ্ভুত এ গুণটি রপ্ত করেছে বলেজানান হাতিটির প্রশিক্ষক। হাতিটি এসব শব্দ উচ্চারণ করতে পারলেও এগুলো বুঝতেপারে কিনা, সেটা নিয়ে অবশ্য দ্বিধা আছে অনেকের।
তিমির বাক্যালাপঃ-
কখনও তিমির বাক্যালাপ শুনেছেন? ঘটনাটি১৯৮৪ সালের। নক নামের মাত্র ৯ বছর বয়সী এক তিমি জীবনের প্রথম শব্দটিউচ্চারণ করল। তিমি যে কথা বলতে পারে, সেটা সম্ভবত নকের মাধ্যমেই জানলবিশ্ববাসী। পোষা এ বেলুগা তিমিটি একদম শৈশবে মানুষের কথা নকল করে বলারক্ষমতা অর্জন করলেও এটি যৌবনপ্রাপ্ত হওয়ার পর মনুষ্য বাচনভঙ্গি অনুকরণ করারক্ষমতাটি হারিয়ে ফেলে। ধারণা করা হয়, মানুষের সংস্পর্শই নককে কথা বলারপ্রেরণা জুগিয়েছে।
বিড়াল বলছে ভালোবাসিঃ-
বিড়ায় যদি আপনাকে প্রেম নিবেদন করে? কেমন হবে বিষয়টা? ব্লাকিনামের মিশমিশে কালো রঙের এ বিড়ালটি পৃথিবীর অন্যতম কথা বলা জন্তু। ব্লাকিআপনাকে ‘আই লাভ ইউ’ বলে ডাকতে তো পারবেই, এছাড়া ‘আই ওয়ান্ট মামা’ বলেওচিৎকার-চেঁচামেচি করতে পারবে। ১৯৭০ সালের দিকে ব্লাকিকে অনেকরেডিও-টেলিভিশনে নিয়মিত দেখা যেত। আর এসব শোতে ব্লাকিকে টেলিভিশন কর্তৃপক্ষথেকে অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের জন্য টাকা দিতে হতো। আর এসব অনুষ্ঠানেঅংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে ব্লাকির সংগ্রহ দাঁড়ায় ১৫ মিলিয়ন ডলার, যা ব্লাকিকেপৃথিবীর সবচেয়ে ধনী বিড়াল হিসেবে ২০১১ সালে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ড বুকেস্থায়ী আসন করে দেয়।
কন্যার আদরে শিম্পাঞ্জিঃ-
শিম্পাঞ্জিকে সন্তানের আদরে রাখলে কেমন হবে সেইটি করে দেখিয়েছেন আমেরিকারওকলাহোমা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ইনস্টিটিউট অব প্রাইমেট স্টাডিজ’ বিভাগেরপ্রধান অধ্যাপক মাওরাইস টেমারলিন ও তার স্ত্রী বাড়িতে লাকি নামের একশিম্পাঞ্জি লালন-পালন করা শুরু করেলন গবেষণার অংশ হিসেবে। শিম্পাঞ্জিকেনিজের মেয়ের মতো যত্ন তো করেনই দুজন মিলে, এমনকি শিম্পাঞ্জির নামের সঙ্গেনিজের বংশের নাম জুড়ে দিয়ে ওকে ‘লাকি টেমারলিন’ বলেই ডাকেন। শিম্পাঞ্জিটিকেচামচ ব্যবহার করে খাওয়ানো, নিজের জামা নিজে পরানোসহ রাতের বেলাশিম্পাঞ্জিসহ সবাই একসঙ্গে খাবার টেবিলে বসানোর নানা অনুশীলনে ব্যস্ত থাকেনএ দুই বুড়োবুড়ি। ঘটনা এখানে শেষ নয়, এ দম্পতি লাকিকে প্রায় ১৪০টি অর্থবোধকশব্দ শেখান, যেটা দিয়ে লাকি খুব সহজেই বিভিন্ন মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ করতেপারত। লাকি খুব শব্দে কথা বলতে না পারলেও সে যা বলে, তা নিজে যেমন বোঝে, তেমনি যার উদ্দেশে বলে, সেও বোঝে!
তথ্যসূত্রঃ ইন্টারনেট।
Comments (1)
সাথে ই আছি
বিচারক হিসেবে আপনাকে পেয়েও আমরা আনন্দিত।
আপনাদের এই ব্লগে এসে আমার কিছু উপকার হয়েছে। তার মধ্যে অন্যতম হলো-লেখার সমালোচক পেয়েছি। আর দ্বিতীয় উপকার- এখানে এসে নতুন নতুন বিষয়ে লেখার স্পৃহা এসেছে। আমার মতো অলসের জন্য এটা খুবই আনন্দদায়ক ব্যাপার।
চলুক আপনাদের আয়োজন। সাথে আছি।
বাহ। নক্ষত্র ব্লগ সবার ব্লগ। ধন্যবাদ নক্ষত্র ব্লগ কতৃপক্ষকে।
সুন্দর এক পোষ্ট দিয়েছেন দাদা
অনেক অভিনন্দন--
ভাল থাকুন--------------