Site maintenance is running; thus you cannot login or sign up! We'll be back soon.

চিরকুট

 

বেলীফুল লাবন্যের অনেক প্রিয়। এতটা প্রিয় যে যদি তাকে একাধিক ফুল তুলে নিতে বলা তাহলে সে একাধিকবার এই বেলীফুলই হাতে নিবে। বারবার ছুঁয়ে দেখার এই সুযোগ হাতছাড়া করার ইচ্ছেটা লাবন্যের কখনোই হবেনা। তাইতো তার আপন নিবাস জুড়ে বেলী ফুলের বাগান। বাড়ির সম্মুখে অন্দরে যতদুর দৃষ্টি যায় যতদুর পায়ে পথ চলা যায় তার পুরোটাই বেলী ফুলের বাগানে ঢাকা।

 বাড়িটার এক কোনে কাঠের ঝুল বারান্দা দেওয়া ঘর। চারিপাশে মানুষের আনা গোনা নেই। কোলাহল নেই একেবারেই শুনশান তারই মাঝে নানান ধরনের পাখি আর মধ্যরাতে ঝিঝি পোকার শব্দ ছাড়া কিছুই কানে আসেনা। বাগানের মাঝখান দিয়ে সাদা মেঠোপথ আর দুপাশে সারা বছর ফুটতে থাকে টকটকে লাল রংয়ের বেলীফুল। সকালের সোনা রোদে চিক চিক করে উঠে লাবণ্যের রক্তাভ লাল বেলীর বাগান।

 প্রতিটা বিকেল লাবন্যের কাছে রঙ্গীন হয়ে উঠে। ঝুল বারান্দার এক পাশে হেলান দেয়া চেয়ারে বিকেলটা বেশ ভালোই কাছে। পাখি ডাকা ছায়া ঢাকা শান্ত সুশীতল সুগন্ধি মৌ মৌ করে তার চারিপাশের বাতাস। এমন বিকেলে বসে প্রিয়জনের সাথে একটা বিকেল কাটানো, একটু খুসনুটি একটু ভাললাগা কিংবা ভালবাসির কথা বলতে কার না ভাল লাগে। তেমনি তা থেকে বঞ্চিত হতে না চায় সে নিজেও। তাই প্রতিটি পড়ন্ত বিকেলের সঙ্গি হয় নবারুন।

 একটা মৌন বিকেলের শেষ গল্প। এরপর আর লেখা হয়নি। কারন আজ নবারুন আসেনি। একটা শূণ্যতা থেকেই যায়। চারিপাশের নিরবতা আর জনমানবহীন ভুবনের একমাত্র সাক্ষী লাবন্য নিজে আর তার লাল রঙ্গা বেলী। তার চোখের গল বেয়ে নেমে আসা অশ্রুবিন্দু কাউকে না জানিয়ে কিছুটা ঝরে পরে নিজের কপোলবেয়ে আর খানিকটা শুকিয়ে যায় নিজেরই অজান্তে চোখের কোনে। এভাবে কতদিন কত প্রহর কেটেছিল আমরা কেউ তা জানিনা। তবে শেষ যেদিন খরব রটে গেল সেদিন তবে দেশ সুদ্ধ লোকেরাও জেনেছিল। শোকে আত্নহত্যা করেছিল পৃথিবীর তাবৎ প্রেমিক যুগল। সেদিন পতাকা অর্ধ নমিত হয়েছিল তাবৎ পৃথিবীর। কাল ব্যজ ধারন করে মনের অজান্তে মাথা নত করেছিল জাতিসংঘের মহাসচিব নিজেও।

 আমরা যখন পৌছালাম তখন কুয়াশা ঢাকা ভোর। পায়ের নিচে কিছু একটা তরল ঠেকছে। বাড়ির আঙ্গিনা শুভ্রতায় মাখামাখি। প্রথম দৃষ্টি বিভ্রম কুয়াশার সাথে। দিনের আলো জানিয়ে দিল সত্যের মত করে। সমস্ত বাগান জুড়ে কান্নার রোল। বেলীরা দল বেধে কেঁদে কেঁদে শোকর মাতমে বুক চিড়ে হৃদপিন্ড ছিড়ে ফেলেছে। রক্তাক্ত লাল বেলীরা সব রং রক্তে পরিনত করে ঝড়িয়ে দিয়েছে পায়ের তলায়। আজ আর কোন বেলীই লাল নেই। সেই কবে লাবন্যের জন্য কেঁদে কেঁদে রক্তহীন শুভ্রতায় পরিনত হয়েছে।

০ Likes ১৬ Comments ০ Share ৪৯১ Views

Comments (16)

  • - লুৎফুর রহমান পাশা

    আপনার ভ্রমন পোস্ট গুলো চমৎকার লাগছে। নিয়মিত লিখতে থাকুন।

    • - সালাহ্‌ আদ-দীন

      আপনার কাছে অনেক অনেক কৃতজ্ঞ, একাউন্টটা একটিভ করে দেবার জন্যে। হুম! আমি নিজেও লিখে মজা পাচ্ছি। আশা করছি নিয়মিত লিখব ইনশাআল্লাহ্‌। 

    - ঘাস ফুল

    চমৎকার বর্ণনা এবং সাথে দারুণ কিছু ছবি, দুইয়ে মিলে পোষ্টটাকে পরিপূর্ণতা দিয়েছে। খুব ভালো লাগলো দীন ভাই। 

    • - সালাহ্‌ আদ-দীন

      প্রিয় ঘাস ফুল ভাই শুরু থেকে আপনার উৎসাহ আর নিয়মিত মন্তব্য আমার এই লেখার পেছনে প্রভাবকের মত কাজ করছে। আপানদের সকলের উৎসাহে এত দূর আসতে পেরেছি।

    - ফেরদৌসী বেগম ( শিল্পী )

    বেশ ভালো লাগলো তোমার ডোবার দুর্গের চমৎকার সব ছবি আর বর্ণনা। অনেক কিছু জানাও হলো এবং দেখাও হলো তোমার এই পোষ্টের মাধ্যমে, তাই তোমাকে ধন্যবাদ সালাহ।

    • - সালাহ্‌ আদ-দীন

      আপু আমি পোষ্ট দিলে তোমার, জেসমিন আপু আর কামরুন নাহার আপুর মন্তব্য না পেলে যেন ভালই লাগেনা। অনেক অনেক ভাললাগা তোমার জন্যে। 

    Load more comments...