লাবন্যর সরলতার প্রতিমা আমাকে মুগ্ধ করে। অস্তিরতা নেই তবুও চঞ্চলতা বিমুগ্ধ আমার সারাবেলা। সকাল থেকে রাত অব্দি জাগা থেকে ঘুম অব্দি তাকে ভাবনায় ভাসার পর মনে যদি আরেকটু সময় পেতাম। লাবন্যের মনের মধ্যে আমি প্রবেশ করতে পেরেছি কিনা তা যাচাই করে দেখার সুযোগ হয়নি আমার। আসলে তার প্রয়োজন পড়েই। কখনোই তার অনুপস্থিতি অনুভত হয়নি কিংবা যে টুকু প্রস্থান ছিল সময়ের ফেরে তাতেও শূণ্যতায় আড়স্ট হইনি কখনো। মনে হয়েছিলে সেতো আছেই। নতুন বাঝিয়ে দেখার কি এমন বাহানা থাকতে পারে বা দরকারই বা কিসে?
আমার কাছ থেকে লাবন্য কখনোই পালাতে চায়নি। তবে আরো জুবুথুব কোমল হয়ে আষ্ট্রে পৃষ্ট্রে বেধে থাকার সিন্ধান্ত নিয়েছিল হয়তো। তাইতো এক সন্ধেবেলা বলেছিল আমার একজন আছে। আমি ভেবেছিলাম সে আমি। না আসলে তা নয়। সে হলো ইছামতি। পরে শুনলাম লাবন্য ইছামতির সই। শুধু তাই নয় তার স্বচ্ছ জলে তাকে নাইতে দেয়। দিনমান বাইতে দেয়। জলের স্রোত যেদিকেই থাকুক না কেন লাবন্যের ইচ্ছাতেই ইছামতি তার গতি পথ বদলায়। যখনই সাধ জাগে নাইবার তার আগে ইছামতি বুঝতে পারে তাই বরাবর তার জন্যই শীতল করে রাখে তার স্বচ্ছ প্রবাহিত জলের ধারা।
লাবন্যের মনের ভাষা ইছামতি বুঝে। তাই একদিন শুধোলো তুমি যাকে ভালবাস তাকে নিয়ে আসো। আমার সাথে পরিচয় করিয়ে দাও। আমি তার ইচ্ছেটা শুনেছিলাম। সে কি আবেগ! কতটা আশা বিশ্বাস আর ভালবাসা জলের তলে লুকিয়ে থাকে তা কেবল ইছামতিই জানে। আমি স্বভাব সুলভ মত জলের উপর মাথা ঝুকালাম। উপরের আকাশের উজ্জল আলো চারিপাশে হাজার রকমের মেঘের কারুকাজ সবকিছুই কুলকুচির মত জলের তলে প্রতিবিম্ব হয়ে আমার চোখেফিরে আসছে। কিন্তুকি আশ্চর্য, শান্ত, স্থীর স্বচ্ছ জলের সেই দর্পনে আমার মুখ কোথায়?
একবার দুবার তিনবার আমি আশাহত হয়ে হতাশায় কুকড়ে গেলাম। লাবন্যের সে কি হাসি! তার এক একটা হাসির হলকায় ইছামতি আরো উত্তাল হয়ে উঠে। কাপন লাগে ঢেউয়ের মত জলে আর আমি মিশে যাচ্ছি নদীর কুলে বালির সাথে সেসব দেখার লাবন্যর সময় কোথায়।
ইছামতির এই লুকোচুরি আমার জানা ছিলনা। লাবন্যকে ইছামতিই ভালবাসে। শুধু তাই নয় সবচেয়ে বেশীই ভালবাসে। যদি তার চেয়ে বেশী কেউ ভালবাসতে পারে তবেই তার প্রতিবিম্ব এই দর্পনে ফুটে উঠবে। ভালবাসার পরাজয় দেখিনি তবে বিশ্বাস দেখেছি। কিন্তু ইছামতির জলে আমার প্রতিবিম্ব দেখিনি। শুনেছি এখনো ইছামতির জলে কারো প্রতিবিম্ব দেখা যায়না।
Comments (3)
শুধুমাত্র কবি সাহিত্যিকরাই নন প্রতিটি পেশার মানুষেরই একটা ব্যক্তিগত জীবন থাকে। পেশাগত জীবনে কে কতটা সফল তার সাথে ব্যক্তিজীবনকে টেনে আনাটা এক ধরনের অপরাধ। হুমায়ুন আহমেদ বাংলা সাহিত্যকে কি দিয়েছে সেইটা বিচার্য বিষয়। ব্যক্তি জীবনটাকে উনি পেশা হিসেবে উপস্থাপন করেননি। সুতরাং এই সব করে এদের জণ্য করুনা করা ছাড়া আর কোন কিছু নেই।
অসফল আর হতাশাগ্রস্থরাই অন্যের সমালোচনা বেশি করে।
প্রথমত আপনার বন্ধুর মন পরিষ্কার না। অন্যের সাফল্য দেখলে তার গা জ্বলে। আপনার বন্ধুর কি এমন যোগ্যতা আছে যে হুমায়ূন আহমেদের মতো লেখকের লেখার সমালোচনা করেন। আপনার বন্ধুকে বলবেন, হুমায়ূন আহমদেকে তার সৃষ্টির জন্য মূল্যায়ন করতে, তার ব্যক্তিগত জীবনের ওপর যেন না করা হয়। আপনার বন্ধু পাঠক হিসাবে খুবই নিম্নমানের। তাই সে হুমায়ূন আহমেদের লেখা থেকে কিছু শিখতে পারে নাই, বা তার লেখার মর্মার্থ উদ্ধার করতে পারে নাই। তাকে জিজ্ঞেস করবেন সে হুমায়ূন আহমেদের কয়টা বই পড়েছে। চটকদার লেখা লিখে হয়তো কিছু দিনের জন্য জনপ্রিয়তা অর্জন করা যায়। কিন্তু হুমায়ূন আহমেদের মতো আর কে বাংলা সাহিত্যে এতো দিন জনপ্রিয়তার শীর্ষে ছিল। সে শুধু আমাদের দেশেই জনপ্রিয় ছিলেন না, ওপার বাংলায়ও সে জনপ্রিয় ছিল। আপনার বন্ধু হীনমন্যতায় ভুগছে। তার মানসিক চিকিৎসা হওয়া উচিৎ। হুমায়ূন আহমেদের একটা নখের সমান হতে পারলে আপনার বন্ধুকে বলবেন, তাঁকে নিয়ে সমালোচন করার জন্য।