ঘর-বাড়িঃ
ছোট ছোট সবুজ পাহাড়ের কোলে চাকমা গ্রামগুলো দেখতে খুব সুন্দর। চাকমারা গ্রামকে বলে আদাম। এখানে চাকমাদের ঘরগুলো দেখতে ছবির মতন মনে হয়। চাকমারা শক্ত গাছের খুঁটির উপর ঘর বাঁধে। তারা ঘরগুলোকে মাচাং ঘর বলে। মাচাং ঘরের সামনে একটা খোলা মাচা থাকে। এটিকে চাকমা জাতি ইজর বলে। ঘরে ওঠার জন্য কাঠের সিঁড়ি থাকে। চাকমা ভাষায় সিঁড়িটিকে সাঙু বলে। চাকমারা ঘরের কক্ষকে গুধি বলে।
পোশাক-পরিচ্ছেদঃ
চাকমা জাতির নিজেদের পোশাক আছে। তাদের পোশাক খুব সুন্দর। বিশেষ করে নারীদের পোশাক খুব সুন্দর। তাদের পোশাককে নানা রকমের রঙিন কারুকাজ থাকে। চাকমা মেয়েরা কোমরে লুঙ্গির মত কাপড় পরে। ওটাকে তারা পিনন বলে। এছাড়া উপরে একটা ব্লাউজ পরে। চাকমা ভাষায় এর নাম খাদি। চাকমা পুরুষদের কাপড়ের নাম আছে। পুরুষেরা মোটা সুতার কাপড় পরে। ওটাকে চাকমা ভাষায় কবৈ বলে। এর সঙ্গে ধুতি বা গামছা পরে। মাথায় পাগড়ি পরে। ওটাকে খবং বলে। চাকমারা নিজেদের কাপড় নিজেরা তৈরি করে।
কোনো বিশেষ অনুষ্ঠানে রাজাদের বিশেষ পোশাক পরার নিয়ম আছে। চাকমা রাজা এসময় উত্তর ভারতের মহারাজাদের নিয়ম অনুসরণ করে পোশাক পরেন।
কুটির শিল্পঃ
চাকমা মেয়েদের হাতের কাজের খুব সুনাম আছে। তারা বাঁশ, বেত দিয়ে সুন্দর, সুন্দর নানান সব জিনিসপত্র তৈরি করে। এরমধ্যে ঝুড়ি, পাখা, কাপড়ের ফুলদানি, চিরুণী বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। চাকমাদের তৈরি ফুল বারেং ঝুড়ি দেখতে খুব সুন্দর। এছাড়া চাকমা মেয়েদের তৈরি বিশেষ নকশাযুক্ত শাল এবং অন্যান্য কাপড় দেশ-বিদেশে খুবই জনপ্রিয়। এসকল নকশার একটা নাম আছে। চাকমা ভাষায় এর নাম হলো আলাম। এসব কাপড় চাকমা মেয়েরা কোমরে তাঁতে তৈরি করে।
খাদ্যঃ
চাকমা জাতির প্রধান খাদ্য ভাত। তারা ভাতের সঙ্গে মাছ, মাংস, শুটকি, শাক-সবজি খায়। বাঁশ কোরল চাকমাদের খুব প্রিয় খাবার। বাঁশ কোরল দিয়ে চাকমা মেয়েরা অনেক ধরনের সুস্বাদু খাবার রান্না করতে পারে। চাকমারা খুব বেশি ঝাল খায়। তেল এবং মসলার ব্যবহার করে কম। জুমে উৎপন্ন নানান ধরনের ঘাস জাতীয় উদ্ভিদ চাকমারা মসলা হিসেবে ব্যবহার করে।
ধর্মঃ
চাকমারা বৌদ্ধ ধর্মে বিশ্বাসী। আদিবাসী হিসেবে তারা প্রকৃতি পূজাও করে। চাকমারা বিশ্বাস করে, মানুষ মারা গেলে আবার জন্মগ্রহন করে। এ জনমে মানুষের লাজের উপর নির্ভর করবে আগামী জন্মে সে কী হবে।
চাকমারা আরও বিশ্বাস করে, এক সময় পৃথিবী পানিতে পূর্ণ ছিল। চারদিকে শুধু পানি আর পানি। এই পানিতে স্রষ্টা হাঁটাহাঁটী করতেন। চাকমা ভাষায় স্রষ্টাকে গোঝেন বলে। তিনি প্রথমে আলো তারপর অন্ধকার সৃষ্টি করেন। তারপর স্থলভাগ সৃষ্টি করেন। এভাবে তিনি প্রকৃতিকে সৃষ্টি করেন। প্রকৃতিকে স্রষ্টা নারী হিসেবে সৃষ্টি করেন। সে থেকে এই পৃথিবীর সৃষ্টি হয়।
চলবে...........................
Comments (2)
ভালো লিখেছেন। শুভেচ্ছা জানবেন।
জ্বি মামুন দা
অনেক ধন্যবাদ ভাল থাকুন
ভালো লেগেছে কবিতা ! অফুরন্ত শুভেচ্ছা রইলো দাদা !
জ্বি দাদা আগাম স্বাধীনাতর শুভেচ্ছা রইল
ভাল থাকুন
ভালো লাগলো । ধন্যবাদ ।
জ্বি দাদা আগাম স্বাধীনাতর শুভেচ্ছা রইল
ভাল থাকুন