।।১।।
শ্বশুরবাড়ি যাচ্ছে গোপালভাঁড়।মাথার ওপর গনগনে সূর্য। গরমে অতিষ্ঠ হয়ে গোপাল এক গাছের নিচে বিশ্রাম নিতে বসল। বেশি গরম লাগায় ফতুয়াটা খুলে পাশে রেখে একটু আয়েশ করে বসল। বসে বিশ্রাম নিতে নিতে কখন যে ঘুমিয়ে পড়ল, নিজেই জানে না।
ঘুম যখন ভাঙল গোপাল দেখে, তার ফতুয়াটা চুরি হয়ে গেছে। হায় হায়! এখন কী হবে! খালি গায়ে তো আর শ্বশুরবাড়ি ওঠা যায় না।
কী আর করা। সে হাঁটতে হাঁটতে মনে মনে বলতে লাগল, ‘হে ভগবান, রাস্তায় অন্তত ১০টি মুদ্রা যেন কুড়িয়ে পাই, তাহলে পাঁচ মুদ্রায় আমার জন্য একটা ভালো ফতুয়া কিনতে পারি। আর তোমার জন্য পাঁচটি মুদ্রা মন্দিরে দান করতে পারি···।’
আর কী আশ্চর্য! ভাবতে ভাবতেই দেখে, রাস্তার ধারে কয়েকটি মুদ্রা পড়ে আছে। খুশি হয়ে উঠল গোপাল, গুনে দেখে পাঁচটি মুদ্রা!
গোপাল স্বগত বলে উঠল, ‘হে ভগবান, আমাকে তোমার বিশ্বাস হলো না, নিজের ভাগটা আগেই রেখে দিলে?!!?!!?
।।২।।
পূর্বের জমিদারগণ মোসায়েব রাখতেন। পাশের এক জমিদার গোপালকে বললেন, অনেকেই মোসায়েব গিরি করিবার জন্য আসছে- কে যে উপযুক্ত হবে, আমি ঠিক বুঝে উঠতে পারছিনা। তুমি আমার জন্য একজন যোগ্য মোসায়েব নির্বাচন করে দিতে পার। গোপাল
ভাই? কারণ তোমার বুদ্ধি অনেকের চেয়ে সরেস। তোমাকে ছাড়া কাকেও ভরসা পাচ্ছি না।
গোপাল জমিদারকে বললে, ঠিক আছে, যারা মোসায়েব গিরি করতে আসবে তাদের আমার কাছে এক এক করে পাঠিয়ে দেবেন, আমি নিশ্চয়ই একজন উপযুক্ত মোসায়েব নির্বাচন করে দিতে পারব যা আপনার মনের মতন হবে। নিদিষ্ট দিনে প্রথম জন আসতে গোপাল তাকে জিজ্ঞেস করলে, ওহে, তুমি মোসায়েব গিরি করতে পারবে তো?
আজ্ঞে পারব না কেন?
আমার মনে হয় তুমি পারবে না।
ঠিকই পারব মশায়, রেখে দেখুন না। গোপাল তাকে বিদায় করে দিল।
গোপালের নির্দেশে এবার আর একজন ঘরে এসে ঢুকল। গোপাল এই ব্যক্তিকে জিজ্ঞেস করলে, কি হো মোসায়েবগিরি করতে পারবে তো?
কেন পারব না? আমার বাপদাদা সকলেই তো মোসায়েব ছিলেন। তা কি আপনারা শুনেন নাই। জুতো সেলাই থেকে চন্ডীপাঠ পর্যন্ত সব কাজ করতে হবে, তো? পারব মানে নিশ্চয় পারব।
আমার মনে হয় তুমি পারবে না।
আজ্ঞে কাজটা দিয়েই দেখুন না পারি কিনা। না হয় বিদেয় দেবেন।
গোপাল দ্বিতীয় ব্যক্তিকে বিদায় করে দিয়ে তৃতীয় ব্যক্তিকে ঘরে ডাকল। তৃতীয় ব্যক্তি ঘরে ঢুকলে গোপাল জিজ্ঞেস করলে, তুমি জমিদারের মোসায়েব হতে পারবে তো?
আপনার কি মনে হয় আমি পারব?
তুমি পারবে।
তা হলে পারব হুজুর।
মোসায়েব হলেও সব কাজ ঠিকমত করতে পারবে না। আজ্ঞে না, তা অবশ্য পারব না।
সূর্য যে পশ্চিমদিকে ওঠে, তা কি তুমি স্বীকার কর?
স্বীকার করি মানে? আমার চৌদ্দ পুরুষ স্বীকার করতে বাধ্য।
গোপাল তৃতীয় ব্যক্তিকেই মোসায়েব নির্বাচন করল। জমিদারও উপযুক্ত মোসায়েব লাভ করে গোপালের বুদ্ধির তারিফ করলেন এবং গোপালকে পুরস্কৃত ও করলেন উচিত মত।
Comments (13)
ধন্যবাদ কালের পুতুল।
ভাল থাকুন।
বাহ সুন্দর কবিতা
ধন্যবাদ লিটন ভাই।
ভাল থাকবেন।
সারওয়ার ভাই নতুন প্রেমে পড়েছেন নাকি।
এ টঃ প্রফাইলে ছবি লাগয়া দেন।
ভাই, পুরান প্রেমের কাহিনী নতুন করে লিখলাম।
বুইড়া বয়সে পিরিতির ভাব নাইরে ভাই।
ছবি কিভাবে দিব জানাবেন প্লিজ।