খসে পড়া তারা
মেয়ে- দেখো দেখো, আকাশ থেকে তারাটা খসে পড়লো!
ছেলে- তুমি কী কিছু চাইলে?
মেয়ে- খসে পড়া তারার কাছে চাইলে কি কিছু পাওয়া যায়?
ছেলে- তা জানিনা! তবে লোকে বলে ইচ্ছে নাকি পূরণ হয়।
মেয়ে- তুমি কী কিছু চাইলে?
ছেলে- নাহ্। চাইবার সময় পেলাম কই?
মেয়ে- কেন? কিছু চাইলেই পারতে!
ছেলে- তুমি আমার পাশে থাকলে আমি অন্যকিছু চাইনা!
মেয়ে- বাব্বা! তাই বুঝি! আমি কিন্তু চেয়েছি।
ছেলে- চাইতেই পারো। কারণ তুমি আমাতে মগ্ন নও।
মেয়ে- তুমি এতো কিছু বুঝো!
ছেলে- না বুঝে উপায় কী! তোমাকে কিছুটা হলেও চিনি।
মেয়ে- সত্যিই কী তুমি আমাকে চেনো? কোন ছেলে কী কোন মেয়েকে চিনতে পারে?
ছেলে- পারে হয়তো। আমি অন্তত পারি। তোমাকে চিনতে ভুল হবার কথা নয়।
মেয়ে- ভুল ধারণা। এটা তোমার এক ধরণের আত্মতৃপ্তি। নাহ্, অহংকার বলছিনা।
ছেলে- কেন! হঠাৎ একথা বলছো কেন? আমি কী তোমাকে চিনতে ভুল করেছি?
মেয়ে- চিনতে ভুল করেছো কিনা জানিনা, তবে আমার মনের সব কথা তুমি জানোনা।
ছেলে- আচ্ছা, তুমি কী আমাকে বিশ্বাস করো?
মেয়ে- করি। একটা পর্যায় পর্যন্ত তোমাকে বিশ্বাস করি। করতেই হয়।
ছেলে- ঠিক বুঝলাম না। বিশ্বাসের আবার পর্যায় আছে নাকি?
মেয়ে- কেন থাকবেনা? আজ তোমার আমার সম্পর্ক শুধুই প্রেমের। সেখানে ভালবাসা কতটুকু আছে কে জানে?
ছেলে- কেন? তুমি কি মনে করো আমি তোমাকে ভালবাসি না।
মেয়ে- ঠিক তা না। তবে ভালবাসার চাইতে ভাললাগাটাই প্রবল।
ছেলে- ভাললাগা থেকেইতো ভালবাসার জন্ম।
মেয়ে- সেটা জানি। আর সেখানেইতো ভয়!
ছেলে- মানে!
মেয়ে- মানে হলো, এই যে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ভাললাগা, এর থেকেই ভালবাসা। আজ আমরা প্রেমে অন্ধ। তোমার কাছে এখন আমার সবই ভাল। আর এই ভাললাগার আড়ালে খারাপ কিছু দেখছো না।
ছেলে- খারাপ কিছু আছে নাকি?
মেয়ে- থাকবেনা কেন? ভাল মন্দ মিশিয়েইতো মানুষ। তুমি প্রেমে অন্ধ না হলে আমার অনেক কিছুই খারাপ দেখতে পেতে।
ছেলে- যেমন!
মেয়ে- যেমন- আমি শ্যামলা, কালোই বলতে পারো। বাবা বড়লোক নয়। ছাত্রী হিসেবে মোটামুটি। ভবিষ্যতে চাকরী জুটবে কিনা জানিনা। সংসারেও তেমন কিছু শিখিনি।
ছেলে- তুমি অতো ভাবো কেন বলতো!
মেয়ে- আমি যে মেয়ে, আমাকে ভাবতেই হয়। একদিন এই ছোট ছোট ভাললাগাগুলো হারিয়ে গেলে আমি নিঃস্ব হয়ে যাবো।
ছেলে- কেন হারাবে? হারাতে দিলেতো!
মেয়ে- হারাতেই পারে। মানুষের মন সময়ে বদলে যায়। ধরো বিয়ে হলো- বিয়ের পর তুমি বলবে আমার রান্না ভালোনা, আমি অগোছালো, তোমার সেবা করতে পারিনা। তোমার বাবা-মা’র প্রতি তেমন খেয়াল করিনা। আরো কত কী!
ছেলে- বিয়ের আগে এসব ভেবে লাভ কি? ধুর! মুডটাই খারাপ হয়ে গেল।
মেয়ে- বুঝতে পারছি। আর সেজন্যেই খসে পড়া তারার কাছে কিছু চাইলাম।
ছেলে- কি চাইলে?
মেয়ে- চাইলাম, অকারণে তুমি যেন আমাকে ভুল না বুঝো। আমি যেন তোমার যোগ্য হতে পারি।
ছেলে- তবেতো আমারো কিছু চাওয়া দরকার ছিল।
মেয়ে- কি চাইতে?
ছেলে- চাইতাম- ঈশ্বর, তুমি আমাকে মেয়েদের মন বুঝার ক্ষমতা দাও।
Comments (11)
শুভেচ্ছা আমিনুল।
অল্প পরিসরে দারুন জমিয়ে গল্প বলা হল।
আমিতো এক নিশ্বাসে পড়ে ফেললাম - নাইস
জেনে ভাল লাগল ভাই।
ভয়ের গল্প। আমি পড়ে ভয় পেয়েছি আমিনুল ভাইয়া।
তাই নাকি ? আপনার কথা শুনে তো আমারও ভয় ভয় মনে হইতাছে। প্রকাশ করার আগে পড়িনি...সেই কবে পড়েছিলাম। আজ সবার সাথে শেয়ার করছি কপি পেস্ট করে। যাক পানি পান করুন তাহলে।