Site maintenance is running; thus you cannot login or sign up! We'll be back soon.

শাহ আজিজ

৭ বছর আগে

ক্যাম্প – ২২, পৃথিবীতে বিদ্যমান এক নরক

ক্যাম্প – ২২, পৃথিবীতে বিদ্যমান এক নরক, যেখানে কেউ একবার প্রবেশ করলে আর বের হতে পারে না। যেখানে মানুষকে মানুষের চোখে দেখা হতো না, যেখানে মানুষকে ব্যবহার করে ভয়াবহ সব পরীক্ষা নিরীক্ষা করানো হতো, যেখানে প্রসূতি নারীদের সরাসরি পেট কেটে ভ্রূণ বের করে ফেলা হতো, কখনো বা বড় তক্তা দিয়ে পিষে পিষে গর্ভপাত করানো হতো ৮-৯ মাসে প্রসূতিকে! যেখানে অভুক্ত শিশুরা এক কণা খাদ্যের জন্য প্রহরীর লাথি খেয়ে পচা ডোবায় পড়ে মরে, যেখানে নারীদের নৃশংসভাবে ধর্ষণ ও নির্যাতন করে মেরে ফেলে হতো।


উত্তর কোরিয়ার Haengyong Concentration Camp-কে ক্যাম্প ২২ বলা হয়। এখানে সেসব মানুষকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেয়া হয় যারা রাজনৈতিক সমালোচনা বা রাজনৈতিকঅপরাধী। আরো ভালোভাবে বলতে গেলে উত্তর কোরিয়ার Great Leader-দের বিরুদ্ধে কোনো সমালোচনা বা রাষ্ট্রদ্রোহিতা করলেই অপরাধী নিজে তো জেলখানায় যাবেই, তার সাথে সাথে তার ৩ প্রজন্মকেও জেলখানায় পচতে হতো, এমনকি জেলখানায় জন্মানো শিশুটিও নিস্তার পেত না!

উত্তর কোরিয়ার উত্তর পূর্ব সীমান্তে হোয়ের ইয়ং কাউন্টিতে ২২৫ বর্গ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে এই নরকের অবস্থান। চারদিকে পাহাড়ে ঘেরা এই ক্যাম্প ১০ ফুট চওড়া ৩,৩০০ ভোল্টের বৈদ্যুতিক বেড়া দিয়ে আবৃত। কঠোর নিরাপত্তা এবং ক্যাম্প পরিচালনার জন্য প্রায় ১,০০০ অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত এবং প্রশিক্ষিত কুকুরসমেত পাহারাদার এবং ৫০০৬০০ কর্মকর্তা রয়েছে। কিছু দূর পর পর ল্যান্ড মাইন এবং মানুষ মারার গোপন ফাঁদ রয়েছে। প্রায় ৫০ হাজার নারী পুরুষ ও শিশুবন্দী ছিল বলে জানা যায়। এরকম ভয়াবহ নরক উত্তর কোরিয়ায় আরো রয়েছে। এসব ক্যাম্পের বন্দীদের দিয়ে চাষবাস থেকে শুরু করে কারখানার কাজও করানো হয়। উত্তর কোরিয়ার অর্থনীতির একটা বিশাল অংশ জুড়ে রয়েছে এই ক্যাম্পগুলোর শিল্পোৎপাদন।






পাঠকের মনে প্রশ্ন আসতেই পারে- এত কঠোর নিরাপত্তার পরও বহির্বিশ্বের মানুষ কীভাবে এই ক্যাম্পগুলোর অস্তিত্ব এবং এর কর্মকাণ্ড কীভাবে জানতে পেরেছে? চলুন জেনে নেই সেই সব মানুষের কাছ থেকে যারা এক সময় এই ক্যাম্পে কর্মী হিসেবে ছিলেন এবং কেউবা পালিয়ে এসেছেন সেই নরক থেকে।

উত্তর কোরিয়ার স্বৈরশাসক Kim Il Sung এবং Kim Jong Il তাদের বিরোধীদের দমনের জন্য এই ক্যাম্প তৈরি করেছেন। বহির্বিশ্ব এবং দেশের মানুষের অগোচরে নিরিবিলি সব জায়গায় তৈরি করেছেন এসব জেলখানা যেখানে হতভাগা অপরাধীকে পরিবার এবং বংশসহ নিশ্চিহ্ন করে দেয়া হয়। পৃথিবীর ইতিহাসে এমন বর্বরতার নজির খুব কম। কিন্তু সেই কঠোর নিরাপত্তাকে খুব সহজেই ভেদ করেছে স্যাটেলাইট। চলুন দেখে নেই স্যাটেলাইটের তোলা কিছু ছবি।




ডেভিড হক নামক এক মানবাধিকার গবেষক ক্যাম্প ২২ নিয়ে ব্যাপক গবেষণা করেন। তিনি ক্যাম্পের কিছু প্রাক্তন পাহারাদার এবং পালিয়ে আসা বন্দিদের কাছ থেকে বেশ কিছু সাক্ষাৎকার নেন। ম্যাং চল নামক এক প্রহরী গুগল আর্থের তোলা ছবিগুলো দেখে প্রত্যেকটি ভবন এবং সেসব ভবনের কাজ কর্ম থেকে শুরু করে কী ধরণের নির্যাতন করা হতো সব কিছুর বর্ণনা দেন।

ডিটেনশন সেন্টার দেখিয়ে বলেন, কেউ যদি একবার এখানে ঢোকে, তবে তিন মাসের মাঝে মারা যাবেই। আর না মারা গেলেও সারা জীবনের জন্য অথর্ব হয়ে যাবে।” কাজে গাফলতি কিংবা সারাদিনের বরাদ্দ কাজ যদি কোনো বন্দী শেষ করতে না পারে, তবে প্রথমবারের জন্য তার খাবার বন্ধ করে দেয়া হয়। একই কাজ যদি সে তৃতীয়বার করে, তবে তাকে সরাসরি ডিটেনশন সেন্টারে পাঠিয়ে দেয়া হয়। আর ডিটেনশন সেন্টার মানেই সাক্ষাত মৃত্যু।

কিম ২ সাং ইন্সটিটিউট দেখিয়ে তিনি বলেন, এটা অফিসারদের সিনেমা হল এবং পাশেই গার্ড ট্রেনিং সেন্টার।” একটি ময়লা ফেলার পচা ডোবা দেখিয়ে বলেন, এই পচা পুকুরে ২টি শিশুর মৃত্যু হয় গার্ডের লাথিতে কারণ তারা ছোট্ট এক টুকরা নুডুলস নিয়ে কাড়াকাড়ি করছিলো।



এখানে গার্ডদের ট্রেনিং এর সময় বলা হতো, ক্যাম্পের বন্দীরা মানুষ নয়, তাদের সাথে কুকুর বিড়ালের মতো আচরণ করতে হবে। আর গার্ড চাইলেই যেকোনো বন্দীকে যখন খুশি মেরে ফেলতে পারবে। এ ব্যাপারে কোনো জবাবদিহি করতে হবে না। কখনো কখনো এমন হয়েছে, কোন বন্দীকে তলবের পর তার আসতে খানিক দেরি হয়েছে বা দুর্বলতার ধীর পায়ে হেঁটে এসেছে, এই অপরাধের জন্য গার্ড সেই বন্দীকে মেরে ফেলেছে।

ক্যাম্পের বন্দীদের কাছে মৃত্যু খুব স্বাভাবিক একটি ঘটনা। কারণ প্রতিদিন কেউ না কেউ চোখের সামনে মারা যায়। তবে মৃতদের মাঝে শিশুদের সংখ্যাই বেশি। হতভাগা শিশুদের বাবা মাও জানতে পারে না কখন কোথায় তাদের আদরের সন্তানটি মারা গেছে। সেখানে মরাকান্নাও নিষিদ্ধ। ম্যাং চলের ভাষ্যমতে, প্রতি বছর প্রায় ২,০০০ এর অধিক বন্দী মারা যায়। কখনো গার্ডের হাতে, কখনোবা অতি পুষ্টিহীনতায় কিংবা নির্যাতনের কারণে।






ক্যাম্পগুলোতে বন্দীদের অমানবিক পরিশ্রম করানো হতো। চাষের ক্ষেত থেকে শুরু করে খনি এবং ফ্যাক্টরিগুলোতে সপ্তাহে ৭ দিন দৈনিক ১৫ ঘন্টা কাজ করতে হতো। গ্রীষ্মে সকাল ৫টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত কাজ করতে হয়। ছুটির দিন বলতে বছরের প্রথম দিন। অবশ্য ২০০৩ সালের পর কিম জন উনের জন্মদিন উপলক্ষে ক্যাম্পগুলোতে ৪ দিন সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হয়। এতটাই ‘মহান’ নেতা কিম!

এক রুমে ১০০ জন করে বন্দী থাকতো। সবাই গণ টয়লেট যা কখনোই পরিষ্কার করা হতো না। বড় কাজ শেষে তারা শুকনো পাতা দিয়ে পরিষ্কার হত। যেসব বন্দীরা ভালোভাবে কাজ করে, তারা মাঝে মাঝে পরিবারের সাথে থাকার সুযোগ পেত। থাকার জন্য ছোট্ট রুম বরাদ্দ থাকে, যাকে রুম না বলে খুপরি বলা চলে।


আর খাবারদাবার বলতে দিনে ২ বার ১৮০ গ্রাম পরিমাণ ভুট্টা দেয়া হতো। কোনো ধরণের সবজি কিংবা মাংসের ছোঁয়া পেত না বন্দীদের জিহ্বা। বন্দীরা অবশ্য হাতের কাছে যা পেত তারই মাংস খেতো, যেমন ইঁদুর, সাপ এবং ব্যাং যখন যা খুঁজে পেত। তবে প্রহরীদের চোখে পড়লে বেশ বিপদে পড়তে হতো বেচারাদের। তাই কখনো কখনো ইঁদুরের পচা মাংস কিংবা চামড়া না ছাড়িয়েই খেতো যাতে প্রহরীরা দেখতে না পায়। এতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় শিশুরা। ১০ বছর বয়স হওয়ার আগেই অনেক শিশু পুষ্টিহীনতায় মারা যায়।

ম্যাং চল যখন প্রহরী হিসেবে ক্যাম্পে আসেন, তখন তিনি দেখতে পান জীবন্ত সব কঙ্কাল ঘুরে বেড়াচ্ছে। কারো অক্ষিকোটরে একটি চোখ নেই, তো কারো সারা শরীর আগুনে পুড়ে গেছে, কারো বা ২টি পা নেই কিংবা কোনো না কোনো অঙ্গ বিকৃত কিংবা কারো হাতের হাড় ভেঙ্গে বের হয়ে এসেছে। কারো আবার গালে এক পাটি দাঁত নেই। বন্দীদের দশা এতটাই করুণ!

তিনি বলেন ৩০ ভাগেরও বেশি বন্দী শারিরিকভাবে কাজে অক্ষম। কারণ তাদের এমন নির্যাতন করা হয় যে তিন মাসের মাঝেই মৃত্যু নিশ্চিত। নতুন নতুন বন্দীদের জায়গা দিতে হয় বলে মানুষকে পিঁপড়ার মতো করে পিষে মেরে ফেলা হয়। কখনোবা বন্দীদের থাকার যায়গায় ইচ্ছাকৃত আগুন লাগিয়ে দেয়া হয়। শত শত বন্দী নির্বিচারে মারা যায়, কেউবা ঝলসানো শরীর নিয়ে দিনের পর দিন কাজ করে যায়।




বন্দীদের মৃতদেহের সৎকার তো দূরেই থাক বরং যে বর্বরতার সহিত সেই লাশগুলোর একটা ‘গতি’ করা হয় তা শুনলে আপনার গায়ের লোম খাড়া হয়ে যাবে। চংজিন পাওয়ার প্ল্যান্ট, চংজিন স্টিল মিল এবং কিমচেক স্টিল মিলের কয়লার সাপ্লাই দেয়া হয় ক্যাম্প ২২ থেকে। পাঠক কি কিছু আন্দাজ করতে পারছেন কি হয় সেই হতভাগা বন্দীদের লাশের? অধিকাংশ লাশ ট্রাকে করে পাঠানো হতো কয়লা বানানোর জন্য। কয়লার মিশিয়ে লাশগুলোকে বড় বড় চুল্লিতে পুড়িয়ে কয়লা বানানো হতো। আর যে ছাই পাওয়া যেত তা জমিতে ব্যবহার করা হতো উর্বরতার জন্য।

তিনি আরো বলেন- ক্যাম্পে সয়া সস, বিস্কুট এবং বিনপেস্টের একটি কারখানা রয়েছে যেখানে শুধুমাত্র ২০-৩০ বছর বয়সী সুন্দরী নারীরা কাজ করে। আর তাদের পরনে থাকে পাতলা সাদা কাপড়। কর্তব্যরত অফিসার এবং গার্ডরা তাদের যখন ইচ্ছা ধর্ষণ করে। যদি কোনো নারী বাধা প্রদান করে, তাকে ধর্ষণ করে মেরে ফেলা হয় কিংবা গায়ে আগুন লাগিয়ে দেয়া হয়। এমনকি কিছু কিছু ক্যাম্পে নিয়ম করে নারীদের ধর্ষণ করা হয়।




সবচেয়ে ভয়ঙ্কর ব্যাপারটি ঘটে নারীরা যখন গর্ভবতী হতো। ক্যাম্পে নারী বন্দীদের গর্ভবতী হওয়া সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। কারণ এতে ক্যাম্পের জনসংখা বৃদ্ধি পাবে। কোনো নারী যদি সন্তান প্রসব করেও ফেলে তবে সদ্যজাত শিশুটিকে দেয়ালে আছড়ে মারা হয় কিংবা মাকে বাধ্য করা হয় নিজের সন্তানকে হত্যা করতে। গর্ভবতী নারীদের জোরপূর্বক পেট কেটে গর্ভপাত করানো হতো।






কখনো বা ভারিপাথর হাতে নিয়ে দৌড় দিতে বলা হতো কিংবা গর্ভবতীর পেটের উপর বড় তক্তা বসিয়ে ২ পাশ থেকে ২ জন চাপ দিত। গর্ভপাতের বিষয়টি এতটাই ভয়াবহ যে অনেকসময় বন্দিনী মারাও যেত।















বন্দীরা সবচেয়ে বেশি ভয় পায় এই নির্যাতন প্রক্রিয়াকে। বন্দীদের হাত মোটামুটি ৬০ সেন্টিমিটার উপরে একটি গরম পানির পাইপের সাথে বাঁধা হয়। এ অবস্থায় না পারা যায় বসতে, না পারা যায় দাঁড়াতে। তখন গার্ড ইচ্ছামত মোটা মুগুর সদৃশ লাঠি দিয়ে পিটায়, লাথি দেয় কিংবা ঘুষি মারে। এভাবে টানা কয়েকদিন চলতে থাকলে এক সময় শরীর প্যারালাইজড হয়ে যায় এবং বুকের সাথে হাতের সন্ধি খুলে আসে।

Kneeling Torture বলে এক ধরণের নির্যাতনে বন্দীর পায়ে রক্ত চলাচল বন্ধ হয়ে যায় এবং কিছুদিন পর প্যারালাইজড হয়ে বন্দীর মৃত্যু ঘটতে বাধ্য। প্রথমে বন্দীকে হাঁটু গেড়ে বসানো হয়। তারপর হাঁটুর দুই হাড়ের সংযোগস্থলে একটি চ্যালা কাঠ বসিয়ে দেয়া হয় যাতে পায়ে রক্ত সঞ্চালন বন্ধ হয়ে যায়।

জোরপূর্বক পানি খাওয়ানোর নির্যাতনে প্রথমে অপরাধীকে একটি টেবিলের উপর শক্ত করে বাঁধা হয় এবং জোরপূর্বক ঠেসে ঠেসে পানি গেলানো হয়। তারপর একটি তক্তা পেটের উপর বিছিয়ে নির্যাতনকারী তার উপর শুয়ে পড়ে। এতে পাকস্থলি থেকে পানি সব বের হয়ে পড়ে।

পানিতে নিমজ্জন বলে আরেক ধরণের শাস্তির ব্যবস্থা রয়েছে। বন্দীর মাথা একটি প্লাস্টিকের ব্যাগে পুরে ফেলে পা উলটিয়ে মাথা পানিতে ডুবিয়ে দেয়া হয়। দীর্ঘ সময় ধরে এই শাস্তি দেয়া হলে বন্দী মারা যায়।

পানিতে আরেক ধরণের নির্যাতন করা হয়। একটি পানি ভর্তি ট্যাঙ্কিতে বন্দীকে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়। ট্যাঙ্কে পানির উচ্চতা থাকে বন্দীর নাকের উচ্চতার খানিক বেশি। তাই বন্দীকে সর্বদাই পায়ের আঙ্গুলের উপর দাঁড়িয়ে থাকতে হয়, এসময় হাত পেছন থেকে বাঁধা থাকে।

মাঝে মাঝে অফিসারগণ তাদের মনের সুখ মেটাতে উল্টো করে ঝুলিয়ে মুগুর সদৃশ লাঠি দিয়ে এমন বর্বরতার সহিত বন্দীকে প্রহার করে যে হাড় ভেঙ্গে শরীর থেকে বের হয়ে চলে আসতো। বিষয়টা আরো ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতো যখন অফিসারের মেজাজ চরমে থাকতো।

জ্ঞান বিজ্ঞানের নানা পরীক্ষা নিরীক্ষায় এই বন্দীদের ব্যবহার করা হতো। গ্যাস চেম্বারে বিভিন্ন গ্যাসের পরীক্ষা নিরীক্ষায় এবং নতুন কোনো ঔষধের পরীক্ষা করতে এদের ব্যবহার করা হতো। সবচেয়ে পৈশাচিক ব্যাপার হলো- অস্ত্রোপচারের সময় কোনো চেতনানাশক বা অ্যানেস্থেশিয়া ব্যবহার করা হতো না। হাতভাগা বন্দীদের আর্তচিৎকার পরীক্ষারত ডাক্তার ও বিজ্ঞানীদের পাশবিক আনন্দ দিত।

Kwon Hyok নামক এক নিরাপত্তা প্রধান বলেন- একবার তাকে বলা হয়েছিল ৩-৪ জন বন্দীকে ধরে নিয়ে আসতে। একটি দম বন্ধ হয়ে আসে এমন গ্যাসের পরীক্ষার জন্য তাদের ব্যবহার করা হবে। স্বাভাবিকভাবেই তিনি একটি পরিবারকে নিয়ে আসেন। একটি কাচের তৈরি চেম্বারে তাদের ঢুকিয়ে গ্যাসটি ছেড়ে দেয়া হল, পুরো পরিবারটি যখন বেঁচে থাকার জন্য প্রচন্ড আকুলিবিকুলি করছিলো, তখন মা এবং বাবা বাচ্চা দুটির গালে মুখ দিয়ে তাদের বাঁচানোর চেষ্টা করছিলো, কিন্তু বিধি বাম। পুরো পরিবারটিকেই গ্যাসে অবরুদ্ধ হয়ে মারা যেতে হয়েছিল। এ তো গেল একটি ঘটনা মাত্র। প্রতিনিয়ত ভয়াবহ সব পরীক্ষা নিরীক্ষা করা হতো এই হতভাগা মানুষগুলোর উপর।

ক্যাম্প ২২ বর্তমানে বন্ধ বলে ঘোষণা করা হয়েছে। ক্যাম্প ২২ বন্ধ হলেও মুক্তি পায়নি তার বন্দীরা। ২০,০০০ বন্দীর মাঝে মোটামুটি ৮,০০০ বন্দীকে ক্যাম্প ২৫ এ পাঠানো হয়েছে। কিন্তু বাকিদের কোনো হদিস নেই। ধারণা করা হয়, ২০০৯ সালের মুদ্রা মুল্যহ্রাসের ফলে ক্যাম্প অথোরিটি পর্যাপ্ত পরিমাণ খাবার কিনতে না পারায় এবং সেই বছর ক্যাম্পের নিজস্ব ফলন অনেক কম হওয়ায় অনেক বন্দী অনাহারে মারা যায়। ২০১২ সালে স্যাটেলাইটে তোলা ছবিতে দেখা যায় গার্ড হাউজগুলো ভেঙ্গে গেছে, কিছু স্থাপনা ভেঙ্গে যাবার পথে।



roarbangla থেকে সংগৃহীত
০ Likes ২ Comments ০ Share ৩৩৫ Views