Site maintenance is running; thus you cannot login or sign up! We'll be back soon.

শামীম চৌধুরী

১০ বছর আগে

কোলাহল ছেড়ে কিছুদিন

সোনাডাঙা বাসটার্মিনালে যখন ধাক্কা খেতেখেতে এসে কোচটা থামলো, তখন রাত প্রায় আটটা বেজে গেছে। আলো আধারীর আবছায়াতে দীর্ঘদিনের চেনা জায়গাটা অচেনা মনে হচ্ছে।কত শত অপরিচিত মুখ আরতাদের উৎসুক দৃস্টি ছাপিয়ে আমি নতুন আগন্তুক রিক্সায় চড়ে বসলাম। যেতে হবে অনেক দূর। শহর মাড়িয়ে গ্রাম। মৈষাঘুনির বাদাল গাঁয়ে। নদী পার হতে হবে ভেবে মনটা বিচলিত হয়ে উঠেছে।

ভৈরব নদী। নদীর পাশে জেলখানা গড়ে উঠায় ঘাটটা জেলখানা ঘাট হিসাবে পরিচিত। প্রতিদিন শত শত মানুষ এপার ওপার হয়। একমাত্র বাহন নৌকা। ইঞ্জিনের নৌকা। আঞ্চলিক নাম ভটভটি।

নৌকায় চড়া হয়না সচরাচর। আবহাওয়াটা অনুকূলে মনে হচ্ছেনা। কালো ভারী মেঘে আকাশ ছেয়ে গেছে। ঝড়োভাব। শংকা জাগছে। মাঝনদীতেই যদি ঝড় উঠে। যদি নৌকাডুবি হয়। তাছাড়াসংগে বর্ষাতিনেই। বৃষ্টি নামলে ভিজতে হবে। তার চেয়ে বড় সমস্যা হলো গাঁয়ের পথ, এত বেশি আঁধারে ডুবে যাবে যে, ভ্যান রিকসা কিছুই পাওয়া যাবেনা। ভোগান্তির শেষ থাকবে না। এলোমেলো ভাবতে ভাবতে সামনে এগোচ্ছি। যতই এগোচ্ছি, মুর্হুমুহু ফুরফুরে বাতাস গাঁয়ে আছড়ে পড়ছে। বুঝতে বাকি নেইযে, নদী নিকটবর্তী।

 নিকষ কালো আঁধারের পরত কেটে নৌকা তীরের দিকে ছুটে চলছে। বিশালবক্ষা ভৈরব নদীর যেদিকে তাকাই শুধু নৌকা আর নৌকা। নৌকাগুলোর পেটে টিমটিম করে জ্বলছে ছোট ছোট হারিকেন। দূর থেকে জোনাক পোকার মতো মনে হচ্ছে। নৌকা ছেড়ে ভ্যান। বাসায় পৌঁছতে রাত হয়ে গেলো। পাক্কা আটঘন্টা বাসজার্নি করেছি। শুয়ে বসে শান্তি পাচ্ছিনা। সারাদিনের বাসের দুলুনিটা এখনও মাথার ভিতর দোলাচ্ছে। ঘুমোতে পারবোনা নিশ্চিত। বাধ্য হয়ে স্লিপিং পিল খেলাম। ঘুম ভেঙেছে দেরিতে। মাথাটা তবু ভার। কাটতে সময় লাগবে বোঝা যাচ্ছে।

সাড়ে তিনশো কি. মি. পথ পাড়ি দেয়া এখন আর সহ্য করতে পারিনা। একসময় খুব উচ্ছ্বাস হতো। জার্নিতেও আনন্দ পেতাম। নিজেকে যেন নতুন কিছুর মাঝে আবিস্কার করতাম। সকল কর্ম ব্যস্ততা পিছনে ফেলে নিজের শহরে যাওয়ার আনন্দটাই ছিল আলাদা। কয়েকদিন ধরে চলতো কেনাকাটা। গোছগাছ। তারপর একদিন খুব ভোরে উঠে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত বাসে চড়ে বসা। শহরের কোলাহল পিছনে ফেলে বাস যখন ছুটে চলতো। কী যে আনন্দ হতো !     

অনেক দিন কোথাও যাওয়া হয়না। একটু হাওয়া বদল দরকার। অস্থির হয়ে উঠেছিলাম। যে হারানো কৈশোরে পায়ের ছাপ এখনও জ্বলজ্বল করছে, সেখানে যাবার উদগ্র বাসনা চেপে বসেছে। মনে মনে স্থির করলাম। এবার যে কয়দিন বেড়াবো। বোনের বাড়িতে গিয়ে থাকবো। ওদের গ্রামটা বেশ সুন্দর। যেন পটে আকা ছবি। একটা গল্প লিখবো। গ্রাম্য পরিবেশে খোলা আকাশের নীচে বসে লেখার অনুভুতিটা একেবারে অন্যরকম। গল্পের প্লট হবে তাৎক্ষনিক। 

 

 

অথচসকালেউঠেমাথাভার।মনটাওভারহয়েগেলো।প্রাণচঞ্চলতাফিরেপাচ্ছিনা।যতোটাভালোলাগারকথাততোটালাগছ

০ Likes ৫ Comments ০ Share ৫৩৩ Views