স্থানের গতরে গল্পের চাষ / কল্পের খামারে নয়
চিত্রনাট্যগুলি আমি নিজেই লিখি। এইটা ‘ডিরেক্টর’স ইগো’-র জন্য না; সিনেমার মালিকানা বা অঁতরশিপ নিশ্চিতকরণের ফিকির থেকেও নয়…সত্যি করে বললে,আমার সবচেয়ে বড় স্বপ্ন হলো কোন একদিন সু-প্রভাতে ঘুম ভেঙ্গে পাশ ফিরতেই দেখবো একটা তরতাজা স্ক্রিপ্ট পাশ টেবিলে আমার জন্য অপেক্ষা করছে…! যতক্ষণ পর্যন্ত সেটি না হচ্ছে মনে হয় লেখা করা জারি রাখতে হবে। এও শুদ্ধ লেখাজোখা আয়াসসাধ্য ব্যাপার নয়। এটা প্রমোদ করার মত বস্তু না। আমি আপ্রাণ চেষ্টা করেছি চিত্রনাট্যকারদের সাথে মিলে কাজ করার কিন্তু দেখালাম কি জানেন…লেখতে জানা সিনেমা উৎপাদকদের সাথে চিত্রনাট্যকারদের সংজ্ঞাপনে ঝামেলা হয়। ‘কেন হয়’ তা আমি পরিষ্কার করে বলতে পারবো না। তবে,ক্যাঁচাল যে লাগবে তা ধ্রুবসত্য। এক্ষণে সিদ্ধান্ত নিলাম যদি আমি-ই লিখতে পারি তাহলে মিছা কেন লেখক মশাইয়ের সাথে হুজ্জত করা!? আমাকে বলতেই হবে (যেভাবেই হোক না কেন) আমি চলিত কেতার বাইরে এসে পর্দাকাহিনী লিখে থাকি। আপনি দেখতেই পাচ্ছেন আমি সিনেমা পরিচালকের ভূমিকায় লিখি,কাহিনী প্রকৌশলীর নামে নয়। আমি লিখি চিত্রকল্প দিয়া। এবং পর্দাকাহিনীর বেলায় আমার কাছে সবচাইতে ইম্পোর্টেন্ট হইলো কাহিনীটা কোথায় ঘটতেছে সেই স্পেস টা। পরন্তু, আপনি যদি ঐটা জানেন তাহলে চরিত্রগুলি ইজিলি কাজ নির্ধারণ করতে পারবেন। স্পেস আপনাকে এও বলে দেবে সম্ভাব্য চরিত্রগুলি কি হবে,তারা কেন ঐ স্পেসে আছে বা থাকে এবং অন্যান্য আরও যা যা আপনি দেখতে/দেখাতে চান তার সব…। একাদিক্রমে সবকিছুই আপনার লেখার খাতায় ছবি হয়ে ভেসে উঠবে যদি আপনি স্পেস টা একবার মনেমনে বন্দী করতে পারেন। তাই লেখার টেবিলে বসার আগে লোকেশন চষে ফেলার কাজটা সেরে ফেলি। মুসিবত হলো লেখার আগে,লেখার সময় বিবিধ ভাবনার মেঘ বৃষ্টি হয়ে বলপয়েন্টের কালিতে ঝরে পড়ার মেঘ গুড় গুড় আওয়াজ তুলেও শেষমেষ ভাবনাগুলি আর গল্পের দানায় জমে উঠে না। আমি জানি পর্দায় কী কী জরুর দেখতে চাই না। কিন্তু বিলকুল জানি না কি হেরিতে প্রাণ মোর করে জর জর! চলচ্চিত্র নির্মাণের সমগ্র প্রক্রিয়াটাই আমার নিকট এসকল প্রশ্নের উত্তর সংগ্রহের জার্নি। উত্তরমালা গাঁথা সম্পন্ন হবার আগ পর্যন্ত তাই আমি ছবি করে যেতে চাই। এই জবাবগুলি কখনো পাই সেটে বসে,কখনো পাই এডিটিংয় টেবিলে,কখনোবা সিনেমার পয়লা স্ক্রিনিংয়ের তিনমাস পর কোন এক প্রাতঃরাশের থালায়। কোন প্রজেক্টের প্রথম দফায় আমি ঠিক করে ফেলার খুব চেষ্টা করি কোন জঁরায় সিনেমাটি তৈয়ার করবো। আমার শৈশব কেটেছে এন্তার জঁরা মুভি দেখে যেমন-ওয়েস্টার্ন,হরর,ক্রাইম, এবং সকল প্রকার জঁরা মুভি আমাকে মোহিত করতো… তাই,আমি আমার প্রতিটি সিনেমা রকম রকম জঁরায় বানানোর চেষ্টা করি। আমার মনে হয় এরূপ প্রতীতিই সিনেমাগুলিকে তাদের মত করে অরিজিন্যাল হয়ে উঠার অবকাশ দেয়।
নজির হিসেবে ‘ইন দ্য মুড ফর লাভ’এ আমরা দেখি দুইজন মানুষের গল্প,আপনাকে বোরিং করার সমূহ সম্ভাবনা আছে এই গল্পের। কিন্তু,এ গল্পকে দুইজন মানুষের প্রেম কাহিনীতে পরিণত করার পরিবর্তে সাস্পেন্সের মোড়কে একটি থ্রিলার কাহিনী শোনাতে চেয়েছি। ছায়াচিত্রে চরিত্রদ্বয়ের আবির্ভাব ঘটে ভিক্টিমের চেহারায় তারপর তারা এহেন দশার কারণ খুঁজে পেতে তদন্তে নামে,বোঝার চেষ্টা করে কেন তাদের সাথে এমনটা ঘটলো। খুবি সংক্ষিপ্ত দৃশ্যের বিজ্ঞাপনের ফাঁকে ফাঁকে বিরতিহীন উত্তেজনার তাপে নির্মাণ করা হয়েছে ‘ইন দ্য মুড ফর লাভ’_কুসুম-কুসুম ওম বিচ্ছুরিত সিনেমার শিরোনামার মেজাজ-ই সম্ভবত দর্শককে অস্বস্তিতে ফেলে দেয়। না বলা কথাগুলো মুদ্রিত হোক সুরের মূর্চ্ছনায় পর্দায় অবিরাম কথার পায়চারি সিনেমার জন্য ফলদায়ক হয় না। গীতবাদ্য ও আবহ সঙ্গীত বরাবর আমার সিনেমার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ। কদাচিৎ আমি সিনেমার জন্য মৌলিক সুর আয়োজন করেছি,কারণ সঙ্গীতকারদের সাথে কাজ করাটা আমার কাছে বড্ড খিটমিটে ব্যাপার বলে মনে হয়। বুঝতেই পারছেন…তারা কথা বলে সঙ্গীতের ভাষায়,আমার জবাব হয় ভিজ্যুয়াল ল্যাঙ্গুয়েজে! ফলাফল – সিংহভাগ সময় আমরা পরস্পরকে বুঝে উঠতে পারি না। সিনেমার সঙ্গীত মানে শুধু শ্রবণের মামলা নয় তা পর্দায় প্রজ্জ্বলিত হওয়া চাই। এটি একটি রসায়ন যার দোস্তি কেবলমাত্র ইমেজের সাথে এবং এটি অনুভূতি ও বোধির সংযোগবিন্দুতে হাইপার লিঙ্ক হিসেবে কাজ করে থাকে। সুতরাং,আমি বিষয়টিকে সামাল দেওয়ার জন্য যা করে থাকি তা হলো চলতি পথে যখনই কোন জাদুকরী সঙ্গীত/মূর্চ্ছনা আমার মনোযোগ ছিনিয়ে নেয় তথা আমাকে চাক্ষুষ কোন অভিজ্ঞতা দেয় তা আমি ভুলে যাই না; নগদ নগদ তা কপি করে সংরক্ষণ করি পরে কোন এক সিনেমায় জুড়ে দেবো বলে।
চিত্রনাট্যগুলি আমি নিজেই লিখি। এইটা ‘ডিরেক্টর’স ইগো’-র জন্য না; সিনেমার মালিকানা বা অঁতরশিপ নিশ্চিতকরণের ফিকির থেকেও নয়…সত্যি করে বললে,আমার সবচেয়ে বড় স্বপ্ন হলো কোন একদিন সু-প্রভাতে ঘুম ভেঙ্গে পাশ ফিরতেই দেখবো একটা তরতাজা স্ক্রিপ্ট পাশ টেবিলে আমার জন্য অপেক্ষা করছে…! যতক্ষণ পর্যন্ত সেটি না হচ্ছে মনে হয় লেখা করা জারি রাখতে হবে। এও শুদ্ধ লেখাজোখা আয়াসসাধ্য ব্যাপার নয়। এটা প্রমোদ করার মত বস্তু না। আমি আপ্রাণ চেষ্টা করেছি চিত্রনাট্যকারদের সাথে মিলে কাজ করার কিন্তু দেখালাম কি জানেন…লেখতে জানা সিনেমা উৎপাদকদের সাথে চিত্রনাট্যকারদের সংজ্ঞাপনে ঝামেলা হয়। ‘কেন হয়’ তা আমি পরিষ্কার করে বলতে পারবো না। তবে,ক্যাঁচাল যে লাগবে তা ধ্রুবসত্য। এক্ষণে সিদ্ধান্ত নিলাম যদি আমি-ই লিখতে পারি তাহলে মিছা কেন লেখক মশাইয়ের সাথে হুজ্জত করা!? আমাকে বলতেই হবে (যেভাবেই হোক না কেন) আমি চলিত কেতার বাইরে এসে পর্দাকাহিনী লিখে থাকি। আপনি দেখতেই পাচ্ছেন আমি সিনেমা পরিচালকের ভূমিকায় লিখি,কাহিনী প্রকৌশলীর নামে নয়। আমি লিখি চিত্রকল্প দিয়া। এবং পর্দাকাহিনীর বেলায় আমার কাছে সবচাইতে ইম্পোর্টেন্ট হইলো কাহিনীটা কোথায় ঘটতেছে সেই স্পেস টা। পরন্তু, আপনি যদি ঐটা জানেন তাহলে চরিত্রগুলি ইজিলি কাজ নির্ধারণ করতে পারবেন। স্পেস আপনাকে এও বলে দেবে সম্ভাব্য চরিত্রগুলি কি হবে,তারা কেন ঐ স্পেসে আছে বা থাকে এবং অন্যান্য আরও যা যা আপনি দেখতে/দেখাতে চান তার সব…। একাদিক্রমে সবকিছুই আপনার লেখার খাতায় ছবি হয়ে ভেসে উঠবে যদি আপনি স্পেস টা একবার মনেমনে বন্দী করতে পারেন। তাই লেখার টেবিলে বসার আগে লোকেশন চষে ফেলার কাজটা সেরে ফেলি। মুসিবত হলো লেখার আগে,লেখার সময় বিবিধ ভাবনার মেঘ বৃষ্টি হয়ে বলপয়েন্টের কালিতে ঝরে পড়ার মেঘ গুড় গুড় আওয়াজ তুলেও শেষমেষ ভাবনাগুলি আর গল্পের দানায় জমে উঠে না। আমি জানি পর্দায় কী কী জরুর দেখতে চাই না। কিন্তু বিলকুল জানি না কি হেরিতে প্রাণ মোর করে জর জর! চলচ্চিত্র নির্মাণের সমগ্র প্রক্রিয়াটাই আমার নিকট এসকল প্রশ্নের উত্তর সংগ্রহের জার্নি। উত্তরমালা গাঁথা সম্পন্ন হবার আগ পর্যন্ত তাই আমি ছবি করে যেতে চাই। এই জবাবগুলি কখনো পাই সেটে বসে,কখনো পাই এডিটিংয় টেবিলে,কখনোবা সিনেমার পয়লা স্ক্রিনিংয়ের তিনমাস পর কোন এক প্রাতঃরাশের থালায়। কোন প্রজেক্টের প্রথম দফায় আমি ঠিক করে ফেলার খুব চেষ্টা করি কোন জঁরায় সিনেমাটি তৈয়ার করবো। আমার শৈশব কেটেছে এন্তার জঁরা মুভি দেখে যেমন-ওয়েস্টার্ন,হরর,ক্রাইম, এবং সকল প্রকার জঁরা মুভি আমাকে মোহিত করতো… তাই,আমি আমার প্রতিটি সিনেমা রকম রকম জঁরায় বানানোর চেষ্টা করি। আমার মনে হয় এরূপ প্রতীতিই সিনেমাগুলিকে তাদের মত করে অরিজিন্যাল হয়ে উঠার অবকাশ দেয়।
নজির হিসেবে ‘ইন দ্য মুড ফর লাভ’এ আমরা দেখি দুইজন মানুষের গল্প,আপনাকে বোরিং করার সমূহ সম্ভাবনা আছে এই গল্পের। কিন্তু,এ গল্পকে দুইজন মানুষের প্রেম কাহিনীতে পরিণত করার পরিবর্তে সাস্পেন্সের মোড়কে একটি থ্রিলার কাহিনী শোনাতে চেয়েছি। ছায়াচিত্রে চরিত্রদ্বয়ের আবির্ভাব ঘটে ভিক্টিমের চেহারায় তারপর তারা এহেন দশার কারণ খুঁজে পেতে তদন্তে নামে,বোঝার চেষ্টা করে কেন তাদের সাথে এমনটা ঘটলো। খুবি সংক্ষিপ্ত দৃশ্যের বিজ্ঞাপনের ফাঁকে ফাঁকে বিরতিহীন উত্তেজনার তাপে নির্মাণ করা হয়েছে ‘ইন দ্য মুড ফর লাভ’_কুসুম-কুসুম ওম বিচ্ছুরিত সিনেমার শিরোনামার মেজাজ-ই সম্ভবত দর্শককে অস্বস্তিতে ফেলে দেয়। না বলা কথাগুলো মুদ্রিত হোক সুরের মূর্চ্ছনায় পর্দায় অবিরাম কথার পায়চারি সিনেমার জন্য ফলদায়ক হয় না। গীতবাদ্য ও আবহ সঙ্গীত বরাবর আমার সিনেমার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ। কদাচিৎ আমি সিনেমার জন্য মৌলিক সুর আয়োজন করেছি,কারণ সঙ্গীতকারদের সাথে কাজ করাটা আমার কাছে বড্ড খিটমিটে ব্যাপার বলে মনে হয়। বুঝতেই পারছেন…তারা কথা বলে সঙ্গীতের ভাষায়,আমার জবাব হয় ভিজ্যুয়াল ল্যাঙ্গুয়েজে! ফলাফল – সিংহভাগ সময় আমরা পরস্পরকে বুঝে উঠতে পারি না। সিনেমার সঙ্গীত মানে শুধু শ্রবণের মামলা নয় তা পর্দায় প্রজ্জ্বলিত হওয়া চাই। এটি একটি রসায়ন যার দোস্তি কেবলমাত্র ইমেজের সাথে এবং এটি অনুভূতি ও বোধির সংযোগবিন্দুতে হাইপার লিঙ্ক হিসেবে কাজ করে থাকে। সুতরাং,আমি বিষয়টিকে সামাল দেওয়ার জন্য যা করে থাকি তা হলো চলতি পথে যখনই কোন জাদুকরী সঙ্গীত/মূর্চ্ছনা আমার মনোযোগ ছিনিয়ে নেয় তথা আমাকে চাক্ষুষ কোন অভিজ্ঞতা দেয় তা আমি ভুলে যাই না; নগদ নগদ তা কপি করে সংরক্ষণ করি পরে কোন এক সিনেমায় জুড়ে দেবো বলে।
Comments (0)
মুক্তগদ্যের আকারে স্রষ্টার বন্দনা ভাল হয়েছে ছোট ভাই। শুভকামনা রইল।