Site maintenance is running; thus you cannot login or sign up! We'll be back soon.

ধ্রুব তারা

৯ বছর আগে

ওং কার-ওয়াইয়ের মাস্টার কামরায়

ওং কার-ওয়াইয়ের শ্রেণীকক্ষে    আমার সিনেমা লাইনে আসার পেছনে অন্য কোন কিছুর চাইতে ভূ-গোলের প্রভাব অদ্ভুৎভাবে বেশী আছে। জন্মাবধি পাঁচ বছর পর্যন্ত সাংহাইয়ে বেড়ে উঠা এই আমাকে একদিন মা-বাবার হাত ধরে হংকংয়ে অভিবাসী হতে হয়। মহাচীনের ভিতরে হলেও সাংহাইয়ের উপভাষা আর হংকংয়ের উপভাষায় অমিল ছাড়া কোন মিল নেই।   আমি,আমরা নতূন এলাকায় কারো সাথে ভাব তো দূরের কথা আলাপ জমানোর সুবিধাটুকুন পেয়ে উঠতাম না। অবস্থাদৃষ্টে প্রতিবেশীদের মুখের ভাষা বোঝার আশা আমরা জলাঞ্জলি দিয়েছিলাম। আম্মাজনের অবস্থা আমার চেয়ে করুণ না হলেও ভালোও ছিল না। সম দশায় থাকা মা-বেটা প্রায়ই ছবিঘরে যেতাম ছায়াছবি দেখতে…মূলত মা-ই আমাকে নিয়ে যেতেন। শুধুমাত্র এইখানেই সংজ্ঞাপনের জন্য কোন মাধ্যমিক ভাষা/উপভাষা জানতে হয়নি কখনো। এটি এক জবান-কোলাহল অতীত ভাষা। এটা ইমেজের নিকষিত হেমে জন্ম নেয়া এক বিশ্বজনীন ভাষা।

আমার জেনারেশনের আর দশটা মানুষের মত প্রথম অবস্থায় আমিও পৃথিবী চিনতে/জানতে শিখছিলাম সিনে-মা’র হাত ধরে আর পরবর্তীতে অবশ্যই টেলিভিশনের চোখ দিয়ে। তবে বছর কুড়ি আগে হলে আমি গানকে বেছে নিতাম আমার মনের ভাবানুবাদের তরে। আর পঞ্চাশ বছর পূর্বে হলে আলবৎ তা হতো সাহিত্যকর্ম।   আমি বেড়ে উঠেছি ইমেজের গুলিস্তানে। এটা খুব স্বাভাবিক যে আমি একদিন ভিজ্যুয়াল বা দৃষ্টিনন্দন নিয়ে পড়াশোনা করবো। বিশ্ববিদ্যালয়ে উত্তীর্ণ হবার পর বিষয় হিসেবে আমি গ্রাফিক্স ডিজাইনকে বেছে নিয়েছিলাম; কারণ ঐ আমলে হংকংয়ে সিনেমার তরে কোন শিক্ষালয় স্থাপিত হয়ে থাকে নাই। যেসব বান্দা সিনেমা পড়তে চাইত তারা ততদিনে জেনে গেছে হয় য়ুরোপ নতুবা মার্কিন মুল্লুক তাদের শেষ ঠিকানা। আমার জন্য যা ছিল তারছিঁড়া কল্পনা। গ্রাফিক ডিজাইনে পাঠ চুকিয়ে শ্রম বাজারে যখন ঢুকু ঢুকু করছি তখন পরবাসে শিক্ষিত সিনেমাপড়ুয়ারা মাত্র ঘরে ফিরে আসছে; শুরু থেকে তাদের প্রচেষ্টা ছিল হংকংয়ের সিনেমা ও শিল্প-কলাকুশলীদের মাঝে নব তরঙ্গের উন্মেষ ঘটানো। সৌভাগ্যবান আমিও এক পর্যায়ে ভীড়ে গেলাম এই দলের সাথে।   আমার শুরুটা হয়েছিলো টিভি স্টেশনে। সেখানে একবছর কাজ করেছি। নির্মাতা হিসেবে অভিষেকের আগ পর্যন্ত টানা দশ বছর আমি সিনেমার জন্য চিত্রনাট্য লিখেছি। ‘ইন দ্য মুড ফর লাভ’ আমার দশ নাম্বার সিনেমা। যদি বুকে হাত দিয়ে বলতে বলেন_তাহলে একজন সফল (?) ইমেজ কারিগর বা রংমিস্ত্রী হয়ে উঠতে পেরেছি কি না সে কথা এখনো বলতে পারবো না! এখনও আমি নিজেকে দর্শক বৈ ভিন্ন কিছু ভাবি না…সেই দর্শক যে রূপালী পর্দার পেছনে উঁকি দিয়ে ভবিষ্যৎ দেখতে চায়। যখনই সিনেমা করি তখনই আমি ফিরে যেতে চেষ্টা করি চলচ্চিত্রপ্রেমী এক মনস্বীতায় যা কামনা করে নতুন বইয়ের পাতার গন্ধ শুঁকে দেখার মত চমচম অনূভুতি। এবং সতত বিশ্বাস করি  আমি প্রথমত শুধু দর্শককূলের জন্য সিনেমা বানাই। এর বাইরে যে অন্য কোন কৈফিয়ত নাই তা ভাববেন না। তবে হ্যাঁ, এটি নিঃসন্দেহে অন্যতম কারণগুলির একটি। এবং অন্য কারণগুলি খুবি ব্যক্তিগত ও ততোধিক গোপনীয়।

০ Likes ০ Comments ০ Share ৪০৪ Views

Comments (0)

  • - সুলতানা সাদিয়া

    বেশ ঝরঝরে ভাষায় উপন্যাসের গল্প এগিয়ে যাচ্ছে। অপেক্ষায় রইলাম পরের পরিচ্ছেদের। (এসছেে>এসেছে)শুভকামনা।

    - নুসরাত জাহান আজমী

    ইস, কি সুন্দর... ভালো লাগছে... অপেক্ষায় থাকলাম, বাকি পরিচ্ছেদ পড়ার জন্য... emoticons