দৃশ্য এক
কোন একটা বাসে উঠল দুজন। বাসে উঠলেই দুজনের ঝগড়া বাঁধে। সবচেয়ে বেশি ঝগড়া হয় সিট নিয়ে। বাসের সিট বিষয়টা ঝগড়া করার জন্যে ভালো।
-তুমি জানালার পাশে বসলা ক্যান? এপাশ দিয়ে লোকজন হাঁটবে। আমার গায়ে লাগবে।
-তাও তো কথা!
-কান্ডজ্ঞান নাই তোমার? শেখোনাই কিছু?
-মাত্র শিখলাম।
-কি?
-জানালার পাশে প্রেমিকাকে বসতে দিলে কাণ্ডজ্ঞান হয়।
দৃশ্য দুই
স্মার্টফোনে গান শুনে আরাম নেই। দ্রুত চার্জ শেষ হয়ে যায়। তবুও একটা হেডফোন থাকতে হয়। প্রেমিক প্রেমিকা একটা হেডফোন ভাগাভাগি করে কানে নিলে কুৎসিত গানও শুনতে ভালো লাগে।
-কি গান এটা!
-ক্যান?
-শুনতে বিশ্রি লাগছে!
-কি বললে?
-প্রথম লাইনটা বিশ্রি ছিলো। এখন শুনে আরাম পাচ্ছি।
-সত্যি?
-হ্যা। হেডফোনটা ভালো। ক্লিয়ার চেঁচামেচি শোনা যাচ্ছে।
-আমার হেডফোন দেও।
-নেও!
দৃশ্য তিন
জানালা থেকে হুহু করে হাওয়া আসছে। মেয়েটার চুল উড়ছে। প্রেমিকার এলোমেলো চুলের সাথে বাতাসের লুকোচুরির দৃশ্য প্রেমিকের জন্যে পরম আরাধ্য একটি বিষয়। পরম আরাধ্য বিষয় যখন চোখের সামনে ঘটে তখন মুখ হা হয়ে যায়।
-হা করে কি দেখছো?
-পলান্তিস!
-মানে কি!
-বাতাস চুলের সাথে পলান্তিস খেলছে। শুদ্ধ ভাষায় হবে লুকোচুরি।
-মশা ঢুকবে মুখে।
-গিলে ফেলবো।
-ইয়াক!
-ভালোবাসি খুব।
দৃশ্য চার
লাভ ইউ না বলে ভালোবাসি বললে প্রেমিকার চোখে লজ্জা খেলা করে। মেয়েটার চোখভর্তি লজ্জা খেলছে এখন। মেয়েটা জানালা দিয়ে বাইরে তাকায়। শীতের বিকেল শুষ্ক হয় খুব। কিন্ত এখন দেখা যাচ্ছে তরতাজা। মেরিল পেট্রোলিয়াম জেলির বিজ্ঞাপনের মত।
দৃশ্য পাঁচ
যানজটের গিট্টু লেগে গেছে। খুলছে না। মেয়েটা ঘুমিয়ে পড়েছে ছেলেটার বাহুতে। ছেলেটার খুব ইচ্ছে করছে মেয়েটার মুখের দিকে তাকাতে।এখনো সেখানে কিছু চুল আছড়ে আছড়ে পড়ছে। পুরোপুরি মুখ দেখা যাচ্ছে না। যতখানি দেখা যাচ্ছে সেখানে বোধ হয় আঁকা হয়ে যাচ্ছে বিশুদ্ধ প্রেমের কোন এক চিত্রকর্ম, যেই চিত্রকর্ম দৃশ্য পাঁচকে শেষ হতে দিচ্ছে না। কখন শেষ হবে সেটা হয়তো জানে কোন একজন ট্রাফিক পুলিশ।
Comments (9)
ফিরে আসা মুহূর্তরা, তোমার কাছে কি কখনো ফিরে যায় না?
দারুণ ! ছুঁয়ে যাওয়া মুহুর্তগুলো ভালো লাগ্লো খুব :)
তবে নামকরন এ "ফিরে আসে মুহুর্তরা" এর স্থলে "ফিরে আসা মুহূর্ত " দিলে বেশি ভালো লাগত মনে হয় :) তবে এটা একান্তই ব্যাক্তিগত মত আমার !
শুভেচ্ছা ! ভালো থাকুন!
নামকরণটা নিয়ে ততোটা মাথা ঘামানো হয় নাই। আপনি যেটা বলেছেন, সেটাও ফেলে দেয়ার মতো না। তবে সিদ্ধান্তটা আরও একটু ভেবে চিন্তে নিতে হবে। ধন্যবাদ আলভিনা। আপনাদের ভালো লাগাই তো আমার অনুপ্রেরণা। ভালো থাকুন সতত।
নির্বাক তুমি, হৃদয় তোমার জাজ্বল্যমান পাথর প্রদীপ
আমার ভালোবাসার উঁই পোকারা পুড়ছে শুধু বিরহের অনলে।
অনেক দীর্ঘ কিন্তু কী সাবলীল কবিতা।
খুব খুব মুগ্ধতা পুরো কবিতা জুড়ে।
অনেক অনেক শুভকামনা...
আপনার মুগ্ধতা আমাকে আপ্লুত করেছে মাসুম ভাই। ধন্যবাদ আপনাকে।
বাহ!
কবিতাটি যেন এক ইতিহাস। নিজেই যেন ধারণ করে আছে একটা সময়ের চিত্র। ভালো লাগা রইল ঘাস ফুল। সুন্দর লিখেছেন। সাবলীল শুরুর পর নিয়ন্ত্রন রেখেই সমাপ্তি টেনেছেন। শেষ করেছেন তীব্র এক টুইষ্ট দিয়ে
ভালো লাগা রইলো
একজন পাকা জহুরীর মতো মন্তব্য। দারুণ অনুপ্রাণিত হলাম নীলদা। ভালোবাসা নিবেন।