Site maintenance is running; thus you cannot login or sign up! We'll be back soon.

ঊনবিংশ শতাব্দীর বিশিষ্ট বাঙালি কবি, প্রাবন্ধিক ও সাহিত্য সমালোচক অক্ষয়চন্দ্র সরকারের জন্মদিনে শুভেচ্ছা


ঊনবিংশ শতাব্দীর বিশিষ্ট বাঙালি কবি, প্রাবন্ধিক ও সাহিত্য সমালোচক অক্ষয়চন্দ্র সরকার। রায়বাহাদুরের পুত্র হয়েও ব্রিটিশ-বিরোধী আন্দোলনের প্রবল সমর্থক অক্ষয়চন্দ্র দেশীয় শিল্পের পুনরুজ্জীবন ও স্বায়ত্তশাসনের উপযোগী শিক্ষাব্যবস্থা প্রবর্তনের পক্ষপাতী ছিলেন। পুনরুজ্জীবন ও স্বায়ত্তশাসনের উপযোগী শিক্ষাব্যবস্থা প্রবর্তনের পক্ষপাতী ছিলেন। রাজনৈতিক ক্ষেত্রে রেন্ট বিল ও এজ অব কনসেন্ট বিল (অ্যাক্ট ১০)-এর বিরুদ্ধে প্রবল ব্রিটিশ-বিদ্বেষী ও স্বদেশী দ্রব্য প্রচলনের সমর্থক হলেও ছিলেন কংগ্রেসি মধ্যপন্থী। বঙ্গীয় সাহিত্য সম্মিলনের ষষ্ঠ অধিবেশনের মূল সভাপতি, বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ-এর সহ-সভাপতি ও ভারতসভার প্রথম যুগ্ম সহ-সম্পাদকের পদ আবৃত করেন অক্ষয়চন্দ্র। ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের ১৮৮৬ অধিবেশনে উৎসাহী কর্মীরূপে যোগ দিয়েছিলেন। রায়তদের স্বার্থরক্ষায়ও সচেষ্ট ছিলেন। ১৮৪৬ সালের আজকের দিনে তিনি ভারতের হুগলি জেলার চুঁচুড়ায় জন্ম গ্রহণ করেন করেন। আজ এই কবির ১৬৭তম জন্মদিন। জন্মদিনে কবিকে ফুলেল শুভেচ্ছ।

অক্ষয়চন্দ্র সরকার ১৮৪৬ সালের ১১ ডিসেম্বর বর্তমান হুগলি জেলার চুঁচুড়ার কদমতলায় জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পৈতৃক নিবাস কণকশালী। অক্ষয়চন্দ্রের পিতা ছিলেন রায়বাহাদুর গঙ্গাচরণ সরকার সে যুগের বিশিষ্ট কবি ও সাহিত্যিক ছিলেন । অক্ষয় সরকার তার শিক্ষা জীবন শুরুর করেন হুগলি কলেজিয়েট স্কুলে পরবর্তীতে কলকাতার প্রেসিডেন্সী কলেজে। ছাত্রাবস্থায়তে তিনি বঙ্কিমচন্দ্রের সম্পাদিত বঙ্গদর্শন পত্রিকায় লেখা শুরু করেন। ১৮৭২ সালে বঙ্গদর্শনের প্রথম সংখ্যায় তাঁর উদ্দীপনা নামে একটি প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়। এরপর অক্ষয়চন্দ্র ১৮৭২ সালে মাসিক নবজীবন নামে একটি পত্রিকা প্রকাশ করেন। নবজীবন চলেছিল ১৮৭৮ সাল অবধি। হেমচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়, নবীনচন্দ্র সেন, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও রামেন্দ্রসুন্দর ত্রিবেদীর মতো লেখকেরা এই জনপ্রিয় চিন্তাশীল পত্রিকাটিতে লেখালেখি করেন। রামেন্দ্রসুন্দরের প্রথম বাংলা রচনা এই পত্রিকাতেই প্রকাশিত হয়। এছাড়াও ১৮৭৬ খ্রিষ্টাব্দে চুঁচুড়া থেকে সাধারণী নামে একটি সাপ্তাহিক পত্রিকার প্রকাশনা শুরু করেন। চুঁচুড়া থেকে প্রকাশিত সাধারণী পত্রিকাটির উদ্দেশ্য ছিল রাজনৈতিক আলোচনা ও হিন্দুসমাজের মূল দৃঢ় করা। বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, ইন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়, বঙ্গবাসী পত্রিকার যোগেন্দ্রচন্দ্র বসু প্রমুখ প্রথম সারির সাহিত্যিকের রচনা এই পত্রিকায় প্রকাশিত হত।

সাহিত্যক্ষেত্রে বঙ্কিমচন্দ্রের ভাবশিষ্য কবি অক্ষয়চন্দ্র সরকার ১৮৭৪ সালে গোচারণের মাঠ নামে একটি যুক্তাক্ষর বর্জিত শিশুপাঠ্য কাব্য ও সেই বছরেই শিক্ষানবীশের পদ্য নামে আর একটি কাব্যগ্রন্থ রচনা করেন। সারদাচরণ মিত্রের সহযোগিতায় সম্পাদনা করেছিলেন প্রাচীন কাব্যসংগ্রহ নামে একটি কাব্যসংকলনও। ১৮৭৪ থেকে ১৮৭৭ সালের মধ্যে খণ্ডে খণ্ডে প্রকাশিত এই কাব্যে স্থান পায় বিদ্যাপতি, চণ্ডীদাস, গোবিন্দদাস, মুকুন্দ চক্রবর্তী প্রমুখ মধ্যযুগীয় কবিদের কাব্যকৃতি। অবশ্য কবিতা অপেক্ষা গদ্যরচনাতেই তিনি অধিক খ্যাতিলাভ করেন। ১৮৭৪ সালে রচিত সমাজ সমালোচনা এবং মৃত্যুর পরে ১৯২৩ সালে প্রকাশিত রূপক ও রহস্য তাঁর গদ্য রচনার শ্রেষ্ঠ নিদর্শন। ১৯০৪ সালে বঙ্গভাষার লেখক গ্রন্থের পিতাপুত্র প্রবন্ধটি তাঁর একটি মূল্যবান সাহিত্যকীর্তি। এই গ্রন্থে পিতা গঙ্গাচরণ সরকার ও নিজের সাহিত্যজীবনের কথা লিখেছিলেন তিনি। তাঁর রচিত অন্যান্য গ্রন্থগুলির মধ্যেঃ ১। গোচারণের মাঠ, ২। শিক্ষানবীশের পদ্য (১৮৭৪), গদ্যগ্রন্থঃ ৩। সমাজ সমালোচন (১৭৮৪),৪। সনাতনী, ৫। কবি হেমচন্দ্র (১৩১৮), ৬। মোতিকুমারী (১৩২৪), ৭। রূপক ও রহস্য (১৩৩০), ৮। পিতাপুত্র (আত্মজীবনী), ৯। মহাপূজা, ১০। সংক্ষিপ্ত রামায়ণ ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।

উনবিংশ শতাব্দীর বাংলা সাহিত্যের অন্যতম কবি ও সাহিত্য সমালোচক অক্ষয়চন্দ্র সরকার ১৯১৭ সালের ২ অক্টোবর মৃত্যুৃবরণ করেন। আজ এই কবির ১৬৭তম জন্মদিন। জন্মদিনে কবিকে ফুলেল শুভেচ্ছ।

সূত্রঃ ১। বাঙালি চরিতাভিধান। প্রথম খণ্ড। সাহিত্য সংসদ। জানুয়ারি ২০০২
২। বাংলা বিশ্বকোষ। প্রথম খণ্ড। নওরোজ কিতাবিস্তান। ডিসেম্বর, ১৯৭২

০ Likes ৬ Comments ০ Share ৭৯৪ Views

Comments (6)

  • - শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

    ভাল লাগল।

    • - তাহমিদুর রহমান

      অনেক কিছু জানলাম

    - চারু মান্নান