Site maintenance is running; thus you cannot login or sign up! We'll be back soon.

M Jahirul Islam

১০ বছর আগে

ইসলামে নামাজের গুরুত্ব

আল্লাহ মানুষকে তার এবাদতের জন্যেই সৃষ্টি করেছেন। শুধু মানুষ নয়; মানুষ ও জ্বীন—উভয় জাতিকে আল্লাহ তার এবাদত তথা তার দাসত্বের জন্য সৃষ্টি করেছেন।
আল্লাহ বলেন, ‘আমি মানব ও জ্বীন জাতিকে একমাত্র আমার এবাদতের জন্য সৃষ্টি করেছি।’ (সুরা আয যারিয়াত, আয়াত : ৫৬)
ফলে তিনি মানুষের জন্য কিছু দৈহিক, আত্মিক ও আর্থিক এবাদতের প্রচলন করেছেন। দৈহিক এবাদতের মাঝে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ও মহান এবাদত হল সালাত বা নামাজ।
নামাজ এমন একটি এবাদত যাকে আল্লাহ তার মাঝে এবং তার বান্দার মাঝে সম্পর্ক স্থাপনের মাধ্যম সাব্যস্ত করেছেন। নামাজের মাধ্যমে একজন মানুষ আল্লাহর সঙ্গে দেওয়া প্রতিশ্রুতির বার বার প্রতিফলন ঘটায়। সে তার প্রভু বা স্রষ্টাকে বুঝাতে সক্ষম হয় যে, সে তার প্রতিশ্রুতি পালন করে যাচ্ছে। এ নামাজের মাধ্যমেই মানুষ আল্লাহর নৈকট্য লাভ করে। আল্লাহর সঙ্গে মানুষের সম্পর্কের বন্ধন সুদৃঢ় ও মজবুত হয়। ইহকাল ও পরকালের মুক্তির পথ কংটকমুক্ত হয়।
নামাজ ব্যক্তি, পরিবার, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় জীবনে শান্তি, শৃঙ্খলা, ভ্রাতৃত্ব ও মমতাবোধ ফিরিয়ে আনে। গড়ে উঠে সামাজিক ঐক্য। নামাজের মাধ্যমে ছগীরা তথা ছোট ছোট গুনাহগুলো হতে পরিত্রাণ লাভ করে এবং দুনিয়া ও আখেরাতের কল্যাণ লাভ হয়।
নামাজের বৈশিষ্ট্য : নামাজ এমন এক এবাদত যা সারা বছর দৈনিক পাঁচ বার আদায় করতে হয়। মৃত্যু ছাড়া আর কোনো অবস্থাতেই নামাজ মাফ হয় না, এমনকি মৃত্যুশয্যাতেও নামাজ হতে বিরত থাকার কোনো বিধান নেই।
মিরাজের রজনীতে আল্লাহ তাআলা প্রথমে পঞ্চাশ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ করেন। তারপর আল্লাহ মানুষের প্রতি দয়া করে তা কমিয়ে পাঁচ ওয়াক্তে নিয়ে আসেন। তবে সওয়াব ও বিনিময় পঞ্চাশ ওয়াক্তেরই জারি রাখেন। সুতরাং যে ব্যক্তি দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করবে আল্লাহ তাকে পঞ্চাশ ওয়াক্ত নামাজ আদায়ের সওয়াব প্রদান করবেন।
নামাজ একমাত্র এবাদত যা আল্লাহ তাআলা সাত আসমানের উপরেই ফরজ করাকে শ্রেয় মনে করেছেন। তাই রাসুল (সা.) যখন মেরাজে গমন করেন তখন আল্লাহ তাআলা সরাসরি—কোনো প্রকার মাধ্যম ছাড়াই রাসুলকে (সা.) নামাজের দায়িত্ব দেন। এতে নামাজের মহত্ত্ব, মর্যাদা ও গুরুত্বের প্রতিফলন ঘটে। রব ও স্রষ্টার সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপনে অভিপ্রায়ী একজন মুসলমানের কর্তব্য হল, সে এ মহান এবাদতটির মর্যাদা ও গুরুত্ব অনুধাবন করবে। এবং তার যথার্থতা বজায় রাখতে সচেষ্ট হবে।
এছাড়া ও নামাজের অনেক লাভ ও ফজিলত আছে। নিম্নে এর কয়েকটি ফজিলত আলোচনা করা হল।
(১) আল্লাহর একাত্ববাদ ও মুহাম্মদ (সা.) এর রেসালাতের স্বাক্ষ্য দেওয়ার পর নামাজ হল ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ একটি রুকন বা স্তম্ভ। রাসুল (সা.) ঈমাননের পরেই নামাজের কথা উল্লেখ করেন। অতঃপর তিনি বলেন, ‘ইসলামের ভিত্তি পাঁচটি। ১. এ কথার সাক্ষ্য দেওয়া যে, আল্লাহ ছাড়া আর কোনো সত্যিকার ইলাহ নেই এবং মোহাম্মদ (সা.) আল্লাহর রাসুল। ২. নামাজ কায়েম করা। ৩. জাকাত প্রদান করা। ৪. রমজানের রোজা রাখা। ৫. বাইতুল্লাহর হজ করা।’ (বোখারি, মুসলিম)
তিনি আরও বলেন, ‘সবকিছুর মূল হল ইসলাম, আর ইসলামের খুঁটি নামাজ, আর ইসলামের শীর্ষ পীঠ হল জিহাদ।’ (তিরমিযি)
(২) নামাজ আল্লাহর নিকট সবচেয়ে প্রিয় ও সর্বোত্তম আমল।
রাসুল (সা.) বলেন, ‘তোমরা অটুট ও অবিচল থাক, গণনা করো না, তোমরা কাজ করো, আর মনে রাখবে তোমাদের সর্বোত্তম আমল হল নামাজ, একজন মোমিন অবশ্যই সর্বদা ওজুর সংরক্ষণ করতে থাকে।’ (ইবনে মাজাহ)
(৩) নামাজ হলো নূর বা আলো। রাসুল (সা.) বলেন, নামাজ নূর-আলো। দান খয়রাত প্রমাণ স্বরূপ। ধৈর্য উজ্জলতা আর কোরআন তোমার পক্ষে প্রমাণ অথবা তোমার বিপক্ষে প্রমাণ।’ (মুসলিম)
(৪) নামাজ আল্লাহর নৈকট্য ও উচ্চ-মর্যাদা লাভের উপকরণ।
হযরত সাওবান (রা.) মহানবীকে (সা.) এমন আমল সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেন যা তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবে, রাসুল (সা.) উত্তরে বললেন, তুমি বেশি করে আল্লাহর জন্য সেজদা-নামাজ আদায় করতে থাক, কারণ তোমার প্রতিটি সেজদার কারণে আল্লাহ তোমার মর্যাদা বৃদ্ধি করবেন এবং তোমার গুনাহ মাপ করবেন।’ (মুসলিম)
মহানবী (সা.) আরও বলেন, ‘বান্দা আল্লাহর সবচেয়ে নৈকট্য লাভ করে যখন সে সেজদারত থাকে। সুতরাং তোমরা সেজদার অবস্থায় বেশি বেশি প্রার্থনা কর।’ (মুসলিম)
(৫) নামাজ পাপ মোচনকারী এবং ছোট ছোট গুনাহের প্রায়শ্চিত্ত স্বরূপ। রাসুল (সা.) বলেন, ‘পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ, এক জুমা হতে আরেক জুমা মধ্যবর্তী গুনাহ সমূহের প্রায়শ্চিত্ত করে, যতক্ষণ পর্যন্ত সে কবিরা গুনাহে লিপ্ত না হয়।’ (মুসলিম)
এবং রাসুল (সা.) গুনাহ প্রায়শ্চিত্তের একটি দৃষ্টান্ত এভাবে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, ‘যদি তোমাদের কারো বাড়ির দরজায় একটি পুকুর থাকে আর তাতে দৈনিক পাঁচবার গোসল করে, তার শরীরে কোনো ময়লা আবর্জনা অবশিষ্ট থাকে ? সাহাবিরা উত্তরে বললেন, না। রাসুল (সা.) বলেন, অনুরূপ ভাবে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ; আল্লাহ তাআলা দৈনিক পাঁচবার নামাজ আদায় করা দ্বারা গুনাহ-পাপাচারগুলো ধুয়ে মুছে ফেলেন।’ (মুসলিম)
তিনি আরও একটি দৃষ্টান্ত বর্ণনা করে বলেন, ‘মুসলিম বান্দা যখন একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে নামাজ আদায় করে তখন তার গুনাহ এমনভাবে ঝরে পড়তে থাকে যেমন এই বৃক্ষের পাতা ঝরে পড়ে।’ (আহমদ)
(৬) সর্ব প্রথম বান্দার নামাজের হিসাব নেওয়া হবে। তাতে হয় সে মুক্তি পাবে অথবা ধ্বংস হবে।
নবী করিম (সা.) বলেন, ‘কেয়ামতের দিন সর্বপ্রথম বান্দার নামাজের হিসাব হবে। যদি নামাজ ঠিক হয় তবে তার সকল আমল সঠিক বিবেচিত হবে। আর যদি নামাজ বিনষ্ট হয় তবে তার সকল আমলই বিনষ্ট বিবেচিত হবে।’ (তিরমিযি)
(৭) সফলতা ও সম্মানিত স্থান জান্নাতে প্রবেশকে আল্লাহ তাআলা নামাজের উপরই স্থাপন করেছেন।
আল্লাহ তিনি বলেন, ‘মোমিনগণ সফলকাম, যারা তাদের সালাতে নম্রতা ও ভীতির সঙ্গে দণ্ডায়মান হয়।’ (সুরা আল-মোমিন, আয়াত : ১-২)
অতঃপর বলেন, ‘আর যারা তাদের সালাতে যত্নবান, তারাই জান্নাতের ওয়ারিশ—যারা ফিরদাউসের ওয়ারিশ হবে এবং তথায় তারা চিরকাল থাকবে।’ (সুরা আল-মোমিন, আয়াত : ৯,১০,১১)
মনে রাখতে হবে, নামাজ যেহেতু আল্লাহর নিকট সবচেয়ে প্রিয় আমল আল্লাহর নৈকট্য লাভের ও মর্যাদা বৃদ্ধির কারণ, নামাজের হেফাজত করলে মুক্তি, অন্যথায় ধ্বংস ইত্যাদি। তাই নিঃসন্দেহে বলা যায়, নামাজ একটি মহান কাজ যার গুরুত্ব দেওয়া অতীব জরুরি। আর তা বাস্তবায়িত হয় নামাজ, তার বিধানাবলী তথা রুকন ও ওয়াজিবসমূহ শিক্ষা, সালাতে একাগ্রতা ও পবিত্রতা অর্জনের মাধ্যমেই।
উপরোক্ত ফজিলত লাভের উপযোগী কে হবেন ? : যার নামাজে নিম্ন বর্ণিত বিষয় পাওয়া যাবে, সেই একমাত্র উক্ত ফজিলত লাভের উপযুক্ত বলে বিবেচিত হবে।
(১) শরয়ি পদ্ধতি, যে পদ্ধতিতে রাসুল (সা.) নামাজ আদায় করতেন। শর্ত পূর্ণ করা, নামাজের রুকন ও ওয়াজিব যথাযথ ভাবে আদায় করা এবং সুন্নতগুলো গুরুত্বের সঙ্গে আদায় করতে চেষ্টা করা।
(২) নামাজ খুশু ও একাগ্রতার সঙ্গে আদায় করা।
আল্লাহ বলেন, ‘মোমিনগণ সফলকাম, যারা তাদের সালাতে নম্রতা ও ভীতির সঙ্গে দাঁড়ায়।’ (সুরা আল-মোমিনম আয়াত : ১,২)
রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে কোনো মুসলমানের জন্য যখন ফরজ নামাজের সময় উপস্থিত হয়, অতঃপর সে সুন্দরভাবে ওজু করে এবং সুন্দরভাবে রুকু সেজদা করে, এতে তার অতীতের সকল গুনাহ মাফ হয়ে যায়। যদি সে কোনো কবিরা গুনাহ না করে, আর এভাবে সর্বদা চলতে থাকে।’ (মুসলিম)
(৩) সময় মত নামাজ আদায় করা।
রাসুল (সা.)-কে জিজ্ঞাসা করা হল, আল্লাহর নিকট কোনো আমল সবচেয়ে বেশি প্রিয়? তিনি বলেন, ‘সময়-মত নামাজ আদায় করা, আবার জিজ্ঞাসা করা হল তারপর কোনোটি? উত্তরে তিনি বলনে, মাতা পিতার সঙ্গে সদাচরন করা। আবার জিজ্ঞাসা করা হল তার পর কোনোটি? উত্তরে বললেন আল্লাহর পথে জিহাদ করা।’ (বোখারি)
(৪) মসজিদে জামাতের সঙ্গে নামাজ আদায় করা। জামাতে নামাজ আদায় ওয়াজিব।
নামাজ ফরজ হওয়ার হিকমত ও উপকারিতা : আল্লাহ নামাজকে তার ও বান্দার মাধ্যমে সম্পর্ক স্থাপনের মাধ্যম সাব্যস্ত করেছেন, আল্লাহ অবশ্যই তার বান্দাদের মুখাপেক্ষী নন। তিনি তার বান্দাদের অবস্থা ও স্বভাব সম্পর্কে পরিপূর্ণ জ্ঞান রাখেন। তিনি মহা মর্যাদাবান, পরাক্রমশীল। তিনি বান্দার ডাকে সাড়া দেন এবং তাদের দোয়া কবুল করেন।
আল্লাহ মানুষের স্বভাব সম্পর্কে পরিপূর্ণ জ্ঞান রাখেন, কারণ তিনি তাদের স্রষ্টা। তিনি বলেন, ‘যিনি সৃষ্টি করেছেন তিনি কি জানেন না ? তিনি সূক্ষ্মদর্শী সম্যক অবগত।’ (সুরা মুলুক )
আল্লাহ মানুষের দুর্বলতা, অক্ষমতা, দরিদ্রতা ও অভাব—সবই জানেন। তিনি এও জানেন যে, তাদের এমন এক মহা শক্তি বিদ্যমান থাকা প্রয়োজন, যার নিকট তারা বিপদে আশ্রয় নিবে, তার কাছে সাহায্য প্রার্থনা করবে, অতপর আল্লাহ নিজেই তার বান্দাদের জন্য এর পথ ও প্রবেশদ্বার খুলে দেন। দৈনিক পাঁচ বার নির্দিষ্ট সময়ে বান্দা সে পথ ও প্রবেশদ্বারের ফটক খুলবে এবং এ ছাড়াও যখন ইচ্ছা প্রবেশ করতে পারবে।
উপরোক্ত বিষয়গুলো অনুধাবন করা ছাড়াও নামাজ ফরজ হওয়ার হিকমত ও কিছু উপকারিতা জানা অতীব জরুরি। আর তা নিম্নরূপ—
(১) আল্লাহর জিকিরের প্রতিষ্ঠা করা। নামাজ মানুষকে তার স্রষ্টার কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। সুতরাং নামাজে অন্তরের উপস্থিতি প্রয়োজন। নামাজ শুধু প্রাণহীন নড়াচড়ার নাম নয়।
এই নামাজ সম্পর্কে রাসুল সা. বলেন, ‘নামাজেই আমার চোখ জুড়ানো ও শীতলতা নিহিত।’ (নাসাঈ)
(২) নামাজ একজন মুসলমানের মনোবল চাঙ্গা করে এবং শক্তি বৃদ্ধি করে। ফলে সে তার জন্য ইহকালীন জীবনের কষ্ট ক্লেশ এবং জাগতিক সকল প্রকার বিপদ আপদ মোকাবিলা করা সহজ হয়।
আল্লাহ বলেন, ‘এবং তোমরা ধৈর্য ও নামাজের মাধ্যমে সাহায্য প্রার্থনা কর। অবশ্যই তা কঠিন কিন্তু বিনীতগণের জন্যে নয়। যারা ধারণা করে যে নিশ্চয় তারা তাদের প্রতিপালকের সঙ্গে মিলিত হবে এবং তারা তারই দিকে প্রতিগমন করবে। (সুরা বাকারাহ, আয়াত : ৪৫,৪৬)
একারণেই যখন রাসুল (সা.) কোনো বিষয়ে চিন্তিত হতেন তাড়াতাড়ি নামাজে মগ্ন হতেন। নামাজের মাধ্যমে একজন মোমিন সরাসরি তার প্রভুর সান্নিধ্য পৌঁছে। এবং আল্লাহর নিকট বিপদাপদ ও দুঃশ্চিন্তার কারণগুলো তুলে ধরেন। তার রহমতের ফটক উন্মুক্ত বা খুলে দেওয়ার জন্য আকুতি পেশ করেন।
একজন সত্যিকার মোমিন অবশ্যই নামাজে তৃপ্তি, প্রশান্তি ও সন্তুষ্টি অনুভব করে। সে আল্লাহ আকবর বলে নামাজ আরম্ভ করার সময় অনুভব করে নিশ্চয় আল্লাহ তাআলা সব কিছু হতে বড়। এবং সুরা ফাতেহা পড়ার সময় যখন—(আলহামদুলিল্লাহ) বলে তখন আল্লাহর নেয়ামতের অনুভূতিতে তার মন ভরে যায়। আর যখন সে (আর রাহমানির রাহিম) পড়ে তখন সে অনুভব করে যে আমি রহমানের প্রতি কতই না মুখাপেক্ষী। তখন তার মানস্পটে আশা আরও বিশাল আকার ধারণা করে। আর যখন পড়ে (মালিকি ইয়াওমিদ্দিন) তখন আল্লাহর বড়ত্ব ও ইনসাফের কথা তার অন্তরে ফুটে উঠে আর ভয়ভীতি অনুভূত হয়। অতঃপর সে স্বীকার করতে বাধ্য হয় যে, এবাদত একমাত্র আল্লাহর জন্য, আর তা আদায় করতে হলে প্রয়োজন আল্লাহর সাহায্য। সে প্রার্থনা করে এ বলে (ইয়্যাকা নাবুদু ওয়া ইয়্যাকা নাসতায়িন) অতঃপর সে স্মরণ করে যে, সে সর্বদা সঠিক পথের সন্ধান পাওয়ার মুখাপেক্ষী। তাই সে আল্লাহর নিকট দোয়া করে (ইহ দিনাসসিরাতাল মুস্তাকিম) আমাকে সরল পথ দেখাও।
(৩) নামাজ মোমিনের অন্তর ও মনুষত্বকে শক্তিশালী করতে সহযোগিতা করে এবং তাকে কল্যাণকর কাজে উৎসাহ জোগায় ও খারাপ কাজ হতে বিরত থাকার জন্য শক্তি জোগায়। এছাড়া নামাজ অন্তরে আল্লাহর ধ্যানকে বদ্ধমূল করে এবং ওয়াক্ত সংরক্ষণের প্রতিশ্রুতি পূরণে সমর্থন দেয় এবং প্রবৃত্তির চাহিদা ও আলস্যকে পরাজিত করে।
আল্লাহ বলেন, ‘মানুষ তো সৃজিত হয়েছে অতিশয় অস্থির চিত্তরূপে। যখন বিপদ তাকে স্পর্শ করে তখন সে হয় হা-হুতাশকারী। আর যখন কল্যাণ তাকে স্পর্শ করে তখন হয় অতি কৃপণ। তবে নামাজিরা ব্যতীত, যারা তাদের নামাজে সদা নিষ্ঠাবান।’ (সুরা মাআরিজ, আয়াত : ১৯-২৩)
আল্লাহ আরও বলেন, ‘এবং নামাজ কায়েম কর। নিশ্চয় নামাজ অন্যায় ও অশ্লীল কাজ হতে বিরত রাখে।’ (সুরা আনকাবুত, আয়াত : ৪৫)
নামাজ ত্যাগকারীর বিধান : নামাজ ত্যাগ করার মত আর কোনো বড় গুনাহ হতে পারে না। নামাজ ত্যাগ করার মানে হচ্ছে ইসলামের স্তম্ভ-খুঁটি ভেঙে চূর্ণবিচুর্ণ করা। ইসলামের মাঝে নামাজ সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা থাকা সত্ত্বেও নামাজ পরিত্যাগ করা যে কত বড় গুনাহ তা বর্ণনা দেওয়ার অবকাশ রাখে না।আমরা কোরানের আয়াতগুলোর প্রতি লক্ষ্য করলে দেখতে পাই যে আল্লাহ নামাজ ত্যাগকারীদের নয়, বরং ভুলে নামাজ আদায় করেনি এমন ব্যক্তিকে কঠিন হুমকি দিয়েছেন, আর যারা নামাজ ত্যাগকারী ও নামাজ নষ্টকারী, তাদের কি পরিণতি হবে, তা বলাই বাহুল্য।
নামাজ ভুলে যাওয়া ব্যক্তিদের সম্পর্কে আল্লাহ বলেন, ‘আর পরিতাপ সেই নামাজিদের জন্য, যারা তাদের নামাজে অমনোযোগী।’ (সুরা মাঊন, আয়াত : ৪-৫)
নামাজ বিনষ্টকারীদের সম্পর্কে আল্লাহ বলেন, ‘তাদের পর আসল অপদার্থ পরবর্তীগণ, তারা নামাজ নষ্ট করল ও লালসা পরবশ হল; সুতরাং তারা অচিরেই কুকর্মের শাস্তি প্রত্যক্ষ করবে।’ (সুরা মারয়াম, আয়াত : ৫৯)
অসংখ্য হাদিস দ্বারাও নামাজ ত্যাগ কারীর ক্ষতি প্রমাণিত হয় এবং কোনো কোনো হাদিসে নামাজ ত্যাগকারীকে কাফেরও বলা হয়।
রাসুল সা. এর বাণী, তিনি বলেন, ‘ব্যক্তি ও কুফর-শিরকের মাঝে ব্যবধান হল নামাজ ত্যাগ করা।’ (মুসলিম)
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের মাঝে আর অমুসলিমদের মাঝে চুক্তি হল নামাজ, যে ব্যক্তি নামাজ ছেড়ে দিল সে কাফের হয়ে যাবে।’ (আহমদ)

০ Likes ১ Comments ০ Share ১৪৩৩ Views

Comments (1)

  • - কেতন শেখ

    সুন্দর কবিতা! কবিকে অভিনন্দন।

    - তৌফিক মাসুদ

    দারুন অনুভূতির প্রকাশ। শুভকামনা। 

    - বাঙলা বেলায়েত

    ভাল লাগা জানালাম।

    Load more comments...