Site maintenance is running; thus you cannot login or sign up! We'll be back soon.

ইতুর বিয়ে



ভালোবাসা কখনো নিশ্চুপ হয়ে যায়। খুব অসহায়ও হয়ে যায়। সমাজ, সংসার, পরিস্থিতি সবকিছুই মিলে কখন যে স্বাভাবিক জীবন চলার গতিকে পাল্টে দেয় তা বুঝাই যায়না। যদি মানুষ আগে থেকেই আঁচ করতে পারতো তার সাথে কি ঘটতে চলেছে তাহলে সে অবশ্যই এমন কিছু করতো যা তার জীবন চলার গতিকে পাল্টে না দেয়, আর যদি সে কোন ভাবেই কিছু করতে না পারতো তাহলে আগে থেকেই সেই পরিস্থিতি মেনে নেওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকতে পারতো। কিন্তু আজ ইমন কিংবা ইতুর সাথে এমন কিছুই ঘটতে চলছে যা কখনোই তারা ভাবেনি।

হঠাৎ করেই ইতুর বাড়িতে মানুষজন এসে ভীড় করে। তাকে শাড়ি পরানো হয়েছে পাত্রপক্ষকে দেখানোর জন্য। ইতুর কাছে সবটাই স্বপ্ন মনে হচ্ছে। ইতু কিছু বুঝতে পারার আগেই সব শেষ হয়ে যাচ্ছে। আর ইমন সে তো সকালেই ইতুর সাথে অনেক কথা বলছিলো। তাদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কি হবে সবকিছু নিয়েই কথা হয়েছে। কিন্তু এতসব পরিকল্পনা কি এই হঠাৎ ঝড়ে লন্ডভন্ড হয়ে যাবে! নিয়তির এই অবিচার হয়তো নিয়তির স্রষ্টাও পছন্দ করছেননা, কিন্তু স্রষ্টারই বা কি করার আছে তা না করে!

ঘড়ির কাটায় প্রায় চারটা পনেরো বাজে। ইমনের চোখ ভর্তি জল। সে ইতুকে খুব ভালোবাসে। এই অসময়ে এরকম কিছু ঘটবে তা তার কল্পনাতেও ছিলোনা।

ইমন ইতুকে বারবার ফোন দিয়েও পাচ্ছেনা। এক সময় ইতুই ফোন দেয় তাকে। ইমন ইতুকে মনে প্রচন্ড জোর নিয়ে বলে "তুমি চলে আসো ", এরপর যা করার তা আমি করবো। কিন্তু ইতু কিছু বলতে পারছেনা, কারণ সে এতগুলো মানুষের মাঝ থেকে কি করে পালিয়ে আসবে? কি করেইবা একা আসবে এতোটা পথ? ইতু খুব কান্না করছে শুধু আর বলছিলো "আমি পারলামনা তোমাকে নিয়ে ঘর বাঁধতে, আমাকে মাফ করে দিও। " ইমন খুব চিৎকার দিয়ে ফোন কেটে দিলো। আর অঝোরে কাঁদতে থাকলে। আসলেই ইতু আর ইমনের পারিপার্শ্বিক পরিবেশটা এতোটাই অস্বাভাবিক যে তাদের পক্ষে কোনকিছু করাই সম্ভব নয়। একটু পর আবার ইতুর ফোন -
-আমি এখন রুমে একা। জানি তুমি খুব কষ্ট পেয়েছ, কিন্তু আমি কি কম পেয়েছি?
-তুমি কেন কষ্ট পাবে? বিয়ে করতেছো বড়লোক পরিবারে; আদর, ভালোবাসা কোনকিছুর অভাব হবেনা তোমার।
-কিসের আদর, ভালোবাসা! তোমার আদর, ভালোবাসার কাছে দুনিয়ার সবকিছুই আমার কাছে মরীচিকা।
-যদি তাই ভাবতে তাহলে এখন তুমি আমার বুকে থাকতে অন্য কারও বুকে নয়।
-আমি অন্যের ঘরে থাকলেও মনটা তোমার কাছে থাকবে। তোমার সাথে আমি সব সময় দেখা করবো। যা চাও সবকিছু দিবো।
-আমি চাইনা এসব। তুমি যদি সত্যিই কারও ঘরনী হয়ে যাও তাহলে আমার সাথে আর কোনদিন সম্পর্ক থাকবেনা। আমি চাইনা আমার জন্য তোমার সংসারে আগুন লাগুক, আমার জন্য তুমি সবার কাছে খারাপ হও।
-কেউ জানবেনা সত্যি। তোমার সাথে কথা না বলে আমি যে থাকতে পারবোনা।
-ভুলে যাবে আমাকে। স্মামী, সংসার, সন্তান নিয়ে তুমি একদিন ব্যস্ত হয়ে যাবে আর আমাকে তখন তোমার মনেই পরবেনা।
-পরবে অবশ্যই। তুমি যদি আমার সাথে সম্পর্ক না রাখো তাহলে আমি সুইসাইড করবো।
-আচ্ছা বলবো, আর যেদিন ভুলে যাবে সেদিন থেকে আর বলবোনা।
-আমার কাছে চলে এসো। তোমার বুকে মাথা রেখে খুব কাঁদতে ইচ্ছে করছে।
-কোনদিন আমাকে স্পর্শ করতে দিলেনা, ধর্ম যাবে বলে। আর আজ বলছো এ কথা! আবার তোমার স্মামী কি তোমাকে আমার বুকে মাথা রাখতে দিবে?
-আমার যদি স্মামী বলে কেউ থাকে সে হলে তুমি। তোমার সাথে দেখা করতে আমি কারও কাছে অনুমতি চাইবো কেন?
-এতো আবেগের কথা। এখনো তুমি গভীর আবেগের মাঝে আছ। বাস্তবতা এরকম নয়, তুমি যেমনটি ভাবছো।
-আমি আবেগের বশে না, সত্যিই বলছি।
-এতো আরও বেশি আবেগের কথা।
-আমি রাখি এখন, মা আসছে।

বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা হলো। পশ্চিম দিগন্তের লাল আভা ক্রমশ আঁধারে তলিয়ে যাচ্ছে। ইতুর কোন সাড়া নেই অনেক্ষণ ধরেই। ইমনও আর ইতুকে ফোন করছেনা, কেমন যেন একটা দ্বিধা আর কষ্ট ইমনের মধ্যে সৃষ্টি হয়ে চলছে। ইমন পারছেনা কোন কিছু করতে, কাউকে কিছু বলতেও। বুক ফেটে বারবার কান্না আসছে, কিন্তু কাঁদতেও পারছেনা।

ইমন কারও সাথে তেমন মিশতে পারছেনা। কেমন যেন একটা চাপা কান্না তাকে সব সময় তাড়া করে বেড়াচ্ছে। সবার থেকে নিজেকে আড়াল করে রাখতেই সে ঘুমের মাঝে ডুবে থাকার সিদ্ধান্ত নিলো।

রাত প্রায় এগারোটা বাজে। ইতু অনেক ফোন করেও ইমনকে পাচ্ছেনা । অনেকগুলো ফোন করার পরও ইমনের কোন সাড়া না পেয়ে ফোন রেখে দিলো । এরপর ইমন ঘুম থেকে উঠে যখন ইতুর এতো মিসড কল দেখলো তখনই ফোন বেক করলো কিন্তু ইতুও তখন কোন সাড়া দিচ্ছিলোনা । একটু পর মেসেজ আসলো ইতুর কাছ থেকে । আর মেসেজের লেখা দেখে ইমনের এতোটাই কষ্ট লাগলো যে সে তার কাছে থাকা দুই পাতা ঘুমের ট্যাবলেট খেয়ে বিছানায় শুয়ে পড়লো । কি এমন লেখা ছিলো যা ইমনের সহ্য হয়নি ! কিইবা এতো কষ্ট পেল যে সে গভীর ঘুমের জন্য ব্যকুল হয়ে পড়লো ।

০ Likes ০ Comments ০ Share ৩৪৮ Views

Comments (0)

  • - প্রলয় সাহা

    দশ বছর পর
    অর্ন্তদহনে বারুদ পোড়া গন্ধ
    যৌথবাহিনীর অবিরাম তল্লাশি
    হয়ে যায় বিফল,বিধিবাম
    বালকের সন্ধান আজও কেউ দিতে পারেনি।।

    দাদাভাই বেশ লেগেছে

     

    - নাসির আহমেদ কাবুল

    প্রায় বছরখানেক পর নক্ষত্রে এসেছি তোমার আমন্ত্রণে। অনেক দিন আগের দেখা নক্ষত্রের সঙ্গে এখনকার মিল খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। এক কথায় বেশ সুন্দর-পরিপাটি অর্থবহ আয়োজন।

     

    তোমার কবিতাটি বেশ ভালো সন্দেহ নেই। কিন্তু বেখেয়াল ভুল পীড়া দেয় বড্ড! যেমন অন্তর্বাস, ছুঁয়ে, গিঁট।

    না শব্দটি আলাদা। এটি কোন শব্দের সঙ্গে বসে না। জানতো না হবে।

    বিধিবাম যেমন এক শব্দ, তেমনি বারুদপোড়া এক শব্দ হবে।

     

    শুভেচ্ছা জেনো।

    • - লুৎফুর রহমান পাশা

      ধন্যবাদ কাবুল ভাই। ঠিক করে দিবো

       

    - মো: মালেক জোমাদ্দার

    খুব সুন্দর পাশা ভাই, শুভেচ্ছা রইল।