Site maintenance is running; thus you cannot login or sign up! We'll be back soon.

Badrul Islam Prince

১০ বছর আগে

ইডোলার ডায়রী...!

কফির মগে চুমুক দিয়ে সুমন বাইরে তাকালো। শান্ত বিকেল। মনোমুগদ্ধকর পরিবেশ। বারের পাশেই রয়েছে সুইমিং পুল। আবাল-বৃদ্ধ-বণিতা মেতেছে সাঁতারে।সে ভাবতে লাগলো কি সুন্দরই না এদের জীবন! কোন ভাবনা নেই, নেই কোন পিছু টান। এখানে আছে শুধু জীবনকে উপভোগ করার বিচিত্র প্রয়াস।সে ভাবতে ভাবতে একবারে চিন্তার গভীরে গিয়ে পৌছলো। তার ভাবনায় ছেদ পরলো-এক্সকিউমি মি বলে ঠিক তার বিপরৃত চেয়ারে বসলো এক বিদেশিনী।
বলে রাখা ভালো-সুমন একটি কনফারেন্সে যোগ দিতে মালয়শিয়ায় আগমন। উঠেছে এ মেনমেইড রিসোর্টে। রিসোর্টি পাঁচ তারকা মানের। কী নেই এখানে। জীবন বাঁচাতে আর জীবন সাজাতে তার সব কিছুই এখানে পরিপূর্ণ।পাঁচ দিনের এ কনফারেন্সে আজ তার দ্বিতীয় দিন। তার রুম নম্বর সি-3030। ডাবল সিট বিশিষ্ট এ রুমটি খুবই চমৎকার করে সাজানো-গোছানো।তার রুমমেট ছিল ইতালির কোন এক ডেলিগেট কিন্তু সে না আসায় আস্ত এ রুমটি সুমন একাই ইউজ করছে। তার পাশের রুমটি কোন কনফারেন্সের কোন ডেলিগেন না তারা সদ্য বিবাহিত কাপল। আশ্চয়ের বিষয় এই যে তারা এ রিসোর্টে উঠেছেন শুধু মাত্র বিয়ে করে এখানেই হানিমুন করবেন বলে।এই নব দম্পতির পাত্রীটি হলেন সেই বিদেশিনী। কফি খেতে খেতে অনেক কথাই হলো সুমনের সাথে বিদেশিনীর। তার নাম ইডোলা। জম্মসূতে ফিলিপাইন।বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় সে এক ইন্দোনেশিয়ার ছেলের প্রেমে পড়ে। ছেলেটি ছিল মুসলমান আসে সে খ্রিস্টান।বিয়েও করেছিল কিন্তু ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। শেষে এম.এ করার জন্য পাড়ি জমায় আমেরিকায়। সেখানে সে পার্ট-টাইম জব নেয় এক হোটেলে।সেই হোটেলেই হোটেল মালিক অবস্থান করতেন। বয়স ষাট উর্ধ্ব। ইডোলার মায়াকাড়া চেহারা, বিনম্র ব্যবহার দেখে তিনি তার প্রতি আকৃষ্ট হন। শুরু হয় তাদের একত্রে বসবাস।বছর দুয়েক পরে হোটেল মালিক ক্যান্সার রোগে আক্রান্ত হলে উডোলার নামে হোটেলটি লিখে দেন তার পর চলে যান ক্যান্সার নিরাময় কেন্দ্রে। ভদ্র লোকের ত্রিকূলে আর কেউ নেই।এদিকে ইডোলা হাতে অজস্র ডলার পেয়ে বেসামাল হয়ে যায়। নাইট ক্লাব, ডিসকো, আর বারে কাটে তার অধিকাংশ সময়। দু বছরের মাথায় তার ব্যবসা লাটে উঠলো। বিক্রি করতে বাধ্য হলো হোটেল। সেখান থেকে চলে এলো জার্মানীতে আরেক বয় ফেন্ডের হাত ধরে। জমানো টাকা ধীরে ধীরে শেষ হতে লাগলো তার সেই জার্মান বয় ফেন্ডও তাকে ভুলতে লাগলো। এখানেও ছাড়াছাড়ি হয়ে গেল। রাস্তায় রাস্তায় ঘুরতে লাগলো সে। এক দোকানে খাবার কিনতে গিয়ে পরিচয় হলো এক বাঙ্গালীর সাথে। তার দুরবস্থার কথা শেয়ার করলো সে। সেই বাঙ্গালী নেয়ামত আলী তার দোকানের ফুড ডেলিভারী হিসাবে তাকে নিয়োগ দিলেন। সেই দোকানে ইডোলার কাজ হচ্ছে বাসায় বাসায় ফুড ডেলিভারী দেওয়া। তিন মাসের মাথায় এক বাসার মালিকের নজরে আসে সে। ধন-সম্পদের লোভে সে তার সাথে থাকতে রাজি হয়। ছেড়ে দেয় দোকানের চাকুরী।তার সাথে ঘুরে বেড়ায়, আনন্দেই কেটে যায় তার জীবন। এক বছরের মাথায় পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায় স্ত্রী হত্যার দায়ে। আবার ইডোলা একা হয়ে যায়।শূন্যতা তাকে গ্রাস করে দেয়।জীবন চলার পথে আবার পরিচয় হয় এক কেবিন ক্রু এর সাথে। গত তিন বছর যাবৎ তার সাথে পরিচয়।গত কাল কেবিন ক্রু মি. জে.জে এর সাথেই এই রিসোর্টে তার বিয়ে হয়।খুব সুন্দর করে সেজেছিল সে । বায়োলিনের সুরে তারা হারিয়ে গিয়ে ছিল একে অন্যের মাঝে।গত পাঁচ দিনে ইডোলার সাথে কথা হয়েছে অনেক বার।এই পাঁচ দিনে ইডোলা সুমনকে অনেক কথাই শেয়ার করছে। শুধু মাত্র একটাই কারণ। সুমন একজন বাঙ্গালী। উডোলার তেতত্রিশ বছর বয়স একটু শান্তনা আর আশার বাণি শুনেছিল সেই নেয়ামত আলির কাছ থেকে।সেই থেকে সে বাঙ্গালী জাতিকে সম্মান করে, শ্রদ্ধার চোখে দেখে।কনফারেন্সের শেষ দিন ইডোলা সুমনের রুমে এসে একটি ডায়রী গিফট করলো আর বললো এখানে আমার যাবতীয় ঠিকানা দেওয়া আছে যদি কখনো মনে পড়ে তবে যোগাযোগ করো। উপস্থিত সময়ে সুমনের কাছে কিছুই ছিল না। তাই মানি ব্যাগ থেকে চকচকে একটি একশো টাকার একটি নোট তা কে গিফট করলো। আর বললো যখনই বাঙ্গালির কথা মনে হবে তখন এটাকে দেখো ভালো লাগবে।সুমন আজ বাংলাদেশে। ইডোলার কথা মনে পড়ছে তার। তার দেওয়া ডায়রীটা দেখছে আর চোখের সামনে ভেসে উঠছে তার ছবি,তার লাইফ আফ হিস্টিরি।সে লিখতে লাগলো ইডোলর ডায়রীতে.......

বদরুল ইসলাম
সিলেট
০ Likes ১ Comments ০ Share ৫৫৪ Views

Comments (1)

  • - মাসুম বাদল

    অপেক্ষায় রইলাম, নীল-দা'!

    • - নীল সাধু

      ইনশাল্লাহ!

      আশা করছি কুশলে আছেন। শুভকামনা রইলো।

      আপনি বেশ লিখছেন মাসুম্বাদল ভাই। আপনার কবিতাগুলো ভালো লাগছে অনেক।

    - ঘাস ফুল

    আমি একজন ভার্চুয়াল মানুষ। আমি যখন নেটে বসি তখন প্রায় ৮/১০টি ব্লগ সাইট দেখি। যখন যা ভালো লাগে তা পড়ি। আমি খুবই অবাক হলাম নক্ষত্র ব্লগের প্রথম পাতায় ২০টি পোষ্ট দেখে। ভালো লাগছে এই ভেবে যে অন্যান্য অনেক ব্লগের তুলনায় নক্ষত্র ব্লগের প্রথম পাতায় এই ২০টি পোষ্ট যথেষ্ট মানসম্পন্ন এবং সুলেখিত মনে হল। কিছু অসাধারণ পোষ্ট শেয়ারিং হয়েছে এখানে। এ ছাড়াও নিয়মিত গুণী ব্লগাররা গল্প কবিতা ভ্রমণ সমসাময়িক এবং সমাজ দিনপঞ্জি বিভাগে খুব ভালো কিছু পোষ্ট উপহার দিয়েছেন। 

    আশাব্যঞ্জক কথা। পড়েও ভালো লাগে। যদি সবার আন্তরিকতা থাকে, তবে আরও ভালো হবে অদূর ভবিষ্যতে। আপনার ধারাবাহিকের অপেক্ষায় রইলাম। ধন্যবাদ নীলদা। 

    • - নীল সাধু

      ইনশাল্লাহ!

      শুভেচ্ছা রইলো ঘাস ফুল। কদিন লিখেছিলাম প্রথম আলোতে। ভাবছি সময় পেলেই সেটা শুরু করবো। আশা করি পাশে পাবো। শুভকামনা নিরন্তর।

    - আহমেদ ইশতিয়াক

    এই ব্লগটা ভালো লাগে খুব! সুন্দর সুস্থ একটা পরিবেশ।

    আপনার লেখার অপেক্ষায় রইলাম নীল'দা... 

    • - নীল সাধু

      কি বলেন ইশতিয়াক! আমি যতদুর বুঝতে পারছি শুধু আমি নই এই ব্লগের নিয়মিত আরো বেশ কিছু ব্লগার আপনার পোষ্টের জন্য অপেক্ষা করে। এটা নিশ্চিত ভালো লিখেন বলেই। লেখকেরা খুব বিনয়ী হয়। এটা সহজাত। ভালোবাসা রইলো।

    Load more comments...