Site maintenance is running; thus you cannot login or sign up! We'll be back soon.

সাইফুল ইসলাম

৯ বছর আগে

ইংল্যান্ডের সঙ্গে মিল পাচ্ছেন হ্যালসল

দেখে মনে হতে পারে সত্যিকার কোনো ফুটবল ম্যাচের মুহূর্ত। তবে পেছনের স্টাম্প আর পরিচিত মুখগুলো বলছে, এটা আসলে ক্রিকেটের ফুটবল! কাল মিরপুর স্টেডিয়ামে ক্রিকেটারদের অনুশীলনে l প্রথম আলোপিটার মুরস না হয়ে নামটি হতে পারত রিচার্ড হ্যালসল। একসময় যথেষ্টই প্রবল ছিল সেই সম্ভাবনা। অ্যান্ডি ফ্লাওয়ারের উত্তরসূরি হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে ছিলেন হ্যালসলই। অ্যাশেজে বিপর্যয়ের পর পালাবদলের পালায় বদলে গেল সবকিছু। বদলে গেল হ্যালসলের ভাগ্যও। ইংল্যান্ড কোচ মুরস যখন আসছে শ্রীলঙ্কা সফরের ছক কাটছেন, হ্যালসল তখন মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে ড্রেসিংরুমের সামনে দাঁড়িয়ে দেখছেন সাকিব-মাশরাফিদের ফুটবল খেলা। ইংল্যান্ডের প্রধান কোচ নয়, হ্যালসলের পরিচয় এখন বাংলাদেশের ফিল্ডিং কোচ।
ফিল্ডিং আর সহকারী কোচ হিসেবে যে বছর ছয়েক ছিলেন স্ট্রাউস-কুকদের সঙ্গে, বড় অংশজুড়ে ছিল ইংলিশ ক্রিকেটের সোনালি সময়। পিঠাপিঠি অ্যাশেজ জয়, যার শেষটি অস্ট্রেলিয়ায় গিয়ে। প্রথম বৈশ্বিক শিরোপা (২০১০ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ), ভারতের মাটিতে টেস্ট সিরিজ জয়, টেস্ট র্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষে ওঠা। এই সাফল্যে ফিল্ডিংয়ের একটা বড় ভূমিকা ছিল অবশ্যই। নব্বইয়ের দশকের ম্যাড়মেড়ে সময়টা বাদ দিলে ইংল্যান্ড অবশ্য বরাবরই বেশ ভালো ফিল্ডিং দল। দক্ষিণ আফ্রিকা, অস্ট্রেলিয়ার মতো বিশ্বসেরা ফিল্ডিং দল সেভাবে কখনো না হলেও একটা ধারাবাহিকতা সব সময়ই ছিল, আছে। এখানেই উল্টো বাংলাদেশ। কখনোই ধারাবাহিক নয়!
ব্যাটিং-বোলিং না হয় প্রতিভা, দক্ষতা ও সামর্থ্যের ব্যাপার। বড় দলগুলোর সঙ্গে বড় পার্থক্য থাকতে পারে। কিন্তু ফিল্ডিংয়ে সুযোগ থাকে সমতা বা ছাড়িয়ে যাওয়ার। একইভাবে ব্যাটিং-বোলিংয়ে বাজে সময় আসতেই পারে, ফিল্ডিংয়ে সব সময়ই থাকে ধারাবাহিক থাকার সুযোগ। কিন্তু দু-একটি টুর্নামেন্ট বা সিরিজ বাদ দিলে ফিল্ডিংয়েও বিশ্ব মানটা খুব কমই ছুঁতে পেরেছে বাংলাদেশ। বেশির ভাগ সময়ই গড়পড়তা, কখনো কখনো দৃষ্টিকটুরকমের বাজে। মজার ব্যাপার হলো, হ্যালসল বাংলাদেশ দলের ফিল্ডিংয়ে মুগ্ধ। ইংল্যান্ড আর বাংলাদেশ দলের ফিল্ডিংয়ে মৌলিক পার্থক্যও খুঁজে পাচ্ছেন না বাংলাদেশের নতুন ফিল্ডিং কোচ!
আনুষ্ঠানিক দায়িত্ব সবে শুরু হলেও বিশেষ দায়িত্বে ফিল্ডিং কোচ ছিলেন বাংলাদেশের ক্যারিবিয়ান সফরে। সেই অভিজ্ঞতা থেকে হ্যালসলের উপলব্ধি, ‘বাংলাদেশ দলের ক্যাচিং তো অসাধারণ। মাঠে ক্রিকেটারদের নিবেদনও ছিল দারুণ। শারীরিক সক্ষমতায় উন্নতির জায়গা আছে অবশ্য, যাতে আমাদের ডাইভিং ও স্লাইডিং আরও ভালো হয়।’
শারীরিক সক্ষমতার ব্যাপারটি বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের বরাবরই প্রশ্নবিদ্ধ। হাতে গোনা দু-একজনকে বাদ দিলে কেউই সে অর্থে সহজাত অ্যাথলেট নন, এটা ফিল্ডিং দুর্বলতার একটা বড় কারণ। হ্যালসল যদিও এটিকে বড় বড় ব্যাপার মনে করছেন না, ‘ব্যাপার সহজাত অ্যাথলেট হওয়া, না হওয়া নয়। ব্যাপারটি হলো অভ্যস্ত হওয়ার। ডাইভিং-স্লাইডিং বেশি দেওয়া হয় না বলেই অমনটা মনে হচ্ছে। ছেলেরা যত বেশি দিতে থাকবে, ততই অভ্যস্ত হয়ে উঠবে। ভালো ফিল্ডার হতে হলে “সুপার হিউম্যান ফিজিক্যাল অ্যাথলেট” হতে হবে, এমন কোনো কথা নেই।’
নতুন শিষ্যদের মাঝে আলাদা করে মনে ধরেছে সাকিবকে, ‘ক্যাচ নেয় অসাধারণ।’ মুশফিকের পরিশ্রম-নিবেদনকে মনে করেন বাকিদের জন্য উদাহরণ। নাসির হোসেন তাঁর দেখা আর যেকোনো ফিল্ডারের মতোই ভালো! অথচ গত ওয়েস্ট ইন্ডিজে সফরেই ব্যাটিং-বোলিংয়ের মতো দলের ফিল্ডিংও ছিল প্রশ্নবিদ্ধ। মাঠে ফিল্ডারদের শরীরী ভাষায় কখনো কখনো ছিল জগতের অনীহা!
সুনির্দিষ্টভাবে প্রসঙ্গটি তোলার পর মুহূর্ত খানেক চুপ থাকলেন ফিল্ডিং কোচ। ঠোঁটে ঠোঁট টিপে এরপর বাস্তবতাটিই তুলে ধরলেন, ‘একটা সুযোগ হাতছাড়া হওয়ার পর মনে করে যে ম্যাচটিই বুঝি হাতছাড়া হয়ে গেল। ওয়েস্ট ইন্ডিজে প্রথম ওয়ানডে জয়ের খুব ভালো সুযোগ ছিল আমাদের। কিন্তু একটি সুযোগ হাতছাড়া হওয়ার পর শরীরী ভাষা দেখে মনে হলো যেন সব শেষ। আদতে একটা সুযোগ মিস হলে আরও অনেক সুযোগ সৃষ্টি করার পথ খোঁজা উচিত।’
এই সাধারণ ব্যাপারটি ক্রিকেটারদেরও অজানা থাকার কথা নয়। সমস্যা হলো, মাঠে প্রয়োজনের সময় করা। হ্যালসলের মূল চ্যালেঞ্জও সেটি, ওই মানসিকতা ক্রিকেটারের মনে আর মাথায় গেঁথে দেওয়া!


সূত্রঃ প্রথম আলো 
০ Likes ০ Comments ০ Share ৪০০ Views

Comments (0)

  • - আলমগীর সরকার লিটন

    বেশ লাগল কিছু শিক্ষা গেল

    অনেক শুভ কামনা-----------

    - টোকাই

    ভালো লাগলো ।