আগামীকাল আসছে বড়দিন। এই দিনটি খ্রিস্টান ধর্মালম্বীদের বছরের একটি মহাউৎসব। প্রত্যেক বছর ২৫ ডিসেম্বর যিশু খ্রিস্টের জন্মদিনে এই উৎসব পালিত হয়ে থাকে। আদিযুগীয় খ্রিস্টানদের বিশ্বাস অনুসারে, এই তারিখের ঠিক ৯ মাস পূর্বে মেরির গর্ভে আসেন যিশু। আর এই হিসাব অনুসারেই ২৫ ডিসেম্বর যিশুর জন্মোৎসব পালন করা হয়। বড়দিন উৎসবেরঅন্যতম বিষয় হলো গৃহসজ্জা ও উপহার আদান-প্রদান। দিনটি উপলক্ষে দেশের বিভিন্ন গির্জাগুলোকে বর্ণিল সাজে সাজানো হয়।
বড়দিনের উপহার
বড়দিনের উপহার হিসেবে কার্ড হলো এক প্রকারের চিত্রিত শুভেচ্ছাবার্তা। সাধারণত বড়দিনের পূর্বের সপ্তাহগুলোতে বন্ধুবান্ধব ও পারিবারের সদস্যদের মধ্যে ক্রিসমাস কার্ড আদান-প্রদান চলে। চিরাচরিত শুভেচ্ছা বার্তার বাণীটি হলো ‘পবিত্র খ্রিস্টমাস ও শুভ নববর্ষের শুভেচ্ছা গ্রহণ করুন’। ১৮৪৩ সালে লন্ডন থেকে প্রকাশিত স্যার হেনরি কোল নির্মিত প্রথম বাণিজ্যিক ক্রিসমাস কার্ডের বাণীটিও এই প্রকারই ছিল। অনেক কার্ডে একদিকে যেমন ধর্মীয় অনুভূতি, কবিতা, প্রার্থনা বা বাইবেলের স্তব স্থান পায়, তেমনই অন্যদিকে ‘সিজন’স গ্রিটিংস’-এর মতো কার্ডগুলো ধর্মীয় চেতনার বাইরে সামগ্রিক ধর্মনিরপেক্ষ চেতনার প্রতিফলন ঘটতে দেখা যায়। বড়দিন উৎসব সম্পর্কিত চিত্রকর্ম সম্বলিত বা বাণিজ্যিকভাবে নকশাকৃত উপহারের সঙ্গে প্রাসঙ্গিকতাযুক্ত ক্রিসমাস কার্ডের বিক্রির পরিমাণ যথেষ্টই। এসব কার্ডের নকশায় স্থান পায় যিশুর জন্মদৃশ্য-সম্বলিত ক্রিসমাসের বর্ণনা অথবা বেথলেহেমের তারা বা পবিত্র আত্মা ও বিশ্বে শান্তির প্রতীক সাদা পায়রা ইত্যাদি খ্রিষ্টীয় প্রতীক। ধর্মনিরপেক্ষ বিষয়কেন্দ্রিক কার্ডগুলোতে ক্রিসমাস সংস্কারের নানা দৃশ্য, সান্তাক্লজ প্রভৃতি ক্রিসমাস চরিত্র বা বড়দিনের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত মোমবাতি, হলি ও বাবল, শীত ঋতুর নানা চিত্র, ক্রিসমাসের নানা প্রমোদানুষ্ঠান, তুষারদৃশ্য ও উত্তরদেশীয় শীতের ছবির স্থান পায়। এছাড়াও হাস্যরসাত্মক কার্ড এবং ঊনবিংশ শতাব্দীর পথেঘাটে ক্রিনোলাইন দোকানদারদের চিত্রসম্বলিত নস্টালজিক কার্ডও বড়দিনের উৎসবকে আরো বাড়িয়ে দেয়। বড়দিনের উপহারের মধ্যে আরো রয়েছে-
ছবির ফ্রেম
মগ
গহনা
পুতুল
ছোট টেবিল ল্যাম্প
মোমদানি
চকলেট
ব্যাগ
ঘড়ি
গানের সিডি
ডিভিডি প্রভৃতি
তবে কাজে লাগে এমন কিছুই আবার দিতে চান অনেকে। এ কারণেই অনেকে এবার বড়দিনে নতুন বছরের ডায়েরিও উপহার দিতে চান। শুধু প্রিয় মানুষটিকে উপহার দেয়ার মাধ্যমেই সীমাবদ্ধ থাকবে না এ আয়োজন। কেনাকাটা চলবে ক্রিসমাস গাছের জন্যও। রূপালী-সোনালি নকশা করা ছোট-বড় ঘণ্টা, চকমকে বল, তারা, রিং, ঝলমলে নানা জিনিসে সাজবে ক্রিসমাস গাছ। আছে ছোট সান্তাক্লজের পুতুল, মোজা, তারা। ক্রিসমাস গাছে লাল, নীল, হলুদ মরিচবাতির ফাঁকে সেগুলো ঝুলিয়ে দিন। তবেই সাজবে ক্রিসমাস গাছ। আর এ উপহারগুলো পাবেন রাজধানীর বিভিন্ন গিফট্ শপে।
বড়দিনের কেক
উৎসবের আনন্দজুড়ে ঘরে ঘরে ভিন্ন ভিন্ন স্বাদের খাবারের পশরা বসে। তবে উৎসবের আতিথেয়তার প্রধান আকর্ষণ থাকে নানা ফ্লেবারের কেকের ওপর। দিনটির আগে থেকেই কেকের অর্ডার দিয়েই রাখা যেতে পারে। আর সেক্ষেত্রে আপনি বেছে নিতে পারেন বেশ কয়েক ধরনের কেক। এর মধ্যে রয়েছে-
১। মার্বেল কেক
২। টিরামিসু কেক
৩।ডার্চ চকলেট কেক
৪।স্ট্রবেরি মুজ কেক
৫। ওয়ালনাট কেক
৬। কেরামেল ও হেডেলেনাট জাতীয় কেক।
বিভিন্ন পেস্ট্রি শপে কেকের দাম
৬০০ টাকা থেকে ৭ হাজার ২০০ টাকা
সাধারণ কেকগুলোর দাম
৩০০ টাকা থেকে ১ হাজার ৬০০ টাকা।
তবে পছন্দমত কেক বানিয়ে নিতে চাইলে আগে থাকতেই অর্ডার করে রাখতে পারেন। ঢাকা শহরের মোহাম্মদপুর, উত্তরা, মতিঝিল, আনোয়ার কে সি প্লাজা, বেইলি রোড, ধানমণ্ডি সাত মসজিদ রোড, শেওড়াপাড়া, সেনপাড়া,বায়তুল মোকারম ও গুলশানের নাভানা টাওয়ারে ইত্যাদি বিভিন্ন স্থানে ভাল মানের কেক পাওয়া যায়। বড়দিনের কেক কিনতে আরো যেতে পারেন, আপনার কাছাকাছি কোনো পেস্ট্রি শপে। তবে কেক কেনার সময় লক্ষ্য রাখতে হবে, যে কেকটি নিবেন তা যেন সুপরিচিত প্রতিষ্ঠানের কেক হয়। অথবা কাছাকাছি কোনো পরিচিত প্রেস্টিশপের হয়। সুপরিচিত পেস্ট্রিশপগুলো নিজেদের সুনাম অক্ষুণ্য রাখতে আপনাকে একটি ভালো কেক দিতে চেষ্টা করবে। তাই আগে থেকেই কেকের জন্য অর্ডার দিন। যেতে পারেন হোটেল রুপসী বাংলা, রেডিসন হোটেল ও সোনারগাঁ হোটেলে। নামি-দামি সব কেকই এখানে পাবেন। তবে বাইরের তুলনায় এখানকার কেকের দাম একটু বেশি পড়বে। তবে চাইলে অর্ডার দিয়েও বানিয়ে নিতে পারবেন।
Comments (6)
সহমত
ধণ্যবাদ সহমত প্রকাশের জন্য ।
বাস্তব কথাগুলো সুন্দর প্রাঞ্জল ভাষায় উপস্থাপন করেছেন
দেশপ্রেম জাগ্রত করতে হবে সবার মনে । ধণ্যবাদ মন্তব্যের জন্য । ভালো থাকুন সবসময় ।
শুভ কামনা রইলো মন্তব্যের জন্য ।