Site maintenance is running; thus you cannot login or sign up! We'll be back soon.

রাজীব নূর খান

১০ বছর আগে

আমি যদি প্রধানমন্ত্রী হতাম !!

মাঝে মাঝে অবাস্তব ভাবনা ভাবতে খুব ভালো লাগে। অদ্ভুত এক আনন্দ পাওয়া যায়। যে ভাবনাতে কারো কোনো ক্ষতি হয় না- সে ভাবনা ভাবা যেতেই পারে। অনেকে ভাবতে পারেন- আহ কত শখ প্রধানমন্ত্রী হওয়ার। তাদেরকে বলি- ক্ষমতার জন্য প্রধানমন্ত্রী হতে চাই না অথবা দুর্নীতি করার জন্য নয়। ‘নায়ক’ নামে ইন্ডিয়াতে একটি সিনেমা হয়েছে। পরে কলকাতায় এই সিনেমাটি নকল করে বানানো হয়। আমাদের বাংলাদেশে এরকম একটি সিনেমা হয়েছে- এই মুহূর্তে নামটি মনে করতে পারছি না। আমাদের দেশের প্রতিটা মন্ত্রীর কোটি কোটি টাকা দেশী বিদেশি ব্যাংক গুলোতে। নানান নামে নানান রকম প্রতিষ্ঠান আছে।ক্ষমতাশীনদের লোভের কাছে, স্বার্থপরতার কাছে, নিষ্ঠুরতার কাছে সাধরণ মানুষের কষ্ট তুচ্ছ হয়ে যায়। যাই হোক, ঢাকা শহরের জ্যামের কথা সবাই জানেন- কিন্তু অবাক ব্যাপার হচ্ছে- প্রধানমন্ত্রী যখন গাড়ি নিয়ে রাস্তায় বের হোন-তখন ট্রাফিক পুলিশ এবং সার্জেন মিলে মুহূর্তের মধ্যে রাস্তার জ্যাম সরিয়ে ফেলেন। একজন মানুষের জন্য- হাজার মানুষের আধাঘন্টা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়। প্রধানমন্ত্রী যদি জ্যামে না পড়েন অথবা লোকাল বাসে না উঠেন তাহলে মানুষের সমস্যা-দুঃখ-কষ্ট বুঝবেন কেমন করে ? তাছাড়া অবশ্যই প্রধানমন্ত্রীকে বাজারে যেতে হবে- ফরমালিন দেওয়া মাছ সবজি এবং ফল কিনতে হবে। খেতে হবে। রাস্তার ভাঙ্গা ফুটপাত দিয়ে হাঁটতে হবে। বৃষ্টির দিনে রাস্তায় জমে থাকা নোংরা পানির মধ্যে দিয়ে হাঁটতে হবে। দামী গাড়িতে করে চলাফেরা করবেন- এসি ঘরে বসে থেকে চটাং চটাং কথা বলবেন তা হবে না।

সাধারণ মানুষদের জীবনের নিরাপত্তা নেই কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর জন্য তিন স্তরের বিশেষ নিরাপত্তা। কেন ? প্রধানমন্ত্রীর জীবনের দাম আছে। আমাদের জীবনের দাম নেই ? আমি যদি প্রধানমন্ত্রী হতাম- তাহলে আমার জীবনের নিরাপত্তা থাকতো, জিনিসপত্রের দাম বাড়লে তা নিয়ে চিন্তার কিছু নাই, ফরমালিন নিয়ে ভাবতে হবে না, অসুখ হলে বিদেশ গিয়ে উন্নত চিকিৎসা নিয়ে আসতাম, ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়ার জন্য বিদেশে পাঠাতাম- তারা বিলাসিতা করে জীবন পার করবে। কোনো অপকর্ম করেও রাতে আরামে ঘুমিয়ে পড়তাম, আমি ক্ষমতার জন্য প্রধানমন্ত্রী হতে চাই না । আমি চাই একটু আরামে , শান্তিতে , সুখে , নিশ্চিতে দেশে বাস করতে। বাংলাদেশ একটি গনতান্ত্রিক দেশ। কিন্তু যারা ক্ষমতায় থাকেন- তারা গণতন্ত্র বিশ্বাস করে না, অবলীলায় মিথ্যা কথা বলে। দেশের গণতন্ত্রকে ধবংস করতে প্রতিনিয়ত মিথ্যাচার ও অপকর্ম করে যাচ্ছে। বাংলাদেশের মানুষ গণতন্ত্রমনা। মালোশিয়ার প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদ ডাক্তারদের বললেন,”কোন দেশের প্রধানমন্ত্রীর অন্য দেশে চিকিৎসা নিতে যাওয়ার অর্থই হলো সেই দেশের চিকিৎসা ব্যাবস্থা একদমই ভালো না। আমি তো অন্য দেশকে এটা জানাতে চাই না।বিদেশে গিয়ে আমি চিকিৎসা করাতে পারলেও আমার জনগণের তো সে সামর্থ নেই। প্রধানমন্ত্রী হয়ে আমি এটা পারবোনা। প্রযুক্তি দেশে আনুন।সেই প্রযুক্তিতেই আমার চিকিৎসা হবে। দুই বার হার্ট এটাক হয়েছিল দেশপ্রেমী এ মানুষটির।প্রতিবারই তিনি চিকিৎসা নিয়েছিলেন তাঁর নিজের প্রতিষ্ঠিত হার্ট ফাউন্ডেশনে।বাংলাদেশে এমন একজন শাসকের আজ বড়ই প্রয়োজন ।

মাহাথীর মোহাম্মদ একটাই হয়। ইস বাংলাদেশে যদি এমন একজন নেতা থাকতো।যোগ্য নেতৃত্ব একটা দেশকে উন্নয়ণের শিখরে তুলতে পারে।একজন মাহাথীর মোহাম্মদ বদলে দিয়েছেন পুরো মালয়েশিয়াকে। মাহাথীর মোহাম্মদের মালয়েশিয়া আজ বিশ্বের বুকে মাথা উচুঁ করে দাড়িয়ে আছে অত্যন্ত মর্যাদার সাথে। তবে আমি বিশ্বাস করি- বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকলে দেশ অনেক দূর এগিয়ে যেত। একজন স্যতিকারের নেতা হচ্ছেন বঙ্গবন্ধু । হাসিনা-খালেদা দেশকে কচ্ছপের মতন এগিয়ে নিয়ে যাবে। দেশের বেশীর ভাগ নেতা হলো বুড়ো। বুড়ো মানুষ দিয়ে কিচ্ছু হবে না। তারা একটা অনুষ্ঠানে গেলেও ঝিম মেরে ঘুমান। দেশের জন্য দরকার সাহসী পরিশ্রমী মানুষ। যা হাসিনা-খালেদার মন্ত্রী সভায় নেই। তারা শুধু পারেন এসি রুমে বসে চেটাং চেটাং কথা বলতে। তবে দুই একজন মন্ত্রী আছেন- তারা এসি রুমে বসে চেটাং চেটাং কথা বলেন না। যেমন ওবায়েদুল কাদের। উন্নত দেশ গুলোতে সারা বছর টিভিতে কোনো মন্ত্রী এমপিকে দেখা যায় না। কিন্তু বাংলাদেশের টিভি চ্যানেল গুলোতে তাদের অহরহ দেখা যায়। সামান্য একটা শো রুম উদ্বোধন করতে একজন মন্ত্রী যান। হাসি মুখে ছবি তোলেন, সেই ছবি পরের দিন প্রতিটা পত্রিকায় দেখা যায়। আমি যদি প্রধানমন্ত্রী হতাম- অন্যসব প্রধানমন্ত্রীদের মতন কিছুই করতাম না। সবার আগে চেটাং চেটাং কথা বন্ধ করতাম। শুধু কাজ করে যেতাম। দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতাম। বিরোধীদলের নিন্দা করতাম না। ভালো কাজের মধ্যেই মানুষের আসল পরিচয় ফুটে ওঠে।

আমি যদি প্রধানমন্ত্রী হতাম- দুর্নীতি দূর করতাম সবার আগে। এটা খুব কঠিন কিছু না। খাদ্যদ্রব্যের  দাম কমাতাম। শিক্ষার দিকে বিশেষ নজর দিতাম। রাস্তার জ্যাম কমাতাম- খুব কঠিন কিছু না। তীব্র এবং সৎ ইচ্ছা থাকলে অল্প সময়ে দেশের উন্নতি করা সম্ভব। বেকার সমস্যা দূর করা খুবই সহজ ব্যাপার। কিন্তু সরকার মনে করে বেকার সমস্যা অনেক বড় সমস্যা। কর্ম দক্ষতার উপর ভত্তি করে সব বেকারদের কাজ দিয়ে দিতাম। আমার দেশে কেউ বেকার থাকতে পারবে না। উন্নত বিশ্বের সাথে সু সম্পর্ক বজায় রেখে বেকার সমস্যা খুব সহজেই সমাধান সম্ভব। বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকলে অনেক আগেই পদ্মা সেতু হয়ে যেত। অবশ্য ব্রীজ রাস্তা আর কালভাট করলেই দেশের উন্নয় সম্ভব আমি বিশ্বাস করি না। একটার সাথে আরেকটার সামঞ্জস আছে। একেবারে লাফ দিয়ে উপরে উঠা যায় না। নীচ থেকেই উপরে উঠতে হয়।দেশে কৃষি সংশ্লিষ্ট কমপক্ষে ২৬টি নীতি, আইন ও কৌশলপত্র রয়েছে। এগুলো সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য কৃষি ও কৃষক সংক্রান্ত সকল নীতিমালার সমন্বয় ও বাস্তবায়ন করতে হবে।অর্থনীতিবিদ এবং সমাজসেবকরা বলে থাকেন, দেশের উন্নতির জন্য গণমুখী সমবায় আন্দোলনের বিকল্প নেই। সঠিক অর্থনৈতিক পরিকল্পনা প্রনয়নের মাধ্যমে প্রান্তিক পর্যায় এর মানুষ দের জীবন যাত্রার নিশ্চয়তার সাথে সম্পৃক্ত করলেই দেশের সামগ্রিক অর্থনীতি পূর্ণদোমে আর ও সামনের দিকে এগিয়ে যাবে, এটাই আমাদের প্রত্যাশা।

আমাদের দেশে ছয় কোটি মানুষ খুব দরিদ্র। তারা তিনবেলা ঠিক মত খেতে পায় না। সরকার তাদের ব্যাপারে নিশ্চুপ । আর আমি প্রধানমন্ত্রী হলে- তাদের নিয়েই কাজ শুরু করবো। যারা রাস্তায় ঘুমায়- তাদের জন্য মসজিদ খুলে দিব। নে বাবারা আরাম করে ঘুমা। গরম লাগলে এসি ছেড়ে নিবি। এদের দিয়ে কাজ আদায় করে নিতে হবে। এরাই দেশকে এগিয়ে নিবে।বাংলাদেশ বিশ্বে অন্যতম দরিদ্রতম দেশ। এ দেশের মোট জনসংখ্যা প্রায় ১৬ কোটি। প্রায় ছয় কোটি মানুষ বাস করছে দারিদ্র্যসীমার নিচে। আমি বিশ্বাস করি- তরুণেরাই মানবসভ্যতার আদিলগ্ন থেকে নবজীবনের গান শুনিয়ে এসেছেন। যেকোনো ক্রান্তিকালে তরুণেরাই বুক পেতে দিয়েছেন, এনেছেন নতুন দিন। আমাদের মতো একটি উন্নয়নশীল দেশেও উন্নয়নের প্রধান হাতিয়ার এই শক্তিশালী তরুণ সমাজ।দেশের উন্নয়নের জোয়ার আনতে প্রয়োজন তথ্যপ্রযুক্তির প্রসার। মন্ত্রী ইনু কে দিয়ে তা সম্ভব নয়। যোগ্য এবং পরিশ্রমী লোক লাগবে। আসলে সব ক্ষেত্রেই যোগ্য এবং পরিশ্রমী লোক লাগবে। এই রকম লোক এদেশে অভাব নেই। চোখ মেলে তাকালেই পাওয়া যাবে।১৯৫২, ১৯৬৯, ১৯৭১ আর ১৯৯০-তে যেমন আমরা পেরেছি; তেমনি পারব এ দেশকে বিশ্বের বুকে মাথা তুলে দাঁড় করাতে।মনে হয় দেশের জন্য কিছু করতে, মানুষের জন্য কিছু করতে। অসহায় মানুষ দেখলে বুকের ভেতরটা কেমন হু হু করে উঠে । হাত বাড়াতে ইচ্ছে করে ।

সত্য আড়াল করায় যাদের স্বার্থ, তারা বলে “জনসংখ্যা বাড়ছে, দেশ গরিব, সম্পদ নাই।একটি দেশের সামগ্রিক উন্নতির জন্য সবার আগে দরকার অর্থনৈতক উন্নতি। আর অর্থনৈতিক উন্নতির জন্য সবার আগে দরকার কৃষি সংষ্কার। অথচ এদেশের কৃষি আজও ক্ষুদ্র ও পশ্চাৎপদ। ব্রিটিশ ও পাকিস্তানি আমলে এদেশের শিল্প-কারখানা তৈরি করা হয়েছে সাম্রাজ্যবাদ ও পাকিস্তানের স্বার্থে। গত ৪০ বছর ধরে এদেশের ব্যাংক, বৈদেশিক ঋণ, রাজস্ব, তেল, গ্যাস, বন্দর, বিদ্যুৎ সর্বত্র হরিলুট অব্যাহত রয়েছে। খাদ্যে ভেজাল ও বিষাক্ত রাসায়নিকের করাল থাবা আমাদের বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্যে কত বড় হুমকি তা আমরা একটু একটু করে বুঝতে পারছি।আমাদের শাসন ব্যবস্থা, আমাদের রাষ্ট্রনীতি এমন ভাবে পরিচালিত যে সাধারন জনগনকে দুর্নীতি করতে বাধ্য করছে। সরকারি প্রতিটা কর্মকর্তা, কর্মচারী দুর্নীতির সাথে জড়িত। কোথাও কোনও জবাবদিহিতা নেই। সব রাগ, অভিমান হিংসা ভুলে,শুধু দেশের জন্য  আসেন- রোপণ করি জ্ঞানের বৃক্ষ, উদার হই স্বর্গের মতো, হাওয়ার মতো ছড়িয়ে দিই বন্ধুত্বের বীজ, রুখে দাঁড়াই অজ্ঞতা ও কুসংস্কারের বিরুদ্ধে, সবাইকে ভালোবেসে এগিয়ে আসি একে অপরের বিপদে।ক্ষমতাসীনদের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, ‘দেশের মানুষ কেউ না খেয়ে নেই এবং না খেয়ে কাউকে মারা যেতে দেবো না।’

০ Likes ৩ Comments ০ Share ৪৬০ Views