Site maintenance is running; thus you cannot login or sign up! We'll be back soon.

রাজীব নূর খান

১০ বছর আগে

আমি একটি মেয়েকে ধর্ষণ করেছি

আমি একটি মেয়েকে ধর্ষণ করেছি। সহজ সরল স্বীকারত্বী দিলাম। এই জন্য আমার কোনো অপরাধ বোধও নেই। সত্যি কথা বলি- ধর্ষণ করে আনন্দ পেয়েছি, আরাম পেয়েছি। কেউ জানে না, কেউ টেরও পায়নি । ধর্ষণের সময় পরিস্থিতি আমার অনুকূলে ছিল। এজন্য ব্যাপারটা খুব সহজ হয়েছে। একটুও বেগ পেতে হয়নি। একটা ঘটনা বলি- বাসে যেতে যেতে এক আংকেল পেপারে ধর্ষণের খবর পড়ছিলেন। এক  পর্যায়ে তিনি বললেন, "দেশের যে কি অবস্থা! ভাগ্য ভালো যে আমার কোন মেয়ে নাই । নাহলে কত যে ঝামেলায় পড়তে হতো !" কেউ কিছু বললো না। তরুণ বয়সের এক ছেলে বলে উঠলো, "খোদা মেয়ে সন্তান তাদেরকেই দেন, যাদের বুকে মেয়ে সন্তান লালন পালনের সাহস থাকে। কাপুরুষদের জন্য মেয়ে সন্তান নয় ।" উন্নত দেশেও ধর্ষণ হয়, অপরাধ হয়। তবে সে দেশে অপরাধের অন্তত বিচার হয়। আমাদের দেশেও অপরাধ হয়- অপরাধী রাজার হালে বুক ফুলিয়ে ঘোরে। কোন বিচার হয় না।

আমি কিভাবে ধর্ষণ করলাম সেই ঘটনাটা বলি। যশোর বন্ধুর বাড়ি বেড়াতে গিয়েছিলাম। গ্রামের নাম নোয়াপাড়া। খুবই সুন্দর গ্রাম। বিশাল বিশাল ধানক্ষেত। বড় বড় সবুজ কাচা ধান। একটু বাতাসেই সমুদ্রের ঢেউ এর মতন করে উঠে। ধানক্ষেতের পাশে লম্বা একটা খাল। এই খাল গিয়ে মিশেছে নদীর সাথে। নদীটার নাম মনে নেই। তবে মনে আছে খুব সুন্দর একটা নাম। নামের প্রথম অক্ষর 'ই' দিয়ে। যাই হোক, সেইদিন মানে ঘটনার দিন মধ্যরাত্রে আমি বসে ছিলাম- কার্লভাটের উপর। বন্ধুর বাড়ি থেকে কার্লভাটের দূরত্ব, হেঁটে গেলে আধা ঘন্টা লাগে। কার্লভাটের নীচ দিয়ে পানির কলকল শব্দ, জোছনা রাত, আর কি যে ঠান্ডা মিষ্টি বাতাস! বন্ধুর বাড়ির সবাই গভীর ঘুমে। আমার ঘুম আসছিল না, তাই কার্লভাটের উপর বসে ছিলাম। সিগারেট খাচ্ছিলাম। গুন গুন করে গান গাচ্ছিলাম।

'ধর্ষণ' ছোট এই শব্দটির অর্থ এতই বড় যে সারা জীবনেও ব্যখ্যা করে শেষ করা যাবে না। পত্র-পত্রিকা, সোস্যাল নেটওয়ার্কিং এর কল্যানে শুধু চোখ বোলালেই শত শত ধর্ষণের খবর দেখি, কিন্তু ধর্ষণের শাস্তি হিসেবে আহামরি কোন শাস্তি দিতে দেখি না। গ্রেফতার হওয়ার পর জামিনে বের হয়ে আসে। সত্যিই যারা ধর্ষণের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলতে চান, সমাজ কে ধর্ষণ নামের অভিশাপ মুক্ত করতে চান- তারা কিছু করুন।একজন ধর্ষণকারী এবং একজন খুনীর মধ্যে আমি কোন পার্থক্য দেখিনা। একজন খুনীর যদি সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদন্ড হতে পারে, তবে একজন ধর্ষকের কেন নয়? সৌদিআরবে খুন আর ধর্ষণের শাস্তি কতটা ভয়ানক না দেখলে বিশ্বাস করা যাবে না। ভোগবাদী সমাজে নারীমুক্তির স্লোগানের আড়ালে নারীরা চিরকালই ভোগের পণ্য ? যে দেশে নারী সরকার, যে দেশে নারী বিরোদী দলীয় নেত্রী, যে দেশে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নার। পররাষ্ট্র মন্ত্রী নারী, অছেন নারী সংসদ সদস্য, সে দেশে কেন এত নারী ধর্ষণ? নারী নির্যাতন? কেন? কেন? কেন?

যাই হোক, আমি কিভাবে ধর্ষণ করলাম সেটা বলি- কার্লভাটের উপর পর-পর দুই টা সিগারেট শেষ করলাম। হঠত দেখি- একটা মেয়ে আমার দিকে দৌড়ে আসছে। মেয়েটার শাড়ি এলোমেলো। শাড়ির আঁচল মাটিতে গড়া খাচ্ছে। ব্লাউজ ছেঁড়া। দেখলেই বুঝা যায় গ্রামের একটি সহজ সরল মেয়ে। বয়স বেশী হলে- বিশ-বাইশ হবে। মেয়েটি আমার কাছে এসে কাঁদতে কাঁদতে বলল- আমাকে বাঁচান। তখনও পুরো ব্যাপারটি আমি বুঝতে পারিনি। আমি মেয়েটিকে বললাম, কোনো ভয় নেই, আমি আছি। মেয়েটা খুব হাপাচ্ছিল। এই সময় দেখি আমার চারপাশে চারজন লোক আমাকে ঘিরে ফেলেছে। একজন আমাকে বলল- কোনো ঝামেলা করবেন না। আমরা এই মেয়েটিকে নিয়ে যাব। তাদের চারজনের হাতে পিস্তল, ছুরি,রাম-দা । আমি বললাম- আমি কোনো ঝামেলা করবো না। আপনারা মেয়েটিকে নিয়ে যেতে পারেন।

মহাজোট সরকারের ৪ বছরে ১৩ হাজার ধর্ষণ : নারী নির্যাতন ৬৭ হাজার। নারী পুরুষ নির্বিশেষে সবার সচেতনতার মাধ্যমই হল এর এক মাত্র প্রতিষেধক ।ধর্ষক বুক ফুলিয়ে, কলার উঁচু করে বীরের বেশে এলাকায় ঘুরে বেড়ায় আর ধর্ষিতার স্থান হয় নির্জন ঘরের কোনে- যদি সে বেচে থাকে! পত্রিকার পাতায়, কলামে কলামে, থানায় পুলিশের ডাইরিতে, আদালতে অসভ্য উকিলের আপত্তিকর জেরায়। একটা মেয়ের জন্যে কেউ নিরাপদ না। শিক্ষক, সহপাঠী, বন্ধু, বয়-ফ্রেন্ড, এলাকার ছেলে, আত্মীয়- পুরুষ, চাচা-মামা-খালু, দুলাভাই  কেউ না। কর্মক্ষেত্রে কলিগ, অফিসের বস- সুযোগ পেলেই মিষ্টি হাসি ঝেড়ে ধর্ষকের রূপ ধরতে মুহূর্ত দেরি করেন না। বাসের হেল্পার, ক্যান্টিনবয়, হাসপাতালের ঝাড়ুদার, বাসার দারোয়ান কিংবা অফিসের পিয়ন- ওটার ব্যবহারে কেউ কারো চেয়ে পিছিয়ে থাকতে রাজী নয়। 

মেয়েটিকে চারজন লোক টেনে হেচড়ে নিয়ে যাচ্ছে। মেয়েটা চিৎকার করে বলছে- বাঁচাও, আমাকে বাঁচাও। হঠাত করে আমার মনে হলো- এই মেয়েটি যদি আমার হিমি হতো !! কথাটা ভাবতেই মাথাটা চক্কর দিয়ে উঠল। আমি দৌড়ে চারজন লোকের সামনে গিয়ে বললাম মেয়েটিকে ছেড়ে দেন। চারজনের মধ্যে একজন বলল- কি বললি ? আমি বললাম, দিয়াশলাই হবে ? সিগারেট খেতে পারছি না। তারপর বাংলা সিনেমাতে যা হয়, তাই করলাম। চারটা বদমাশ কে মেরে আধামরা করে দিলাম। সব গুলো পালিয়ে গেল। মিথ্যা বলব না, ওদের একজন আমাকে ছুরি দিয়ে টান দিয়েছিল- গায়ে লাগেনি তবে, তবে পায়ে হাঁটুর নীচে অনেকক্ষানি কেটে গিয়েছিল। সে যাক গে, এরপর আমি শাড়িটি ভালো করে মেয়েটার গায়ে প্যাচিয়ে দেই। মেয়েটি কাঁদতে কাঁদতে আমাকে জড়িয়ে ধরে।

মেয়েরা কার কাছে বিচার চাইবে? শিক্ষকের কাছে? তারাই তো রুমে ডেকে নিয়ে ছাত্রী ধর্ষণে লিপ্ত। মন্ত্রীদের কাছে? এই দেশের কলেজের মেয়েদের তো তাদের কাছে উপঢৌকন হিসেবেই পাঠানো হয়। শরীরের বিনিময়ে মিলে পার্টিতে পদ কিংবা হলে সিট। আমি আমার গল্পের একেবারে শেষ প্রান্তে। গুন্ডাদের কাছ থেকে মেয়েটিকে রক্ষা করার পর মেয়েটি আমাকে জড়িয়ে ধরতেই আমার খুব ইচ্ছা হলো- মেয়েটিকে আদর করি। এরপর মেয়েটিকে অনেক আদর করি। মেয়েটি একটি কথাও বলল না। চুপ করে শুধু আদর নিচ্ছিল। ... আসলে, এটা কোনো বাস্তব ঘটনা নয়। স্বপ্নে দেখা ঘটনা। স্বপ্নে যা দেখেছি- তাই লিখেছি। সবাই ভালো থাকুন। সুন্দর থাকুন।  প্রিয় মানুষকে ভালোবাসুন।

০ Likes ৮ Comments ০ Share ১৭৩০ Views

Comments (8)

  • - মেজদা

    আপনার ছোট বেলা পড়তে গিয়ে নিজের হারিয়ে গেছিলাম আমার ছোট বেলায়। আর কি ফিরে পাবো সেই দিন গুলি। আমার নানা বাড়ী যাওয়াটাই ছিল আনন্দের। সকলেই একটা নির্দিষ্ট সময়ে মিলিত হত। আহা, কোথায় সেইদিন গুলি। ধন্যবাদ নাহার আপু। 

    • - গোলাম মোস্তফা

      মেজদা তোমার ছডবেলা চিল না কি ?

      এখন কে বড় বেলায় আছ >

    • Load more relies...
    - সুখেন্দু বিশ্বাস

    আপনার স্মৃতিকথা পড়ে মনে পড়ে গেল ছোট বেলার কবিতাটি-

     

    বহুদিন পরে মনে পড়ে আজি

    পল্লী মায়ের কোল,

    ঝাউ শাখে সেথা বনলতা বাঁধি

    হরষে খেয়েছি দোল।

     

     

     

    শুভকামনা রইলো দিদি।    

    • - কামরুন নাহার ইসলাম

      হ্যা দাদা, আমাদের ছেলেবেলা মানেই গ্রামের শান্ত সুন্দর ছবি। এখন, আমার বাচ্চারাই গ্রামে যেতে চায় না। এটা কেমন সভ্যতা !!

      অনেক শুভেচ্ছা দাদা, ভাল থাকবেন।

    - গোলাম মোস্তফা

    কোথায় হারিয়েছি ছেলেবেলা 

    12 হাজার মেইল দুরের পথ 

    কোথায় হারিয়েছি ছেলেবেলা মন খারাপ করা কথা মন খারাপ হয়ে জায় 

    অনেক অনেক শুভ কামনা আপু 

     

    • - কামরুন নাহার ইসলাম

      আপনার ১২ হাজার মাইল দূরের পথ। আর আমার কাছে থেকেও নেই। চাইলেও আর পাব না। ভাল থাকবেন মোস্তফা ভাই।

    Load more comments...