প্রথমবারের মত র্যাকেট হাতে নিয়েছিলাম কোন কোর্টে দাড়িয়ে নয় বিছানায় শুয়ে শুয়ে। আজকে সেই গল্পটাই বলব।
২০০৫ সালের কোন এক সময়ের কথা। চট্টগ্রামের ইস্পাহানী পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজে ক্লাস ওয়ানে পড়তাম তখন। চতুর্থবারে মত ডাক্তারের ছুড়ি কাঁচির নিচে শুয়েছিলাম অপারেশন থিয়েটারের বেড। হার্নিয়ার অপারেশন।[আগের তিনবার ছিল রেক্টাল পলিভের।খুবই অদ্ভুটরোগ]
অপারশন থিয়েটারের সব ডাক্তারের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল বেশ কয়েকবার ঐ ঘরে যাওয়ার ফলে। তাই খুব একটা ভীতি কাজ করেনি তখন।
সফল অস্ত্রপচারের পর একমাসের বেড রেস্ট দিল। পুরাই শুয়ে শুয়ে এতদিন কাটান আমার জন্য ছিল যন্ত্রনাদায়ক। প্রথম কয়েকদিন বেশ খুশিই ছিলাম স্কুলে যাওয়া লাগবে না ভেবে। কিন্তু সপ্তাহ না যেতেই আমি অস্থির হয়ে উঠেছিলাম। আর তাতে বাসার সবার শান্তি নষ্ট। কিভাবে আমাকে কোন কাজে ব্যস্ত রাখা যায় সেটা ভাবতে ভাবতে আব্বা আম্মা দাদা ফুফুদের ঘুম হারাম হবার দায়। অবশেষে একটা আইডিয়া পেল আব্বা। আব্বা তখন টেকনাফে চাকরি করতেন, আমার জন্য ছুটি নিয়ে এসেছিলেন চট্টগ্রামে। কিনে নিয়ে আসলেন আকাআকির সরঞ্জাম। সেসময় আকাআকিতে আমার খুব আগ্রহ ছিল তাই। কিন্তু আনলে কি হবে আমি তো উঠে বসতেই পারি না আকাআকি তো দূরে থাক। আম্মা আব্বার এই “বেয়াক্কেলি” কান্ড দেখে খুব রাগারাগি করেছিলেন সেটা এখনও মনে আছে আমার। পরে আরেকদিন কি ভেবে আব্বা নিয়ে আসলেন ব্যডমিন্টন র্যাকেট আর কর্ক। প্রথমবারের মত র্যাকেট হাতে নিয়েছিলাম কোন কোর্টে দাড়িয়ে নয় বিছানায় শুয়ে শুয়ে। আমার প্রতিপক্ষ বিছানার মুখমুখি তিনটি আলমিরা। অদ্ভুট এক খেলা কিন্তু ভালই মজে গিয়েছিলাম সেটাতে। আর কর্ক তুলে দিতে দিতে আম্মার কোমর ব্যথা হয়ে গিয়েছিল, স্যরি মা।
আমি কোন খেলাতেই পারদর্শী নয় কিন্তু ব্যডমিন্টন খেলি খুবই বাজে। কোন জাতের মধ্যে পড়ে নাহ। এটা নিয়ে আমার কোয়াটারের বড় ভাই বন্ধুরা খুবি হাসাহাসি করেন। আমার খেলা যে “নির্মল বিনোদন”। তারা হয়ত ভেবে পান না আমি কেন এত বাজে খেলি। আজ পেয়ে গেলেন ত জবাব। ব্যডমিন্টনে আমার হাতেখড়িটাই তো ছিল ব্যতিক্রম খেলায় তারই প্রভাব পড়েছে।
Comments (1)
এই ব্লগে এখন পর্যন্ত সরাসরি ডেস্কটপ থেকে ছবি আপলোডের সিস্টেমটা আসে নাই বলে সবগুলো ছবি একবারে পোস্ট করে দেয়া হয় নাই। আরো ছবি আসবে কিছুক্ষণের মধ্যেই...
চমৎকার! আপনার ছবি পোস্ট থেকে বইমেলা ভ্রমণ করে আসলাম। সুন্দর ভাবে তুলে ধরেছেন।
শুভেচ্ছা রইল।
অনেক ভালো লাগলো, আমার সাথে সাথে আপনাকেও বইমেলায় পেয়ে।
এখানে সরাসরি আপলোডের সুবিধাটা পাচ্ছিনা বলে আপাতত এতটুকুই দিয়েছি। ফেবু'তে আরো ছবি আপলোড দিচ্ছি, সেখান থেকে কিছুক্ষণ পরেই আরো ছবি নিয়ে আসবো। কাজটা কিছুটা ঝক্কির; কিন্তু-নিজে কি দেখলাম তা যারা দূরে বসে রয়েছেন, তাদের জন্য দেখানোর আকুলতা কাজ করছে বলেই কষ্টটা করা।
বইমেলায় আসবেন তো?
আপনার সুন্দর বর্ননা আপনার লেখাকে আরো সুন্দর করেছে। যেন নিজের অজান্তেই বইমেলায় হারিয়ে গিয়েছিলাম।
অনেক ধন্যবাদ, ভাইয়া। শুভেচ্ছা রইলো।