Site maintenance is running; thus you cannot login or sign up! We'll be back soon.

আল ইমরান

১০ বছর আগে

আমার দেখা জাফলং

“আট মাস ধরে সিলেট থাকার পরও জাফলং দেখা হয়নি” এই অপবাদ মাথায় নিয়ে সিলেট ছাড়তে ইচ্ছে করছিল না। তাই গতকাল থেকেই মোটামুটি সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছিলাম যে আজ জাফলং যাব। সকাল থেকেই রুমমেট এবং বন্ধু আতিক কে বলে রেখেছিলাম যে, আজ যে করেই হোক জাফলং দেখতেই হবে। অনেক চেস্টা তদবির করে দুপুরের দিকে সময় মিলল। সিলেট সোবহানী ঘাট থেকে জাফলং এর বাসে উঠে বসলাম বেলা দেড়টায়। শহর ছেড়ে গাড়ি বেরিয়ে পড়তেই চোখে পড়ল সিলেটের পাহাড়ি সৌন্দর্য।

বাসের খোলা জানালা দিয়ে হালকা ঠাণ্ডা হাওয়া চোখে লাগতেই চোখ জড়িয়ে আসছিল ঘুমে। অনেক কায়দা কসরত করে ঘুমকে জয় করে দেখতে লাগলাম তামাবিল রোড এবং জৈন্তা এলাকার প্রাকৃতিক রুপ। তামাবিল এলাকায় বেশ কয়লা পাওয়া যায় শুনেছিলাম। তামাবিল পার হয়ে আসার সময় দেখলাম সারি সারি ভারতীয় ট্রাক কয়লা লোড আনলোড করছে। খুব কাছেই নাকি সীমান্ত। এদিক দিয়েই আসে কয়লা। প্রায় ২ ঘন্টার জার্নি করে নামলাম জাফলং বাজারে। দুপুরে খাওয়া হয়নি। ক্ষুধায় পেটে ছুঁচো ডন মারছিল। ঝটপট মাছের চাটনি আর কৈ মাছ ভুনা দিয়ে খাওয়া দাওয়া সারলাম। বেশ ভালো রান্না হয়েছিল। খরচ ও বেশ কম। সেখান থেকে হাঁটা শুরু করলাম জাফলং এর পাথর নদীর দিকে। মিনিট দশেকের মাঝে পৌঁছে গেলাম সেখানে।

পাথুরে নদীতে পাথর তোলায় ব্যস্ত ওখানকার কর্মজীবী লোকজন। কিছুক্ষণ পর পর আসছে ট্রাক, পাথর বোঝাই করে নিয়ে যাচ্ছে। একপাশে পাথর ভাঙ্গানো হচ্ছে মেশিনে। পাথর ভাঙ্গার এলাকা বেশ ধুলোয় আচ্ছন্ন। মেশিনের কর্মীদের গায়ে জমেছে ধুলোর আস্তরন। কাজ শেষে পাথুরে নদীর ঠান্ডা কিন্তু ঝকঝকে পানিতে গোসল সেরে নিচ্ছে কেউ কেউ। শুনলাম, বেশ কাছেই ভারতীয় সীমান্তের বি এস এফ ছাউনি। সেখানে নাকি সুন্দর একটা ব্রিজ আছে। নৌকা করে যাওয়া যায়। তবে বেলা ৫ টার মধ্যে ফিরে আসতে হবে।

আমাদের হাতে তেমন সময় ছিল না বলে নৌকা ভাড়া করলাম না। হেঁটেই রওয়ানা দিলাম। ভাবলাম যতটুকু কাছ থেকে দেখা যায়, দেখে আসব। প্রায় মিনিট পনের হাঁটার পর পৌঁছে গেলাম সেখানে। আসলেই খুব সুন্দর এলাকা। একপাশে পাহাড় আর পাহাড়ের কোল ঘেঁষে নদী। নদীর কিছু অংশে হাটু পানি এবং পানির মাঝে বেশ বড় বড় পাথর। জুতো খুলে প্যান্ট গুটিয়ে নেমে পড়লাম পানিতে। ঝকঝকে পানির নিচে পরিষ্কার দেখতে পাচ্ছিলাম বিভিন্ন রঙের পাথর।

 

বড় একটা পাথরে বসে কিছু ছবি তুললাম। পরে জেনেছি আমি ভারতীয় সীমান্তে ঢুকে পড়েছিলাম। একপাশে নদী চলে গেছে দুটো পাহাড়ের মাঝ দিয়ে। ওখানেই সেই ব্রিজ। সত্যিই সুন্দর ল্যান্ডস্কেপ। ছবি তোলা আর সৌন্দর্যের মুগ্ধতায় ৫ টা বেজে গেল। একজন বি এস এফ জাওয়ান কে দেখলাম বাঁশি নিয়ে সবাইকে স্পট থেকে সরে যেতে বলছে। উঠে এলাম পানি থেকে। জাওয়ান কে জিজ্ঞেস করলাম, “আপনাদের সীমান্ত কোথা থেকে শুরু।“ উনার মুখের ভঙ্গি দেখে বুঝলাম যে আমার কথা বোঝেনি। এবার হিন্দি তে বললাম, “আপকি এরিয়া কাহাসে কাহা তাক? কিত্নে বাজে তাক হাম ইয়াহা রেহ সাক্তা?” একরাশ বিরক্তি নিয়ে উনি উত্তর দিলেন, “আপ লোগোকি জানে কা ওয়াক্ত হো গায়া।“ আর বড় একটা পাথর দেখিয়ে সীমানা বুঝিয়ে দিলেন। তাকে ধন্যবাদ জানিয়ে আমরা ফিরে চললাম আমাদের গন্তব্যে।

০ Likes ১০ Comments ০ Share ১৩৫৬ Views

Comments (10)

  • - Ekolobyo

    সুন্দর............
    অনেক ভালো লাগা রইলো....................