ট্রেন শব্দটি শুনলেই দুর্গা আর অপুর মুখ ভেসে আসে। "কু ঝিক ঝিক" "ঝমা ঝম" ট্রেন চলেছে ট্রেনের বাড়ি কই -ছড়াটি মনে পড়ে।। বাস্পীয় ইঞ্জিনের ট্রেনে এই টাইপের শব্দ হত বোধহয়। একটা খেলনা ট্রেন কিনেছিলাম সেটিতে এই টাইপের শব্দ পেয়েছিলাম এবং একটু সময় পর পর ট্রেনের উপরে ধোঁয়া বের হতো। আগের দিনের কয়লা চালিত ইঞ্জিন। এখন আধুনিক ট্রেন , পাতাল ট্রেন ডেমু ট্রেন, ৩৭০ কিলো বেগে চলা ট্রেন কত কি? এই রকম দ্রুত গতির ট্রেনে বসে মনে হয়েছে প্লেনে আছি। ভেতরে বসে বুঝার সুযোগ নেই ট্রেন কত জোরে ছুটছে। সবচেয়ে মজার ট্রেন মনে হয়েছে পাতাল ট্রেন ট্রেন গুলি আসলে পাতালে চলে না তারপরও এর নাম পাতাল ট্রেন। কিছুদিন আগেই কলকাতার পাতাল ট্রেনে ছড়ে খুব আক্ষেপে পুড়লাম নিজের দেশে কখন পাবো সে কথা মনে করে। সারা কলকাতার সড়কে গাড়ির যে মান সে তুলনায় ওখানে পাতাল ট্রেন আছে এবং সুন্দর সার্ভিস দেখে অবাকই হলাম। আমার সবচেয়ে মজার এবং থ্রিলিং ট্রেন ও বেইজিং এর সাব ওয়ে(পাতাল ট্রেন)। এত জনবহুল শহরে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যাওয়া এত সহজ আগে জানা ছিল না । তা খুবই অল্প টাকায়।
বাংলাদেশেও আমার প্রিয় বাহন ট্রেন -ঢাকা -চট্টগ্রাম। সুবর্ণ এক্সপ্রেস এবং তুর্ণা নিশিতা ছাড়া অন্য গুলাতে সহজে চড়ি না। যদিও সব প্রকার বাংলাদেশী ট্রেনের সীটে রক্তখেকু পোকা আছেই। অনলাইনে টিকিট কাটার সুবিধার জন্য এখন টিকেট পেতে ঝামেলা হয় না। একদম টিকেট না পেলে কালো মানুষদের (ব্ল্যাকার) স্মরণাপন্ন হই।
ট্রেনে সম্পর্কে এই কথা গুলো আগের । এখন নতুন কথা হলো এ সব ট্রেনকে ফেল মেরেছে আরেকটি ট্রেন। সেটির নাম নির্বাচনী ট্রেন। সেই আনলাকি ২০১৩ এর শেষ দিকে এই ট্রেন নিয়ে কথার গতিবেগ শুরু হলো। আর শেষ হয় না ২০১৪তে ও। একজন বলে নির্বাচনী ট্রেন এখন কমলাপুরে আরেকজন বলে এই ট্রেনকে রাজস্থানেই আটকে দেয়া হবে। একজন বলেনতো এটা ভারতীয় ট্রেন- আরেক জন বলে এটা খাঁটি পাকিস্তানের ট্রেন। যাত্রীবিহীন ট্রেন, লোকাল ট্রেন, উপজেলা নির্বাচনী ট্রেন এই কথা গুলো শুনতে শুনতে যখন বিরক্ত হয়ে গেলাম তখন আবার শুনলাম "গোলাপী এখন ট্রেনের" রিমিক্স ভার্সন। সিনেমা বানাবি বানা তাই বলে ট্রেনের নাম নিয়ে!! ইদানিং গ, ল প বর্ণ ৩ টি নিয়ে এমনিতেই ঝামেলা চলছে । সেখানে সিনেমা বানাইলি তা ও নায়িকার নামের মধ্যে পাওয়া গলেো সেই ভিলেন বর্ণ- গ,ল ,প। নির্বাচনী বিমান, নির্বাচনী জাহাজ, নির্বাচনী বাস, নির্বাচনী রিকসা এসব না বলে শুধু ট্রেনের উপর খেপা কেন সবাই!!
Comments (6)
- কি অইছে আমার রতনের। ও রতন ওঠ বাবা ওঠ। দ্যাখ আমি আইছি। দ্যাখ তোর লাইগা সুয়েটার আনছি। দ্যাখ। বলেই হাউ মাউ করে কেঁদে ফেলেন তিনি।
অথবা,
রতন,এই শীতে তুই ক্যামনে শুইয়া থাকবি রে বাবা। তোর শীত লাগবো না ? সুয়েটার নিলি না বাবা।
কিংবা,
ঘাসের উপর পরে ছিল সোয়েটারটা। আনু সেটা তুলে নিয়ে আলতো করে বিছিয়ে দেয় রতনের কবরের উপরে। ধীরে ধীরে রাত বাড়ে। উত্তুরে বাতাসে হীম হয়ে ওঠে চারিদিক। কিন্তু, সেই হীম বাতাস কাবু করতে পারে না রতনকে। তার গায়ে যে সোয়েটার আছে। বাবার মমতা মাখা সোয়েটার পরম যত্নে উষ্ণ রাখে তার ঝলসে যাওয়া নিষ্প্রাণ দেহ।
এ সকল অভিব্যক্তি খুব সহজে মনের ভেতর সম্প্রসারিত হয়, মনকে আচ্ছন্ন করে দেয় এক কষ্টবোধ। রতন সামান্য এক সোয়েটার গায়ে জড়িয়ে নিতে পারলো না।
সমাজের নোংরা রাজনীতি কিংবা রেষারেষির বলি হল রতন! একটি বাবা, একটি মা সন্তান হারাল, বোন তার প্রিয় ভাইটিকে হারাল। একটি পরিবার একটি আপনজন শূন্য হল এবং এভাবে প্রতিদিন কেউ না কেউ হারিয়ে যাচ্ছে! তাতে কোন বিবেক জেগে উঠলেও, তা দানা বাঁধছে না, তাই আমাদের কেউ কেউ এভাবে হারিয়ে যাবে নিয়তির অমোঘ নিয়মে।
একটা জায়গায় দৃশ্যান্তর খুব দ্রুত হয়েছে বলে আমার মনে হল।
- বাবা, সামনের সপ্তায় আসার সময় আমার লাইগ্যা একখান সুয়েটার আইনো ।
রতনের বাবা ফুতপাতের পাশের দোকান থেকে রতনের জন্য একটা ফুলহাতা সোয়েটার কিনে নেন। সোয়েটারটা রতনের একটু বড় বড়ই হবে।
কোটেড অংশ টুকুতে এক দৃশ্য হতে অন্য দৃশ্যে দ্রুত চলে যাওয়া হয়েছে। গল্পকার দৃষ্টি দিতে পারেন।
ছোট গল্পে চমৎকার বার্তা দিয়েছেন কিন্তু আমাদের কোন কিছু আজও বদলালো না। ভাল লাগলো। শুভেচ্ছা রইল।
ভাই সুমন আপনার সুদীর্ঘ বিশ্লেষণধর্মী মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ। আমি আসলে ছোট গল্প লেখায় একেবারে কাঁচা। নক্ষত্র ব্লগে এটা নিয়ে মোট তিনটা গল্প দিয়ে আমার গল্প লেখায় হাতেখড়ি। আপনাদের সহযোগিতা পেলে আমার লেখার দুর্বলতা বুঝতে পারব এবং ঝালাই করে নিতে সচেষ্ট হব।
শুভকামনা সতত।
খুব ভাল লাগল। আমি এই ব্লগে নতুন আমার ব্লগে আপনাকে স্বাগতম।
আকাশ ভাই, আপনি এই ব্লগে নতুন হলেও আমার কাছে তো নতুন নন। অনেক আগে থেকেই আপনার সুন্দর লেখনির সাথে আমি পরিচিত। আশা করি এখানেও আপনার সুন্দর কিছু লেখা পাব।
শুভকামনা সতত।
কষ্টের গল্প। ভালো লিখেছেন সুখেন্দুদা। সুমন ভাইয়ের মন্তব্যের উপর ভিত্তি করে কিছু কাটছাট করলেই লেখাটা আরো চমৎকার হতে পারে।
লেখাটার ব্যবচ্ছেদ বাদ দিয়ে... ভালো লাগলো আপনার লেখা। আহারে! একটা সোয়েটার! সমাজটা চোখের সামনেই নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। আমরা কিছু করতেও পারছি না। আমরাই আসল অপরাধী।
ইশতিয়াক ভাই সুন্দর মন্তব্যের জন্য অশেষ ধন্যবাদ আপনাকে। সুমন ভাইএর প্রত্যুত্তরে আমার মন্তব্য স্মরন করার অনুরোধ রইলো। আশা করি আপনাদের মন্তব্য, সমালোচনা ও নির্দেশনা দিয়ে আমাকে সহযোগিতা করবেন। যাতে আমার লেখার দুর্বল দিকগুলি আমি কাটিয়ে উঠতে পারি।
শুভকামনা সতত।