Site maintenance is running; thus you cannot login or sign up! We'll be back soon.

আমরা মানুষ, তার চেয়ে বড় কিছু নই

আমরা মানুষ, তার চেয়ে বড় কিছু নই

কথায় আছে পাপকে ঘৃণা করো পাপীকে নয়। পাপপূণ্য বিচার করার ভার মানুষের হাতে নেই, আছে ঈশ্বরের হাতে। তবে ভাল মন্দ বুঝার ক্ষমতা সব মানুষের মধ্যেই আছে, আর আছে তা গ্রহণের ক্ষমা বা অক্ষমতা। তবে যে মানুষ ভালমন্দের ফারাক বুঝে না তাকে পাপপূণ্য শিখিয়ে বা বুঝিয়ে কোন লাভ নেই। একটা শিয়ালকে যুগ যুগ ধরে ভদ্রতা আর নৈতিকতা শিখিয়ে কোন নিরীহ মুরগীকে সামনে দিলে সে কি কামড় না দিয়ে বসে থাকবে? শিয়ালের ধর্ম কী তাই বলে? সাপুরের কাছে সাপ-নেউল দুটোই থাকে। দুটোই তার পোষ মানানো, তবুও দুটো প্রাণীকে বেশ নিয়ন্ত্রের মধ্যে রাখতে হয়। বহুদিন দুজনে  আলাদা ভাবে থাকলেও সাপ ও নেউল যখনই মুখোমুখি হবে তারা ভদ্রতা বা শিষ্টাচার দেখিয়ে চুপ করে বসে থাকবেনা। ওদের দুজনের ধর্মই হচ্ছে নিজেদের মধ্যে যুদ্ধ করা। একে অপরকে ঘায়েল করা। এখানে সাপুরের কোন ধর্মবাণী, মর্মবাণী বা উপদেশ কোনটাই ধোপে টিকবে না।

আমাদের প্রত্যেকের ধর্মই মূলতঃ পূর্বপুরুষের বেঁধে দেয়া বা শেখানো রীতিনীতি। পরম্পরায় মেনে আসা অনুশাসন, কৃষ্টি বা সংস্কৃতি ধর্মেরই একটা অংশ। এই ধর্ম মানুষেরই সৃষ্টি, মানুষের গড়া এই ধর্মের দীক্ষা নিয়েই আমরা সারা বিশ্বের মানুষ দীক্ষিত। আর সেটাই আমরা ঐতিহ্যগতভাবে বা বংশানুক্রমে লালন-পালন করে আসছি। তবে পৃথিবীর সব মানুষই এক ধর্মের অনুসারী নয়। আর প্রতিটি মানুষই একই ভাবনা-চিন্তা-চেতনায় লালিত বা পালিত নয়। প্রতিটি মানুষের মধ্যেই কিছু না কিছু ভিন্নতা রয়েছে। আর এই কারণেই প্রতিটি মানুষ তার নিজ নিজ চিন্তা চেতনায় সম্পূর্ণ স্বাধীন, সতন্ত্র ও মৌলিক উদ্ভাবনী ক্ষমতার অধিকারী। আর যদি তা না হতো তবে পৃথিবীর সকল জীবিত ও মৃত মানুষের ডিএনএ এক ও অভিন্ন হতো। কিন্তু ঈশ্বর কোন মানুষকে সেভাবে সৃষ্টি করেননি। এমন কী জমজ দুই সন্তানের বেলায়ও এই ভিন্নতা সেটাই প্রমাণ করে। এমন কি প্রতিটি জীবজন্তুর বেলায়ও একই ব্যাপার লক্ষ্যনীয়। জেব্রার পালের সব জেব্রা দেখতে এক রকম হলেও তারা প্রত্যেকেই সতন্ত্র, তাদের গায়ের ডোরাকাটা দাগ একটা থেকে আরেকটা হুবহু এক নয়।

এই জটিল ও রহস্যে ঘেরা সৃষ্টির কারণেই আমরা প্রত্যেকটি মানুষ একে অপরের চেয়ে আলাদা। আর এই তফাত যদি না’ই থাকবে, তবে কে নীল সাধু? কে পাশা? কে কালপুরুষ? সবাই একরকম, এক কাতারে একই রকম মানুষ হয়ে যেতাম। অথচ আমরা তিনজনই মুসলমান। আমাদের ধর্মও এক ও অভিন্ন। সেক্ষেতে আমাদের ঈমান, আচরণ, কথা, ব্যবহার একই থাকার কথা। অথচ দেখুন আমাদের তিনজনের আচার-আচরণ, চলা-ফেরা, কাজ-কর্ম, জীবণ-ধারণ কখনোই এক নয়। কক্ষনোই না, এটা হতেই পারে না।

শুধু ইসলাম ধর্ম কেন, কোন ধর্মেরই সকল মানুষ একই রকম নয়- হয়না, হতে পারেনা। প্রতিটি মানুষই এক অনন্য সৃষ্টি, ভিন্নতাই তাদের মূল বৈশিষ্ট্য। তাই হয়তো নিজ ধর্মের মানুষের সাথে বিরোধ বা মতের অমিল, নিজ ধর্মের বাইরে অন্য ধর্মের মানুষের সাথে বিরোধ বা মতের অমিল আছে এবং থাকবেই। গোত্রে-গোত্রে বা বর্ণে-বর্ণে নানা দ্বন্দ্ব ও বিরোধ আদিকাল থেকেই চলে আসছে এবং সেগুলোও থাকবে। তবে কোন ধর্মই মানুষে মানুষে এই বিরোধ বা দ্বন্দ্বকে প্রশ্রয় দেয়না বরং এসব থেকে বিরত থাকার কথাই বলে আসছে। আমরা মানুষ তা পালন করছিনা বা মেনে চলছি না। মানুষ তার নিজ স্বার্থ বা গোষ্ঠির স্বার্থের কারণে ধর্মের বাণী থেকে সরে আসে। সামাজিক অনুশাসন থেকে সরে যায়। রাষ্ট্রনীতি বা বৈশ্বিক ভাল-মন্দ থকে চোখ ফিরিয়ে নেয়। আর এখানেই মানুষ থেকে মানুষকে আলাদা করে দেয়। প্রতিটি মানুষের মাঝে মৌলিক কোন না কোন পার্থক্য থাকবেই। থাকতেই হবে। তাই হয়তো এই ধর্ম, এই সমাজ, এই সামাজিক অনুশাসন, পারিবারিক মূল্যবোধ। ধর্ম দিয়ে বা ধর্মের অনুশাসন দিয়ে আমরা পরস্পরের মধ্যে একটা শান্তি ও সৌহার্দপূর্ণ সহঅবস্থানের কথা ভাবতে পারি, তার চেয়েও বড় কথা আমরা আমাদের মানবিকতাকে কতটুকু বিকশিত করতে পারি বা জনকল্যাণে আমরা কতটা নিজেকে সঁপে দিতে পারি সেটাই এই সমাজ ও দেশের কল্যাণের চাবিকাঠি হয়ে উঠতে পারে। আদর্শ মানুষ নাই'বা হলাম, সাধারণ মানুষ হিসেবেও সমাজ ও রাষ্ট্রের প্রতিটি স্তরে একটা স্থিতিশীল পরিবেশ বজায় রাখার চেষ্টা আমরা করতেই পারি। মানুষ নিজেদের মধ্যকার সুসম্পর্ক বজায় রাখতে পারলে দেশ, সমাজ সংসার সবক্ষেত্রেই শান্তিতে থাকতে পারে। আর এর মধ্যেই মানুষের সকল কল্যাণ নিহিত। যুদ্ধ-বিগ্রহ, কলহ-বিবাদ কখনই মানুষের মাঝে শান্তি বয়ে আনতে পারে না। আমাদের সবার মাঝে এমন বোধ জাগ্রত হোক।

০ Likes ৩ Comments ০ Share ৪৫২ Views

Comments (3)

  • - কাজী মেহেদী হাসান

    এমন লেখা পড়লে নিজেকেও সে দলভুক্ত মনে হয়, কবি তো এখানেই স্বার্থক 

     

    ভালোলাগা 

    • - মাটির ময়না

      shuveccha Roilo mehedi....:)

    - ঘাস ফুল

    ময়নার পোস্টে কোন মন্তব্য করবো না। কারণ ময়নায় পোষ্ট দিয়া হাওয়া হইয়া যায়। যখন ব্লগে দেখুম তহন মন্তব্য দিমু। এইডা আবার মন্তব্য ভাইবো না। এইডা অইলো সতর্কীকরণ নোটিশ। খুব খিয়াল কইরা। 

    - নীল সাধু

    পথের মোড়ে মাতাল বুড়োর খিস্তি,

    তোকে আদরে চুমু খাবার স্বস্তি,

     

    শুভেচ্ছা মাটির ময়না, কবিতা বেশ লেগেছে।

    শুভেচ্ছা রইল। ভালো  থেকো।

    • - মাটির ময়না

      Dhonnobad NEEL Da....  :)

    Load more comments...