আজ বাঙালির নববর্ষের প্রথম দিন
সাইয়িদ রফিকুল হক
আজকে কোনো কুকুর কোরো না ঘেউ-ঘেউ
চুপচাপ বসে থাকো নিজের ঘরে,
আজ মাঠে নেমেছে বাঙালি—এক মহাউৎসবে,
আজ বাঙালি-জাতির মহাআনন্দের শুভদিন
আজ বাঙালির নববর্ষের প্রথম দিন।
আজ পহেলা বৈশাখ,
আজ বাঙালির নতুন বছর বরণের দিন,
আজ বাঙালির হালখাতা খোলার দিন,
চারদিকে আজ শুধু আনন্দের জয়ধ্বনি,
আজকের শুভদিনে কেউ করবে না ফতোয়াবাজি,
এদেশ তোমার যদি নাই ভালোলাগে,
তবে কেন বসে আছো এখানে?
আর কেন ঘেউ-ঘেউ করছো মানুষের বিরুদ্ধে?
তোমরা চলে যাও পেশোয়ার-করাচি-লাহোরে
তোমরা এখনই ছুটে যাও তোমাদের পিতৃভূমি পাকিস্তানে।
আজ বাঙালি-জাতির জীবনে নতুনভাবের শুভদিন,
আজ বাঙালির হৃদয় খুলে হাসবার দিন,
আজ বাঙালির নতুনশপথে জেগে ওঠার দিন,
শহরে-বন্দরে-গ্রামে-গঞ্জে
আজ মেতে আছে অসংখ্য নর-নারী,
আর মেতে আছে সবাই দেশের গানে,
সুরের মূর্ছনায় ভরে গেছে বাংলাদেশ,
আজ তোমরা নিশ্চুপ হয়ে যাও পশ্চিমাকুকুর,
আজ কেউ শুনবে না তোমাদের ঘেউ-ঘেউ,
বাঙালি-হৃদয় শুনেছে পহেলা বৈশাখের আহ্বান,
পালিয়ে যাও তোমরা যারা পাকিস্তানীকুকুর,
তোমাদের সারাবছরের ক্রমাগত ঘেউ-ঘেউ
লাগে নাই কোনো কাজে,
আর মাটি করতে পারেনি আমাদের আনন্দ।
আজ পথে-পথে মানুষের শুধু উপচেপড়া ভিড়,
আজ বাংলাদেশের সর্বত্র মানুষের আনন্দ-মিছিল!
আনন্দের ফাঁকে-ফাঁকে একটুখানি খেয়াল রেখো সবাই
কোনো কুকুর যেন ঢুকতে না পারে আমাদের দলে,
আমাদের কত মা-বোন আজকের শুভদিনে
শুনেছে ঘরছাড়ার ডাক, মিশেছে পহেলা বৈশাখের মিছিলে,
ক্ষণিকের এই আনন্দ যেন তাদের নষ্ট হয়ে না যায়!
ওই দেহলোভীকুকুরগুলো আমাদের পবিত্র নারীদের
আঘাত করার আগেই ভেঙ্গে দাও ওদের মেরুদণ্ড
আর দেহ থেকে চিরবিচ্ছিন্ন করে দাও ওদের নবম কশেরুকা,
শুভনববর্ষে নারীলোলুপ-পাগলাকুকুরদের শায়েস্তা করো শক্তহাতে।
আরও জেগে ওঠো বীর-বাঙালি
আরও জেগে ওঠো শহরের মানুষ,
আরও জেগে ওঠো গাঁও-গেরামের মানুষ
আরও জেগে ওঠো বাংলাভাষা-প্রেমিকগণ,
আর কখনও ভয় পেয়ো না তোমরা কেউ—
আশপাশে হয়তো কুকুর করতে পারে ঘেউ-ঘেউ,
আজ বাঙালির নতুনস্বপ্নে জেগে ওঠার দিন,
আজ নববর্ষের প্রথম দিন—আজ শুভদিন।
সাইয়িদ রফিকুল হক
মিরপুর, ঢাকা, বাংলাদেশ।