Site maintenance is running; thus you cannot login or sign up! We'll be back soon.

আজ আমার মায়ের বিজয় চিহ্ন দেখাবার দিন

আজ ১৬ ডিসেম্বর, মহান বিজয় দিবস। বাঙালির সবচেয়ে আনন্দের দিন। বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিন। পরাধীনতার শৃঙ্খল থেকে মুক্তির দিন। এদিন বিশ্বের মানচিত্রে সৃষ্টি হয় নতুন একটি সার্বভৌম দেশ, বাংলাদেশ। যা বাঙালি জাতিকে এনে দেয় আত্মপরিচয়ের ঠিকানা। যারা বুকের তাজা রক্ত দিয়ে এ বিজয় ছিনিয়ে এনেছেন; আজ সেসব শহীদকে বিনম্র শ্রদ্ধা আর ভালোবাসায় স্মরণ করবে দেশের সর্বস্তরের মানুষ। বাংলার দামাল মুক্তিযোদ্ধা আর মুক্তিপাগল মানুষের প্রবল প্রতিরোধ আর লড়াইয়ের মুখোমুখি হয়ে বাংলাদেশ থেকে পরাজিত হয়ে এ দিনে আত্মসমর্পণ করেছিলো পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী। ৪২ বছর আগে আজকের এই দিনে পূর্ব আকাশে উদয় হয়েছিলো হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ সূর্য। সেদিনের সেই সূর্যের আলোয় ছিলো নতুন দিনের স্বপ্ন। আর এ স্বপ্নের জন্য অকাতরে প্রাণ দিয়েছিলেন ৩০ লাখ মানুষ। তাদের প্রাণের বিনিময়ে আমাদের এ বিজয়, এ স্বাধীনতা। বাংলার মাটিতে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হচ্ছে- এমন আনন্দ নিয়েই আজ বিজয় দিবস পালন করতে যাচ্ছে গোটা জাতি। সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্ন নিয়ে এক বুক রক্তের বিনিময়ে স্বাধীন হয়েছিলো এ দেশ। বিজয়ের এ দিনে সবার অঙ্গীকার সুন্দর ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার। যেসব বৈষম্য থেকে স্বাধীনতার জন্ম সেই বৈষম্যগুলো থেকে এ জাতি বেরিয়ে আসতে আবার দৃঢ় প্রত্যয় নেবে আজ।

আজকে আমার খুব মনে পড়ছে মায়ের কথা। আমাদের শহীদ জননী জাহানারা ইমামের কথা। এই সেই মহীয়সী যিনি সমস্ত প্রতিকুলতা মাথায় নিয়ে সর্বপ্রথম রাজাকারের বিচার দাবী করে। শুধু বিচার দাবী না উনি গন আদালতে গোলাম আযমের শাস্তি ও দিয়ে ছিলেন। 

১৯৯১ সালের ২৯ ডিসেম্বর গোলাম আযমকে জামায়াতে ইসলামী তাদের দলের আমীর ঘোষণা করলে বাংলাদেশে জনবিক্ষোভের সূত্রপাত হয়। বিক্ষোভের অংশ হিসাবে ১৯৯২ সালের ১৯ জানুয়ারি ১০১ সদস্যবিশিষ্ট একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি গঠিত হয় জাহানারা ইমামের নেতৃত্বে। তিনি হন এর আহ্বায়ক। এর পাশাপাশি মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী প্রতিরোধ মঞ্চ, ১৪টি ছাত্র সংগঠন, প্রধান প্রধান রাজনৈতিক জোট, শ্রমিক-কৃষক-নারী এবং সাংস্কৃতিক জোটসহ ৭০টি সংগঠনের সমন্বয়ে পরবর্তীতে ১১ ফেব্রুয়ারি ১৯৯২ ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন ও একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল জাতীয় সমন্বয় কমিটি’ গঠিত হয়। সর্বসম্মতিক্রমে এর আহ্বায়ক নির্বাচিত হন জাহানারা ইমাম। এই কমিটি ১৯৯২ সালে ২৬ মার্চ ’গণআদালত’ এর মাধ্যমে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে একাত্তরের নরঘাতক গোলাম আযমের ঐতিহাসিক বিচার অনুষ্ঠান করে। গণআদালাতে গোলাম আযমের বিরুদ্ধে দশটি সুনির্দিষ্ট অভিযোগ উত্থাপিত হয়। ১২ জন বিচারক সমন্বয়ে গঠিত গণআদালতের চেয়ারম্যান জাহানারা ইমাম গোলাম আযমের ১০টি অপরাধ মৃত্যুদন্ডযোগ্য বলে ঘোষণা করেন।

জাহানারা ইমাম গণআদালতের রায় কার্যকর করার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানান। এই গণআদালতের সদস্য ছিলেনঃ এডভোকেট গাজিউল হক, ডঃ আহমদ শরীফ, মাজহারুল ইসলাম (স্থপতি), ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ, সুফিয়া কামাল, কবীর চৌধুরী, কলিম শরাফী, শওকত ওসমান, লেঃ কর্ণেল (অবঃ) কাজী নুরুজ্জামান, লেঃ কর্ণেল (অবঃ) আবু ওসমান চৌধুরী এবং ব্যারিস্টার শওকত আলী খান

আজকে আমি গভীর শ্রদ্ধায় স্মরণ করি আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সকল মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ মুক্তিযোদ্ধা ও বীরাঙ্গনাদের। 
আজকে আমি গভীর শ্রদ্ধায় স্মরণ করি আমাদের মা জাহানারা ইমাম কে। 
উনারা নিশ্চয়ই খুশি আজ আমাদের এই প্রজন্মকে দেখে। 

বাংলাদেশ দীর্ঘজীবি হোক।
জয় বাংলা।

 

০ Likes ১৬ Comments ০ Share ৬০৮ Views

Comments (16)

  • - তাহমিদুর রহমান

    নিসর্গ সুখ তোমার শরীরে চাষ করেছি শত-সহস্র

    যার সবটুকু নিয়েছ, দিয়েছ আমায় নির্বাসন।

    ওই নীলিমা এখন আমার জন্য আর কাঁদে না

    সাগরের ঢেউ তটিনীর বুকে আছড়ে পড়ে না

    প্রতারক মন, প্রতারণার বেসাতিতে সমর্পণ।।

     

     

    এই পাঁচ লাইন খুব ভাল লাগবে।

    • - ফায়েজ মাহ্‌দী

      বাকীসব বুঝি ভালো লাগবে না?  মজা করলাম, ধন্যাবাদ।

    - সনাতন পাঠক

    ভাল লেগেছে, সুন্দর লেখা

    • - ফায়েজ মাহ্‌দী

      ধন্যাবাদ।

    - মাসুম বাদল

    ওই নীলিমা এখন আমার জন্য আর কাঁদে না

    সাগরের ঢেউ তটিনীর বুকে আছড়ে পড়ে না 

     

    কবিতায় ভাললাগা... 

    • - ফায়েজ মাহ্‌দী

      ধন্যাবাদ

    Load more comments...