Site maintenance is running; thus you cannot login or sign up! We'll be back soon.

আকাশ আজ কালো খুব ...

সকাল থেকেই আকাশের মন খারাপ। মানুষের মন খারাপ হলে মুখ কালো হয়ে যায়। আকাশের ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে। আকাশ কালো হয়ে আছে। বেশি কালো না। অল্প কালো। মাত্র মেঘ জমতে শুরু করেছে। আকাশকে সান্ত্বনা দেয়ার মত কেউ নেই। তার মন খারাপ সহজে ভালো হবে না। সে আরও কালো হবে। একসময় কাঁদবে। সেই কান্নাকে সবাই বৃষ্টি বলে।

নীলিমা অনেকদিন বৃষ্টিতে ভেজে না। শেষ কবে বৃষ্টিতে ভিজেছে সেটা তার মনে নেই। তার বৃষ্টিতে ভেজা নিষেধ। নিষেধ করেছেন তার মা। তার মা রাগী। কঠিন টাইপের রাগী। কঠিন রাগকে উপেক্ষা করার সাহস নীলিমার নেই। তবে আজ নীলিমার মন খারাপ। আকাশের মন খারাপ দেখে তার মনও খারাপ হয়ে গেছে। মেয়ের মন খারাপ দেখলে কঠিন রাগী মায়েরাও তরল হয়।
-মা!
-কিছু বলবি?
-আজকে যদি বৃষ্টি হয় তাহলে আমি ভিজবো।
-কোথায় ভিজবি?
-ছাদে
-না
-ভিজলে সমস্যা কি?
-বেশি বুঝিস না। যা...

নীলিমা মন খারাপ করে চলে আসে। এর আগেও একবার ভিজতে চেয়েছিল। মা দেন নি। আশেপাশের ছাদে অনেক ছেলেরা ওঠে। বৃষ্টিতে ভিজলে গায়ের জামাকাপড় ভিজে যাবে। লেপটে থাকবে শরীরের সাথে। এটা দর্শনীয় দৃশ্য। ছেলেরা দর্শনীয় দৃশ্য চোখছাড়া করতে চায় না। এ কারণেই নীলিমার ছাদে উঠে বৃষ্টিতে ভেজা নিষেধ। এত সুন্দর বৃষ্টিতে একটা অসুন্দর কারণে ভেজা যাচ্ছে না। ব্যাপারটা ঠিক না।
-হ্যালো... নীলিমা?
-রুদ্র?
-হুম... তাড়াতাড়ি ক্যাম্পাসে আয়। আজকে এক্সট্রা ক্লাশের শিডিউল। একটাই ক্লাশ। জলদি আয়। উইদিন হাফ অ্যান আওয়ার!

নীলিমা ব্যস্ত হাতে ব্যাগ গোছায়। ক্লাশটার শিডিউল যে আজকে সেটা তার জানা ছিল না। রুদ্রকে আজ কাচ্চি খাওয়াতে হবে। বেচারা কয়েকদিন থেকেই ঘ্যানর ঘ্যানর করছে। কাচ্চি খাওয়ার জন্যে। এই খাবার মানুষের এত পছন্দ হয় কি করে সেটাই নীলিমার মাথাতেই আসে না।

-কোথায় যাচ্ছিস?
-ক্লাশ আছে মা। ইম্পরট্যান্ট।
-বৃষ্টি নামবে। গাড়ি নিয়ে যা।
-গাড়ি লাগবে না। রিকশায় করে চলে যাচ্ছি। ক্লাশ শেষ করেই ফিরব। দেরি হবে না।

বলেই নীলিমা হুট করে বেড়িয়ে যায়। বাইরে নেমেই আকাশের দিকে একবার তাকায়। আগের চেয়ে আরও একটু বেশি কালো হয়েছে। ভালো দেখাচ্ছে খুব। মন খারাপ করলে সবাইকেই সুন্দর দেখায়। আকাশকেও।

নীলিমা ক্যাম্পাসে পৌঁছেই দেখে ফুটপাথে হেলান দিয়ে রুদ্র বসে আছে। সেই দোমড়ানো শার্টটাই পরা। ছেলেটা পাগল। এক জামা কেউ এতদিন পরে?

-কি রে? ক্লাশে যাবি না?
-কিসের ক্লাশ?
-কিসের ক্লাশ মানে?
-কোন ক্লাশ নেই। আজ তুই আমি বৃষ্টিতে ভিজব। টিএসসির প্রতিটা পথে হাঁটবো। তারপর নীলক্ষেতে আমাকে কাচ্চি খাওয়াবি। টাকা আছে তো সাথে?
নে... দুটো কদম এনেছি তোর জন্যে। চার টাকা নিল। টাকা ছিল না। নাহলে আরও গাদাখানিক নিয়ে আসতাম।

নীলিমা অন্য দিকে তাকায়। তার চোখে পানি এসে গেছে। কারণে অকারণে তার চোখে পানি আসে। তবে আজ কারণ আছে।
আকাশ বেশি কালো হয়ে আসছে। সাথে ঠাণ্ডা বাতাস। বৃষ্টি নামি নামি করছে। নীলিমা খুব চাইছে এখনই বৃষ্টি নামুক। বৃষ্টি নামলে তার চোখের পানিটা রুদ্র বুঝবে না। ভালোবাসা এত সহজে বুঝলে হবে না। আরও কঠিন হক। তারপর বোঝাবুঝি।

ঝিরঝির করে বৃষ্টি শুরু হয়। বিটিভি বন্ধের পর টেলিভিশন যেভাবে ঝিরঝির করে, সেভাবে। ওতে নীলিমার কান্না লুকোয় না। চোখের জল ঝুম বৃষ্টির মধ্যেও আলাদা করা যায়।

অদ্ভুত ! অবশ্য ভালোবাসা তো অদ্ভুত ই !!

১ Likes ৬ Comments ০ Share ৬৩৯ Views

Comments (6)

  • - ঘাস ফুল

    হুম! সুমন ইডোলার ডায়েরি লিখতে লাগলো আর আমরা পড়ছি। জীবনের খোঁজে কত জনের সাথেই ইডোলার বন্ধন হল। কিন্তু শেষপর্যন্ত থিতু হয়ে চেষ্টায় বিয়ে করলো কেবিন ক্রু মি. জে.জে কে। জানি না তার এই বন্ধন কতদিন টেকে। তবে অমিতব্যয়ী আর ছন্নছাড়া জীবন যাপনই ইডোলার আজকের পরিস্থিতির জন্য দায়ী। না হয় হোটেল মালিকের কাছ থেকে পাওয়া অর্থ সে ধরে রাখতে পারলে জীবনটাকে সুন্দরভাবে উপভোগ করতে পারতো। গল্প ভালো লাগলো বদরুল। 

    আপনার আগের পোস্টেও আমার মন্তব্য ছিল। কিন্তু আপনি তার কোন উত্তর দেননি। আজ আবার পোষ্ট দিয়েছেন। আপনার উচিৎ ছিল আগের পোস্টের উত্তর দিয়ে এই পোষ্ট দেয়া। এটা ব্লগিং এর শালীনতা। কিংবা এই পোষ্ট দেয়ার পরও আগের পোস্টে উত্তর দিতে পারতেন। ধন্যবাদ।