Site maintenance is running; thus you cannot login or sign up! We'll be back soon.

অস্পষ্ট আর্তনাদ

                        অস্পষ্ট আর্তনাদ 

ঘুটঘুটে অন্ধকার । রাস্তার ল্যাম্পপোস্ট গুলো ছাড়া কিছুই আলো দিচ্ছে না । দূর থেকে একটা বাস এগিয়ে আসছে । সম্ভবত এইখানে তাদের তুলে দেওয়া হবে । এই বার তারা সত্যিই চলে যাবেন দুনিয়া ছেড়ে 

খুব ছোটো একটা সংসার ছিল । স্বামী,  স্ত্রী আর এক ছেলে মিলে ভালই যাচ্ছিলো । হটাত একদিন  কতো গুলো লোক এসে ছেলেটির মা কে চলে গেলো । পরে অনেক খোঁজাখুঁজির পর জানা গেল তারা তাকে মেরে ফেলেছে । আর সাথে আর ও একটা পরিবার তারা ধ্বংস করে দিয়েছে । সেইদিন থেকে বাবা ছেলে দুইজন ই ভয়ে ভয়ে থাকেন । কারন সয়তান গুলোর নজর তাদের দিকেও আছে ।

আজ বিকালে ঘটনা ...............

-কিরে এখনো এইখানে কি করিস ? তাড়াতাড়ি লুকিয়ে পর । ওরা আবার চলে আসবে আবার নিয়ে যাবে আমাদের ।

-বাবা ওরা আমাদের কেন নিয়ে যায় আর কোথায় নিয়ে যায় ?

ছোটো ছেলেটার মুখে আবেগ ভরা এই কথা শুনে কেঁদে ফেললেন বাবা ।

-কি আর বলব বল !!!! এত কথা বলিস না !!! সন্ধ্যা হয়ে এল । তাড়াতাড়ি লুকিয়ে পর ।

হটাত দরজায় শব্দ হলো । রহিম সাহেব তার ছেলেকে নিয়ে লুকিয়ে পরলেন ঘরের একটি কোণায় । রহিম সাহেব ছেলের মুখটি চেপে ধরে আছেন পাছে সয়তান গুলি টের না পেয়ে যায় । তিনি তাদের কথাবারতা শোনার চেষ্টা করছেন ।

সয়তান ১ - কিরে এখন খুঁজে পেলি না ?

সয়তান ২ - না । কই গেল ? না পেলে তো আজকে বস আমাদের মেরেই ফেলবে ।

সয়তান ১ - তাড়াতাড়ি দুটো কে খুঁজে বের কর । এই ঘরেই আছে । যাবে কোথায় ?

সয়তান ২ - ভাই । সেইদিন তো মনে হয় এইখান  থেকেই তো একটারে লইয়া   গেছেলাম ।

সয়তান ১ - হ ! হ ! বেশি কথা কইস না । তাড়াতাড়ি খোঁজ । খাটের নিচে               চিপায়চাপায় খোঁজ । কোন জায়গায় লুকাইছে দেখ তাড়াতারি ।

সয়তান ২ - লুকাইছে মানে । নতুন কইরা হাত পা গজাইছে নাকি হালারপুতগো ।

                                                                ক্রিং !!!!! ক্রিং !!!!! ক্রিং !!!! ক্রিং !!!!!

সয়তান ১ - ঐ দেখ বস ফোন দিয়া বইছে ।

                হ্যালো বস ।

                না বস ।

                আসলে ঐ দুইটারে খুইজা পাইতেছিনা ।

                না বস ।

                টেনসন নিয়েন না । কাম হইয়া যাইব ।

                কিরে মাঙ্গের পো এখন পাস নাই । তোর লাইগা কি বসের গুতানি খামু নি ।              সব গুলা রুম দেখ ।

এইদিকে নিশম ও তার বাবার কোলে বসে বসে সয়তান দুইটার কর্ম দেখছে । কিন্তু তার চোখে মুখে কিসের যেন একটা খোব । সে তার বাবার হাত থেকে ছুটে যেতে চাইছে । কিন্তু তার বাবা তাকে ছাড়ছে না । ছেড়ে দিলেই তো ওরা দেখে ফেলবে । আর নিয়ে যাবে নিশম কে । কিন্তু নিশমের  চোখ যেন হটাত আগুনের ফুলকি হয়ে উঠলো । সে চোখের পলকে বাবার হাত থেকে ছুটে এক দৌড়ে তাদের পায়ের সামনে গিয়ে পড়লো । আজকে সে তার মা হত্যার প্রতিশোধ নিবেই ।

সয়তান ২ - ভাই । পাইয়া গেছি । পায়ের কাছেই লুকাইয়া আছিল হালার পুত ।               কিন্তু আরেকটা কই । আচ্ছা পরে দেখা যাইব এইটারে আপাতত                   লইয়া চলেন ।

সয়তান ১ - হ ! ল তাড়াতাড়ি ।

এইদিকে ছেলেকে বাঁচাতে বাবাও এগিয়ে আসলেন ।

সয়তান ১ -  হালা কানা । কই খুজস তুই । এই তো আর একটা খাড়ায়া আছে ।                     মাঙ্গের পো অনেক টাইম খাইসস । ল এখন ।

অবশেষে আর পারল না তারা নিজেদের রক্ষা করতে । তাদের নিয়ে গেল ঘরের বাইরে , আর নিয়ে আসল এই জায়গাটায় । কয়েকদিন আগে নিশমের মাকেও  এইখানে মারা হয়েছিল । এসব ভাবতে ভাবতে চোখে পানি এসে গেল রহিম সাহেবের । হটাত সয়াতান দুইটা রহিম সাহেব আর তার ছেলে নিশম  কে ছুঁড়ে ফেলেদিলো সেই বাস এ। আর সাথে সাথেই বাস টি কমপক্ষে ৪০ জন মানুষ নিয়ে জ্বলে পুড়ে ছারখার হয়ে গেল ।

সেইদিন শুদু এক রহিম সাহেব আর নিশম  ই না । প্রান দিয়েছে কারো ছেলে , কারো বাবা  , কারো স্বামী  । কিন্তু আর কতো । এভাবে আর কতো প্রান দিবে মানুষ ।

হয়ত গল্পের রহিম সাহেব আর নিসম কাল্পনিক কিন্তু সত্যিই কুলাঙ্গার দের ছোড়া পেট্রোল বোমা গুলি কথা বলতে পারত তাহলে আজকের এই মৃত্যু দেখতে হতো না । কখনই না ।কিন্তু তাদের আর্তনাদ ঐ শয়তান গুলি শুনতে পায় না । শুনতে পায় চলে যাওয়া মানুষ গুলো ।

 

১ Likes ১ Comments ০ Share ৭১৮ Views

Comments (1)

  • - আলমগীর সরকার লিটন

    emoticons