Site maintenance is running; thus you cannot login or sign up! We'll be back soon.

Badrul Islam Prince

১০ বছর আগে

অবশেষে...



সজীব পঁচিশ বছরের এক টগবগে যুবক। খুবই স্বপ্নবাদী, খানকিটা আবেগীও বটে। বাংলা সাহিত্যের ছাত্র। বই পড়া তার নেশা। এই বয়সেই রবীন্দ্র, নজরুল শরৎ,বঙ্কিম......এদরে অনেকের বই-ই সে পড়েছে। লেখালেখিও করে একটু আধটু। অবস্থান করে বাংলাদেশের লন্ডন শহর বলে খ্যাত সিলেটে। মানুষ গড়ার পেশা তাকে পেয়ে যায়। সেই থেকে শুরু করে পাঠদান। পাঠদান আর পাঠগ্রহন এই দুই কাজ নিয়েই ব্যস্ত এখন সজীব।
সজীবের একটা বদঅভ্যাস আছে আর তা হলো সে চরম আড্ডাবাজ আর কফিবাজ। আড্ডা আর কফি ছাড়া তার চলে না। আড্ডার জন্য বন্ধু-বান্ধব না পেলে শুরু হয় বইয়ের সাথে আড্ডা। কিন্তু এ আড্ডাতে তার কফি চাই-এ চাই । প্রচন্ড গাঁজাখোর যেমন গাঁজা না পেলে হূলুস্থুল কান্ড বাধিয়ে দেয় তেমনি সেও কফি না পেলে কোন কাজেই সুস্থ মাথায় করতে পারে না। আর এই কফির জন্য সে বেচে নেয় চাইনিজ রেস্তোরাকে। মনোরম পরিবেশ,পরিপাটি করে গোছানো, আলো-আধারি চারপাশ, করপোরেট মানুষের আনাগোনা, মৃদু সাউন্ডে গান, সামনে ধোয়া উঠানো কফির মগ। ব্যাস আর কি চাই লাইফে? কফির মগে চুমু আর বইয়ে চোখ বুলানো। সজীব জীবনে যতগুলো বই পড়েছে তার বেশির ভাগেই ভ্রমন অবস্থায় নতুবা এই চাইনিজ রেস্তোরায়। এই রেস্তরার মালিক থেকে শুরু করে ম্যানেজার, ওয়েটার এমনকি কুকারও তার পরিচিত। প্রথম প্রথম রেস্তোরায় আসলে ফুড তালিকা এগিয়ে দিত সজীবের দিকে। কিন্তু এখন আর দেয় না। কেননা, ওয়েটারের জানা হয়ে গেছে এই কাস্টমারের কি কি পছন্দ ফুড তালিকার।
প্রতিবার রেস্তোরায় যাওয়ার পর সজীব হাত-মুখ ধোয়ে চেয়ারে গা এলিয়ে বসে। মিনটি পনের বাদে ওয়েটার সালাম দিয়ে কফির মগ এগিয়ে দেয়। কুশলাদি জিজ্ঞেস করে। তারপর বই পড়ায় মন দেয় সজীব। কোন কাজ না থাকলে দীর্ঘক্ষণ বসে থেকে বই পড়ে। ঘন্টা দু’য়েক পরে আবারো কফি নিয়ে আসে ওয়েটার। মাঝে মাঝে ডিনার সেরে বাসার দিকে পা বাড়ার সজীব।
সে দিন শীতের রাত। প্রয়োজনীয় কাজ শেষ করতে করতে সন্ধ্যা পেরিয়ে ঘড়ির কাটা আটটা ছুইচুই করছে। রোজকার দিনের মতো কাধে ব্যাগ নিয়ে রওনা হলো রেস্তোরার দিকে। গ্লাসের দড়জার দিকে তাকাতেই দেখতে পেল রিজার্ভ। তারপরও ওয়েটার সালাম দিয়ে ভিতরে প্রবেশ করালো। জানতে পারলো এক দম্পতির বিবাহ বার্ষিকী উপলক্ষে সাড়া রেস্তোরা রিজার্ভ। তারপরও ম্যানেজার তাকে তার আসনের পাশে একটা চেয়ারে বসার সুযোগ দিয়ে আজকের দিনটা কষ্ট করে চালিয়ে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করলো। প্রতিদিনকার রুটিনমাফিক সজীব তার সাধনা শুরু করলো। আর এদিকে মানুষের আনাগোনায় হাসপিস করার মতো আবস্থা। ছোট ছোট বাচ্চারা চিৎকার চেচামেচি করছে, মেয়েরা দলবেধে গল্পগুজব করছে। কেউ বা ফোনে কথা বলছে। এই পরিবেশে কি কেউ পড়তে পারে? এমন প্রশ্নই ম্যানেজারে মনে উকি দিচ্ছে ? যাহোক ডিনারের সময় হয়ে গেছে। ম্যানেজার বললো-“স্যার আপনি বসুন আমি আসছি” এই বলে ম্যানেজার কাজের তদারকি করতে লাগলো। খানিক ক্ষণ বাদে এক উর্বশী এসে বলল-“একটা বড় ট্রে দেওয়া যাবে কেক রাখার জন্য” সজীবের চোখ এবং মন দু’টোই বইয়ের পাতায়। সে আবার বললো-“এই যে শুনছেন?” এবার সে তর্জুনী আঙ্গুলটা বইয়ের লাইনে রেখে মেয়েটির দিকে তাকালো। দেখতে পেল এক অপ্সরীকে। আমাকে কিছু বলছেন?
-“আরে হাধারাম, আপনাকে এখানে চাকুরী দিয়েছে কে? চাকুরী করবেন না বই পড়বেন? এত বড় পার্টি হচ্ছে আপনার কি কোন কান্ডজ্ঞান নেই? কাস্টমারের দিকে খেয়াল না রেখে বিদ্যাসাগর হয়ে বই পড়ছেন? নাকি লোককে দেখাচ্ছেন আপনি খুব বিদ্যান, পন্ডিত?”
ঠিক এমন সময় বেরসিক ম্যানেজার এসে উপস্থিত।
-‘ম্যাডাম আপনার কি কিছু প্রয়োজন?’
-আমি একটা ট্রে খুঁজছিলাম, উনি আমার কথার কোন পাত্তাই দিছেন না? আমার দিকে ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে আছেন? গেয়ো ভূত কোনখানকার জানি?
-সরি ম্যাডাম, উনি আমাদের গেস্ট। রেগুলার কাস্টমার। উনার সেলফোনের সুইচ আফ থাকায় উনাকে ম্যাসেজটা পৌঁছাতে পারিনি?
রাগে রক্তরাঙ্গা মেয়েটি নিমিষেই ফ্যাকাশে হয়ে গেল। দু’হাত দিয়ে তার মুখটা ঢেকে অস্পস্ট উচ্চারণ করলো ‘ও শীট!’ সজীব চোখটা মেয়েটির দিকে নামিয়ে বইয়ের দিকে ঘোরালো। খানিক ক্ষণ বাদে চলে আসলো বাসায়। রাত শেষে দিনের কাজে মনযোগ দিল সজীব। ছোট একটি কিন্ডারগার্টেন স্কুল গড়ে তুলেছে সে। কচি কচি বাচ্চাদের পড়ায় সে। বাচ্চাদের চিৎকার চেচামেচিতে সারা স্কুল মুখরিত থাকে। এটা সে উপভোগ করে। টিফিন পিরিয়ডে ছাত্র-ছাত্রীদের সাথে টিফিনেও যোগ দেয় সে। বাচ্ছাদের সেকি আবদার তার কোলে বসে টিফিন খাবে । এই বাচ্চারাই তার আনন্দের খোরাক। এদেরকে নিয়ে সে স্বপ্ন দেখে এরা একদিন মানুষের মত মানুষ হবে। ছিনিয়ে আনবে সফলতার সোনালি সূর্য। সে তার ছাত্র-ছাত্রীদের অত্যন্ত ভালোবাসে , তাদের সাথে বন্ধু সুলভ আচরণের মাধ্যমে পড়া আদায় করে নেয়। ছাত্র-ছাত্রী থেকে শুরু করে শিক্ষক-অভিভাবক সবাই তাকে সমীহ করে, শ্রদ্ধা করে। যেন তার স্কুলটা এক টুকরো সোনার সংসার।
সেদিন লাঞ্চ সেরে সজীব নেটে পেপার পড়ছে। ঠিক এমন সময় সেলফোনে একটা কল এলো।
-হ্যালো, আপনি কি সজীব বলছেন?
-জ্বি বলুন।
-আমি `তাতই' বলছি। গতকাল রাতে আপনার সাথে আমার দেখা হয়েছিল। আসলে ঠিক দেখা হয়েছিল বলাটা ঠিক হবে না, আপনার সাথে মৃদু একটা ঝগড়া হয়েছিল, ঠিক ঝগড়াও না, ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল? আই আ্যাম সরি, রিয়েলি সরি, প্লিজ ডোন্ট মাইন্ড? জানেন, আমি এরকম-ই, রাগটা একটু বেশী, মাথায় রাগ চাপলে খুন চেপে যায় আমার। কি ব্যাপার কথা বলছেন না কেন?
-বক্তা যখন বক্তৃতা দেয় শ্রোতাকে তখন শুনতে হয়। আমি না হয় উত্তম শ্রোতা হয়েই থাকলাম।
-ব্বাবাহ, খুব সুন্দর করে কথা বলেন তো আপনি? আমি কি বাচালের মতো খুব বেশি কথা বলে ফেলেছি? আসলে জানেন গতকাল রাতে আমি খুব আঘাত পেয়েছি, আপনাকে এভাবে কথাগুলো বলা ঠিক হয় নি। আমি গিয়ে ছিলাম পরে, কিন্তু গিয়ে দেখি আপনি নেই সেখানে। তারপর ম্যানেজারের নিকট থেকে আপনার নাম্বার নিয়ে এসেছি। দিতে চায়নি, অনেক রিকোয়েস্ট করে এনেছি। আচ্ছা আমরা কি দেখা করে কথা কলতে পারি না? যদি আপনার কোন আপত্তি না থাকে?
-দুঃখিত, এই মুহূর্তে আমার হাতে অনেক কাজ। আচ্ছা রাখছি। এই বলে সজীব ফোন রেখে দিল। মেয়েদের নিয়ে সজীবের একটু এলার্জি আছে। সে সব সময় এই প্রাণিদের থেকে একটু দূরে থাকে। তার অখাট্য যুক্তি বই এবং কাজ এ দু’য়েই তার প্রেমিকা, বন্ধু, জীবন। তাই এ দুটোতে সে সময় এবং শ্রম ঢেলে দেয়। সজীব আবারো পত্রিকা পড়ায় নিয়োজিত হলো। দ্বিতীয়বার সেলফোনটা বেজে উঠলো। একই নাম্বার থেকে আবার ফোন। সে সাইলেন্ট রেখে কাজে মনোনিবেশ করলো।
টানা নয় দিন পর হাজির হলো সেই রেস্তোরায়। এরি মাঝে ব্যবসায়িক এক কাজে দেশের বাইরে গিয়েছিল সজীব। দীর্ঘ অনুপস্থিতিতে তার হৃদয়টা খাঁ খাঁ করছে এই রেস্তোরার জন্য। বলা যায় তার পছন্দের লিস্টে এই রেস্তোরাটাও এবার যোগ হলো। কেননা একদিন না গেলে কেমন জানি খালি খালি লাগে তার। কি যেন অপূর্ণ থেকে যায়। এই জিনিসটাই সে টের পেল এবার। টানা নয় দিন এখানে আসতে না পেরে সে আফসোসেই করতে লাগলো। ওয়েটার কফি নিয়ে হাজির তার সামনে, ভাবনায় তার ছেদ পড়লো। হাসিমুখে তাকে জিজ্ঞেস করলো- কেমন আছেন? কফির মুখে চুমুক দিতেই সে এক বিষ্ময় দেখতে পেল! তার সামনে সেই ঝগড়াটে উর্বশীকে আবিষ্কার করলো।
-‘নিজেকে আপনি কি মনে করেন? এতবার সরি বলার পরেও আপনার মন গলে না? আপনি কি পাষাণ, আপনার মনটা কি পাথর দিয়ে তৈরী? কতবার আপনাকে কল দিয়েছি, ধরেননি, শেষমেষ মোবাইলটা আপনি বন্ধ করে রেখেছেন? টানা তিন দিন এখানে এসে আপনার জন্য ঘন্টার পর ঘন্টা ওয়েট করেছি, পাইনি? নিরাশ হয়ে বাসায় ফিরে গেছি। প্রচন্ড রাগ হয়েছে আপনার উপর। আর কখনোই আপনার সাথে যোগাযোগ করবোনা ভেবেছিলাম। কিন্তু ম্যানেজার আজ ফোন দিয়ে বললো আপনি এসেছেন। ভাবলাম শেষমেষ দেখাটা করে আসি।’ এক নাগাড়ে কথাগুলো বলে দীর্ঘশ্বাস ফেলতে লাগলো মেয়েটি। নির্বাক হয়ে নিশ্চুপ দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো সজীব এরিমধ্যে তার মোবাইলটা বেজে উঠল? হালকা গান হচ্ছিল বিধায় মোবাইল নিয়ে বারান্দায় গেল। ফোন এসেছে তার এক বন্ধুর কাছ থেকে। তার এক বাল্যবন্ধু রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হয়ে গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি, তাকে এখনই যেতে হবে। মোবাইলে কথা বলতে বলতে-ই সে রিক্সায় উঠে বসে।
অপেক্ষার প্রহর গুণতে গুণতে ধর্য্যরে বাঁধ ভেঙ্গে যায় তাতইয়ের। বই আর ব্যাগ রেখেই সজিব ছুটে চলে। তাতই নিজেকে সান্তনা দিয়ে বইটা হাতে নিয়ে নাড়া চড়া করতে লাগলো। পাশেই ছিল ব্যাগটা। ব্যাগের গায়ে একটা নাম খোধাই করা এইচ.পি। মুলত এটা একটা ল্যাপটপের ব্যাগ। কিন্তু ব্যাগে শোভা পায় ট্যাব পি.সি, বই, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র, ডকুমেন্টারী ইত্যাদি ইত্যাদি। ব্যাগের চেইনটা খোলা। একটা সোনালি কালারের খাম দেখা যাচ্ছে। কৌতুহল বশত হাত দিয়ে দেখতে পায় সিঙ্গাপুর এয়ারলাইনের সিঙ্গাপুর ভিজিটের টিকিট। তারিখ, নাম একে একে সব পড়ল। তারপর নিজের উপর ঘেন্না ধরে গেল। কেন বার বার একটা নিরপরাধ মানুষকে বকে যাচ্ছি? কোন কিছু না জেনে না শুনে একতরফা দোষ দিয়ে যাচ্ছি। তার ইচ্ছে করছে নিজের উপর নিজেই প্রতিশোধ নিতে।
আর অপেক্ষা করা যাচ্ছে না। ঘড়ির কাটা ক্রমান্বয়ে এগারোটার দিকে হেলে পড়ছে। রেস্তোরা বন্ধের সময় হয়ে এলো। এবার সে রেগে মেগে আগুন হয়ে গেল। সে মনে মনে ভাবতে লাগলো সজীব আমাকে এবোয়েট বরছে। কী পেয়েছে সে আমাকে, আমি তার কাছে আসি বলে সে আমাকে ফেলনা ভেবেছে নাকি? কীসের এতো অহংকার তার? মোবাইল হাতে নিয়ে বার বার কল দিচ্ছে, কিন্তু সুইচ অফ। তার রাগের আগুনে যেন ঘি পড়েছে। সে আরও ফুসফাস করতে লাগলো। সে প্রতিজ্ঞা করতে লাগলো এরকম আনকারচারড,আনসিভিলাইজড মানুষের সাথে কখনোই আর সম্পর্ক রাখবে না। ওয়েটার এসে জানিয়ে দিয়ে গেল ম্যাডাম আমাদের ক্লোজিং আওয়ার চলছে। ব্যাগ আর বই ক্যাশে জমা দিয়ে নিজেকে ছোট থেকে আরো ছোট ভাবতে ভাবতে সিঁড়ি ভেঙ্গে নামতে লাগলো।
রাত্রি বিলম্বের জন্য বাসাতে মা’র বকা শুনতে হলো। রাতেও ভালো ঘুম হলো না। এপাশ ওপাশ করতে করতেই তার রজনী পোহালো। সজীবের মিসবিহেইভ আর রাতের অঘুমের প্রভার তার মনের ওপর প্রেশার ক্রিয়েট করলো। তার মনটা একেবারে খিটখিটে হয়ে গেল । কোন কিছুই তার কাছে সহ্য হলো না। চা বানালো, পানসে লাগছে। বারান্দায় ইজি চেয়ারে বসল কিছুক্ষণ, সকালটা মনে হলো কেমন যেন বিষাদ। উঠে চলো আসলো। মনটা উদাস উদাস লাগছে। কোন কিছুতেই সে আত্মতৃপ্তি খুঁজে পাচ্ছে না। পাচ্ছে না মনে শক্তি। ‘যাকে সে বিশ্বাস করে সেই তাকে আঘাত করে, অবহেলা করে। সে ভুল করেছে, কিন্তু ক্ষমাও তো চেয়েছে। দ্বিতীয়বারও না হয় একটু বাড়াবাড়ি হয়ে গেছে, আমাকে বুঝিয়ে বললেই হতো। তা না বলে, রাগ করে সে চলে গেল? এটা কি কোন সভ্য মানুষের ব্যবহার? একটা মেয়েকে এমন একা ফেলে কি কেউ চলে যেতে পারে। তারউপর সেলফোনের সুইচটাও অফ রেখেছে। তার আদিখ্যোতা দেখে মনে হয় তার মতন ছেলে এজগতে কেউ দেখেনি? শুধু মাত্র তার জন্য মায়ের কাছে বকা খেলাম, রাতেও ঘুম হলোনা।’ বিছানায় গা এলিয়ে দিয়ে এরকম সাতপাই চিন্তা করতে করতে কখন যে ঘুমের রাজ্যে চলে গেল তা সে ঢের-ই পেল না।
টানা তিন দিন সে বাসা থেকে বের হলো না। সারা দিন মুভি আর রাতে ঘুমিয়ে কাটিয়ে দিল। চতুর্থ দিন ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে নাস্তার টেবিলে বসে নাস্তা খাচ্ছিল পাশেই দাদাভাই বসে টিভিতে সংবাদ শুনছিলেন।সে টিভির দিকে তাকাতেই তার খাবার আটকে গেল গলায়, হাত হয়ে গেল আবশ, চোখ উঠে গেল কপালে। সারা পৃথিবী তার চারপাশে ঘুরতে লাগলো। টিভিতে বলতে লাগলো-‘এক বন্ধুকে বাঁচাতে গিয়ের আরেক বন্ধু ট্রাক চাপায় নিহত।’ এলোমেলো হয়ে গেল তার জীবন। তার প্রতিজ্ঞাই তার কাল হলো। সত্যিই আর কোন দিন সজীবের সাথে কথা বলতে পারে না। চাওয়া হবে না ক্ষমা। অন্ধের মতো তাকে শুধু সে লাঞ্চনাই দিয়ে গেছে। মনে মনে সে ভাবতে লাগলো সজীবের এ মৃত্যুর জন্য সে নিজেই দায়ী। নিজেকে আর নিজের মধ্যে ধরে রাখতে চাইলো না। সে জ্ঞান হারালো । ডাক্তার ডাকা হলো। জ্ঞান ফিরলো। তবে স্বাভাবিক অবস্থায় আর ফিরলোনা।

বদরুল ইাসলাম

Sylhet

০ Likes ১ Comments ০ Share ৪৪৭ Views