হটাত পানিতে ঢেল ছুঁড়ার শব্দ। আতকে উঠল ফুলি, মনে হয় স্বপ্ন দেখেছে। কি রে কি হয়েছে ফুলি? স্বপ্ন দেখেছিস। না খালাম্মা কিছু না, বলে আবার ড্রইং রুমের মেঝেতে চাদর মুড়িতে ঘুমিয়ে পরে। বাড়ীর কর্তী সুমনা। অনেক ক্ষণ ফুলির মুখ ঢাকা চাদরের দিকে তাকিয়ে থাকে। তার পর কি যেন ভেবে ঘুমাবার ঘরে শুয়ে পরে।
রাত বাড়তে থাকে, সাথে সাথে ফুলির খালাম্মা সুমনা খাটে গভীর অচেতন, স্বপ্নেরা কড়া নারে। সুমনার বিভ্রম মনের প্রেত্মা বোধ হয়; সুমনার সস্মুখে দাড়িয়ে প্রশ্ন করে।
কিরে সুমনা, কেমন তোর বুদ্ধি, তোর মেয়ে শ্রেয়ার মত ফুলি আর এই ফুলিকে তোর কাজের মেয়ে করলি?
তোর শ্রেয়ার জন্য তোর যেমন ভাবনা, ফুলির জন্য কই? ড্র্ইং রুমের কার্পেটে ঘুমায়। তোর মেয়েকে পারবি, কার্পেটে ঘুমাতে দিতে।
ফুলি কাজের মানুষ তাই না, দুমোটো খাইলেই চলে তাই না?
তোর মেয়ের কৈশর নিয়ে তোর যেমন ভাবনা, কই ফুলির জন্য তো তোর কোনই ভাবনা নাই?
ফুলির এখন বাড়ন্ত শরীর। সবাই কানাঘুসা করে, দোকানে সোদাই পাতি আনতে গেলে,গলির মোরের ছেলেপুলেরা হাসিমুখে ভাব জমাতে চায়। কই সেদিকে তোর কোন খেয়াল নাই।
অথচ তোর মেয়ে শ্রেয়ার দিকে গলির ঐ ছেলেটা তাকিয়ে ছিল বলে,ছেলেটাকে ডেকে সাত সতের শোনালি।
তুইতো একটা মেয়ে সুমনা, মেয়ে হয়ে মেয়েদের কথা ভাববি না?
আমার বুঝি একার দায় পরেছে? সুমনা বলে উঠে।
সারা পৃথিবীজুড়ে কোটি কোটি কাজের মানুষদের সব ভাবনা বুঝি আমার। স্বপ্নঘোরে সুমনা, প্রশ্নবানে অস্থির ঘামে ভিজে যায়। রাত দ্বীপ্রহরে মেয়ে শ্রেয়ার ধাক্কায় ঘুম ভেঙ্গে যায়।
শ্রেয়াঃ মা,তুমি দুঃস্বপ্ন দেখছিলে মনে হয়।
পানি দিব, একটু পানি খাও। বিছানায় উঠে বসে সুমনা। ঢক ঢক করে একগ্লাস পানি পান করে একটু স্বস্থিবোধ করে। আর ড্রইং রুমের চাদরে মোরা ফুলির ঘুমানো কার্পেটের দিকে তাকিয়ে থাকে।
১৪২০@ ১৪ কার্তিক, হেমন্তকাল।
Comments (10)
ছোট ছোট পাঁচটি কবিতা। আকারে ছোট হতে পারে কিন্তু গভীরতা অনেক বড় কবিতার চেয়েও বেশী। প্রতিটাই আমার কাছে অসম্ভব ভালো লেগেছে মিশু। গল্পের মতো দেখা যাচ্ছে কবিতাও দারুণ লিখেন। কিপ ইট আপ।
ধন্যবাদ ঘাস ফুল। আপনাদের অনুপ্রেরণায় এগিয়ে যেতে চাই।
শুভকামনা সবসময়।
তোমার লখিন্দর ভাসছে দেখ ভুবন ভেলায়-
জীবন্মৃত!
ভালো লিখেছেন ! চালিয়ে যান :)
ধন্যবাদ আলভিনা।
ভাল থাকুন সবসময়।
পাচটা আলাদা কবিতা। আলাদা ভাব। ছোট কিন্তু গভীরতায় আমি মুগ্ধ।
ধন্যবাদ পাশা। ভাল থাকবেন।
শুভকামনা সবসময়।