Site maintenance is running; thus you cannot login or sign up! We'll be back soon.

অদৃশ্য মায়াজাল (প্রতিযোগিতা, ক্যাটাগরি-৩, পর্ব-৪)

আমরা প্রত্যেকে একটা জালের ভিতর আটকে গেছি। সবাই কোন না কোন অদৃশ্য বন্ধনের মধ্যে পড়ে আছি। কারো কাছে হয়তো সেটা উপলব্ধির বিষয়, কারো কাছে সব ঠিক ঠাক। জীবনের প্রত্যেকটা দিন কেটে যাচ্ছে এই বন্ধনের ভিতর দিয়ে। কেউ কেউ এই জালের স্পর্শকাতরে এতটাই প্ররোচিত যে বাইরে বের হয়ে আসতে পারে না। আবার অনেকেই এটাকে তাদের জীবন বলে আখ্যায়িত করে দিব্যি পার করে দিচ্ছে সময়ের চাকাটা। হতে পারে এই জালের আভাস কোন জাতি বা সমাজের নিয়ম, হতে পারে ধর্মের নিয়ম নীতি। আবার হতে পারে আমাদের তৈরি করা উচু-নিচু শ্রেনি বিন্যাস।

আমি প্রথমে সমাজের নিয়মের কথা বলি। তাহলে আগেকার সমাজের কথা দিয়েই শুরু করা যাক। আগেকার সমাজে তারাই আধিপত্য দেখাতো যাদের অর্থ সম্পত্তি ছিল। যাদেরকে আমরা গাঁয়ের মোড়ল বা মাতব্বর বলি। তখন তারাই সমাজের নিয়ম করে দিত। তারা যেটা বলত তা সে অন্যায় হলেও সবাইকে মেনে নিতে হতো। একটা উদাহরণ দেওয়া যেতে পারে, তখন কোন মাতব্বরের ছেলে যদি কোন গরীবের মেয়েকে খারাপ কথা, আমি আরও সহজ বাংলায় বললে যদি ইজ্জত লুটত তবে মাতব্বর বিচারে বলত মেয়েটার দোষ। কেন সে তার গতর ঢেকে রাখেনি? সমস্ত দোষ গিয়ে পরত মেয়েটার উপর আর বাবা সেটা মুখ বুঝে সহ্য করে নিত (নিতে হতো)। এমনকি সবাইকে তা মেনে নিতে হতো। কারণ এটাই নিয়মের অংশ। তারা মাতব্বর এর বিরুদ্ধে কথা বলতে পারত না।

এখন আসি আমাদের সুশীল সমাজে। এখানকার সমাজ চালান আমাদের বিখ্যাত সমাজ সেবকরা। যারা আরও স্পষ্ট ভাবে রাজনীতিবিদ বলে পরিচিত। আর আমরা তাদের নেতা বলি! যখন তারা ক্ষমতায় থাকে তারা সমাজের অধিপতি আর তারাই নিয়ম গুলো তৈরি করে। খারাপ কোন কিছুর প্রতিবাদ করা যাবে না। আমরা এখানেও বন্দি। মুখ আছে, হাত আছে, বাঁধা দেওয়ার মানসিকতা আছে তবুও আমরা পারবো না। কারণ আমরা অদৃশ্য ও সাদৃশ্য কিছু নিয়মে আটকে আছি। এর আলকে আমার দেখা একটা ঘটনার কথা বলি। কিছুদিন আগে আমারই মহল্লায় একটা লোককে সবার সামনে কুকুরের মতো বেধরক প্রহার করা হল। সে বিচার দিল চেয়ারম্যান এর কাছে। গ্রামের নেতারা উল্টো বিচার করল, কারণ সে বিরোধী দলের একজন ছিল। আমরা সবাই তাতেই সায় দিলাম। আমরা যে বন্দীশিবিরে প্রবেশ করেছি তাতে যে আমাদের বাস করতেই হবে!!

এবার একটু ধর্ম নিয়ে আলোচনা করা যাক।

আমাদের দেশে সাধারণত ৪ টা ধর্মের কথায় বেশি আলোচিত। কিন্তু এই ৪ টা ধর্মের আবার কত হাজার ভাগ কয়ে গেছে তা আমাদের হিসেবের বাইরে। প্রথমে সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম ধর্মের কথা বলি। এখন এরা শুধু মুসলিম নেই, এদের কেউ হানাফি (আহলে সুন্নাতে ওয়াল জামায়াত), কেউ বলে আমরা আহলে হাদিস, কেউ জামায়াতে মুসলিমীন, হাম্মেলি, শাফি, শিয়া আরও কত নাম! এরা সবাই মসজিদে নামাজ পড়ে, এদের আল্লাহ এক, এদের রসূল এক। কিন্তু এরা এক একজন বিভিন্নভাবে পালন করে। সব ঠিক আছে কিন্তু সমস্যা তখনই হয় যখন এরা নিজেদের মাঝে সহিংসতা তৈরি করে। এক জামায়াত বা দলের লোক আর এক দলের লোকদের ঘ্রনা করে। মসজিদের ইমাম সাহেব অন্যদের সম্পর্কে বাজে মন্তব্য করেন। আমির বা দলের প্রধান ইমাম তার আধিপত্য বিস্তারের জন্য অন্য আর এক দলের সৃষ্টি করে। একই কবরস্থানে অন্য কোন দলের বা জামায়াতের লোককে দাফন করা হবে না অথচ তারা একই সমাজের এবং একই ধর্মের অনুসারী। আরেক দল আছে যারা ধর্মের নামে নিজেদের পরিচিত করে এবং নিজেদের প্রভাব খাটায় ধর্মভীরু সাধারণ মানুষদের মাঝে। লক্ষ্য লক্ষ্য টাকার ব্যবসা করে নেয় ধর্মের নামে।

এবার হিন্দু ধর্মের কথায় আসি। এরা আবার উচু-নিচু জাতে বিভক্ত। কোন জাত এতো নিচু যে তারা অন্য জাতের মানুষকে স্পর্শ করতে পারবে না, অথচ একই রক্ত মাংসের মানুষ এরা। মরার পর সামান্য বারুদের আগুনে উভয়কেই জ্বলতে হবে!

খ্রিষ্টান ধর্মের কেউ যীশুকে ঈশ্বরের পুত্র ভাবে আবার কেউ বাইবেলে বেশি মনোনিবেশ করে। কিন্তু সমস্যা হয় পোপ নির্বাচনে। কোটি মানুষের ভিতর থেকে একজনকে বেছে নিতে হবে যাকে সবাই মান্য করবে। এই নির্বাচন নিয়ে কাহিনী তৈরি হয়। এ ক্ষেত্রে একটা সত্য ঘটনা অবলম্বনে সিনেমাটার কথা না বললেই নয় ( Angels and Demons) আমার প্রশ্ন কাকে আমরা মানব? ঈশ্বরকে? যিনি আমাদের মাঝেই বিরাজ করেন? নাকি অন্য কোন নিয়ম দিয়ে বানানো সত্তাকে?

এখন এই সব ধর্মের বিভিন্ন মতামত, কার্যকলাপ আমরা খুব সুন্দরভাবে মেনে চলেছি। কারণ আমরা জানি, এগুলো আমরা যদি পালন না করি তাহলে আমাদের অন্য চোখে দেখা হবে। সমাজের কেউ আবার নাস্তিক বলবেন ( অথচ তারা নাস্তিক এর অর্থও বুঝে না )। আমদের জাত চলে যাবে, সমাজে মান থাকবে না। আবার আরও কথা আছে, মরার পরে আমাদের বিভিন্ন শাস্তির ভয়ে আমরা কাতর। আমরা এগুলো যেন একটা অনাকাঙ্ক্ষিত ভয়ে পালন করি মন থেকে নয়!

আমি এই সমস্ত ধর্মের আলকে একটি কাহিনীর কথা বলি। হয়তো অনেকের কাছে বিরক্ত লাগবে, কিন্তু লেখার স্বার্থে এটা করতেই হচ্ছে। মুসলিম ধর্মের একটা ছেলে খ্রিষ্টান ধর্মের একটি মেয়েকে ভালোবাসতো। সে জানতো না যে মেয়েটি খ্রিষ্টান ছিল। যখন জানতে পারলো ততক্ষণে দেরি হয়ে গেছিল, কারণ সে মেয়েটিকে প্রেম প্রস্তাব দিয়ে ফেলেছিল। তবুও সে তখন মেয়েটির কাছ থেকে দূরে সরে যেতে লাগলো। ওদের আল্লাহ বা ঈশ্বর ওদেরকে আলাদা করতে চাইছিলেন না। তাই অবশেষে ধর্মীয় গোঁড়ামির পাঠ চুকিয়ে তারা নিজেদের মতো করে দুজন দুজনকে ভালবাসতে থাকে। কিন্তু তাদের সমাজ ও তাদের পরিবার তাদের ঐ সুখের মুহূর্ত গুলোকে বিষাক্ত করার জন্য ব্যতিব্যস্ত হয়ে পরল। দুজনের পরিবার তাদের অসম্ভব নামের একটা শব্দ ধরিয়ে দিল। পরিশেষে মেয়েটিকে তার জীবন দিয়ে তার ভালোবাসার প্রমান দিতে হয়েছিল। আর ছেলেটিও এই সমাজের জাল থেকে বের হয়ে অন্যত্রে নিজেকে অবমুক্ত করেছিল। কিন্তু আসলে কি সব কিছুর সমাধান হয়ে গেল তাতে? হ্যাঁ আমাদের কাছে এটা একটা পাতি গল্প বটে! কিন্তু এতটুকু মূল্যও কি পেতে পারে না এই গল্প? আমরা কি একটুও পাল্টেছি?

এই গেল ধর্মের কথা এখন বলবো আমাদের কথা। যেখানে সংবিধান নেই, যেখানে আসমানি কিতাব নেই। যেখানে আমরা আছি আর আমাদের নিজেদের তৈরি করা সেই বিভেদগুলো আছে।

বিভেদগুলো কবে কে তৈরি করেছেন তা আমদের জানার বাইরে। দাদা-নানাদের মুখ থেকে শুনেছি সমাজের ঐ লোকটা বড়, ঐ লোকটা ছোট। সে জমিদেরের ছেলে আর ওই ব্যাটা জেলের ছেলে। আমাদের দাদাদের দাদারা বলতেন রাজার ছেলে আর প্রজার মেয়ের গল্প। আর আমরা এখন বলি ও সংসদ সদস্যর ছেলে আর উনি শিল্পপতির ছেলে এদিকে করিম রিকশাচালক।

পুরাতন নিয়ে আর না বলি, সরাসরি আমরা যেখানে আছি সেখান থেকেই শুরু করি। এখনো গ্রাম গুলোতে আছে যে, যাদের অনেক টাকা পয়সা আছে তারা সমাজের পরিচিত, তাদের মান্যও করে সবাই। রাস্তা দিয়ে তারা যখন যায় তাদেরকে সালাম দেওয়া হয়। আর এদিকে ষাট বছরের বুড়ো স্কুল শিক্ষককে চোখেই পরে না কারণ তার দিন আনতে পান্তা ফুরায়। পাশ দিয়ে বেচারা শীতের সকালে কাশতে কাশতে ধীর গতিতে হেঁটে যান! তাকে সম্মান দেওয়া তো দূরের কথা তাকে আমরা তয়াক্কাও করি না। এই নিয়ম আমরা নিজেদের স্বার্থে আমরাই তৈরি করে নিয়েছি।

এবার একটু আধুনিকতায় আসা যাক। আমাদের শহুরে সভ্য সমাজের ব্যাপারটায় একটু আলাদা, এদেরকে বাংলায় বললে mind করতে পারেন। তাই এদেরকে বলতে হবে standard  society কোটি কোটি টাকা নিয়ে কারবার এদের। রাতে এরা বিভিন্ন পার্টি করে বেড়ায়, আর মধ্যরাতে মদ পান করে বাসায় ফেরে। না এটা তাদের সমাজে চলতেই পারে! কিন্তু সকালে উঠে চেঁচামেচি করবেন বাসার ১২ বছরের কাজের মেয়েটির উপর। কেন চায়ে চিনি কম হল এই নিয়ে? বাড়িওয়ালী পরম আদরে আবার খুন্তি দিয়ে তার গালের এক পাশ ঝলসেও দিবেন চায়ের কাপ ভাঙার অপরাধে!!! আর বাড়ির সব থেকে ভদ্র ছেলেটি দুপুর ১২ টাই ঘুম থেকে উঠে বন্ধুদের সামনে এসে গলা হাঁকিয়ে ডাক দিবেন দুলাইল্লা বলে !!! শুধু এখানেই শেষ না, তার নাম নিয়ে ব্যাঙ্গ করে তার বাবা-মায়ের দেওয়া নামটাও পাল্টে দিবেন! এগুলো তার ভার্সিটি তে অবশ্যই শেখানো হয়না! এগুলো তার অহংকার দিয়ে তৈরি করা নিয়ম। সে কোটি পতির ছেলে, সে কেন কাজের ছেলের সাথে ভালো ব্যাবহার করবে!

এতক্ষণ আমি বিভিন্ন ভাবে আপনাদের মাঝে আমাদের সমাজের দৃশ্যপট তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। হয়তো খুব বিরক্তকর আর সস্তা কথা বলেছি। এবার দেখি আসুন আসলে এই সমাজের নিয়ম আর নিজেদের অহংকার আমাদের কি দিচ্ছে!

তার আগে দেড় (১৫ বছর এর মতো) যুগ আগের ঘটনা বলি। আমি তখন খুব ছোট ছিলাম। দেখতাম আমার আশে পাশের গ্রামের মানুষগুলোকে। সকালে সব্বাই একসাথে কেমন করে যেন জেগে উঠত। কেউ এসে একজন আরেকজনকে বলতো আমার চাল নেই, আমাকে চাল ধার দে। কেউ এসে আবার বলতো আমাদের বাড়িতে আয়, তোদের তো রান্না হয়নি আজ আমাদের বাড়ি খাবি চল। সন্ধাই সবাই একসাথে বসে নানান গল্প করত। আমি তাদের মাঝে মায়ের কোলে মাথাটা রেখে কখন যে ঘুমিয়ে পড়তাম! সে সব এখন কেবলই স্মৃতি! আমাদের মানুষের জন্য কিছু করার, মানুষকে ভালোবাসার সেই প্রবল ইচ্ছাটা কমে গেছে। আমরা সবাই নিজেদের নিয়ে এত্ত ব্যস্ত!

সবাই চায় নিজেকে শীর্ষে দেখতে, কিন্তু একবারও ভাবি না এতে অন্য কারো ক্ষতি হল কিনা। আমাদের হয়তো অনেক উন্নতি হচ্ছে, কিন্তু পাশের বাসার আরেকজন হয়তো খুবই দুর্দশায় দিন পার করছে যে কিনা এক সময় আমার সাথে একই হাঁড়ির ভাত খেয়েছে! আমরা সবাই দ্রুত গতিতে চলতে ব্যস্ত। কেউ পাখা লাগিয়ে, কেউ স্পীড বোর্ডে, কেউ আবার ইঞ্জিন চালিত যানবহনে ভর করে। কিন্তু প্রতিনিয়ত আমাদের এই দ্রুত গতিতে চলা অনেকের কষ্টের কারণ হয়ে যাচ্ছে। আমাদের ঐ যানবহনের নিচে পিষে যাচ্ছে তাদের শরীর আর তাদের রক্তের উপর দিয়ে আমরা বীর দর্পে চলে যাচ্ছি!তাহলে এই বীর দর্পের কোন অর্থ আছে কি?

আমি কোন সমাজ, কোন নিয়ম, বা কোন ধর্মের বিরোধিতা করছি না। আমি বাস্তবতার কথা বলছি। কিন্তু আমাদের সবার ভেবে দেখা উচিত কিসের নেশায় আমরা এই বাস্তবতার আলকে চলছি? কি দিচ্ছে আমাদের এই বাস্তবতা?

এই সমাজে আজও অনেক ভালো মানুষ আছে, যারা এই পৃথিবীকে টিকিয়ে রেখেছে তাদের ভালো কাজগুলো দিয়ে। আমি আজকে হয়তো আমার শক্তিবলে সমস্ত কিছু ভুলে গিয়ে এই অন্যায়গুলো করবো, কিন্তু আমদের সমাপ্তি অনিবার্য। আমরা তখন মুক্তি পাবো না কোন ধর্মের দোহাই দিয়ে। আমাদের নামের টাইটেল দিয়ে।

এই সমাজ, এই নিয়ম কে তৈরি করেছে? আমরা নিজেরাই নয়কি? আজকের এই অদৃশ্য মায়াজালের কারণে, নিয়মনীতির কারণে নিজেদের অবমুক্তি করতে পারছি না। আজ আমি কষ্ট পাচ্ছি কাল আপনার দিন আসবে। তাহলে কেন আমরা নিজেদের তৈরি জালে নিজেদেরকেই বন্দি করে রাখছি? সম্মানটা কিসের জন্য? ধর্মটা কিসের জন্য? এগুলত মানুষের জন্যই তাই নয় কি?

আজ আমার আপনার অহংকারের কারণে আমাদের প্রিয়জন দরজাবন্দি হয়ে কষ্ট পাচ্ছে। আপনি চান না সে অন্য ধর্মের কাউকে ভালবাসুক। আপনি চান না সে আপনার থেকে নিচু কারো সাথে মেলেমেশা করুক। তাহলে আপনি তার খুশিটা নষ্ট করে দিয়ে কিভাবে বলতে পারেন যে, তাকে আপনি ভালো রাখতে চান? এগুলো আপনি করছেন আপনার সম্মানে জন্য! হ্যাঁ হয়তো বলবেন ওর ভালোর জন্য, পরবর্তীতে ও ভালো থাকবে, তাইনা? কিন্তু আপনি বলতে পারবেন পর মুহূর্ত তার জীবনে আসবে কিনা? আজকের এই মুহূর্তে যদি ভালো থাকা না গেল তাহলে কালকে আপনি কিভাবে ভালো থাকবেন একটু ভেবে দেখবেন কি? আজ আপনি আছেন আর কালকের তো কোন অস্তিত্বয় নেই!!

তাই আমি কোন ধর্মের আলকে নয়, আমি কোন জাতির আলকে নয়, আমি কোন সম্মান লাভের উদ্দেশ্য নয়, আমি কোন নিয়মের বন্ধনে নয়! আমি মুক্ত আকশের নিচে সূর্যের আলোর স্পর্শে, দুহাত তুলে নিজেকে মেলে ধরতে চাই! আমি মানুষের কাছে গিয়ে দুঃখ সুখের সঙ্গী হতে চাই! আমি আবার আমার মায়ের কোলে মাথা রেখে ঘুমিয়ে যেতে চাই...!!!

৩ Likes ১২ Comments ০ Share ৫৯০ Views