Site maintenance is running; thus you cannot login or sign up! We'll be back soon.

" হযরত ফাতেমা যাহ্‌রা (সঃ আঃ) "

মহানবীর (সাঃ) ওফাতের পর তৎকালীন ক্ষমতাসীন শাসকচক্র তাঁর উপর কিরূপ জুলুম ও অত্যাচার করেছিল তার একটি সংক্ষিপ্ত চিত্র পাঠকদের স্মনে তুলে ধরছি । যারা তাঁর প্রতি জুলুম এবং অত্যাচার করেছেন তারা সকলেই রসুলের (সাঃ) প্রথম কাতারের বিশিষ্ট সাহাবি ছিলেন । আবু বকর খলিফা হওয়ার পর ওমরের পরামর্শে বাগে ফেদাক রাষ্ট্রায়াত্ত করে নিলেন । মা ফাতেমা স্বয়ং খলিফা আবু বকরের কাছে মসজিদুন্নবীতে গিয়ে হাজির হলেন । খলিফা তখন স্ব-পরিষদ উপস্থিত ছিলেন । উক্ত বাগান রাস্ট্রায়াত্ত করার করার কারন জিজ্ঞাসা করায় খলিফা উত্তর দিলেন, নবীগনের কোনো উত্তরাধিকারী হয় না । উম্মতগণই নবীর সকল সম্পত্তির মালিক হয়ে থাকেন । নবীকন্যা বললেন, আবু বকর তুমি কি কোরআন পড়ো নাই ? এতে কি লিখা নাই যে, সোলায়মান নবী দাউদ নবীর সকল সম্পত্তির অধিকারী হয়েছিলেন । জবাবে আবু বকর (রাঃ) বললেন- রসুলুল্লাহ আমাকে বলেছেন যে, তাঁর কোনো উত্তরাধিকারী হবে না। এ কথা শুনে নবীকন্যা বললেন, এটি মিথ্যা কথা- এই বলে তিনি মসজিদ থেকে বের হয়ে নিজগৃহে চলে গেলেন । নবীদের কোনো উত্তরাধিকারি না হওয়ার কথা হাদিসে স্পষ্টভাবে উলেখ রয়েছে । এরূপ অবস্থায় আমরা কোনটা সত্য বলে গ্রহন করব ? এই বাগান শুধু মৌখিক নয় রাসুলুল্লাহ দনপত্র লিখে আপন কন্যা ফাতেমাকে দান করছিলেন । এই দানপত্রের দাতা হলেন রাসুলুল্লাহ (সাঃ), গ্রহীতা তাঁর কন্যা, এর লেখক হলেন আলী (আঃ) ও এবং স্বাক্ষী তাঁদের দুই নাবালক পুত্র হাসান ও হোসাইন (আঃ) । রাসুলের (সাঃ) ন্যায্য ওয়ারিশ আলী (আঃ) ফাতেমা (আঃআঃ) হতে রাসুলের (সাঃ) যে ব্যাক্তিগত সম্পত্তি 'বাগে ফাদাক' রাস্ট্রায়াত্ত করে নিয়েছিলেন সেই বাগে ফাদাক খলিফা ওমর ইবনে আব্দুল আজিজ প্রায় ৮৮ বছর পর প্রথম ও দ্বিতীয় খলিফার অন্যায়কে সমর্থন করতে না পেরে সম্পতিটি তৎসাময়িক ভোগ দখলকারী উমাইয়া সর্দারদের হাত থেকে নিজের জীবন বিপন্ন করে বহু কষ্টে তৎকালীন নবী বংশধরদের ফিরিয়ে দিয়েছেন । ঐতিহাসিক কলঙ্কগুলোর উৎসসমূহ ধরে দেওয়ার ফলে উমাইয়াগন কর্তৃক বিষ প্রয়োগে ওমর ইবনে আব্দুল আজিজকে খতম করা হয় । রাসুল (সাঃ)-এর ওফাতের পর ফাতেমা যাহারা (সাঃ আঃ) বেশী দিন জীবিত ছিলেন না । কথিত আছে, বাগানের এই ঘটনার পর হতে যখনই আবু বকর নবীকন্যার বাড়ীর পাশ দিয়ে যেতেন তখনই তিনি নবীকন্যাকে ছালামুন আলাইকা ইয়া বিনতে রাসুলুল্লাহ বলে ছালাম পেশ করতেন, কিন্তু নবীকন্যা কখনো তার ছালামের জবাব দিতেন না ।
( মুসলমানদের ছালাম দেয়া সুন্নত জবাব দেয়া ওয়াজিব , ছালাম এর জবাব একমাত্র......... পাবে না ) । মাসুমা মা ফাতেমা যাহারা চক্রান্তকারীদের কারসাজিতে শাহাদাত বরন করেন । চলিশজন গুন্ডা ভাড়া করে মাওলা আলীর (আঃ) উপর অত্যাচার চালাতে এসেছিল । না হক জুলুম থেকে স্বামীকে বাঁচাতে এগিয়ে যাওয়ায় মা ফাতেমা যে যখম পান সেই আঘাতের কয়েক দিনের মধ্যেই মা ফাতেমা এন্তেকাল করেন । রাসুলুলাহ (সাঃ) দো-জাহানে মা ফাতেমাকেই সবচেয়ে বেশী ভালোবাসতেন । তাই ফাতেমার প্রতি আঘাত আসে প্রথম সেইসব লোকদের তরফ থেকে, যারা রাসুল (সাঃ) হায়াতে থাকতে মুখের দুয়ারে খুব ভালবাসত বলে জাহির করেছে । ফাতেমা যাহারার এন্তেকাল একটি দুঃখজনক ও বিষাদময় ঘটনা । যদিও আলী (আঃ) অবসর গ্রহন করে নিভৃত গৃহজীবন যাপনের সিদ্ধ্বান্ত গ্রহন করেছিলেন এবং ক্ষমতার রাজনীতিতে কোনোরূপ অংশগ্রহণ করা থেকে বিরত ছিলেন তথাপি তাঁর পরিবার ঘরে থাকা অবস্থায় ঘরে ডুকে আগুন লাগানো হয়েছিল এবং জলন্ত দরজা অথবা তরবারির বাঁটের শক্ত আঘাত অথবা ভীষন একটা ধাক্কা লেগে ফাতেমার (সাঃআঃ) পাঁজর এবং হাত ভেঙ্গে যায় । এমন মারাত্মক আঘাত লেগেছিল যে তাঁর গর্ভস্থ সন্তান মারা গিয়েছিল । আল্লামা শাহ বিস্তানী লিখিত 'মিল্লাত ওয়া নাহাল' পুস্তকে তিনি বলেন যে, আলী ফাতেমা ও তাঁদের সন্তানগণ ব্যতীত যাদের বয়স ( ৪ থেকে ৮ ) বৎসর পর্যন্ত বাড়িতে অন্য কেউ ছিল না । দৃশ্যত এই প্রচণ্ড আক্রমণ ছিল আকস্মিক এবং অপ্রত্যাশিত । কেউ এর জন্য প্রস্তত ছিল না । গৃহকর্তী মারাত্নকভাবে আহত হয়ে মূর্ছিত হয়ে গিয়েছিল । ঘর ধোঁয়ায় ভরে গিয়েছিল এবং ছেলেমেয়েরা ভয় পেয়েছিল । আলী তাঁর আহত স্ত্রী ও শ্বাসরুদ্ধ সন্তানদের প্রতি যখন মনোযোগ দিয়েছিলেন তখন তাঁকে পরাভূত করে গৃহ থেকে টেনে বের করা হয় । ফাতিমার উত্তরধিকার অস্বীকৃত হয়েছিল । দৈহিক এবং মানসিক আঘাতের পর অল্পকাল সে সুস্থ থেকে ১১ হিজরিতে ইহধাম ত্যাগ করেন । চলবে... পোস্টঃ ফিদা, সুত্রঃ রেজা মাহ্‌বুব চিশতী সাহেব এর বই থেকে ।

০ Likes ১ Comments ০ Share ৮৩৩ Views