Site maintenance is running; thus you cannot login or sign up! We'll be back soon.

" সত্য বল সুপথে চল "

 ইসলাম ধর্মের প্রবর্তক হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)-এর ইন্তেকাল ( ওফাত, দুনিয়া থেকে প্রকাশ্যে বিদায় ) এর সঙ্গে সঙ্গে শিশু ইসলামের অভিভাবকত্বের নকল দাবীদারদের বাড়াবাড়িতে শিশু ইসলামের অস্তিত্বই সংকটের মুখোমুখি হওয়ায় প্রকৃত অভিভাবককে শিশুর দাবী ত্যাগ করে নকল অভিভাবকের হাতে তুলে দিতে হয়েছে । এতে শিশুটির প্রান রক্ষা পেয়েছে বতে-কিন্তু নকল মায়ের অতি আদরের অত্যাচারে, অতি ভোজনের গুরুপাক জনিত অন্ত্রের পীড়ায় শিশুটির আজ হাড় কংকালসার অবস্থা- এর আসল চেহারা চিনে নেওয়া আজ একেবারেই অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে । কে আসল কে নকল ? " রথযাত্রা, লোকারণ্য, মহা ধূমধাম ভক্তেরা লুটায়ে পথে করিছে প্রণাম । পথ ভাবে 'আমি দেব' , রথ ভাবে 'আমি' মূর্তি ভাবে 'আমি দেব'- হাসে অন্তর্যামী । ( কবি রবীন্দ্র নাথ ঠাকুর )। পৃথিবীতে ইসলামপন্থীদের মধ্যে বহু দল উপদলের আবির্ভাব ঘটেছে । কেউ শিয়া, কেউ সুন্নী । খারিজী, মুতাজিলা, কাদরিয়া, জাবুরিয়া সে অতীতের ব্যাপার । হালে কত কি সম্প্রদায় দেখতে পাই তার সবগুলির নামই কি জানা আছে ? ওহাবী , কাদিয়ানী, মাযহাবী, লা মাযহাবী, তাবলিগী, তাবলীগ বিরোধী, দেওবন্দী, ফরায়েজি ইত্যাদি কত দল উপদলই না রয়েছে । শিয়াদের মধ্যেও আশারিয়া, ইসনা আশারিয়া, 
ইসমাঈলিয়া, বাহাই এমনি কত না বিভক্তি । কেউ বলে চার মাযহাবের এক মাযহাবের অনুসারী হওয়া ইমানদার হওয়ার জন্য অপরিহার্য । কেউ বলে মাযহাব মানিনা । শিয়ারা আবার ইমামতে বিশ্বাসী । তাদের মতে দ্বাদশ ইমামের পর ইমামত শেষ হয়ে গেছে । তাহলে দ্বাদশ ইমামের পরবর্তী মুসলমানদের নেতৃত্ব কে দেবে ? সুন্নীরা এখন বেতনধারী ইমাম নিয়োগ করে তার পিছনে নামাজ পড়ে এবং উলটো ইমামকেই আদেশ নির্দেশ দানে পরিচালিত করে । ওহাবিদের আদি গুরু আবদুল ওহাব নজদী খোদ রাসুলুল্লাহ (সাঃ)-এর রওজা শরীফে লাঠি হাতে দণ্ডায়মান হয়ে সমবেত মুসলমানদের ভৎর্সনা করে বলেছিলেন, " তোমরা কেন এখানে সমবেত হয়েছ । এই কবরে শায়িত ব্যক্তি ( রাসুলুল্লাহ (সাঃ) ) এখন তোমাদের জন্য কি করতে পারেন ? তাঁর চাইতে এখন আমার হাতের এ লাঠিটার ক্ষমতা বেশী " ( নাউযুবিল্লাহ ) । খারিজীরা ' লা হুকমা ইল্লা বিল্লাহ ' ' আল্লাহ ব্যাতীত হুকুম দেবার মালিক কেউ নেই'- এই ধ্বনি তুলে আল্লাহর খলিফার বিরুদ্ধেই বিদ্রোহ করা ধৃষ্টতা দেখিয়েছিল । আধুনিক কালেও দেখি- ' আল্লাহ আমাদের প্রভু, কোরান আমাদের শাসনতন্ত্র, রসুল আমার নেতা ' ইত্যকার চমকপ্রদ স্লোগান তুলে একদল বাংলাদেশ নির্বিচারে গনহত্যাকারী ও নারী ধর্ষণকারী পাকিস্তানী 
সৈন্যদের সহযোগী হতে দ্বিধাবোধ করেনি । রাজনৈতিক কলহে জড়িয়ে সন্ত্রাস ছড়াতে মানুষের হাত পায়ের রগ কেটে ছেড়ে দেবার মত জঘন্য কর্মকান্ড করে এরা নিজেদের প্রকৃত ইসলামপন্থী বলে মনে করে । ইসলামে নারীর শাসন মানা হারাম- এ ধরনের ফতোয়া দিয়ে নারী নেতৃত্বে পরিচালিত দলের বিপক্ষে নির্বাচনী যুদ্ধে অবতীর্ন হয়ে নির্বাচনের পর পরই আবার দলীয় সমর্থনের সহযোগিতায় একজন নারীকেই ক্ষমতার শীর্ষে বসাতে দ্বিধাবোধ করেনা । এ ধরনের মুনাফেকী কাজ কারবার সত্বেও শত শত ধর্মপ্রাণ ( ? ) মুসলিম এদের আহ্বানে পঙ্গপালের মত জান কোরবান করতে এগিয়ে আসে । কেউ কেউ আবার প্রকাশ্যে পরস্ত্রীর সাথে অবৈধ সম্পর্কের কথা স্বীকার করেও ইসলামের খেদমতগার হওয়ার গৌরব অর্জনার্থে ' রাষ্ট্রধর্ম' হিসাবে ইসলামকে রাষ্ট্রীয় সংবিধানের অন্তর্ভুক্ত করে' মুসলমানদের বাহবা অর্জন করেন । মুসলমানদের অতি প্রিয় একজন ক্বারী মাওলানা সুবক্তা তাকে 'এশিয়ার শ্রেষ্ঠ মহামানব ' বলে প্রকাশ্যে জনসভায় বাহবা দিচ্ছেন এমন দৃশ্যও টেলিভিশনের কল্যানে আমরা দেখতে পেয়েছি । আরেক মাওলানাতো কোরানের ভাষার অনুকরণে বলে ফেলেছেন, - যদি বঙ্গোপসাগরের সমস্ত জল কালি হয় এবং সুন্দরবনের সমস্ত গাছ কলম হয়, তবুও ঐ নেতার গুণগান 
লিখে শেষ করা যাবেনা। ' ঐ সব মৌলভী মৌলানা এবং ইসলামী দল উপদলের কার্যকীর্তি দেখে ধার্মিকেরা কি ভাবেন জানিনা কিন্তু আমার মনে হয়, যে কোন সচেতন মানুষ ঘৃণায় শিউরে উঠবেন । তবে অধিকাংশ অজ্ঞান মুসলমান মাওলানাদের প্রচারে বিভ্রান্ত হয়ে মহামানবদের দোষত্রুটি মার্জনীয় বলে ধরে নিয়ে তাদের পাপ করার ক্ষমতা দেখেও বিস্ময়ে মাথা নত করে তাদের প্রতি দ্বিগুণ ভক্তি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করলেও নাস্তিক অধার্মিকেরা কিন্তু ধর্মের গায়ে থুতু ছিটাবার মওকা পেয়ে যায় । ধার্মিক ভক্তকুল তাতে ক্ষেপে গিয়ে নাস্তিক সংশয়বাদীদের কাফের, মুরতাদ আখ্যা দিয়ে তাদের ফাঁসী দাবী করে মিছিল ভাঙচুর করলেও নাস্তিক মুরতাদদের প্রবন্ধ পুস্তকাদির বিরুদ্ধে দু'কলম লিখে জবাব দিতে পারেন না- এমনি তাদের জ্ঞানের বহর । আল্লাহর নবী (সাঃ) মুসলমানদের জন্য জ্ঞানার্জন ফরজ করেছেন কিনা- সেজন্যই আমরা জ্ঞানের দ্বারস্থ না হয়ে হাতের কাছে লাঠিসোঁটাকেই প্রতিবাদের একমাত্র অস্ত্র হিসাবে জ্ঞান করি । কোন লেখিকা পৈতৃক সম্পদে নারীদের সমান অংশ দাবী করে কোরানি আইনের সংশোধন দাবী করেছেন তাই তাকে মুরতাদ আখ্যা দিয়ে তার বিরুদ্ধে মিছিল করে সারা দেশটা ওলট- পালট করার মত অবস্থা সৃষ্টি না করে জ্ঞানের সাহায্যে তার যোগ্য প্রত্যুত্তর দেওয়া সম্ভব । যেমন- ইসলামী আইনে পিতার সম্পদে কন্যাদের চার আনা এবং পুত্রদের আট আনা দেওয়ার বিধান রয়েছে । আপাত দৃষ্টিতে নারীদের প্রাপ্য পুরুষের অর্ধেক মনে হতে পারে । কিন্তু একজন নারী পিতার সম্পদ ছাড়াও স্বামীর সম্পদ থেকে দু' আনা- এভাবে মোটামুটি ছ' আনা সম্পদ পাবার অধিকারী । অন্যদিকে একজন পুরুষের দু' আনা সম্পদ যখনই স্ত্রীর অধিকারভুক্ত হলো তখন তা কমে পুরুষের ছ' আনাই থাকলো । চূড়ান্ত ভাবে সব মিলিয়ে একজন নারী মোটামুটি ভাবে পুরুষের সমানই পাচ্ছে । মুসলমানদের মধ্যে প্রচলিত নারী বৈষম্যমূলক কিছু বিধান প্রকৃতপক্ষে ইসলামের নহে । ভ্রান্ত ব্যাখ্যার দ্বারা বহু বিভ্রান্ত অনুশাসন ইসলামী ( ? ) সমাজে চেপে বসেছে যার বিস্তারিত বর্ণনা এখানে উপস্থাপন করা আমার উদ্দেশ্য নহে । আমি শুধু সামান্য একটু ইংগিত দিয়েই ক্ষান্ত হবো । রাসুলুল্লাহ (সাঃ) স্বীয় বিবিদের যুদ্ধক্ষেত্রে নিয়ে যেতেন । নারীরা রাসুলুল্লাহর (সাঃ) আমলে মসজিদে জামাতে অংশগ্রহণ করতেন, বিবাহ বহির্ভূত যৌন সম্পর্ক স্থাপনকারী নর-নারীর মধ্যে বিবাহ পড়িয়ে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে, জেনাকারীকে পাথর মেরে হত্যার বিধান বা ছঙ্গে ছাড় কোরানিক বিধান নয় । পরবর্তীকালে হযরত উমর এ বিধান চালু করেন । নারীরা অবাধে বাইরে চলাফেরা করতেন এমনকি যুদ্ধক্ষেত্রে পর্যন্ত যেতেন । বীরঙ্গনা খাওলার কাহিনী, উম্মুল মোমেনীন হযরত আয়েশার উটের পিঠে চড়ে যুদ্ধ পরিচালনা এর জাজ্বল্যমান উদাহরন । চলবে... পোস্টঃ ফিদা, এ, কে মনজুরুল হক এর সত্য বল সুপথে চল বই থেকে ।

 
০ Likes ০ Comments ০ Share ৫২০ Views