Site maintenance is running; thus you cannot login or sign up! We'll be back soon.

~ মিডিয়া ও মিডিওক্রেসি ~

" বাংলাদেশ যেমন বহুজাতিক দেশ , তেমনি বহু ধর্মের লোকেরাও এইখানে বাস করে । এই দেশে যেমন মুসলমানদের সংখ্যাটা বেশী তেমনি বাঙালি জাতির লোকের সংখ্যাও বেশী , অন্যান্য ধর্মের কিংবা জাতির লোকদের তুলনায় । তাই মুসলমানেরা এবং বাঙালিরা এইখানে সংখ্যাগরিষ্ঠ । "

" মিডিয়ার ও পত্রপত্রিকায় প্রায়ই আসে হিন্দু কিংবা অন্য সংখ্যালঘুদের প্রতি আঘাত আনা হয়েছে । এর সাথে সাথে টিভি চ্যানেল-গুলাতে নানা রকম বক্তব্যের আয়োজন করা হয় । বক্তব্যে অনেক কথা আনা হয় ---

এইখানে কিছু দেওয়া হল যা আমার পর্যবেক্ষণের মধ্যে পরেছে -

১) যেই দেশে জামাত আছে সাম্প্রদায়িক হামলা তো হবেই ।

২) হামলা করেছে মুসলমানরা ।

৩) সংখ্যালঘু " অমুক " জাতির উপর হামলা হয়েছে । যেমন ধরেন ঃ চাকমা , মুরং ।

৪) এইসব সাম্প্রদায়িক হামলা বি এন পি এর সময় কি হয় নাই !!

৫) এইটাতে আওয়ামী লীগ এর লোকজনও জড়িত ছিল ।

৬) এইটাতে সব দলের লোকই যুক্ত ছিল ।
৭ ) পুলিশ কিছুই করে নাই !! "


বিগত কয়েক বছরে যতগুলা এই ধরণের কথা শুনেন কিংবা পত্রিকার লোকেরা যতই গলা ফাটাইয়া চিৎকার করছে এই সব সমস্যাকে নিয়া , কিন্তু , সমস্যা সমস্যার জায়গাতেই ঘাপটি মেরে বসে আছে । কিন্তু কেন !!!

চলুন ঘটনার কিছু কিছু নিয়ামক এবং প্রভাবক খোঁজ করি --

১) এইসব ঘটনা সাধারণত প্রত্যন্ত অঞ্চলে ঘটে । অর্থাৎ কোন নির্দিষ্ট এলাকায় এই ধরণের ঘটনা চলমান নয় । এমনকি নির্দিষ্ট সময় পর পর ঘটে ব্যাপারটা এরকম ও নয় , কিন্তু ঘটনাগুলা ঘটে , এবং শহর কিংবা শহর ঘেঁষা অঞ্চলগুলাতে এই সমস্যা অর্থাৎ একসাথে অনেক সংখ্যালঘুদের উপর হামলা হয় না । মানে শহরে এই সমস্যা প্রবলভাবে ঘটে না কিংবা এইটা প্রকটভাবে ধরা এখন পর্যন্ত পরে নাই ।

২) পত্রপত্রিকা কিংবা মিডিয়া এবং তাদের বুদ্ধিজীবীরা সাম্প্রদায়িক হামালায় দোষী কে তার দিক নির্দেশনায় সব সময় মুসলমানদেরই দেখাচ্ছে । হোক সে আওয়ামী লীগের , বি এন পি এর কিংবা জামাতের ।

৩) যেই দেশে যেই ধর্মানুসারী লোকের কিংবা একই জাতিগত লোকের সংখ্যা বেশী , তাদের উপর হামলায় কখনোই আলাদাভাবে উল্লেখ করা হয় না যে " অমুক " সংখ্যাগরিষ্ঠদের উপর হামলা হয়েছে । অর্থাৎ আমাদের দেশের পত্র পত্রিকায় কিংবা মিডিয়ায় ফলাও করে বলা হয় না যে মুসলমানদের উপর হামলা হয়েছে । কিন্তু হামলাটা যখন হিন্দু কিংবা বৌদ্ধদের কিংবা অন্য কোন ধর্মের লোকদের উপর করা হয় যারা কিনা সংখ্যায় কম , তাদের আলাদাভাবে জাতিগত কিংবা তাদের ধর্মকে আলাদাভাবে তুলে ধরা হয় ।

৪) এই সব হামলার নিষ্পত্তি হয় না কখনোই । মিডিয়ার বুদ্ধিজীবীরা কিংবা প্রগতিশীলরা বিভিন্ন দলকে এবং তাদের অনুসারী লোকজনকে দোষী সাব্যস্ত করে । এবং পত্র পত্রিকায় ঠিক একই রকম কথা আসে । আবার অনেকে পুলিশ কিছু করে নাই অর্থাৎ তারা ঘটনাটা ঘটার সময় কিংবা ঘটনা ঘটার পরে তারা কোন অ্যাকশন নেয় নাই এই ধরণের কথাবার্তাও চলে আসে আমাদের সামনে । অর্থাৎ , ঘটনাটাকে বর্তমানে অনেকে " কম্যুনাল ভায়োলেন্স " বলে দাবি করছেন । অর্থাৎ সকলের সম্মিলিতভাবে যেই হামলা বা ফ্যাসাদ রচনা করা হয় ।

৫) হামলার আগুন জ্বলে , বুদ্ধিজীবীদের কিংবা প্রগতিশীলদের মুখ ফোটে । আগুন নেভে মিডিয়া পত্র পত্রিকার লোকেরাও ঐ হামলা নিয়ে আলোচনা ক্ষান্ত দেন । আবার নতুন কোথাও আগুন জ্বলে , বুদ্ধিজীবীদের কিংবা প্রগতিশীলদের মুখ ফোটে । অর্থাৎ " চোর পালানোর পর বুদ্ধি বাড়ে " ।

৬) কিন্তু কে করল , কেন করল ? - এইসব প্রশ্নে আমরা মানে মিডিয়া কিংবা পত্র পত্রিকার দর্শকেরা একটা ধোঁয়াশা উত্তর নিয়ে পুরা ঘটনা ভুলে যাই । আবার একই ঘটনা ঘটে , আবার একটু দুঃখ !! তারপর আবার ঘটনাটাকে " প্রাগৈতিহাসিক ঘটনার " খেতাব পেতে হয় । কিন্তু ঘটনায় কারা দোষী তারা সব সময়ই ধরা ছোঁয়ার বাইরে ।

তাহলে ঠাই কোথায় , অর্থাৎ সমস্যাটা __

১) এই দেশ হইতে মুসলমান ধর্মকে উঠাইয়া দিবে এমন শক্ত সামর্থ্য অন্য কোন ধর্মের লোকেরা কি আছে ?
নাই , কারণ তারা সংখ্যায় এত শক্ত হয় নাই । তার মানে মুসলমানদের এইখানে তাদের ধর্মকে নিয়ে অন্য ধর্মের লোকেরা বিপ্লব কইরা কিংবা কোন্দল কইরা সরাইয়া ফেলতে পারবে এমন কোন ধর্মের লোক এই বাংলাদেশে নাই , যদি না মুসলমানেরা নিজেরাই তাদের ধর্ম নিয়া সমস্যা না করে । আর এইটা এত চিন্তা করার কারণ ও নাই কারণ অন্যান্যরা সংখ্যায় কম , যেই ধর্মের লোকই হোক না কেন !! একই কথা জাতির ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য ।

২) হামলায় অর্থনৈতিক কারণ জড়িত কিন্তু সেইটারে কম্যুনাল ভায়োলেন্স আকারে কিংবা কোন দলের আকারে দেখাটা কতটা যৌক্তিক ? অর্থাৎ , হামলার পর আওয়ামী লীগের লোকেরা আর বি এন পির লোকেরা ভাগ - বাটোয়ারা করছে এই কথা শুনতে শুনতে তো কান পঁচে গেল কিন্তু উপযুক্ত তথ্য প্রমাণ কই ? আমার এই কথাটা আনার একটাই কারণ আর তা হচ্ছে এই ধরণের হামলা যারা করছে , অবশ্যই তারা ধন সম্পদ আত্মসাতের জন্যই করছে কিন্তু তারা তো কোন দলের প্রচারণা কিংবা কোন দলের নাম ডুবানোর জন্য করছে না ।আর কোন দলের প্রধান নেতা , তার চেলা চামুণ্ডাদেরকে সংখ্যালঘুদের উপর হামলার আদেশ দেয় কিনা তা নিয়া যথেষ্ট সন্দেহ আছে ।আচ্ছা , বলেন তো শেষ কবে আপনি বাসা বাড়িতে চুরি ডাকাতি কিংবা ছিনতাইয়ের ঘটনাকে কোন দলীয় দৃষ্টিকোণ থেকে দেখেছেন ? করেন নাই , তাহলে এই হামালার প্রতি এইরূপ দৃষ্টিভঙ্গি কেন !!! তাহলে , যারা এই সব হামলাকে দলীয় দৃষ্টিকোণ থেকে দেখে এই দলগুলার মধ্যে কোন্দল জীবিত রাখছে তারা কি আসলে মূল সমস্যা অর্থাৎ এই হামলায় ক্ষতিগ্রস্তদের প্রতি আগ্রহী নাকি দলগুলার মধ্যবর্তী কোন্দলের প্রতি !!! অর্থাৎ হামলায় হামলাকারীদের ধরায় কি তাদের আগ্রহ কম নাকি !!! তাই হামলাকে হামলা অনুসারেই দেখা উচিৎ , দলীয় আকারে নয় । 


৩) আর হামলায় যেহেতু ম্যাক্সিমাম টাইমেই কোন লোক ধরা পরছে না সেহেতু কেবল এই ধরণের হামলায় মুসলমানরাই জড়িত এইটা নির্দিষ্ট কইরা বলার কোন কারণ দেখি না !!! এই ক্ষেত্রে আমি একজনের লেখা থেকে একটা অংশ কোট করতে চাই ---

" বরং প্রগতিশীলতার লগে এখানে ইসলামের একটা বিরোধ জিন্দা আছে। প্রগতিশীলরা 'লালসালু ক্রাইসিসে' ভোগেন বইলা সংকট মীমাংসার রাস্তাটাও ক্রমশ সরু। তাদের পক্ষে পুস্তক-জাত জ্ঞান দিয়া এসব ঘটনারে সাম্প্রদায়িক মনে করা সহজ হয়।

ভারত আর বাংলাদেশের বুদ্ধিজীবীতায় সাম্প্রদায়িক হামলা যেভাবে বিরাজ করে রাজনীতিতে এর ব্যবহার পাল্টাইছে। এই সোজা বিষয়টা এড়ায়া যাইতেই দেখি। ফলে পাটাতনে না দাঁড়ায়া, ইতিহাসের বিভ্রান্তি দিয়া বিচার করার একটা রেওয়াজ বেশ সচল। যার কারণে মনে হয় বুঝি সাম্প্রদায়িক হামলা। 'মুসলমানরা হামলা করছে হিন্দুদের উপর'।
প্রগতিশীলরা শহরে বইসা মনে করেন বুঝি ওই এলাকার লোকরা সাম্প্রদায়িক। যেহেতু শিক্ষায় তারা পিছাইয়া ফলে সাম্প্রদায়িক হওয়াটাই স্বাভাবিক। " -- সালাহ উদ্দিন শুভ্র ( সাব এডিটর অফ বণিক বার্তা )

৪) কোন হামলায় তাই হামলাকারীকে চিহ্নিত করে তার শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে । এবং এই ক্ষেত্রে সরকারের উদাসীনতার বিরুদ্ধে আপনি সোচ্চার হতে পারেন । অর্থাৎ হামলার সময় যেই সরকার বিদ্যমান তার উপর প্রশ্ন আনতে পারেন যে কেন এইটার যথাযথ তদন্ত করা হচ্ছে না !! সবচেয়ে ভালো হয় আপনি বা আমি যাতে নিজে এই তদন্তের জন্য সরকারকে চাপের মুখে ফেলতে পারি যাতে করে এই ঘটনার বিস্তারিত তথ্য এবং নির্দিষ্ট দোষীকে পাকড়াও করা যায় ।

কিন্তু আপনি এইটা-তো বলতে পারেন না , যে গত সরকারের আমলেও তো এই ধরণের ঘটনা ঘটছে এবং তখনও তো সরকার কাউরে ধরে নাই । এই কাঁদা ছড়াছড়ির রাজনীতিতে কেন জড়াবো আমরা !!! কাঁদা ছিটাইলে তো কতই ছিটানো যায় কিন্তু সমস্যা সমস্যার মত জীবিত থাকে । তারে কোন মতেই দমন করা যায় না ।

৫) এইবার আসি সাম্প্রদায়িক দাঙ্গারে আলাদাভাবে জাতি কিংবা ধর্মের পরিচয় দেওয়াকে নিয়া । এই যে হামলা এইটাকে কি শুধু অমুক অঞ্চলের মানুষের উপর হামলা এই আকারে দেখা যায় না !!! মানে এই ধরণের হামলা হলেই সংখ্যালঘুদের বার বার কেন দেখানো হয় যে তারা এই দেশে সংখ্যালঘু !!! আমরা কি পত্র পত্রিকায় কিংবা মিডিয়ায় , এই ধরণের হামলাকে শুধু " মানুষের উপর হামলা " এইরূপ দৃষ্টিতে দেখতে পারি না !! বার বার কেন আমাদের জানান দিতে হবে তাদের যে তারা সংখ্যালঘু , তারা এমন একটা রাষ্ট্রে বসবাস করে যেখানে তারা সংখ্যায় কম !!! এইভাবে কি সামাজিক ভাবে তাদের কোণঠাসা করা হয় না !!! এইভাবে প্রচারের মাধ্যমে কি মিডিয়া কিংবা পত্র পত্রিকা তাদের একটা " ইনফেরিওরিটিতে " ভোগাচ্ছে না !!!

ধরুন , একটা ক্লাস রুমে টিচার ক্লাসে এসে নাম ডাকছে । নাম ডাকার সময় তিনি আলাদা ভাবে বললেন যে এখন মুসলমানদের নাম ডাকব , বলে তিনি একশটা ছাত্রের/ছাত্রীর নাম ডাকলেন । তারপর তিনি বললেন এইবার হিন্দুদের নাম ডাকব , বলে তিনি দুই জনের নাম ডাকলেন । ডাকা শেষে তিনি বললেন , ও তাহলে এই ক্লাসে হিন্দু তোমরা দুইজন !!!
এইটার কি আলাদাভাবে কোন প্রয়োজন আছে !!! শুধু ছাত্র/ছাত্রীদের নাম ডাকতেই সীমাবদ্ধ করা যায় না ব্যাপারটাকে !! কেন ঐ দুই জন ছাত্রকেই আলাদাভাবে মনে করিয়ে দিতে হবে , যে তোমরা এই ক্লাসের অন্য ছাত্রদের থেকে ভিন্ন ধর্ম পালন কর !!!

৬) তাই হামলাকারী , হামলাকারী -- ই । তারা কোনভাবেই মুসলমানের কিংবা হিন্দুদের কিংবা অন্য ধর্মের অনুসারীদের বন্ধু হতে পারে না । তারা জগতের সকল ধর্ম-অবলম্বনকারীদের কমন শত্রু । আর এই শত্রুদের যখন আমরা শনাক্ত করতে পারব , তখন আমরা সকল ধর্মের লোক এক সাথে মিলে মিশে এই শত্রুদের মোকাবেলা করার জন্য সংগঠিত হতে পারব ।

বিঃ দ্রঃ আমি এই লেখাটা প্রায় তিন ঘণ্টার উপর ধইরা লিখছি । দয়া কইরা বইলেন না বানান ভুল আছে । ঐটা ক্ষমার দৃষ্টিতে হোক কিংবা যেই দৃষ্টিতে পারেন মাফ কইরেন । বিশ্লেষণ নিয়া কিছু বলার থাকলে বইলেন । 

০ Likes ৮ Comments ০ Share ৪২৪ Views

Comments (8)

  • - সনাতন পাঠক

    স্বাগত জানাই। আশা করি গল্পটি প্রতিযোগীতার জন্য বিবেচিত হবে।

    ধন্যবাদ দাদা।   

    - পাভেল

    আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ.......

    - ঘাস ফুল

    যেকোনো মৃত্যুই বিষাদের। আপনজনের হলে সেটা আরও বিষাদময় হয়। মা বাবাকে হারিয়ে মেয়েটা কী করবে কে জানে। কীভাবে তার বাকী জীবনটা কাটবে।  আগামী কাল ঈদ, সবাই আনন্দ করবে অথচ মেয়েটা বিষণ্ণ হয়ে কেঁদে বুক ভাসাবে। করুণ কাহিনী। কষ্টের কাহিনী। গল্পটা আরও একটু ভালো হতে পারতো। বেশ কিছু বানান ভুল আছে। সেগুলোও ঠিক করে নিলে ভালো হবে। ধন্যবাদ বান্না গল্পটা শেয়ার করার জন্য। তবে আসল গল্পকারের নামটা উল্লেখ করার দরকার ছিল।

    প্রতিযোগিতার জন্য শুভ কামনা রইলো।  

    • - পাভেল

      আপনার সৎ মন্তব্যের জন্যে ধন্যবাদ.....

    Load more comments...