হুমায়ূন আজাদ স্যার আমার খুব প্রিয় লেখকদের একজন । স্যার নারী সম্পর্কে অদ্ভুত বাস্তব কিছুকে ভাবতেন, শুধু ভাবতেন না; এ বিষয়ের শিরোনামে পুরো একটি বই তিনি লিখেছিলেন । নারী-পুরুষ ভাবনায় তাঁর একটি লেখায় পড়েছিলাম,
“ছেলেটি তার বিছানা গুছিয়ে না রাখলে মা খুশি হয়, দেখতে পায় একটি পুরুষের জন্ম হচ্ছে; কিন্তু মেয়েটি বিছানা না গোছালে একটি নারীর মৃত্যু দেখে মা আতংকিত হয়ে পড়ে” প্রজাতি হিসেবে নারী-পুরুষ আলাদা তাদের শরীর-বৃত্তিয় বৈশিষ্ট্যের নিরীখে এ কথা আমরা সকলেই জানি, বিশ্বাসও করি। কিন্তু আধিপত্যশীল পুরুষতান্ত্রিক সমাজ নারী-পুরুষের স্বাভাবিক পৃথক সত্তাকে যখন কর্তৃত্বের রাজনীতিতে ফেলে দেশ-কাল-সমাজ ভেদে প্রতিনিয়ত নির্মাণ করে চলে, তখন নারী-পুরুষ নির্মিত হয় প্রচলিত সমাজের কাঙিক্ষত মূল্যবোধের আদলে। আর কবিতায় সেসব আমরা পাই ।
বাঙলা কবিতায় নারী-বন্দনা যেমন খুবই সাধারণ একটা প্রবণতা হিসাবে চোখে পড়ে আবার নারীকে ঘৃণা করার মতন প্রবণতাও কম লক্ষণীয় নয়। আধিপত্যশীল সমাজ-সংস্কৃতির মানদণ্ডে যে সমস্ত গুণাবলী নারীর জন্য নির্ধারিত হয়ে থাকে, কবিতায়ও অধিকাংশ ক্ষেত্রে সেই সমস্ত গুণাবলী সমৃদ্ধ নারীদেরই স্তুতি চোখে পড়ে। তাছাড়া, নারীর চিত্ররূপ তুলে ধরতে কবিরা প্রায়শই যে ধরনের উপমা ব্যবহার করেন সেগুলোর মধ্য দিয়েও কবির পুরুষতান্ত্রিক মতাদর্শের প্রতিফলন পরিলক্ষিত হয়। সবচেয়ে খারাপ লাগে তখনই যখন দেখা যায় নারীর প্রতি চরম বলপ্রয়োগের মত যৌন-নিপীড়নের পুরুষতান্ত্রিক ‘প্রত্যয়টি’ও অবলীলাক্রমে ‘আধুনিক’ কবির কবিতায় কুৎসিতভাবে উঁকি মারে ‘আধুনিক’ যুগের একজন কবির ‘ধর্ষণ’ শিরোনামধারী কবিতায় কবি যখন গড়গড় করে বলে যান কিভাবে কাকে কখন কোথায় তিনি ‘ধর্ষণ’ করবেন তখন এই ধরনের কবিতায় পুরুষ-কবির অতৃপ্ত যৌনবাসনা যা প্রবলভাবে পুরুষতন্ত্রের, বলপ্রয়োগের তীব্র আপত্তিজনক ভাষার সঙ্গে সম্পর্কিত হয় তখন এখানে কবিতা নামক শিল্পটির আর কীইবা অবশিষ্ট থাকে! ‘ধর্ষণ’ কবিতাটিতে ‘আধুনিক’ কবির পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতার উন্মোচন ঘটান কবি এভাবেই:
“মা, পৌষ-চাঁদ-ও কুয়াশা জড়ানো... continue reading
“ছেলেটি তার বিছানা গুছিয়ে না রাখলে মা খুশি হয়, দেখতে পায় একটি পুরুষের জন্ম হচ্ছে; কিন্তু মেয়েটি বিছানা না গোছালে একটি নারীর মৃত্যু দেখে মা আতংকিত হয়ে পড়ে” প্রজাতি হিসেবে নারী-পুরুষ আলাদা তাদের শরীর-বৃত্তিয় বৈশিষ্ট্যের নিরীখে এ কথা আমরা সকলেই জানি, বিশ্বাসও করি। কিন্তু আধিপত্যশীল পুরুষতান্ত্রিক সমাজ নারী-পুরুষের স্বাভাবিক পৃথক সত্তাকে যখন কর্তৃত্বের রাজনীতিতে ফেলে দেশ-কাল-সমাজ ভেদে প্রতিনিয়ত নির্মাণ করে চলে, তখন নারী-পুরুষ নির্মিত হয় প্রচলিত সমাজের কাঙিক্ষত মূল্যবোধের আদলে। আর কবিতায় সেসব আমরা পাই ।
বাঙলা কবিতায় নারী-বন্দনা যেমন খুবই সাধারণ একটা প্রবণতা হিসাবে চোখে পড়ে আবার নারীকে ঘৃণা করার মতন প্রবণতাও কম লক্ষণীয় নয়। আধিপত্যশীল সমাজ-সংস্কৃতির মানদণ্ডে যে সমস্ত গুণাবলী নারীর জন্য নির্ধারিত হয়ে থাকে, কবিতায়ও অধিকাংশ ক্ষেত্রে সেই সমস্ত গুণাবলী সমৃদ্ধ নারীদেরই স্তুতি চোখে পড়ে। তাছাড়া, নারীর চিত্ররূপ তুলে ধরতে কবিরা প্রায়শই যে ধরনের উপমা ব্যবহার করেন সেগুলোর মধ্য দিয়েও কবির পুরুষতান্ত্রিক মতাদর্শের প্রতিফলন পরিলক্ষিত হয়। সবচেয়ে খারাপ লাগে তখনই যখন দেখা যায় নারীর প্রতি চরম বলপ্রয়োগের মত যৌন-নিপীড়নের পুরুষতান্ত্রিক ‘প্রত্যয়টি’ও অবলীলাক্রমে ‘আধুনিক’ কবির কবিতায় কুৎসিতভাবে উঁকি মারে ‘আধুনিক’ যুগের একজন কবির ‘ধর্ষণ’ শিরোনামধারী কবিতায় কবি যখন গড়গড় করে বলে যান কিভাবে কাকে কখন কোথায় তিনি ‘ধর্ষণ’ করবেন তখন এই ধরনের কবিতায় পুরুষ-কবির অতৃপ্ত যৌনবাসনা যা প্রবলভাবে পুরুষতন্ত্রের, বলপ্রয়োগের তীব্র আপত্তিজনক ভাষার সঙ্গে সম্পর্কিত হয় তখন এখানে কবিতা নামক শিল্পটির আর কীইবা অবশিষ্ট থাকে! ‘ধর্ষণ’ কবিতাটিতে ‘আধুনিক’ কবির পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতার উন্মোচন ঘটান কবি এভাবেই:
“মা, পৌষ-চাঁদ-ও কুয়াশা জড়ানো... continue reading