আইন অনুযায়ী সম্পত্তিতে নারীর অধিকার
আমাদের সমজে এখনও নারীরা অনেক কিছু থেকে বঞ্চিত। নারীরা যত শিক্ষিতই হোন না কেন অনেক জায়গায় তাদেরকে এখনও বোঝা হিসেবে মনে করা হয়। এমনকি তাদেরকে সম্পত্তি থেকেও বঞ্চিত করা হয়। এমন অনেক দেখা গিয়েছে অনেক সময় স্বামী মারা গেলে নারীদেরকে তার স্বামীর সম্পত্তির ভাগ দেওয়া হচ্ছে না। কিন্তু আইন অনুযায়ে স্বামী মারা গেলে স্বামীর সম্পত্তির ভাগ স্ত্রীরা পান। আবার গ্রামে এখনো অনেক নারী উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। কিন্তু মুসলিম আইন অনুযায়ী বাবার সম্পত্তিতে একজন ছেলে সন্তান যেভাবে সম্পদের ভাগ পায়, তেমনি কন্যা সন্তানও তার বাবার সম্পত্তির ভাগ পান। সম্পত্তিতে নারীর অধিকার একজন পুরুষ যেমন উত্তরাধিকারসূত্রে বাবা মায়ের কাছ থেকে সম্পত্তির অধিকার পান তেমনি একজন মেয়েও বাবা মায়ের সম্পত্তি পাবার অধিকার রাখেন। ইসলাম ধর্ম আনুযায়ী নারীদের পিতার এবং স্বামীর উভয়ের সম্পত্তির ওপর আধিকার আছে। একজন নারী, মেয়ে হিসাবে তার পিতার সম্পত্তিতে ২:১ অনুপাতে সম্পত্তি পেয়ে থাকেন। আবার স্ত্রী হিসাবে স্বামীর সম্পত্তির অংশও পেয়ে থাকেন। মা হিসেবে সন্তানের কাছ থেকেও সম্পত্তি পাওয়ার অধিকার থাকে। স্বামী মারা গেলেও একজন নারী স্বামীর সম্পত্তির ভাগ পাবেন। আইন অনুযায়ী একজন বিধবা নারীকে তাঁর স্বামীর মৃত্যুর পর কোনোভাবেই তাঁর বাসস্থান থেকে জোর করে বের করে দেওয়া যাবে না। তার প্রাপ্য সম্পত্তি তাঁকে বুঝিয়ে দিতে হবে। একজন বিধবা স্ত্রী স্বামীর রেখে যাওয়া সম্পত্তির সন্তান থাকা অবস্থায় ১/৮ এবং সন্তান না থাকলে ১/৪ অংশ পাবেন। তাই কেউ বিধবাকে সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করতে চাইলে কিংবা তার সম্পত্তি দখল করে নিলে তিনি আদালতের আশ্রয় নিতে পারেন। স্বামীর সম্পত্তি ভাগের ক্ষেত্রে স্ত্রী সবসময়য় অগ্রধিকার পাবে। প্রথমে স্ত্রী সম্পত্তি পাবে তারপর ছেলে মেয়েদের মধ্যে সম্পত্তি বন্টন করা হবে। ভরণপোষণের অধিকার মুসলিম আইন অনুযায়ী একজন পুত্র সন্তান উপার্জনক্ষম হলে তার ওপর সংসারের যাবতীয় দায়-দায়িত্ব এসে যায়। যখন সে সন্তান তখন তার ওপর সংসারের যাবতীয় দায়-দায়িত্ব এসে পড়ে। আবার যখন সে স্বামী তখন তাকে স্ত্রীর ভরণপোষণ দিতে হয়, সে যখন বাবা তখন তাকে তার ছেলেমেয়েদের ভরণপোষণ দিতে হয় এবং মেয়েদের বিয়ের ব্যবস্থা করতে হয়। ভাই হিসেবে ছোট ভাই বোনদের ভরণপোষণ ও অবিবাহিত বোনদের বিয়ে দেওয়ার দায়িত্বও থাকে তাঁর উপর। বিপরীতে কন্যা সন্তানের ক্ষেত্রে এসব দায়িত্ব পালন ঐচ্ছিক ব্যাপার। সে এসব দায়িত্ব পালন করতে না পারলে তাকে বাধ্য করা যাবে না।