রকমটিই চেয়েছিল মুসলমানের শত্রু ইহুদী আর খৃষ্টানরা। আর তারা এতে পুরোপুরি সফল। এখন আর কষ্ট করে মুসলমানদের মারতে ইহুদী-খৃষ্টান বাহিনীকে বিপদজনক স্থানে পাঠাতে হয়না। এখন মুসলমানই মারছে মুসলমানদেরকে। এরকমই একটি দল সিরিয়ার বিদ্রোহী গ্রুপ যাদেরকে সংক্ষেপে বলা হয় আইএসআইএস। যারা মির্কিনী আর সৌদি আর্থিক এবং আধুনিক অস্ত্র-শস্ত্রে সাহায্যপ্রাপ্ত। আক্বীদায় তারা সালাফী। তাদের লক্ষ্য সব মুশরিক (এক্ষেত্রে তাদের মত সালাফী নয় এমন মুসলমান, কোন অমুসলিম নয়), সুন্নি শিয়া, কুর্দী মেরে তাদের স্থানে কায়েম করা হবে পিউর সালাফী রাষ্ট্র। সেই রাষ্ট্রের পতাকা হবে কাল কাপড়ে লেখা কালেমার তাউহিদ অংশ অর্থাৎ "লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ" আর নবী (দঃ) এর আংটির সীল। ছবিতে আপনারা যেমনটি দেখছেন।
§ ISIS-এর আক্বীদা কি?
আক্বীদায় তারা সৌদি সালাফী। অনুস্মরণ করে ওহাবীবাদের প্রতিষ্ঠাটা মুহাম্মাদ বিন আব্দুল ওহাবকে। তাদের ধর্মীয় আক্বীদায় বাইরে যে কেউ তাদের দৃষ্টিতে মুশরিক। আর মুশরিকদেরকে হত্যা এবং তাদের জান-মাল ছিনিয়ে নেয়া তাদের ফের্কা মতে কেবল জায়েজই নয় বরং অনেক সওয়াবের কাজ। আর এজন্যেই তারা মানুষকে খুন বা জবাই করার সময় কালেমা, আল্লাহু আকবর ধ্বনি আর কুরানের আয়াত পড়ে থাকে।
§ কারা এই আইএসআইএস (ISIS) জিহাদী গ্রুপ?
The Islamic State in Iraq and Sham (ISIS)। পুরনো শাম অঞ্চল আর ইরাক নিয়ে তারা গঠন করতে চায় নতুন সালাফী রাষ্ট্র। তাদের উৎপত্তি মূলত আল-কায়েদা থেকে। ইরাকে সাদ্দাম হোসেনের পতনের পর সেখানে ধীরে ধীরে জায়গা করে নিতে থাকে ওসামা বিন লাদেনের আল-কায়েদা আল-কায়েদা আমাদেরই সৃষ্টি : হিলারি ক্লিনটন |http://www.kalerkantho.com/online/world/2014/06/01/91205।২০১৩ সালে ইরাকের আল-কায়েদার প্রধান আবু বকর আল-বাগদাদী গঠন করে নতুন এই দলটি আইএসআইএস। কখনো কখনো আইএসআইএল নামেও এদেরকে অভিহিত করা হয়। এর কারণ হল শেষের "এল" অক্ষর দিয়ে The Levant অর্থাৎ ইরাক ও সিরিয়া সীমান্তবর্তী শহর লেভ্যান্ট, আল-কাইম এবং আশেপাশের সিরীয় অঞ্চলকে বুঝানো হয়। এই গ্রুপের সদস্যরা প্রাথমিকভাবে আরব বিশ্বসহ বিভিন্ন মুসলিম দেশ থেকে ইরাকে মার্কিনী এবং তাদের মিত্রবাহিনীর বিরুদ্ধে লড়তে আসা বিদ্রোহী দল। পরবর্তীতে সিরিয়াতে আসাদ সরকারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহী বাহিনী গড়ে উঠলে এই গ্রুপটি সৌদি মদদে পুষ্ট হয়ে সে দলে যোগ দেয়। সিরিয়ার আসাদ সরকারের বিরুদ্ধে যুদ্ধের পাশাপাশি তারা ২০১৩ সালে নতুন সালাফী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আইএসআইএস নাম ধারণ করে সিরিয়ায় আত্মঘাতী হামলার পাশাপাশি শুরু করে ইরাকে হামলা।
এখন প্রতিদিনই খবর পাওয়া যায় তাদের দ্বারা নিরীহ মানুষের উপর অমানবিক অত্যাচার, নিষ্ঠুর আচরণ, হত্যা, জবাই এবং খুনের। তারা এখন নিয়মিত সন্ত্রসী হামলা করে সরকারী বাহিনী, সরকারী কর্মকর্তা, কর্মচারী, শিয়া, সুন্নী, কুর্দী কেউই তাদের হাত থেকে রেহাই পাচ্ছে না। তারা গত কয়েক সপ্তাহে যে হারে ভিন্ন মতালম্বী হবার কারণে অন্য মুসলমানদের হত্যা করছে এবং ওই হত্যার দৃশ্য অনলাইনে প্রচার করছে তা কেবল অবর্ণনীয় নৃশংসতাই নয়, রীতিমত ইসলামের আদর্শ এবং নীতির সাথে সাংঘর্ষিক। কেননা আল্লাহ পাক পবিত্র কুরআনে ঘোষণা করেনঃ"আর লড়াই কর আল্লাহর ওয়াস্তে তাদের সাথে, যারা লড়াই করে তোমাদের সাথে। অবশ্য কারো প্রতি বাড়াবাড়ি করো না। নিশ্চয়ই আল্লাহ সীমালঙ্ঘনকারীদেরকে পছন্দ করেন না।" (২:১৯০) ওইসব মানুষের উপর হিংসাত্মক অমানবিক অত্যাচার আর তাদেরকে নিষ্ঠুরভাবে হত্যার ভিডিও তারা নিয়মিত অনলাইনে প্রচার করছে। যা দেখে মানুষ ইসলাম আর মুসলমান সম্পর্কে যে ধারণা পাচ্ছে তা আল-কায়েদার সন্ত্রাসী কার্যকলাপের চেয়ে অনেক বেশী হিংস্র এবং মানবতাবর্জিত। আল-কায়েদার যুদ্ধ ছিল অমুসলিমের বিরুদ্ধে। কিন্তু এই আইএসআইএস-এর সংগ্রাম হল সালাফী ব্যতীত অন্য সব মুসলমানের বিরুদ্ধে। আর এ কারণেই সৌদি সরকার তাদেরকে সব ধরণের সাহায্য সহযোগিতা দিয়ে আসছে। পাশাপাশি সিরিয়ায় আসাদ সরকারকে আক্রমণ করতে আমেরিকাকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিল। যুদ্ধের সমস্ত ব্যয়ভার বহনের প্রস্তাবনা পাবার পরও মার্কিনীরা সিরিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে সরাসরি জড়াতে চায়নি। কিন্তু আজকের খবরে দেখলাম আমেরিকা এই আইএসআইএস-কে বিপুল পরিমাণ আর্থিক সাহায্য দিয়ে মাঠে নামিয়েছে।এছাড়া, প্রতিবেশী জর্দানে আইএসআইএল সন্ত্রাসীদেরকে সামরিক প্রশিক্ষণ দিয়েছে খোদ আমেরিকা।ইরানের প্রেস টিভির সঙ্গে এক সাক্ষাৎকার এসব কথা বলেছেন মার্কিন রাজনৈতিক বিশ্লেষক প্যাট্রিক ড্যানিয়েল ওয়েলচ। ওয়েলচ বলেন, এটা শুধু এখন নয়; সেই ভিয়েতনাম যুদ্ধের সময় থেকে এ প্রবণতা দেখা যাচ্ছে এবং সাম্প্রদিক বছরগুলোতে তা বেড়েছে। ওবামার সাম্প্রতিক উক্তির অর্থ হচ্ছে, “তোমরা সবাই জাহান্নামে যাও; তোমাদেরকে আমার কোনো প্রয়োজন নেই।”আইএসআইএল প্রসঙ্গে আমেরিকার ভূমিকা নিয়েও ওয়েলচ মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, “মার্কিন সরকার দু পক্ষের হয়েই খেলছে যা তারা সবসময় করে থাকে।” মার্কিন পররাষ্ট্রনীতি নির্ধারণের ক্ষমতা বারাক ওবামার হাতে নেই বলেও তিনি মন্তব্য করেন।http://www.presstv.ir/detail/2014/06/20/367804/isis-a-branch-of-us-terrorist-campaign/
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি মন্তব্য করেছেন "সিরিয়ার মিলিট্যাণ্ট/অশ্ত্রধারী রা ইরাকে আমাদের জন্য সাহায্যকারী হতে পারে"http://www.presstv.ir/detail/2014/06/27/368909/kerry-syrian-militants-can-help-in-iraq/
CIA এই স্ন্রাসিদের ট্রেনিং দিচ্ছেঃhttps://www.youtube.com/watch?v=CRuzynVzC48
ওহাবী-সালাফী কিংবা আইএসআইএল হলো এমন একটি সংগঠন, যারা কিনা ইসরাইল কিংবা কোন বিধর্মীকে লক্ষ্য করে একটি গুলিও ছোঁড়েনি। ওহাবী মতবাদ যখন আরব উপদ্বীপে মাথাচাড়া দিয়ে উঠে, তখন তাদের মূল লক্ষ্য হয় আরব সুন্নী মুসলমানরা।
বিপরীতে তারা কিন্তু খ্রিস্টান ও হিন্দুদের ওপর এতটুকু আঁচড়ও ফেলেনি! ভ্যাটিকান তাদের পক্ষে বক্তব্য দিয়েছে, তাদের জিম্মায় থাকতে রাজি হয়েছে হিন্দু নার্সরাও!
http://www.thehindu.com/news/national/40-indians-in-isis-custody-safe/article6127472.ece
ইরাকের একটি প্রদেশসহ কয়েকটি প্রদেশের কিছু অংশ আইএসআইল এর সদস্যরা দখল করে নেওয়ার পর নির্বিচারে গণহত্যা চালিয়েছে ! স্যারেনন্ডারকৃত ইরাকি সৈন্যদের মরুভূমিতে হাত পা বেঁধে গণহারে হত্যা করেছে আইএসআইল ! মসুলের কেন্দ্রীয় মসজিদের সুন্নী ইমাম আইএসআইএল এর কথা না শুনায় সেই ইমামকে কে টুকরো টুকরো করেছে জঙ্গীরা ! শুধু তাই নয় মসুলের ১২ জন সুন্নী আলেমকেও হত্যা করেছে । মসুল বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৭০০ নিরপরাধ সুন্নী ছাত্রকে হত্যা করেছে আইএসআইল ! যৌন জিহাদ ও ধর্ষণ তো আছেই -কারণ জঙ্গীদের দৃষ্টিতে যুদ্ধবন্দিনী নারীদের ধর্ষণ বৈধ ! এসব হত্যাকান্ডের ভিডিও ফুটেজ ও ছবি ইন্টারনেটে পাওয়া যাচ্ছে ! এমনকি গণহত্যা সংঘটিত করার পর আতংক ছড়ানোর জন্য আইএসআইল তাদের নিজস্ব ওয়েবসাইটে এসব ভিডিও ফুটেজ ও ছবি পাবলিশ করেছে বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে !
অন্যদিকে বোকো হারাম, আল কায়েদা, তালেবান, সেপাহে সাহাবাদের কর্মকান্ড কারো অজানা নয়! বোকো হারাম কর্তৃক ২৭৬ জন স্কুল ছাত্রীকে অপহরণের খবর সবাই জানেন যাদেরকে দাসী হিসাবে বিক্রি ক