এখনও বউনি হলোনা, মুখ ভার করে সি.এন.জি ষ্টেশনে দাড়িয়ে ভাবছিল সুব্রত। সে ভাড়ায় সি.এন.জি চালায়। মালিকের জমা ১২০০ টাকা, এর উপর তেল মবিল বা হালকা কিছু সার্ভিসিং সাথে ট্রাফিক পুলিশদের চাঁদা তো আছেই। তারপর যা থাকে তাই দিয়ে চলতে হয় তাকে। কোনদিন ৩০০, ৫০০ এরকমই থাকে তার পকেটে। আজকের অবস্তা খুবই খারাপ সকাল ৯ টায় বেরিয়েছে, প্রায় ১২ টা বাজতে চলল। ভেবেছিল এবার কিছু টাকা বেশি হলে মা কে একটা ইলিশমাছ কিনে খাওয়াবে। অনেকদিন হয় ইলিশ মাছ খাওয়া হয় না। জিনিষপত্রের যা দাম, তাতে দম বন্ধ হবার উপক্রম।
--এই সি.এন.জি, যাবে?
মেয়েলি গলার মিষ্টি ডাকে ছেদ পড়ল ভাবনায়।
--জি আপা, কোথায় যাবেন?
--পান্থপথ, বসুন্ধরা সিটির সামনে নামব।
--৩০০ টাকা দিতে হবে আপা।
--কেন, আপনার মিটার নাই?
--মিটারে গেলে পোষায় না আপা। যে দুর্মূল্যের বাজার.... চাল কেনার পয়সাই হয় না।
--কথা বেশি বল, আচ্ছা ঠিক আছে, চল।
মেয়েটি উঠে বসতেই সি.এন.জি চলতে লাগলো। যাত্রাবাড়ীর এই দিকটায় ফ্লাই ওভারের কাজ চলছে। তাই বেশ ট্রাফিক জ্যাম হয়। কিন্তু আজকে মোটামুটি নির্বিঘ্নেই এই জায়গাটা পার করে গেল সুব্রত। টিকাটুলির মোড়ে এসে বিশাল জ্যামে আটকে গেল সে। জ্যামে চুপচাপ বসে থাকা ছাড়া আর তেমন কিছু করার থাকে না।
মেয়েটির মোবাইলে ফোন এসেছে। কিছুক্ষন কথা বলার একপর্যায়ে মেয়েটি খুব রেগে গিয়ে ইংলিশে কিছু বলতে লাগলো, যার মাথামুণ্ডু কিছুই বুঝল না এবং বোঝার চেষ্টাও করল না সুব্রত। ইতিমধ্যে জ্যাম ছেড়ে গ্যাছে। মতিঝিল পার হয়ে পল্টন মোড়ে আবারও জ্যামে পড়ল সি.এন.জি। আবারও মেয়েটির মোবাইলে ফোন এলো, বেশ কিছুক্ষন কথা বলার একপর্যায়ে ওপাশের কোন এক প্রশ্নের উত্তরে মেয়েটি বলছে, আমি এখন উত্তরা আজমপুর থেকে হাউজ বিল্ডিং যাচ্ছি। ফোন কেটে দেয়ার কিছুক্ষন পর আবার ফোন এলো। সেখানে আবার মেয়েটি বলল, আমি এখন জামালপুর যাচ্ছি আবার বাবার সাথে, পড়ে কথা হবে। একটু পড়ে আরেকটা ফোন কলে মেয়েটি বলল, আমি স্যারের কাছে পড়তে এসেছি ধানমন্ডি। এতো গুলো মিথ্যা শুনে সুব্রত আর চুপ থাকতে পারল না। অজান্তেই বলে ফেলল, আপা আপনে তো এহন ধানমন্ডি নাই, আপনে এহন শাহাবাগ.........
Comments (19)
কামাল ভাই ফ্লিকারের লগো আসছে, ছবি নেই
সমস্যাটা বুঝতে পারছি না