প্রায় ২০-২৫বৎসর আগের কথা। তখন আমাদের এলাকায় আনসার আলী (ছদ্মনাম) নামে এক বিখ্যাত (!!) মাস্তান ছিলো। ৩৫-৩৬বছরের তাগড়া যুবক, মূর্তিমান আতঙ্ক। জায়গা দখল, খুন, চুরি-ছিনতাই, ভাড়াটে মাস্তানিতে তার জুড়ি ছিলো না। কোমরে গুজে রাখতেন ছোরা, আর সেই ছোরার বাট দেখা যেতো সার্টের উপর থেকে। থানা-পুলিশ ছিলো তার কাছে ছেলে-খেলার মতো ব্যাপার। থানার দারোগা থেকে কোর্টের ম্যাজেস্ট্যাট পর্যন্ত সবাই তাকে এক নামে চিনতো।
সময়ের আবর্তে নামটা আমি প্রায় ভুলতে বসেছিলাম। গত কয়েকদিন আগে হঠাৎ করেই পাড়ার রাস্তায় দেখা হয়ে গেলো আনসার আলীর সাথে। ষাটোর্ধ এক বৃদ্ধ, বয়সের চেয়ে বেশি বৃদ্ধ হয়ে গেছেন অনিয়ন্ত্রিত খাম-খেয়ালী জীবন যাপনের জন্য। সালাম দিয়ে পরিচয় দিলে চিনতে পারলেন। তার শারীরিক অবস্থার কথা জিজ্ঞেস করতেই গলা আদ্র করলেন। একবার স্ট্রোক হয়ে শরীরের অর্ধেক অবশ হয়ে দীর্ঘদিন শয্যাশায়ী ছিলেন, এখন কিছুটা হাটতে পারলেও পুরো সুস্থ হয়ে উঠেননি।
পরিবারের ব্যাপারে জানালেন, মেয়ের বিয়ে দেবার পর ডিভোর্স হয়ে এখন তার সাথেই থাকে। স্ত্রী মারা গেছেন, আর এক ছেলে দেশের বাইরে থাকে, যোগাযোগ রাখে না, মাঝে মধ্যে মনে পড়লে কিছু টাকা পাঠায় আর তাতেই সংসার চলে, ভাড়া থাকেন শহরতলীর একটি জায়গায়। কান্না ভেজা গলায় বললেন, “নামাজ পড়ি আর বাসার সামনে হাটাহাটি করেই দিন কাটে। আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাই, পাপে ধরেছে। কতো লোকজনকে জায়গা-জমি, বাসা-বাড়ী দখল করে দিলাম আর এখন নিজেই থাকার জায়গা নাই, ভাড়া বাসায় থাকি। তোমাদের এলাকায় এসেছিলাম আওয়ামীলীগের এক নেতার কাছে নালিশ করতে, মিন্টু (ছদ্মনাম) নামের একটি উঠতি একটি মাস্তান-নেতা খুব জ্বালাতন করছে আমার মেয়েকে। নাতনিকে নিয়ে স্কুলে যাওয়া আসার পথে খুবই উত্যক্ত করে। আমার সেই যৌবন নাই, নাইলে এই ধরনের দুই-চারটা ছেলেরে ঘাড় ধরে আছাড় দিয়া মাইরাই ফেলতাম”। বিড় বিড় করতে করতে রিকসায় উঠে চলে গেলেন।
মিন্টু ছেলেটাকে আমি চিনতে পারলাম। ক'বছর থেকেই তার খুবই নাম ঢাক শোনা যাচ্ছে। জায়গা-জমি দখল, টেন্ডার-বাজি, মাদক ব্যবসা কিছুতেই সে পিছিয়ে নেই। শহরের বিভিন্ন জায়গায় তার পোস্টার সাঁটানো, লেখা-পড়া করে বলে জানি না কিন্তু পোস্টারে নামের আগে ছাত্রনেতা লিখা। শুনেছি, তার কোমরে সবসময় রিভলভার গুজে রাখে, সার্টের উপর থেকে রিভলভারের বাট দেখা যায়।
Comments (8)
প্রথমে মুভিটি নিয়ে যথেষ্ট বিতর্ক হয়েছিলো। তবে আমার মনে হয় কি ভাই যে নিষেধাজ্ঞা, বিতর্ক এসব হলো একটা মুভির প্রচারণারই একটা অংশ!
যাই হোক, মুভিটি দেখি নাই। চোখের সামনে পরলে হালকা পাতলা দেখে নেবো...
ধন্যবাদ ভাই।
যে ছবি দিসেন
ধন্যবাদ লুব্ধক।