শীতে দেশের বিভিন্ন জায়গার ফসলের ক্ষেতে চাষ হয়েছে সরিষা। মাইলের পর মাইল সর্ষেক্ষেত, যেন মাঠে কেউ হলুদ গালিচা বিছিয়ে রেখেছে। ঢাকা থেকে দিনে দিনে ঘুরে আসা যায় এ রকমই কয়েকটি সরিষা ক্ষেতের তথ্য নিয়ে এবারের বেড়ানোর আয়োজন।
সিঙ্গাইর
মানিকগঞ্জ জেলার একটি উপজেলা সিঙ্গাইর। এখানকার প্রায় সব ফসলের মাঠই এখন সর্ষেক্ষেতে পরিপূর্ণ। চারদিকে শুধু হলুদ আর হলুদ। মাঝ দিয়ে বয়ে চলা মেঠো পথ। গাঁয়ের ছেলেপুলেদের দুরপনা আর কৃষকদের কর্মব্যস্ত সময়। সবই দেখতে পাবেন এসব সরিষা ক্ষেতে। ঢাকার গাবতলী পেরিয়ে কিছুটা সামনেই আমিন বাজার। সেখান থেকে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক ছেড়ে হাতের বাঁয়ের রাস্তা, সোজা চলে গেছে সিঙ্গাইর। তবে হলুদের রাজ্য পেতে সিঙ্গাইর পর্যন্ত যাওয়ার প্রয়োজন নেই। আমিন বাজার থেকে সিঙ্গাইরের দিকে প্রায় ৩ কিলোমিটার চললে নদীর উপরে একটি সেতু পার হতে হয়। ওপারে হাতের বাঁয়ে যে কোনো ছোট সড়ক ধরে একটু ভেতরে ঢুকলেই পেয়ে যাবেন হলদু গালিচায় মোড়ানো ফসলের ক্ষেত।
ঝিটকা
এ জায়গাটিও মানিকগঞ্জে। এখানে গেলেও পেয়ে যাবেন দিগন্তজোড়া সরিষা ক্ষেত। মাঠ ভরা হলুদ সরিষা ক্ষেতের ভেতরে বাড়তি দেখা মিলবে আঁকাবাঁকা মেঠোপথের দুই পাশে সারি সারি খেজুর গাছ। এখানকার সরিষা ক্ষেতগুলোর কোনো কোনো জায়গায় মধুচাষীরা বসেছেন মধু সংগ্রহের জন্য। তাছাড়া সূর্য ওঠার আগে ঝিটকা পৌঁছতে পারলে তাজা খেজুরের রস খেতে পারবেন। এ জায়গায় সূর্য ওঠার আগেই গাছ থেকে রস সংগ্রহ করেন গাছিরা।
এ ভ্রমণে নিজস্ব কিংবা ভাড়ায় করা কোনো গাড়ি নিয়ে যাওয়া ভালো। সে উপায় না থাকলে ঢাকার গুলিস্তান থেকে শুভযাত্রা ও বিআরটিসি পরিবহন, বাবু বাজার থেকে যানযাবিল ও শুকতারা, পশ্চিম ঢাকার গাবতলী থেকে যাত্রীসেবা, পদ্মা লাইন, নবীনবরণ, ভিলেজ লাইন ও জনসেবা পরিবহনে প্রথমে মানিকগঞ্জ যেতে হবে। সেখান থেকে আবার লোকাল বাসে চড়ে ঝিটকা। নিজস্ব গাড়ি নিয়ে গেলে ঢাকা-আরিচা সড়কে মানিকগঞ্জ অতিক্রম করে তরা সেতু পেরিয়ে সামনে বাঁ দিকে মুন্নু হাসপাতালের রাস্তা ধরে চলতে থাকলে ঝিটকায় পৌঁছানো যাবে। ঝিটকা বাজার পর্যন্ত যেতে হবে না, চোখ খোলা রাখুন। সড়কের দুইপাশের চিত্রই আপনাকে থামিয়ে দেবে।
সোনারং
মুন্সিগঞ্জ জেলার টঙ্গীবাড়ি উপজেলার একটি ইউনিয়ন সোনারং। এই শীতে সোনারং-এর রং পাল্টিয়েছে হয়েছে হলুদ। তাই এখানে গেলেও দেখতে পাবেন মাঠের পর মাঠ সরিষা ক্ষেত। যেদিকেই তাকাবেন চোখ জুড়িয়ে যাবে। ঢাকার গুলিস্তান থেকে বাসে চড়ে যাওয়া যায় টঙ্গীবাড়ি।
চলনবিল
বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বিল চলনবিলের পানি শুকিয়ে গেছে এই শীতে। পুরো বিল জুড়ে এখন তাই সরিষা চাষ হচ্ছে। সিরাজগঞ্জের হাটিকুমড়ুল মোড় থেকে নাটোরের বনপাড়া পর্যন্ত প্রায় ৫৫ কিলোমিটার সড়কের দুপাশেই দেখা মিলবে বিস্তীর্ণ সর্ষেক্ষেত। এর মাঝেই হঠাৎ চোখে পড়বে আঁকাবাঁকা বয়ে চলা মরা নদী বা খাল। ঢাকা থেকে গেলে যমুনা সেতু পার হওয়ার পরে সিরাজগঞ্জের মোড় ছেড়ে আরও সামনে হাটিকুমড়ুল মোড়। সেখান থেকে পশ্চিমের যে রাস্তা চলনবিলের বুক চিরে চলে গেছে সেটিই হাটিকুমড়ুল-বনপাড়া সড়ক। নিজস্ব কিংবা ভাড়া করা কোনো গাড়ি নিয়ে এ জায়গাটিতে ভ্রমণে যাওয়া উচিত। এছাড়া ঢাকার গাবতলী থেকে সিরাজগঞ্জ কিংবা নাটোরের যে কোনো বাসে যাওয়া যায়। সিরাজগঞ্জে যায় এমন কোনো বাসে গেলে হাটিকুমড়ুল মোড়ে নামতে হবে। আর নাটোরের বাসে চড়লে চলনবিলের যে কোনো জায়গায় নামতে পারবেন। হাটিকুমড়ুল-বনপাড়া সড়কে বেড়ানোর জন্য ভুটভুটি কিংবা রিকশা পাবেন।
Comments (9)
কবিতায় অফুরন্ত ভাললাগা
শুভেচ্ছা অশেষ...
দোয়া করবেন দাদা আরও ভালোর জন্য ।ভালোবাসা অনিঃশেষ ।
সুন্দর লিখেছেন
শুভেচ্ছা জানবেন দাদা ।
পৃথিবীর দীর্ঘ সুন্দর দিনগুলো গোগ্রাসে গিলে ফেলতাম বাৎসল্য জীবনের
অথচ আমি স্নান করি তোমার রোদে !
কবিতায় অনেক কিছু। তবে নতুনত্ব দরকার
চেষ্টা থাকবে ।