রহস্য আর রোমাঞ্চে ভরপুর পাহাড়ি মানুষগুলোর জীবন । ওদেরকে খুব কাছ থেকে দেখতে পাওয়া বা ওদের গ্রামে একটি রাত্রি যাপন করার মাঝে অনেক রোমাঞ্চ আছে । সুংসাং পাড়া তেমনি একটি গ্রাম । এটি কেওকারাডাংএর একেবারে পায়ের কাছের একটা গ্রাম । রুমা থেকে রওয়ানা হয়ে বগালেক ও কেওকাড়াডাং পর্বত পার হয়ে ২০/২৫ মিনিট হাটা পথে পাসিং পাড়া, যা বাংলাদেশের সব চেয়ে উঁচু গ্রাম । পাসিংপাড়া থেকে খুবই বিপদজনক খাড়া পথে ঘন্টা খানেক নামার পর পথ প্রায় সমান্তরাল, সব মিলিয়ে ঘন্টা দু'য়েকের পথ হাটলে পৌছে যাবেন সুংসাং পাড়ায় । আকাশ-কুয়াশা-মেঘ- পাহাড়-ঝরনা-বন-নীল-সবুজ পানি, পাহাড়িদের জীবন আর রহস্য-রোমাঞ্চ-ভয় সব যদি একবারে পেতে চান, তাহলে চলে আসুন সুংসাং পাড়ার মতো নির্জন পাহাড়ি কোন গ্রামে । আসুন দেখি আমার রায় সুংসাং পাড়াকে.........
(২) কেওকারাডাং এর উপর দাড়িয়ে তোলা সুংসাং পাড়ার ছবি ।
(৩) কেওকারাডাং এর উপর দাড়িয়ে সুংসাং পাড়ার সেনা ক্যাম্পকে যেমন দেখায়।
(৪) সুংসাং পাড়ায় পৌছতে হলে কেওকাড়াডাং পাড়ি দিয়ে এমন খাড়া ঝুঁকিপূর্ণ পথ দিয়ে আপনাকে প্রথমে নেমে যেতে ঘন্টা খানেক । আর পাশের ঝোপ ঝাড়ের জোঁকগুলোর কথা নাইবা বললাম।
(৫) জুম এর হলুদ ক্ষেত ।
(৬) সুংসাং পাড়ার দিকে কিছুটা নিচে নেমে গেলে কেওকারাডাংকে যেমন দেখায়।
(৭) এক সময় আমরা পৌছে গেলাম আমাদের নির্ধারিত গন্তব্য সুংসাং পাড়ায়।
(৮) পাহাড়ি গ্রামের এমন সুন্দর রূপ দেখে আপনি ফেলে আসা পৃথিবীকে ভুলে গেলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না ।
(৯) পেটে প্রচন্ড ক্ষুদা, নুডুলসের সাথে স্যুপ, আহ কি অমৃত । আজো সেই খাবারের স্বাদ মুখে লেগে আছে যেনো।
(১০) পাহাড়ি মাটির মানুষগুলো এতো সহজ সরল, তা না দেখলে ভাবাই যায় না।
(১১/১২) মা ও শিশু
(১৩) ওদের গৃহ পালিত শুকর
গুলো নিয়ে মজার কাহিনী আছে । রাতে ঘুমোবার আগে জানতে পারলাম এই গ্রামে টয়লেট নামে কিছু নেই । শুনে ওদের প্রতি আমার একটা নেতিবাচক ধারণা হলো । কিন্তু ওটাই যে বিরাট চমক তা টের পেলাম সকাল বেলা । ভোর বেলা প্রকৃতির ডাকে সারা দেওয়ার জন্যে আমাদের মধ্য থেকে যেই বদনা হাতে নেই অমনি শুকরের পাল পিছু নেয় । ভয়াবহ ব্যাপার । শেষ পর্যন্ত শুকরের ভয়ে এক হাতে লাঠি অন্য হাতে বদনা নিয়ে কাজটা সারতে হয়েছে । কিন্তু ওখান থেকে ওঠে আসার পর ওদের সেকি প্রতিযোগিতা, তা সত্যিই দেখার মতো ।
(১৪/১৫) ওখানে ওদের পানির কোন সমস্যা নাই, দুরের কোন পাহাড়ি ঝর্ণা থেকে পাইপ লাগিয়ে ওরা নির্ধারিত স্থানে কল বসিয়ে নিয়েছে, যা থেকে অবিরত পানি পড়তে থাকে।
(১৬) পরের দিন আমাদের অন্য কোথাও যাওয়ার প্রোগ্রাম, তাই এতো সুন্দর গ্রামে একরাতের বেশী আর থাকা হলো না।
(১৭)পাহাড় ঘেরা অরণ্য পরম মমতায় আড়াল করে রেখেছে প্রকৃতির এই সুন্দর গ্রামটিকে, হাটতে হাটতে ঐ যাদুকরী সৌন্দর্য্য এক সময় পাহাড়ের আড়ালে ঢাকা পড়ে গেল । কিন্তু এই পাহাড় এই সবুজ পাহাড়ের কোলে ঘুমিয়ে থাকা সরল মানুষদের গ্রাম আমাকে হাত ছানি দিয়ে ডাকবে। হয়তো আবারো আসবো কিংবা আর আসতে পারবো না, তবু ক্ষণে ক্ষণে তাদের স্মৃতি আমাকে আনমনা করবে, বারে বার ।
Comments (19)
বাব্বা! গানও লেখা হয় নাকি? স্মৃতির দুয়ার খুলে দিয়ে ভালোই তো গান বেঁধেছেন। ভালো লাগলো বেশ যূথী। মাঝে মাঝে আরও গান পাবো আশা করছি। অনেক শুভ কামনা রইলো।
লিখতে বসেছিলাম একটা গল্প। হঠাত গানের কলিগুলো গেয়ে উঠলাম। তারপরে লিখতে লিখতে এরকম হয়ে গেলো। হালকা একটু গেয়ে দেখলাম, মজাই লাগে। সংগীতের পোস্ট কখনো দেবো ভাবি নাই। কিছু একটা ব্লগে শেয়ার দিতে ইচ্ছে করছিলো, এটাই দিয়ে দিলাম।
আপনাদের অণুপ্রেরণায় আগামী গানের লেখা আসতেও পারে।
অনেক ধন্যবাদ।
সাহিত্য চর্চ্চা, ছবি আঁকা, পাকা রাঁধুনী, গান লেখা, নিশ্চয়ই গান গাওয়া---- গুণের আর কি বাকি রইল !!!! অনেক অনেক শুভেচ্ছা গীতিকার যুথীকে।
গান গাইতে পারি না আপু। গলা খুলে না। এক হাত দূরে দাড়ালেও কেউ আমার গলার গান শুনতে পাবে না!!
ভুলি নাই ভুলি নাই
তোমায় আমি ভুলি নাই
স্মৃতির ও সেই পটে
আজ ও দোলা দেয় বটে
কতনা পথ চলা মধুর
দুরে আছি সাত সমুদ্দুর।
শুভেচ্ছা রইলো।
আহা কি সুন্দর... দ্বৈত সংগীত করলে পুরুষ কণ্ঠের কথাগুলো হয়তো এরকমই হতো। মানাতো ও... দারুন লিখেছেন।