দেয়াল সাহিত্যের মত মহান একটি সাহিত্য কেন মৌলিক সাহিত্য হিসাবে গ্রহনযোগ্য হচ্ছে না এটা একটা অতি আশ্চয্যের বিষয়।কি এমন হত যদি দেয়াল সাহিত্যের বিকাশ ঘটত?কিছুই হত না।আমরা নোবেল প্রাইজ নিশ্চিত পেতাম।একুশের বইমেলায় বের হত “কুদ্দুসের দেয়াল সাহিত্য সমগ্র”, “মজনুর ১০১টি দেয়াল কাব্য,১টি ফাও”।আমরা লাইন ধরে সেসব বই অটোগ্রমফসহ কিনতাম।প্রিয়জনকে দেয়াল সাহিত্য উপহার দিতাম।
আসুন দেখি বাংলাদেশের দেয়াল সাহিত্য কি রকম দেখি।এটার নাম দেয়াল সাহিত্য হলেও এটা গাছে,বাসে,বালুযু্ক্ত গাড়ীর গ্লাসে চর্চা করা হয়।দেয়াল সাহিত্যের সবচে কমন ধরন হচ্ছে “অমুক+তমুক”।ভালবাসার জন্য শাহজান যা করেছেন আমাদের দেশের রোমিওরা তারচে অনেক বেশী করছেন।পুরো দেশ ঘুরে তার প্রেমিকার নাম নিজ হাতে যোগ চিন্হ সহকারে লিখতেছেন।শাহাজানতো মেস্ত্রী দিয়া তাজমহল বানিয়ে খালাস।আর তারা প্রেমের জন্য নিজেরাই মেস্ত্রী হয়ে যায়।
একদিন ট্রেনে যাচ্ছিলাম,ট্রেনের টয়লেটে লিখা বাবু+রত্না।আমার পকেটে মার্কার পেন ছিল আমি পাশে = দিয়ে লিখে দিলাম।তুমি নিজেইতো বাবু, যোগ দিলেও কিচ্ছু হবে না।
এবার আসি আরেকটি ধরনে।সেটি হল নিজের মোবাইল নম্বর দিয়ে মেয়ে বন্ধু চাওয়া।দেইখ্যা মনে হয় মাইয়্যারা তার লাইগ্যা বইস্যা আছে।হালার চুলে ৩০০টাকার জেল মাইখ্যা মেয়ে বন্ধু পাইনা আর সে মোবাইল নম্বর দিয়া মেয়ে বন্থু তালাশ করে।দেখছেন কারবার?
একবার আমার বন্ধু বিশেষ অবস্থার প্রেক্ষিতে পাবলিক টয়লেটে গেছিল।সেখানে নাকি লিখা ছিল “ওরে শান্তিরে”আমার বন্ধু তার নিচে লিখে দিয়ে আসছে।আপনি কেমনে জানলেন,”আমার কাম দেখছেন নাকি?।“অবশ্য টয়লেটে সাহিত্য রচনার যৌক্তিকতা আছে।সেখানেতো আর কিছু করার নাই।তাই সামনে দরজায় বইস্যা বইস্যা সাহিত্য রচনা করছেন।দেখে যান রবীদা মনে সাহিত্য থাকলে নৌকার পটাতনে বসতে হয় না,টয়লেটে বসেও সাহিত্য রচনা করা যায়।
সবচে মজার বিষয় হল এবার একটি ভলবো বাসে সিটে একজন নিজের ফেসবুক লিংক লিখে দিছে।নিচে লিখা রিকোষ্টে পাঠান।শালার বাংলাদেশ সত্যি ডিজিটাল হয়ে গেছে।আর ভলবো বাস বলে কথা।দামী জিনিসে কি কম দামি সাহিত্য চলে?
এছাড়া আরও কিছু টুকিটাকি দেয়াল সাহিত্য আপনাদের জন্য শেয়ার করলাম।সবগুলাই দেয়াল থেকে নেয়া।যেভাবে লিখা আছে সেভাবে তুলে দিলাম।বানান ভুল সহ।নইলে মজা পাবেন না।
১.রিজিয়া তুমি আমারে যে কষ্ট দিছ,আল্লাহ তোমারে মাফ নাই।
২.ভাইজান আস্তে ছাড়েন (এটা ট্রেনের টয়লেটে দেখছিলাম)
৩.এটা আমার মোবাইল নম্বর। (ও তাই নাকি,আমি ভাবছিলাম আমার নম্বর।ভাগ্যিস বলছিলেন)
৪.তমাকে যতবার দেকচি ততবার তমার ভলবাসি। (কিছুই বুঝলাম না)
৫.যেকুন একটা করেন (এটাও টয়লেটে লেখা ছিল)
৬.গরীবের ভালবাসার দাম নাই।
এছাড়া ঢাকার রাস্তায় আইজ উদ্দিন নামক বিখ্যাত দেয়াল সাহিত্যিক এর কথা বাদ দিলাম।কারন তার সাহিত্য ঢাকাবাসী গত ১০ বছরের ও অধিক সময় ধরে পড়তেছে।
অশ্লিল লেখাগুলো বাদ দিলাম।আজকে আর মনে আসছে না।আপনাদের কাছে কিছু থাকলে শেয়ার করুন।টাকার মধ্যে নিজের নাম ঠিকানা,মোবাইল নম্বর লিখা দেয়াল সাহিত্যের পুরোন একটি ধারা।এখন অবশ্য এটা চলে না।