Site maintenance is running; thus you cannot login or sign up! We'll be back soon.

সারাদেশেই ক্ষমতা ও আধিপত্যের দ্বন্দ্বে টালমাটাল আওয়ামী লীগ

মাহবুবুল আলম

 

 

সারাদেশেই ক্ষমতা ও আধিপত্যের দ্বন্দ্বেটালমাটাল আওয়ামী লীগ

 

 

আমার আজকের এ লেখায় আমি এখন আলোনা করতে চাই বর্তমান শাসকদল আওয়ামী লীগের সারাদেশেই ক্ষমতা ও আধিপত্যের দ্বন্দ্বে টালমাটাল অভ্যান্তরিণ বিষয় নিয়েবিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ায় প্রচারিত সংবাদ ও টকশো’ প্রর্যালোচনা করে যা বোঝা যাচ্ছে তাতে এ কথা বলতে দ্বিধা নেই যে, আওয়ামী লীগের সর্বস্তরেই এখন অসন্তোষ ধূমায়িত হচ্ছেসরকারী দলআওয়ামী লীগের মধ্যে যে অসন্তোষ ক্রমেই দলা পাকাচ্ছে, তা ব্যাপকভাবে উন্মোচিত হয়ে পড়ছে সারা দেশে। এখন ঘরের আগুনে পুড়ছে শাসক দল আওয়ামী লীগ! পদ আর ক্ষমতারদ্বন্দ্বে সৃষ্ট দলীয় অন্তর্কোন্দলে রক্তপাত যেন থামছেই নাআধিপত্যবিস্তারের লড়াই, অন্তর্দলীয় কোন্দল আর ক্ষমতার লড়াইয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের শত্রু এখন আওয়ামী লীগইযাকে বলে ঘরের শ্রত্রু বিভীষণ। কেন্দ্র থেকে তৃণমূল পর্যন্তসহযোগী ওভ্রাতৃপ্রতীম যুবলীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগসহ অন্যান্য সহযোগীসংগঠনের ওপর যেন নিয়ন্ত্রণও হারিয়ে ফেলেছে তৃণমূলে সংগঠিত এ দলটিদলের শুভকাঙ্খিরা মনে করেছে এতে দলের চেইন অব কমান্ডভেঙ্গে পড়ারউপক্রম।কেন্দ্র থেকে শুরু করে তৃণমূল পর্যন্ত ক্ষমতার মোহে যে কোন মূল্যে পদ আঁকড়েরাখার মানসিকতার প্রতিযোগিতায় সারাদেশেই সৃষ্ট দলীয় অভ্যন্তরীণ কোন্দলে বিব্রতকর অবস্থা সরকারকেবর্তমানে বিরোধীবিএনপি-জামায়াতের জোরালো কোন আন্দোলননেই। তা সত্বেও সরকারী দল ও সহযোগীসংগঠনের কর্মকাণ্ড আর মন্ত্রী, এমপিদের একের পর এক লাগামহীন বেফাঁস মন্তব্যচরম বিব্রতকর অবস্থায় ফেলে দিচ্ছে সরকারকেঅধিকাংশ ক্ষেত্রেই সরকারেরজন্য অস্বস্তিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হচ্ছে দলের ভেতর থেকেই

 

বাংলাদেশের প্রচীণ ও ঐতিহ্যবাহী দল হিসেবে আওয়ামী লীগে দীর্ঘদিন সম্মেলন না হওয়া নিজেদের দীর্ঘদিনের একক সাম্রাজ্য ধরেরাখতে যুবলীগ-ছাত্রলীগ-স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতাকর্মীদের নিজ স্বার্থউদ্ধারে ব্যবহারের কারণেই থামানো যাচ্ছে না সংঘাত, সংঘর্ষ, ও প্রাণহানীর ঘটনা। আওয়ামী রাজনীতির আদর্শহীন ওয়ানটাইমার নেতা-কর্মীদের ভিড়েদীর্ঘদিনের পরীক্ষিত নেতা-কর্মীদের মূল্যায়ন না করার কারণে অন্তর্কলহ দিন দিন বাড়ছেই


বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবর থেকে জানা গেছে  দেশব্যাপী সৃষ্ট আওয়ামী লীগের এই অভ্যন্তরীণ কোন্দলের মূলেরয়েছে পদ আর ক্ষমতার মোহভাল পদ পদবী আকড়ে ধরে থাকতে না পারলে ব্যবসা-বাণিজ্য, তদ্বির, বদলি, দখল, চাঁদাবাজি-টেন্ডারবাজিও করা যায় নাএ নিয়ে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বেও দলের প্রভাবশালী নেতারা একে অপরেরবিরুদ্ধে বিষোদগার আর প্রশ্ন বানে প্রায়শই বেকায়দায় পড়তে হচ্ছে সরকারকে

 

জানা গেছে, সর্বশেষ সিলেট-নান্দাইল-কুমিল্লাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় আওয়ামীলীগ-যুবলীগ ও ছাত্রলীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দলে সংঘাত-সংঘর্ষে তিনজনেরপ্রাণহানির ঘটনায় চরম বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হয়েছে শাসক দলটিকেসংঘর্ষেজড়িত কেউ দলের কেউ নন, বহিরাগত’- প্রতিটি ঘটনার পর কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব থেকেএকথা বলে দায় এড়ানোর চেষ্টা করা হলেও অনুসন্ধানে দেখা গেছে, প্রতিটি ঘটনারসঙ্গেই ক্ষমতার দ্বন্দ্ব ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করেই এমন প্রাণঘাতীঘটনা ঘটছেএসব সংঘাত-সংঘর্ষের সঙ্গে জড়িত যে-ই হোক তাকে দ্রুত গ্রেফতারকরে বিচারের মুখোমুখি দাঁড় করানোর জন্যও ইতোমধ্যেই সরকারের হাইকমান্ড থেকেনির্দেশ দেয়া হয়েছে আইন-শৃঙ্খলাবাহিনীকে

 

দলের এ অবস্থা সামাল দিতেই ডিসেম্বরের মধ্যে কাউন্সিলের মাধ্যমেসারাদেশে দলকে শক্তিশালী করে গড়ে তোলার নির্দেশ দেন শেখ হাসিনাএমনকি নিজেপ্রথম তাঁর ধানমন্ডির দলীয় কার্যালয়ে গিয়ে সারাদেশে সম্মেলনের সবশেষপ্রস্তুতিও দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের কাছ থেকে জানেন এবং প্রয়োজনীয় নির্দেশদেনতাঁর নির্দেশ অনুযায়ী দলটির কেন্দ্রীয় নেতারা মেয়াদোত্তীর্ণ সকল জেলা ওমহানগর কমিটি সম্মেলনের মাধ্যমে দলকে নতুন করে ঢেলে সাজাতে নতুন কমিটি গঠন করতে যেয়েই প্রকট হয়ে ওঠেছে দলের আভ্যন্তরীণ কোন্দল ও হানাহানী। কোথাওএকযুগ, বা ৬-৭ বছর পর জেলা বা মহানগরের সম্মেলনেও সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকপদে কোন পরিবর্তন না হওয়ায় দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দল মাথাচাড়া দিয়েঠেছেদলীয় কাউন্সিল ঘিরে অনেক স্থানেই দলের শীর্ষ নেতাদের সামনেপদপ্রত্যাশী বিবদমান দুগ্রুপের মধ্যে সংঘাত-সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়তেও দেখাগেছে

  

এছাড়াও মূল দল আওয়ামী লীগের বাইরে বিভিন্নস্থানে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের সংঘাত-সংঘর্ষের মূল কারণই হচ্ছে আধিপত্যবিস্তার আর কমিটির পদ নিয়ে প্রতিযোগিতাদীর্ঘদিন সম্মেলন না হওয়া মেয়াদোত্তীর্ণ সহযোগী ভ্রাতৃপ্রতিমসংগঠনগুলোতেও সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছেআর এই সম্মেলনের শুরু হতেই নতুন কমিটিতে ঢোকার লড়াইয়ে প্রাণঘাতী সংঘর্ষেজড়িয়ে পড়ছে তৃণমূল আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগসহ অন্যান্য সংগঠনেরনেতাকর্মীরাআর আওয়ামী লীগের প্রভাশালী নেতারাও একচ্ছত্র ক্ষমতারপ্রভাব-প্রতিপত্তি গড়ে তুলতে সহযোগীসংগঠনকে ব্যবহার করতেও দ্বিধা করছেনা

 

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের পর অনেক ভাল পদক্ষেপে সরকার যখন সব কিছুই গুছিয়ে ওঠতে শুরুকরেছে, ঠিক তখনই সরকারী দলের কিছু নেতার অতিকথন, ছাত্রলীগ-যুবলীগেরসংগঠনের শৃংখলা বিরোধী কর্মকান্ড সংঘাত-সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ার ঘটনায় সরকারের সকলঅর্জন ম্লান হচ্ছেঅনেকের মতে এসব কোন্দল, দ্বন্দ্ব আওয়ামী লীগের নৌকা ডুবানোর আত্মঘাতি খেলায় মেতে ওঠেছে।সুতরাং সময় থাকতে অভ্যন্তরীণ কোন্দল নিরসন আর ছাত্রলীগ-যুবলীগেরলাগাম টেনে ধরতে না পারলে এর জন্য সরকারকে চরম মূল্য দিকে হতে পারে। ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের মাধ্যমে দ্বিতীয় মেয়াদে আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় আসার পর মাত্র কয়েক মাসে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ছাত্রসংগঠন ছাত্রলীগ দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বেশ কিছু রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে লিপ্ত হয়েছেসর্বশেষ সিলেটের শাহজালালবিজ্ঞান ও প্রযুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ কোন্দলে খুন হয়েছেন একজনঅস্থিরতা সামাল দিতে বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করতে বাধ্যহয়েছে কর্তৃপক্ষছাত্রলীগের এই কর্মকান্ড থামাতে না পারলে সরকারের সব অর্জন ধূলিষ্যাৎ হয়ে যেতে পারে এমন মত আওয়ামী লীগের অধিকাংশ শীর্ষ নেতার। এ নিয়ে তারাও বেশ ক্ষুব্ধও বিব্রত। দলের সিনিয়র নেতারা মনে করেন, সময় থাকতেই ছাত্রলীগকে নিয়ন্ত্রণ না করতেপারলে সরকারকেই এর মাসুল দিতে হবে

 

পরিশেষে এই বলেই শেষ করবো, সরকারী দল আওয়ামী লগের ঘরে যে আগুনের সূত্রপাত হয়ে ধোঁয়া ছড়াতে শুরু করেছে তাতে সরকারযদিধোঁয়াদেখেওনাদেখারভানকরেথাকে, একসময়ধোঁয়ারকুন্ডলীভেদকরেআগুনেরলেলিহানশিখাচারিদিকেছড়িয়েপড়তেবেশিসময়লাগবেনাধোঁয়াদেখেআগুনেরআলামতবোঝতেযদিসরকারঅবহেলাকরে, তবেএকসময়েএসেসেআগুননিয়ন্ত্রনেরবাইরেওচলেযেতেপারে

০ Likes ০ Comments ০ Share ৪৭৫ Views

Comments (0)

  • - রব্বানী চৌধুরী

    " জীবনে সুখ দুঃখের হিসাব ফাইনাল হয় না। একই ঘটনা নতুন ঘটনার পাশে দাঁড়িয়ে প্রতিদিন নতুন অর্থ নিয়ে আসে । "

    ভালো লাগলো গল্প, শুভেচ্ছা জানবেন, ভালো থাকবেন। 

    • - মামুন

      ভালো লাগার অনুভূতি রেখে গেলেন, অনেক ধন্যবাদ এবং শুভেচ্ছা রইলো।emoticons