Site maintenance is running; thus you cannot login or sign up! We'll be back soon.

রোহিঙ্গা শরণার্থী সমস্যা বাংলাদেশের জন্য এখন বিষফোঁড়া

শরণার্থী নিয়ে বিশদ আলোচনায় যাওয়ার আগে পাঠকদের জন্য এই শব্দটির কিছুটা বিশ্লেষণের প্রয়োজন আছে বলে আমি মনে করিশরণার্থী শব্দটির ইংরেজী প্রতিশব্দRefugee. (Refugee- mens a person or a group of comiunity apply for a shelter in a foreign country to pursuit or danger or trouble of their own country) যার বাংলা আভিধানিক অর্থ আশ্রয়প্রার্থী বা আশ্রয়ের জন্য আবেদন করে এমনঅর্থাৎ কোনো ব্যক্তি, গোষ্ঠী, সম্প্রদায়, বা জাতিগোষ্ঠী  যদি অত্যাচার, নির্যাতন, নিরাপত্তাহীনতা, দুঃশাসন বা দখলদারিত্বের কারণে বিপদগ্রস্ত হয়ে নিজ দেশ ছেড়ে অন্য কোন দেশে সাময়িক আশ্রয় প্রার্থনা করে তখন তাকে শরণার্থী(refugee ) বা রিফিউজি  বলেশরণার্থীবাউদ্বাস্তু (ইংরেজি: Refugee) একজন ব্যক্তি যিনি নিজভূমি ছেড়ে অথবাআশ্রয়ের সন্ধানে অন্যদেশে অস্থায়ীভাবে অবস্থান করেন

 

জাতিগত সহিংসতা, ধর্মীয় উগ্রতা, জাতীয়তাবোধ, রাজনৈতিক আদর্শগত কারণেসমাজবদ্ধ জনগোষ্ঠীর নিরাপত্তাহীনতায় আক্রান্তই এর প্রধান কারণযিনি শরণার্থী বা উদ্বাস্তুরূপে স্থানান্তরিত হন, তিনি আশ্রয়প্রার্থী হিসেবে পরিচিত হনআশ্রয়প্রার্থী ব্যক্তির স্বপক্ষে তার দাবীগুলোকে রাষ্ট্র কর্তৃক স্বীকৃত হতে হবে১৯৫১ সালে জাতিসংঘ কর্তৃক শরণার্থীদেরমর্যাদা বিষয়কসম্মেলনে অনুচ্ছেদ ১এ-তে সংক্ষিপ্ত আকারে শরণার্থীরসংজ্ঞা তুলে ধরেসেসংজ্ঞায়বলাহয়েছে: একজন ব্যক্তি যদি গভীরভাবে উপলদ্ধি করেন ও দেখতে পান যে, তিনিজাতিগত সহিংসতা, ধর্মীয় উন্মাদনা, জাতীয়তাবোধ, রাজনৈতিক আদর্শ, সমাজবদ্ধ জনগোষ্ঠীর সদস্য হওয়ায় ঐ দেশেরনাগরিকের অধিকার থেকে দূরে সরানো হচ্ছে, ব্যাপক ভয়-ভীতিকর পরিবেশ বিদ্যমান, রাষ্ট্রকর্তৃক পর্যাপ্ত নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হচ্ছে; তখনই তিনি শরণার্থী হিসেবেবিবেচিত হন১৯৬৭ সালের সম্মেলনের খসড়াদলিলে উদ্বাস্তুর সংজ্ঞাকে বিস্তৃত করা হয়আফ্রিকা ল্যাটিন আমেরিকায় অনুষ্ঠিত আঞ্চলিক সম্মেলনেযুদ্ধ এবং অন্যান্যসহিংসতায় আক্রান্ত ব্যক্তি কর্তৃক নিজদেশত্যাগ করাকেও অন্তর্ভূক্ত করা হয়এ সংজ্ঞায় শরণার্থীকে প্রায়শঃইভাসমান ব্যক্তিরূপে অন্তর্ভূক্ত করা হয়সম্মেলনে গৃহীত সংজ্ঞার বাইরে থেকে যদি যুদ্ধেরকারণে নির্যাতন-নিপীড়নে আক্রান্ত না হয়েও মাতৃভূমি পরিত্যাগ করেন অথবা, জোরপূর্বক নিজ ভূমি থেকে বিতাড়িত হন-তাহলে তারা শরণার্থী হিসেবে বিবেচিতহবেন

 

 

১৮৮৯ সালের মন্টেভিডিও চুক্তি, ১৯১১ সালের কারাকাস চুক্তি, ১৯২৮ সালের হাবানা কনভেনশন, ১৯৩৩ সালের রাজনৈতিক আশ্রয় সংক্রান্ত মন্টেভিডিও কনভেনশন, ১৯৫৪ সালের কুটনৈতিক আশ্রয়দান সংক্রান্ত কনভেনশন অনযায়ী প্রত্যেক সদস্য দেশ কর্তৃক এই কনভেনশন মেনে চলতে অঙ্গিকার করা হয়েছে। সে কনভেশন অনুযায়ী রোহিঙ্গ শরণার্থীদের প্রথম বাংলাদেশে আশ্রয়দানের ব্যবস্থা করে। যেহেতু ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্দে প্রায় ১ কোটি মানুষ আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে শরনার্থী হিসেবে আশ্রয়গ্রহণ করেছিল ভারতও সেই কনভেনশন মেনে উদার দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে বাংলাদেশের পাকিস্তানী হায়েনাদের অত্যার-নির্যাতনের হাত থেকে আত্মরক্ষার জন্যে প্রাণের ভয়ে ভারতে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছিল। তাই শুরু থেকেই রোহিঙ্গা শরনার্থীদের ব্যপারে বাংলাদেশ সরকার ও এদেশের জনগণ সহানুভূতিশীল ছিল। কিন্তু বর্তমানে সরকারী হিসেব মতেই ৫ লক্ষাধিক রোহিঙ্গা শরণার্থী বাংলাদেশে বসবাস করছে। এ হিসাবের বাইরেও হাজার হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশী মুসলমান পরিচয়ে বসবাস করে আসছে। তোদের চেহারার সাথে যেহেতু বার্মার মুসলমানদের চেহারার অনেকটাই মিল রয়েছে সে হিসাবে বাংলাদেশী পরিচয়ে থাকতে তাদের কোন সমস্যা হচ্ছে না। আর এদের প্রশ্রয় দিয়ে অঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হচ্ছে এক শ্রেণীর গডফাদার। এর ফলে রোহিঙ্গা শরণার্থী সমস্যা বালাদেশের বিষফোঁড়া হয়ে দেখো দিয়েছে। মায়ানমার সরকার শরণার্থীদের ফিরিয়ে নেয়ার ব্যাপারে বাংলাদেশের সাথে বার বার অঙ্গিকার করা সত্বেও সে দেশের সরকার সে অঙ্গিকার রক্ষা করতেছে না। 

 

উইকিডিয়ার এ সংক্রান্ত তথ্য থেকে জানা যায় ‘রোহিঙ্গা আদিবাসী জনগোষ্ঠী পশ্চিম মায়ানমারের আরাকান রাজ্যের নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠীএরা ইসলাম ধর্মে দীক্ষিতমায়ানমারের আকিয়াব, রেথেডাং, বুথিডাং মংডু, কিয়ক্টাও, মাম্ব্রা, পাত্তরকিল্লা এলাকায় এদের বাসবর্তমান ২০১২ সাল পর্যন্ত সেখানে, প্রায় ৮,০০,০০০ রোহিঙ্গা মায়ানমারে বসবাস করছিল। যার বর্তমান সংখ্যা তার চেয়ে দ্বিগুণ মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।সরকারী হিসাব মতে ৫ লক্ষের অধিক রোহিঙ্গা বাংলাদেশে বর্তমানে বসবাস করছে। এ হিসাবের বাইরেওঅনেক রোহিঙ্গা বিয়ে-শাদীর মা্যেমে বাংলাদেশীদের সাথে মিশে আছে। বিভিন্ন সময় বার্মা সরকার ও সেদেশের রাখাইন সম্প্রদায়ের নির্যাতনের কারণে দেশ ত্যাগ করতে বাধ্য হয় মুসলম রোহিঙ্গারাজাতিসংঘের তথ্যমতে, রোহিঙ্গারা বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে নির্যাতিত জনগোষ্ঠীবর্তমান মিয়ানমারের রোহিং (আরাকানের পুরনো নাম) এলাকায় এ জনগোষ্ঠীর বসবাসইতিহাস ঐতিহাসিকদের মতে রাখাইন প্রদেশের উত্তর অংশে বাঙালি, পার্সিয়ান, তুর্কি, মোগল, আরবীয় ও পাঠানরা বঙ্গোপসাগরের উপকূল বরাবর বসতি স্থাপন করেছেতাদের কথ্য ভাষায় চট্টগ্রামের স্থানীয় উচ্চারণের প্রভাব রয়েছেউর্দু, হিন্দি, আরবি শব্দও রয়েছেরাখাইনে দুটি সম্প্রদায়ের বসবাস মগরোহিঙ্গামগরা বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীমগের মুল্লুক কথাটি বাংলাদেশে পরিচিতদস্যুবৃত্তির কারণেই এমন নাম হয়েছে মগদেরইতিহাস থেকে জানা যায় যে, ১৪৩০ থেকে ১৭৮৪ সাল পর্যন্ত ২২ হাজার বর্গমাইল আয়তনের রোহিঙ্গা স্বাধীন রাজ্য ছিলমিয়ানমারের রাজা বোদাওফায়া এ রাজ্য দখল করার পর বৌদ্ধ আধিপত্য শুরু হয়

 

এছাড়াও বিভিন্ন তথ্যসূত্রে জানা যায় ১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারি মিয়ানমার স্বাধীনতা অর্জন করে এবং বহুদলীয় গণতন্ত্রের পথে যাত্রা শুরু হয়সে সময়ে পার্লামেন্টে রোহিঙ্গাদের প্রতিনিধিত্ব ছিলএ জনগোষ্ঠীর কয়েকজন পদস্থ সরকারি দায়িত্বও পালন করেনকিন্তু ১৯৬২ সালে জেনারেল নে উইন সামরিক অভ্যুত্থান ঘটিয়ে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করলে মিয়ানমারের যাত্রাপথ ভিন্ন খাতে প্রবাহিত হতে শুরু করেরোহিঙ্গাদের জন্য শুরু হয় দুর্ভোগের নতুন অধ্যায়সামরিক জান্তা তাদের বিদেশি হিসেবে চিহ্নিত করেতাদের নাগরিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়া হয়ধর্মীয়ভাবেও অত্যাচার করা হতে থাকেতাদের ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠানে বাধা দেওয়া হয়রোহিঙ্গাদের ওপর হত্যা-ধর্ষণ হয়ে পড়ে নিয়মিত ঘটনাতাদের সম্পত্তি জবরদখল করে রনয়া হয়। জোর করে কেড়ে নেওয়া হয় এবংবাধ্যতামূলক শ্রমে নিয়োজিত করে তাদের ওপর কৃতদাসের জীবন চাপিয়ে দেয়া হয়।তাই শিক্ষা তাদের শিক্ষা-স্বাস্থ্যসেবার সুযোগ থেকেও দিনে দিনে রোহিঙ্গারা বঞ্চিক হতে থাকে। তাদের বিয়ে করার অনুমতি নেই ০ Likes ০ Comments ০ Share ৪০৫ Views

Comments (0)

  • - মামুন

    ভালো লাগা রেখে গেলাম প্রিয় কবি!emoticons

    • - রব্বানী চৌধুরী

      " একটুখানি ভেতর বাহির

      সিক্ত দুটি মন ,

      ফুটবে ফুলের নতুন কলি

      ধন্য হবে জীবন ।।" 

       

      চমৎকার কথামালা বরাবরের মত, শুভেচ্ছা জানবেন।

    • Load more relies...