রাজধানীর রাজপথ থেকে অলিগলি, যত্রতত্র ডাস্টবিন। আর প্রতিদিন এর উৎকট দুর্গন্ধে নাভিশ্বাস উঠছে পথচারীর, সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাচ্ছে আবাসিক এলাকার মানুষ। নেই নিয়মিত পরিচ্ছন্নতা অভিযান, নেই কোনো মনিটরিং। রাজধানীর পরিবেশ যত কারণে বিষাক্ত হচ্ছে, তার মধ্যে এটিও অন্যতম কারণ বলে মনে করছেন পরিবেশবিদরা। ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতিদিন বাসাবাড়ির প্রায় দুই হাজার টন বর্জ্য, বাণিজ্য ৭২২ টন, শিল্পে ৮৩৫ টন এবং হসপিটাল ও কিনিকে ২৫৫ টন বর্জ্য উৎপন্ন হয়। বাসাবাড়ির বর্জ্যরে পরিমাণ দিন দিন বাড়ছে। কিন্তু এই মেঘাসিটিতে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার দশা খুবই বেহাল। রাজধানীর রাস্তায় একটু ঘুরলেই এই বেহাল দশার প্রমাণ পাওয়া যায়। তালতলা বাসস্ট্যান্ড, এখান দিয়ে গেলে যে কারোরই নাভিশ্বাস উঠবে। সড়কের পাশে একটার পর একটা বড় বড় ডাস্টবিন উন্মুক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। ছড়াচ্ছে তীব্র দুর্গন্ধ। নাক-মুখ না চেপে এখান দিয়ে যাওয়ার কোনো উপায় নেই। দীর্ঘ দিন এই দুর্ভোগ পোহাচ্ছে মানুষ, কিন্তু দেখার কেউ নেই। এই রাস্তায় আরো এগিয়ে গেলে শেওড়াপাড়া বাসস্ট্যান্ড। এখানেও রাস্তার পাশে রাখা আছে ডাস্টবিন, পথচারীদের স্থায়ী দুর্ভোগের কারণ যেন এটি। বারিধারা-গুলশানের রাস্তায় এ রকম কয়েকটি ডাস্টবিন এখানকার মানুষের অসহ্য দুর্ভোগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। মালিবাগ রেলগেট থেকে খিলগাঁওয়ের দিকে যেতে রাস্তার ওপরে পরপর কয়েকটি ডাস্টবিন বছরের পর বছর উন্মুক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। যাত্রী-পথচারীরা এই এলাকা দিয়ে যাওয়ার সময় দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। খিলগাঁও রেলগেট বাজারের সামনে একই অবস্থা। তীব্র দুর্গন্ধে ওই এলাকা দিয়ে যাওয়াই মুশকিল। সেগুনবাগিচা কাঁচাবাজারের পাশে একটি ডাস্টবিন পুরো এলাকার বাসিন্দাদের দুর্ভোগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। পুরান ঢাকা, যাত্রাবাড়ী, মুগদা-বাসাবো, নিউমার্কেটসহ বিভিন্ন এলাকায় এ রকম বহু ডাস্টবিন স্থায়ী দুর্ভোগের কারণ হয়ে দেখা দিয়েছে। সিটি করপোরেশনের নিয়মিত পরিচ্ছন্নতা অভিযান না থাকায় এই দুর্ভোগ পোহাচ্ছে রাজধানীবাসী। নিউ মার্কেট মোড়ে কথা হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস বিভাগের ছাত্র এমরানুল হোসাইনের সাথে তিনি বলেন, ঢাকা শহরে একটু উন্মুক্তভাবে ঘোরার কোনো সুযোগ নেই। রাস্তায় বের হলেই দুর্গন্ধ। যেন দেখার কেউ নেই। এ শহর এখন আবর্জনার শহর। রাজধানীতে উৎপন্ন বর্জ্য তিন ভাগে ভাগ করা যায়? জৈব বর্জ্য, প্লাস্টিক বর্জ্য ও অন্যান্য বর্জ্য। এর মধ্যে জৈব বর্জ্যরে পরিমাণ প্রায় ৮০ শতাংশ? বিশ্লেষকরা মনে করেন, বর্জ্যকে সম্পদে পরিণত করা গেলে আমিনবাজার ও মাতুয়াইলে থাকা ঢাকার দুটো ল্যান্ডফিল্ডের আয়ুষ্কাল বাড়ানো যাবে? বর্তমান হারে আবর্জনা জমা হতে থাকলে আগামী ৫-৭ বছরের মধ্যে সেগুলো ভরাট হয়ে যেতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। আর এটা হলে রাজধানীবাসীর দুর্ভোগের অন্ত থাকবে না। এ দিকে দীর্ঘ পাঁচ বছরেও প্রস্তুত হয়নি ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাভার বলিয়াপুরের কাছে সাভার বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ল্যান্ডফিল্ড প্রকল্প। প্রতিদিন শত শত টন বর্জ্য ফেলা হচ্ছে অসমাপ্ত এ ল্যান্ডফিল্ডে। ফলে মারাত্মক দূষিত হচ্ছে পরিবেশ।
Comments (2)
হিংসুটে সুখ তাড়িয়ে বেড়ায়
তোমার ঐ আঙ্গুলের ডগায়,
এলোমেলো অনুভবে তোমার অনুভূতি,
আমি চুপ ।
খুব ভালো লাগলো
ধন্যবাদ যুবাইর ভাই । :)
অসাধারণ কিছু কথা!!
অফুরান ধন্যবাদ মাইদুল ভাই । শুভেচ্ছা রইলো । :)