ট্রেন থেকে নেমেই টিকেট চেকারের হতে ধরা খেলাম, ভাবছিলাম প্রথমে একটু এদিক সেদিক ঘুরা ফেরা করে ফাক বুঝে স্টেশন থেকে বেড়িয়ে যাবো। কিন্তু সেই সুযোগ আর হলো না। তবে আশার কথা হলো আমি একা নই, আরো বেশ কয়েকজন বিনা টিকেটে ভ্রমণ করার জন্য ধরা খাইলো।
চেকার আমাদেরকে স্টেশনের এক কোনে নিয়ে টাকা আদায় করার জন্য নানা কসরত চালিয়ে গেলো, ইতিমধ্যে একজন পুলিশ আসিয়া চেকারের সাথে যোগ দিলো। ধরা খাওয়া আমার অন্য সঙ্গীরা কিছু উপঢৌকন দিয়া একে একে সবাই চলিয়া গেলো। গেলাম না শুধু আমি। যাবো কি করে আমার কাছে তো কোন টাকা পায়সা নাই।
পুলিশটি ইতিমধ্যেই কয়েকবার আমার সর্বাঙ্গ হাতাইয়া খুজিয়াও টাকা পয়সা বের করতে ব্যর্থ হলো। এক পর্যায়ে সে হুমকি দিলো তোকে থানায় নেওয়া ছাড়া কোন উপায় নাই, তোর জেলের ভাত খাইতেই হবে।
এতোক্ষণ ক্ষিদার কথাটা ভুলেই ছিলাম, ভাত খাওয়ার কথা শুনে যেনো ক্ষিদেটা জেগে উঠলো। ভাবলাম জেলে নেয় নেক, খাবার তো পাবো, এবার যেন আমাকে জেলে যাওয়ার তাড়ায় পেয়ে বসলো।
এক সময় পুলিশ সদস্যটি বিরক্ত হয়ে আমাকে বললো চল্ থানায় চল্, হাত ইশারায় মেইন গেইটের দিকে হাটতে বললো, পুলিশটি আমার পিছনে পিছনে আসতে লাগলো, মেইন গেইট পার হয়ে পিছনে তাকিয়ে পুলিশটিকে আর দেখতে পেলাম না। আমার বুকটা ধ্বক করে উঠলো, পুলিশ গেলো কোথায় ? থানায় গিয়ে আমি যে ভাত খাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম।
আবার ফিরে গিয়ে পুলিশটি খুজে বের করে বললাম, এই পুলিশ আপনি আমাকে রেখে পালিয়ে এলেন কেনো ? এবার পুলিশটি আমাকে রক্ত চক্ষু করে লাঠি উচিয়ে মারতে এলো। বললো যা ভাগ........
কি আর করা, স্টেশন থেকে বিফল মনোরথে বেড়িয়ে এলাম। আমার বুঝি আর জেলের ভাত খাওয়া হলো না
ঘটনার স্থানঃ চট্টগ্রাম স্টেশন, আনুমানিক ১৯৮৫
সাল।
Comments (31)
তোমার উর্বর মন ও মগজে
শৈল্পিক ঠাঁসাঠাসিতে ঠাই করে নিয়েছে
গোটা বিশ্ব-ব্রক্ষ্মান্ড ঠিকঠাক
ভাল লাগা রইল কবিতায়
শুভেচ্ছা জানবেন, ভাই...
'তুমি' র মাঝেই জীবনের সবকিছু লুকায়িত আছে। খুব ভালো লাগলো।
অনেক অনেক শুভকামনা...