Site maintenance is running; thus you cannot login or sign up! We'll be back soon.

মাসুম বাদল

১০ বছর আগে

প্রিয় ব্লগ আবৃত্তি- ০০১

চিঠিঃ প্রিয় নন্দিনী

-লুৎফুর রহমান পাশা     

[আবৃত্তি শুনতে হলে ক্লিক করুন]       

 

 

প্রিয় নন্দিনী

দিনপঞ্জি জানান দিয়ে গেল ধরনী অদ্য বরষায় অভিষেক ঘটিয়েছে। চারিদিকের অবিরাম বর্ষনে ব্যস্ত ধরনীতে আবছা আলোর রঙ্গের খেলায় মেতে উঠেছে অবুঝ বালক-বালিকা কিংবা কিশোর কিশোরীর দল। নিস্প্রভ কনে দেখা ঝাপসা সাঝের আলোয় আখির রং উপলব্ধি হইতেছেনা ঠিকই, তথাপি হস্তকাঠামোয় লোমশের উপস্থিতি ঠিকই অনুভুত হইতে কোন ব্যাঘাত ঘটিতেছেনা। এমনই এক অদ্ভুত উপনীত সন্ধ্যায় তোমাকে স্মরনে এনে কোথাও নিয়মের কোন ব্যত্যয় ঘটিয়াছে কিনা তা জানার বিন্দুমাত্র কৌতুহল যেমন জন্মায়না তেমনি তোমার কুশলাদি জানবার কোন অভিপ্রায়ও আমার নেই।তবুও দিব্যি রইল জলের, দিব্যি রইল ফুলের, উপনীত সন্ধ্যায় পশ্চিম আকাশের নিয়মিত গোধূলীর লালিমাকে অপসারন করা ধরনী শীতলকারী তুমুল বর্ষনের দিব্যি রইল, মানসপটে আকা অজানায় লুকিয়ে থাকা শত সহস্র কৌতুহলের দিব্যি রইল, আমার চাওয়ার অপেক্ষায় রত না থেকে তুমি কুশলেই থাকো।  

পুর্নজন্মের প্রতি আমার বিন্দুমাত্র আগ্রহ নেই বিশ্বাসও নেই। কিন্তু কোন এক মুনির অভিপ্রায়কে বাস্তবায়ন করতে গিয়ে নিয়মের ব্যত্যয় ঘটেছিল। শ্লোক পুরানে শ্রুত হয়েছিলাম পুর্ব জন্মে আমাদের সখ্যতা ছিল প্রবল। বাধন ছিল জন্ম জন্মান্তরের। পন করেছিলুম বিধাতার রোষানলে পড়েও একে অপরের জন্য অব্যয় থাকার। তাইতো সেকালে রুষ্ট বিধাতার অভিপ্রায়ে আমাদের স্থানচ্যুত হতেই হলো। সেকালের বনলতা আর নবারুন এই জন্মে আবারো ভিন্ন গর্ভে জন্মলাভের পর পুনরায় সাক্ষাতের প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়েছে। তারই ফল স্বরুপ অদ্যকার তুমি নন্দিনী আর আমি কবিলাক্ষু।  

সেদিনের সেই তীব্র স্মৃতি কথন আজ বেশ কর্নে বাজিতেছে হৃদয় উগলিয়ে উঠিতেছে পাশাপাশি বারবার হৃদয়ে জানান দিয়া যাইতেছে। সেবার নিসীম আকাশে ছিল শতরঙ্গের খেলা। মানব সত্বার অন্যতম স্বত্বাধীকারী মানবীর মনের অবস্থার সহিত মিত্রতা ব্যক্ত করে উজ্জল সুনীল আকাশ তার রঙ পরিবর্তনে ব্যস্ত। কখনো বা শুভ্র মেঘের ভেলা কখনোবা দিবাকরের সাথে মিত্রতার প্রবল হাতছানি। বলাকারা ক্রমশ বিস্তীর্ন সীমারেখা অতিক্রম করিতেছে। কেহ কেহ নিজ গৃহপানে ধাবিত হইতেছে প্রিয়জনের টানে। তবে তুমি আর আমিও সেদিন পথ অতিক্রম করেছিলাম।    

চারিপাশের তাবৎ কোলাহল তখন ক্রমশ নিরব হয়ে এসেছিল। আর এদিকে নিরাপত্তা বাহিনীর সাজ সাজ রব। তাবৎ গোলাবারুদ অস্ত্র শস্ত্র প্রস্তুত। যেন কেবলই একটা নির্দেশনার অপেক্ষায় মুহু মুর্হু কেপে উঠবে। বেজে উঠবে দামামা স্বর্গ মর্ত্য পাতাল কেপে উঠবে যুদ্ধ সামগ্রীর প্রচন্ড হুংকারে। মধ্যিখানে তাবৎ যন্ত্রদানবের প্রবল আক্রমন প্রস্তুতি আর একপাশে অসহায়ের মত কবিলাক্ষুর অপেক্ষায় দুর্বার দুবিনীত নন্দিনি। এই বুঝি কবিলাক্ষুর আগমন ঘটবে। উদ্ধার হবে নন্দিনি। কবিলাক্ষুর মনে ঠাই নিয়েছে তীব্রগতির টমাসের অশ্ব। আর নন্দিনীর বুকের আজলায় আশ্রিত হয়েছে ভুবন বিনাশী হেলেনের অগ্নিশিখা।  

এমনই গ্রহনলাগা প্রবল অগ্নিন্ধ্যায় অগ্নিশিখা ছড়িয়ে পড়ে স্বর্গ মর্ত্য পাতালে। হত বিহ্বল হয়ে উঠে রন সাজে সজ্জিত সেনাদের দল। সেনাপতি দিশেহারা গতিহারা পথহারা হয়ে সাগরে ঝাপিয়ে সাঙ্গ করে তার ভবলীলা। সেদিন বিজয়ির বেশে সুতীব্র গতিতে টমাসের অশ্ব প্রবেশ করেছিল নন্দিনির অন্দর মহলে। উদ্ধার হয়েছিল নন্দিনি। যদিও বিনিময়ে ধ্বসে গিয়েছিল ট্রয়ের তাবৎ স্থাপনা। আগুন লেগেছিল মিসিসিপি থেকে ভুমধ্য সাগর অবধি। ধরনী মুর্হুমুর্হ কেপে উঠে তবেই থামতে বাধ্য হয়েছিল। নতমস্তকে নতিস্বীকার করেছিল নন্দিনীর চরন যুগলে। ব্যক্ত করেছিল মানস পটে আকা শেষ বাক্য কতক। তুমি নন্দিনি। তুমিই নন্দিনি। অবশেষে নন্দিনী আর কবিলাক্ষুর সাক্ষাৎ ঘটেছিল একই উঠোনো। চোখ বন্ধ করা অন্ধকারে। লক্ষ জোনাকির পাহারায়। শুধিয়েছিল কুশল ব্যক্ত করো কবি। বলেছিলুম আমি আছি জলের মতো। প্রশ্ন বোধক নন্দিনির দৃষ্টি যুগল। তবে কি ভালো নয়? ভালো তো বটেই। এযে ভালো থাকার চেয়ে বেশী কিছু্।  

তোমাকে হৃদয়ে ধারন করে কোন ভুলের রাজ্য হারাইনি। কভু এমন কোন অনুশোচনায় আহত হইনি। কস্মিন কালেও হৃদয় জেগে ওঠেনি ভুলের দামামা। একবিন্দু জলের জলান্জলি চাইনি ভুলকে শুধরাতে গিয়ে। তাই চিরকাল জাগরুক থাকুক হৃদয়ের শতরন্জিতে থাকা যাবতীয় কুসুম গুলো। তুমি যেথায় থাকো তুমি শ্বাশ্বত তুমি অব্যয় তুমি অক্ষয়। যা জেনেছে মন যা জেনেছে হৃদয়। তামাম দুনিয়া জানুক হেথায় কোন ভুল নেই।   শীতলক্ষ্যার নরোম জলের দিব্যি দিয়ে বলে গেলুম। এখনো মাঝে মাঝে মাঝ রাতে খুলে রাখি ব্যথার খাতা। মনেরই অজান্তে অজানা ব্যথায় ভিজে ওঠে চোখের পাতা। তোমাকে দেখবো বলে প্রিয় নন্দিনি। এখনো দুচোখে ঘুম রাখিনি। যদি এসে দেখো ঘুমিয়ে আছে তোমার কবি। তুমি হয়তো অপেক্ষায় রবে নয়তো আকবে ব্যথার ছবি। তার থেকে এইতো ঢের বেশী ভালো। আমি আছি তোমার অপেক্ষায় আজো। এর শেষনেই, ব্যখ্যা নেই। শুধু তুমি আছো আর আমি কবিলাক্ষু।        

 

 

 

১ Likes ১ Comments ০ Share ৩৪৬ Views

Comments (1)

  • - মোকসেদুল ইসলাম

    সুন্দর

    • - কালের কলম

      ধন্যবাদ দাদা ! ... 

    - আলমগীর সরকার লিটন

    বেশ ভাল লাগল---------

    • - কালের কলম

      অনেক অনেক কৃতজ্ঞতা...।।