Site maintenance is running; thus you cannot login or sign up! We'll be back soon.

মাসুম বাদল

১০ বছর আগে

প্রিয় কবিতা আবৃত্তিঃ ০০৪

ও বেহুলা

-অরুণ মিত্র 

 

[আবৃত্তি শুনতে হলে ক্লিক করুন] 

 

আমার বিছানায় মাঝ রাত্তিরের ঢেউ লাগলে আমি বেহুলাকে

ডাকিঃ ও বেহুলা, তোমাকে বলবার কিছু কথা আছে আমার, শোনো!

লোহার বাসর ঘর থেকে সাপেকাটা লখিন্দরকে নিয়ে তুমি গেলে

জলে ভাসিয়ে দিতে। তাইতো বিধান। কলার ভেলায় তুমি তাকে শোয়ালে

ঠিকই, কিন্তু একলা ভেসে যেতে দিলে না, তুমিও ভাসলে তার সঙ্গে।

সেটা আশ্চর্যের নয়। তুমি যে ভীষণ ভালবাসতে তাকে এবং তোমার

ভালবাসার তেজ ছিলো দুর্দান্ত। তুমি সমস্ত বিঘ্ন বিপদ তুচ্ছ করে সমুদ্র

পাড়ি দিয়ে হাজির হলে দেবতাদের আড্ডায়। সেখানে তাদের সবাইকে

নাজেহাল বেসামাল করে লখিন্দরকে বাঁচিয়ে ফিরিয়ে আনলে বাড়িতে

ধন্য ধন্য পড়ে গেল সারা দেশে। এ পুণ্য ভূমির আকাশে বাতাসে শ্লোগানের মত ধ্বনি উঠলোঃ

এইতো পতিভক্তি, একেই বলে সতী সাধ্বী।

 

ও বেহুলা, এখন বলতো আমায় লোহার বাসর ঘরে অন্ধকারে

সাপটা যদি ভুল করে লখিন্দরের বদলে তোমাকে ছোবল দিত

তাহলে কী হত।

 

বেহুলা মুখ নীচু করে চুপ। কিছুই বলে না।

তাহলে শোনো, কী ঘটতো আমিই বলে দিই। লখিন্দর যত্ন করে

তোমাকে বয়ে নিয়ে যেত, যত্ন করে কলার ভেলায় তোমাকে শুইয়ে

ভাসিয়ে দিত ভেলা। সে নিজে কিন্তু থাকতো ডাঙায় এবং ভাঙা

হৃৎপিণ্ড নিয়ে শোকাচ্ছন্ন ফিরে আসতো বাড়িতে। তোমার বিরহে সে দিনরাত ধিকি ধিকি

আগুণে পুড়তো। দাঁতে দাঁত চেপে কোনো রকমে সংসারে টিকে থাকা।

কিন্তু মাস দুই বাদে তোমার বিরহ এমন অসহ্য হয়ে উঠলো লখিন্দরের কাছে

যে আর একটি মেয়েকে বিয়ে তার করতেই হলো। অবশ্য তোমার মতো

অপরূপ সুন্দরী সে নয়। কিন্তু তাতে কি আর এমন অসুবিধে!  

 

 

 

১ Likes ৯ Comments ০ Share ৩৬৬ Views