নক্ষত্র ব্লগের সকল ব্লগারকে জানাই প্রীতি ও শুভেচ্ছা। সকলে আমার সালাম আদাব নমস্কার সম্ভাষণ নিবেন শ্রেণী বিশেষে। প্রথম আলো ব্লগে টুকটাক লিখালিখি করতাম, কিন্তু বিধিবাম, আলো ব্লগ ধুকে ধুকে মৃত্যুর দিকে ধাবিত হওয়ায় যারপরনাই মর্মাহত। তাকে ভালোবেসে ফেলেছিলাম যদিও তার রক্ষনাবেক্ষণ ও সঞ্চালনা মাঝে মাঝে মনে ঘৃণার উদ্রেক করে। নক্ষত্র ব্লগে,আলো ব্লগে পরিচিত সকলকে দেখেই আমিও নিবন্ধন করলাম। বলতে দ্বিধা নেই আলো ব্লগ খুব মিস করি, কেননা ঐটার প্রথম পাতার প্রেমে সত্যি পড়ে গিয়েছিলাম। কামনা করি এখানেও সকলে মিলে মিশে আলো ব্লগের ন্যায় আন্তরিকতা পূর্ণ ব্লগিং করবে। আল্লাহ আমাদের সকলের মঙ্গল করুন।
ব্লগ সঞ্চালককে অকুন্ঠ ধন্যবাদ জানাই কারিগরী ত্রুটিটি দূর করে দেয়ার জন্য। কেননা নিবন্ধন করার দুই সপ্তাহ পরও পোস্ট ও কমেন্ট করতে পারছিলামনা। নিশ্চয়ই আপনার ব্লগ,বাংলা ব্লগ কমুনিটিতে অচিরেই প্রথম সারিতে উন্নীত হবে এই কামনা করি।
গলি থেকে পলায়ন
একটি গলির ধার ছেড়ে আমি চলে এসেছি,
ভূমি দস্যুর ক্রুর আচড়ে বনসাইসম তার প্রান্ত নির্ধারিত,
এই বড়জোর পাঁচ ছয় ব্লক তার দৌড়।
গলির মাঝখানে দুধারে আবার পার্কের ন্যায়
বিশাল দুটি প্লট খালি পড়ে আছে,
সন্ধ্যে হলেই ডিসিসির রুগ্ন আলোয়
রক্তিম আধারিতে সান্ধ্য ভ্রমন উপভোগ,
সঙ্গী সাথী আগামীর বাংলাদেশের কুড়ি
বড় ভ্রাতার ঔরসজাত রূপে, সন্নিধ্ব্যে প্রবাসের অবসরে।
নির্জন আর শান্ত গলিতে মধুমেহ সাথীর পদযাত্রা,
কিশোর চপল তরুণ দলের ক্রিকেটীয় বিনোদন
সন্ধ্যার আধারিতে সদ্য শুক্রানুর ভান্ডারে পূর্ণ যুবার
সচকিত সলজ্জ মোবাইল প্রেমের আদি রস অবগাহন,
ওষ্ঠে তাম্বুকাভুভিত আলো ধোয়া উদগিরণ
অতিশয় আদি রসে নুহ্য কিশোরের কদাপি চুপিসারে
দেয়ালের নির্জন কোনে জলচাপ বিয়োগ।
গলির মাঝে একপাশে সদ্য ভূমি ফুঁড়ে ওঠা সুউচ্চ
ডেভেলপার দালানের ধুলি, কাদা, পানি, পথচারীর তিরস্কার মেশানো
দেয়াল অলঙ্করণ, অথচ নির্বিবাদ শান্ত মধুর প্রত্যহ জীবন,
কখনো সখনো গলির রাস্তার চওড়া এক প্রান্তে
আগ্রাসী ভূমি দস্যুর টাকার গাছের জন্য বিকট শব্দে
ইট ভাঙ্গা যন্ত্রের ক্রমাগত শব্দ বিস্ফোরণ।
সকাল দুপুর সন্ধ্যা রাত্রিতে বেওয়ারিশ সারমেয়র সম্ভাষণ,
নিশুতি রাতে প্রহরীর নিয়মিত বিরতিতে চেনা হুইসেল
চরম এক নিশ্চিন্ততাই এনে দেয় দেহে মনে প্রাণে।
অকস্বাত কোন এক তালেবানি জোশের সন্ধ্যায়
গলিটির মোড়ে বোমার ন্যায় শব্দে প্রকম্পিত হোল গোটা এলাকা
ঘটনার আকস্বিকতায় মুহুর্তেই গলিটিতে শুনশান মৃত্যুর নিরবতা,
সেই থেকে ক্রমান্নয়ে গলিপথটির জনপদে
ককটেল, পেট্রল বোমা, বৃক্ষ হত্যা, রেল লাইন উপড়ানো,
অবলা পশু, জ্যান্ত মানুষ পুড়িয়ে মারা, সংখ্যালঘু নির্যাতন,
কবরে লুকিয়ে থাকা মানুষ হত্যা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জালিয়ে দেয়া
সংক্রমিত হোল পরকালের পাসপোর্টের আশায়।
ভয়ে কুকড়ে গিয়ে গলিটি মুহ্যমান হোল ধারের সকল মানুষের সাথে,
গলির এক কোনায় আকাঙ্খা নামের বাড়িটিতে
শিশুদের পরীক্ষা স্থগিত হোল, বাড়িটির প্রবাসী মেঝ ছেলেটির
বন্ধুদের সাথে সকল দাওয়াত বাতিল হয়ে গ্যালো,
অজানা আশঙ্কায় ভয়ে গ্রামের বাড়িতে বাবা ভাইয়ের
কবর জিয়ারত করা হোলনা, ভাইয়ের বিয়ের অনুষ্ঠান
স্থগিত রইলো, অসংখ্য আশরাফুল মুখ্লুকাত
জীবন্ত দগ্ধ হোল কথিত "আল্লাহ'র সেনানী" হাতে।
রাগে, দু:খে, ক্ষোভে, অপমানে, লজ্জায় বাড়ির মেঝ ছেলেটি
ছুটি সংক্ষিপ্ত করে পালিয়ে এলো অতলান্তের এপারে
গলির দুধারের, গোটা জনপদের, বাংলাদেশের
ষোল কোটি মানুষ কোথায় পালাবে!
Comments (11)
মজার গল্প তো! ভাল লাগল।
রাতে অনেক কষ্ট করেও ব্লগে কোন মন্তব্য করতে পারিনি। নেটে খুব সমস্যা। আইপড থেকেও আমি কোন লেখা লিখতে পারছিনা। অনেক দিন ধরেই আপনার লেখায় কোন মন্তব্য দেয়া হয়না। ব্লগে আসিও না লেখা পড়া হয়না।
ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য। আপনাকে ব্লগে পাওয়াটা আমার জন্য অনুপ্রেরণা।
রসরচনা দেখা যায় আসলেই রসে ভরপুর। শেষ পর্যন্ত রসের হাড়িটা কনের ঘরে গিয়ে ভাঙলো। জামাই ব্যাটার কুম্ভকর্ণ টাইপের ঘুমই যে চোরের আসল রহস্য সেটা উদ্ধার হল। মানে জামাই মিয়াঁ ঘুমের ঘোরে অনেক কথা বলে। সে-ই হয়তো চোর চোর বলেছিল, যা শুনে কেউ না বুঝেই গ্রাম শুদ্ধ জাগিয়ে তুলল। আপনার এই গল্প পড়ে শামসুর রাহমানের 'পণ্ডশ্রম' কবিতাটির কথা মনে পড়লো। অনেক ভালো লাগলো মাসুদ ভাই।
এই নিয়েছে ঐ নিল যাঃ! কান নিয়েছে চিলে,
চিলের পিছে মরছি ঘুরে আমরা সবাই মিলে।
কানের খোঁজে ছুটছি মাঠে, কাটছি সাঁতার বিলে,
আকাশ থেকে চিলটাকে আজ ফেলব পেড়ে ঢিলে।
দিন-দুপুরে জ্যান্ত আহা, কানটা গেল উড়ে,
কান না পেলে চার দেয়ালে মরব মাথা খুঁড়ে।
কান গেলে আর মুখের পাড়ায় থাকল কি-হে বল?
কানের শোকে আজকে সবাই মিটিং করি চল।
যাচ্ছে, গেল সবই গেল, জাত মেরেছে চিলে,
পাঁজি চিলের ভূত ছাড়াব লাথি-জুতো কিলে।
সুধী সমাজ! শুনুন বলি, এই রেখেছি বাজি,
যে-জন সাধের কান নিয়েছে জান নেব তার আজই।
মিটিং হল ফিটিং হল, কান মেলে না তবু,
ডানে-বাঁয়ে ছুটে বেড়াই মেলান যদি প্রভু!
ছটতে দেখে ছোট ছেলে বলল, কেন মিছে
কানের খোঁজে মরছ ঘুরে সোনার চিলের পিছে?
নেইকো খালে, নেইকো বিলে, নেইকো মাঠে গাছে;
কান যেখানে ছিল আগে সেখানটাতেই আছে।
ঠিক বলেছে, চিল তবে কি নয়কো কানের যম?
বৃথাই মাথার ঘাম ফেলেছি, পণ্ড হল শ্রম।
ঘাসফুল ভাইয়ের এমন মন্তব্যে আমি পুলকিত। অনেক দেরিতে লগইন করেছি। লেখায় কিছু ভুল এসেছে তাও সংশোধন হয়নি।
কবি শামসুর রহমানের এই কবিতাটা আমার প্রিয়। আগে অনেক পড়েছি। আজ আপনার কল্যাণে আবার পড়া হল। আপনার মত এমন পাঠক পাওয়া সৈভাগ্যের ব্যপার। যা বলেছেন আমি ঠিক তাই বুঝাতে চেয়েছি। সত্যি আপ্লুত হলাম।
- ‘রাত দুইটা’ এখান থেকে ২য় প্যারাতে আসলে ভালো লাগবে।
- গল্পটা সাবমিট করে আর খেয়াল করেন নাই। অনেকগুলা বানান ভুল আসছে। আর গায়ে গায়ে শব্দরা লেগে গেছে। মনে হয়, শৈত্য প্রবাহ হইতেছে, আপনার চোর গল্পে।
হেহে, রম্য গল্পের রম্য মন্তব্য।
আপনার ধরিয়ে দেয়া ভুলগুলো মাথা পেতে নিলাম যুথী আপু। শৈত প্রবাহ বয়ে গেছে লেখার উপর দিয়ে। লেখা দিয়ে সংশোধন করা দরকার ছিল। আপনার কথা মত আসল লেখার প্যারাগুলো ঠিক করে নিচ্ছি।
ধন্যবাদ আপনাকে এমন গঠন মূলক সমালোচনার জন্য। এমনই চাই।