Site maintenance is running; thus you cannot login or sign up! We'll be back soon.

Blog Moderator

৯ বছর আগে

নববর্ষের শুভেচ্ছা


সুপ্রিয় ব্লগারগণ,

সবাইকে  জানাই পহেলা বৈশাখের শুভেচ্ছা।

বাংলা পঞ্জিকার প্রথম মাস এবং প্রথম দিন হলো পহেলা বৈশাখের ১ তারিখ ।বৈশাখের ১ তারিখ হলো বাংলা সনের প্রথম দিন। অথবা বাংলা নববর্ষ। দিনটি বাংলাদেশ এবং ভারতের পশ্চিমবঙ্গে নববর্ষ হিসেবে বিশেষ উৎসবের সাথে পালন করা হয়। ত্রিপুরায় বসবাসরত বাঙালিরাও এই উৎসবে অংশ নেন। সেই হিসেবে এটি বাঙালিদের একটি সর্বজনীন উৎসব। সারা বিশ্বের বাঙালিরা এ দিনে নতুন বছরকে বরণ করে নেন । ভুলে যাবার চেষ্টা করে অতীত বছরের সকল দুঃখ-গ্লানি। সবার কামনা থাকে যেন নতুন বছরটি সমৃদ্ধ ও সুখময় হয়। বাংলা একাডেমী কর্তৃক নির্ধারিত আধুনিক পঞ্জিকা অনুসারে এই দিন নির্দিষ্ট করা হয়েছে। এইদিনে বাংলাদেশ এবং পশ্চিমবঙ্গের সকল সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকে। 

বাংলা দিনপঞ্জীর সাথে রেখে বাংলা মাসের গননা শুরু হয় । আর হিজরী অথবা আরবি মাস শুরু হয় চাঁদ দেখে । এবং ইংরেজী মাস বা সাল শুরু হয় ঘড়ির সময়ের সাথে মিল রেখে ।
 ঐতিহ্যগত ভাবে সূর্যোদয় থেকে বাংলা দিন গণনার রীতি থাকলেও ১৪০২ সালের ১ বৈশাখ থেকে বাংলা একাডেমী এই নিয়ম বাতিল করে আন্তর্জাতিক রীতির সাথে সামঞ্জস্য রাখতে রাত ১২.০০টায় দিন গণনা শুরুর নিয়ম চালু করে। 
 

ভারতবর্ষে মুঘল সম্রাজ্য প্রতিষ্ঠার পর সম্রাটরা হিজরী পঞ্জিকা অনুসারে কৃষি পণ্যের খাজনা আদায় করতো। কিন্তু হিজরি সন চাঁদের উপর নির্ভরশীল হওয়ায় তা কৃষি ফলনের সাথে মিলত না। এতে অসময়ে কৃষকদেরকে খাজনা পরিশোধ করতে বাধ্য করা হতো। খাজনা আদায়ে সুষ্ঠুতা প্রণয়নের লক্ষ্যে মুঘল সম্রাট আকবর বাংলা সনের প্রবর্তন করেন। তিনি মূলত প্রাচীন বর্ষপঞ্জিতে সংস্কার আনার আদেশ দেন। সম্রাটের আদেশ মতে তৎকালীন বাংলার বিখ্যাত জ্যোতির্বিজ্ঞানী ও চিন্তাবিদ ফতেহউল্লাহ সিরাজি সৌর সন এবং আরবি হিজরী সনের উপর ভিত্তি করে নতুন বাংলা সনের নিয়ম বিনির্মাণ করেন। ১৫৮৪ খ্রিস্টাব্দের ১০ই মার্চ বা ১১ই মার্চ থেকে বাংলা সন গণনা শুরু হয়। তবে এই গণনা পদ্ধতি কার্যকর করা হয় আকবরের সিংহাসন আরোহণের সময় ৫ই নভেম্বর ১৫৫৬ সাল থেকে শুরু করা হয়। প্রথমে এই সনের নাম ছিল ফসলি সন বা সাল পরে বঙ্গাব্দ বা বাংলা বর্ষ নামে পরিচিত পায়।
 


আকবরের সময়কাল থেকেই পহেলা বৈশাখ উদ্‌যাপন শুরু হয়। তখন প্রত্যেককে চৈত্র মাসের শেষ দিনের মধ্যে সকল খাজনা,, মাশুল এবং শুল্ক পরিশোধ করতে হতো। এর পর দিন অর্থাৎ পহেলা বৈশাখে ভূমির মালিকরা নিজ নিজ অঞ্চলের অধিবাসীদেরকে মিষ্টান্ন দ্বারা আপ্যায়ন করতেন। এ উপলক্ষ্যে বিভিন্ন উৎসবের আয়োজন করা হতো। এই উৎসবটি একটি সামাজিক অনুষ্ঠানে পরিণত হয় যার রূপ পরিবর্তন হয়ে বর্তমানে এই পর্যায়ে এসেছে। তখনকার সময় এই দিনের প্রধান ঘটনা ছিল একটি হালখাতা তৈরি করা। হালখাতা বলতে একটি নতুন হিসাব বই বোঝানো হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে হালখাতা হল বাংলা সন অথবা সালের প্রথম দিনে দোকানপাটের হিসাব আনুষ্ঠানিকভাবে হালনাগাদ করার প্রক্রিয়া। গ্রাম,, শহর বা বাণিজ্যিক এলাকা,, সকল স্থানেই পুরনো বছরের হিসাব বই বন্ধ করে নতুন হিসাব বই খোলা হয়। হালখাতার দিনে দোকানদাররা তাদের ক্রেতাদের মিষ্টান্ন দিয়ে আপ্যায়ন করে থাকেন। এই প্রথাটি এখনও অনেকাংশে প্রচলিত আছে । বিশেষ করে স্বর্ণের দোকানে।


আধুনিক নববর্ষ উদযাপনের খবর প্রথম পাওয়া যায় ১৯১৭ সালে। প্রথম মহাযুদ্ধে ব্রিটিশদের বিজয় কামনা করে সে বছর পহেলা বৈশাখে হোম কীর্তন এবং পূজার ব্যবস্থা করা হয়। এরপর ১৯৩৮ সালেও অনুরূপ কর্মকান্ডের উল্লেখ পাওযা যায়।পরবর্তী সময়ে ১৯৬৭ সনের আগে ঘটা করে পহেলা বৈশাখ পালনের রীতি তেমন একটা জনপ্রিয় ছিল না।
 তবে বর্তমানে বাংলা নববর্ষ বাঙালিদের প্রাণ। আর এই প্রাণ, ঐতিহ্যকে ধারণ করে আপনারা সবাই থাকবেন আমাদের নক্ষত্রের সাথে। ব্লগিং করুন, বিকশিত করুন আপন ভাবনা।

সবাইকে আবারও জানাই পহেলা বৈশাখের শুভেচ্ছা।

শুভ ব্লগিং।

১ Likes ০ Comments ০ Share ৫২৬ Views

Comments (0)

  • - মামুন

    অভিনন্দন আপনাকে। আশা করব ইনশা আল্লাহ আরো সামনের দিকে এগিয়ে যাবেন, নিত্য-নতুন লিখনি দিয়ে আমাদেরকে চমৎকৃত করবেন।

    শুভেচ্ছা রইলো।

    • - এনামুল হক মানিক

      ধন্যবাদ মামুন ভাই। আপনার মন্তব্যে উদ্দীপনা পেলাম। আল্লাহর রহমতে এবং আপনাদের দোয়া-ভালোবাসায় এগিয়ে যেতে চাই। শুভেচ্ছা নিবেন।

    - সোহেল আহমেদ পরান

    আপনার সুন্দর লেখনির আমি একজন ভক্ত।

    বইটির সফলতা কামনা করছি।

    এনাম ভাইকে শুভেচ্ছা emoticonsemoticons

    • - এনামুল হক মানিক

      অনেক অনেক ধন্যবাদ পরান ভাই। আপনার মতো একজন গুনী কবি-লেখক আমার লেখার ভক্ত- তা জেনে নিজেকে ধন্য মনে করছি। শুভেচ্ছা সতত-নিরন্তর।